গ্যাস সংকটে বিঘ্নিত উৎপাদন কারখানা চালানোই বড় চ্যালেঞ্জ

0
65
শাহআলম সিকদার,কালিয়াকৈর প্রতিনিধিঃ  দেশের প্রধান অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি গার্মেন্টস সেক্টর গত ৫ ই আগস্ট এর পর এই গার্মেন্টস খাতকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিভিন্ন রকমের ষড়যন্ত্র হয়েছে এবং এখনো অব্যাহত রয়েছে। এই গার্মেন্টস খাতকে টিকিয়ে রাখতে এবং সচল রাখতে মালিকপক্ষ বিভিন্ন রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।বর্তমানে এই গার্মেন্ট শিল্প খাতে তৈরি হয়েছে উৎপাদন জটিলতা।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুরে অবস্থিত গুমতি টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে প্রায় ২৫০০ শ্রমিক কাজ করেন এই গার্মেন্টসে। দেশের শীর্ষস্থানীয় এই গার্মেন্টস কারখানাটিতে চাহিদা মতো গ্যাস সরবরাহ না থাকায় চরমভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।দেশী ও বিদেশী বায়ারদের(ক্রেতাদের)চাহিদা মতো ক্রয়াদেশ উৎপাদন ও সরবরাহ করতে না পারায় গত ফেব্রুয়ারী ও চলতি মাসের কারখানায় কর্মরত ২৫০০ শ্রমিকদের বেতনাদি পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছনা বলে জানান মেইনটেনেন্স এবং ইউটিলিটি বিভাগের জিএম দিলবার হোসাইন বেলাল।তিনি”স্বদেশ প্রতিদিন”কে আরও বলেন, গোমতী টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানায় ২৫০০ লোক দিনরাত্রি কাজ করছেন শুধু চলতি মাসেই তাদের বেতনের টাকা হয়েছে৪কোটি৪৮লক্ষ শিপমেন্ট দিতে না পারলে ৩৫ থেকে ৪০ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। এদিকে দশ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ না করতে পারলে কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে দেখা দেবে অসন্তোষ ও বিশৃঙ্খলা এবং যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে অনাকাঙ্খিত ঘটনা।
প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার মোঃ জাহিদুর রহমান আনিছ জানান,বিগত ৫ আগস্টের পর সারাদেশে গার্মেন্টস সেক্টরে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়েছিল গার্মেন্টসের শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে রাজপথে,কখনো বা গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানেও তারা হামলা করেছে, ভাঙচুর হয়েছে দেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানা ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এই শিল্প খাতটি।ব্যাপক ক্ষতির মধ্যেও গোমতী টেক্সটাইল্স লিমিটেড তার উৎপাদন ও সরবরাহ চালিয় যাচ্ছে।তিনি আরো বলেন,আমাদের যে পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করার কথা সে তুলনায় আমরা গ্যাস পাইনা। তিনি গ্যাসের প্রেসার মিটার দেখিয়ে বলেন গ্যাসের প্রেসার এক বা শুন্যের কোঠায় নেমে আসে, ফলে ডাইং ডিভিশনের চলমান ডাইং মেশিন, স্টান্টার মেশিন,স্লিটিং মেশিনে উৎপাদন ব্যাহত হয় ফলে লক্ষ লক্ষ মিটার কাপড় ভিজে অবস্থায় রয়েছে যা শুকানো এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া করতে পারছে না তিনি আরো জানান গত ২৫ শে ফেব্রুয়ারি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কালিয়াকৈরের চন্দ্রা জোনের ব্যবস্থাপক এবং তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিটার্ন ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি বিলাসপুর জয়দেবপুর গাজীপুরের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং চলতি মাসের ২ তারিখে ঢাকায় অবস্থিত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর গোমতী টেক্সটাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি)মোহা:আকতার স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। ওই চিঠিতেও গোমতি টেক্সটাইল লিমিটেডের গ্যাসের সংকটে যে অবস্থা বিরাজ করছে সে অবস্থা তুলে ধরে, গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান কয়েক মাস পূর্বেও গ্যাসের এই করুন অবস্থা ছিল না। ঢাকার উত্তর অঞ্চলের দুটি সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করায় কালিয়াকৈরের বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানায় গ্যাসের প্রেসার সর্বনিম্নে চলে এসেছে। এই সমস্যার সমাধানে তিনি বর্তমান সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন।
তিতাস গ্যাসের কালিয়াকৈর চন্দ্রা জোনের ব্যবস্থাপক খুরশেদ আলম সরবরাহ লাইনে গ্যাস সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে বিধায় বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানায় এবং সিএনজি স্টেশনগুলোতেও গ্যাসের তীব্র সংকট পরিলক্ষিত হচ্ছে তিনি আরো জানান, এই বিষয়গুলো নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনা করা হচ্ছে।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here