নবীনগরে মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষে সফল দুই যুবক

0
58
নবীনগরে মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষে সফল দুই যুবক
নবীনগরে মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষে সফল দুই যুবক
মোঃ আনোয়ার হোসেন 

দীর্ঘ পাঁচ বছর প্রবাসে কাটিয়ে দেশে ফিরেন মো. মাসুক। দেশে ফিরে প্রায় ৫-৬ মাস কোন চাকরি  না পেয়ে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েন। কয়েক মাস পূর্বে মাসুক ইউটিউবে মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ দেখে তার বাল্যবন্ধু শামিমকে বিষয়টি জানান। দুই বন্ধু মিলে নিজ এলাকায় চার বিঘা জমি লিজ নেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে বিভিন্ন সবজি ও বাকি দুই বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষ শুরু করেন। রূপকথার গল্পের মতো মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষে দুই বন্ধু অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন।

জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার মালাই গ্রামের আওয়াল মিয়ার ছেলে মো. মাসুক ও ফরিদ মিয়ার ছেলে শামিম মিয়া। প্রায় তিন মাস পূর্বে মালাই গ্রামের দুই বিঘা জমিতে তারা মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষ শুরু করেন। মালচিং পদ্ধতিতে প্রথমে জমিতে পরিমিত জৈব সার দিয়ে সারি সারি বেড তৈরি করা হয়। পরে সারিবদ্ধভাবে বেডগুলো পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। বেডে নির্দিষ্ট দূরত্বে পলিথিন ফুটো করে সবজির বীজ বা চারা রোপণ করতে হয়। এ পদ্ধতিতে কৃষকের উৎপাদন খরচও তুলনামূলক অনেক কম হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাঁশের খুঁটি, নাইলন সুতা আর জিআই তার দিয়ে চারদিকে মাঁচা তৈরি করা হয়েছে। ছোট বড় অসংখ্য শসা মাচায় ঝুলে আছে। যে দিকে চোখ যায় শসা আর শসা। শসা চাষে দুই বন্ধুর এমন সাফল্য দেখে এখন স্থানীয় অনেকেই শসা চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। স্থানীয়রা জানান, এ বাগানের শসা ফরমালিনমুক্ত এবং অনেক সুস্বাদু। দূরদূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এখানে মালচিং পদ্ধতিতে শসা আবাদ দেখতে আসে আবার অনেকে তরতাজা শসা কিনতেও আসে। এরা দুই বন্ধু এখন গ্রামের সফল চাষি।

চাষি মো. মাসুক জানান, ২ বিঘা জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে শসা আবাদ করতে জমি ইজারা, পরিচর্যা, সেচ, বীজসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। চারা রোপণের পর থেকে দেড় মাসের মধ্যে তাদের জমিতে শসার ভালো ফলন আসে। বর্তমানে প্রতিদিন তারা ২০০-৩০০ কেজি শসা বিক্রি করতে পারেন। বাজারে শসার ভালো চাহিদা ও দাম থাকায় এ পর্যন্ত তাদের বাগানের প্রায় তিন লাখ টাকার শসা বিক্রি করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বাজার দর ভালো থাকলে সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা বিক্রি হবে। এতে তিন মাসে খরচ বাদে ২-৩ লাখ টাকা এবং বছরে প্রায় ৬-৮ টাকা আয় হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মাসুক আরো জানান, মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষ নিয়ে শুরুতে খুবই চিন্তিত ছিলাম কিন্তু কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতা, পরামর্শ ও নিজের সঠিকভাবে পরিচর্যায় উৎপাদনে তেমন কোনো বেগ পেতে হয়নি। সবজি চাষে খরচ কম কিন্তু লাভ বেশি। তাছাড়া যেহেতু মালচিং পদ্ধতিতে শসা চাষে তাদের সকল সরঞ্জাম ইতিমধ্যে ক্রয় করা হয়েছে, সামনে এ পদ্ধতিতে শসা চাষে তাদের আরো অনেক খরচ কম হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/০৯মার্চ-২৫/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here