তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের তারাগঞ্জে দুর্নীতির অভিযোগে পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ কেএম ইফতেখারুল ইসলামের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত কর্মকর্তা বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ‘তারাগঞ্জ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ’ গত ১৭ মার্চ সংবাদের শিরোনাম হন।
প্রতিবেদনে বলা হয়,প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন এলডিডিপি কতৃক তারাগঞ্জ উপজেলায় গঠিত ১৫ টি প্রডিউসার গ্রুপ (পিজি) এর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের নিয়মিত সভার কাজের ব্যয়নির্বাহের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ৯৬ হাজার টাকা। গত জানুয়ারি মাসের দুটি সভা অনুষ্ঠিত হয় জানুয়ারি ২৩ ফেব্রুয়ারি ০৪ তারিখে। সেই সাথে রেজিস্ট্রার অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাসের বরাদ্দ দুটি নিয়মিত সভা হয় ফেব্রুয়ারি ১৫ ও ২৪ তারিখে। চারটি সভা অনুষ্ঠিত হলেও পিজি সদস্যরা নাস্তা পেয়েছে দুটিতে। ফেব্রুয়ারি মাসের স্বাক্ষর পিজি রেজিস্ট্রার খাতায় নেয়া থাকলেও, পিজির দ্বায়িত্বে থাকা এলএসপিরা পিজি গ্রুপের সভাপতি-সম্পাদকসহ সদস্যদের একটি ইউএলও স্বাক্ষরিত চিঠিতে স্বাক্ষর করার জন্য যোগাযোগ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে পিজি গ্রুপের সদস্যদের মাঝে।
এছাড়াও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের প্রধান ফটকের সামনে থাকা মেহগনি গাছ ও ভবনের পেছনে থাকা কাঁঠাল, জাম্বুরা ও আমগাছ সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে কাটা হয়েছে। অফিস চত্বরে আগের কর্তনকৃত সংরক্ষিত কাঠের গোলাই, অবৈধভাবে কাটা গাছ ও ডালপালাগুলো কোনো ধরনের নিলাম ছাড়াই বিক্রি করেছেন এই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। যার আনুমানিক বাজার মূল্য লক্ষাধিক টাকা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খবর প্রকাশ পাওয়ার পর জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ডেপুটি চিপ ইপিডিমিওলজিস্ট ডাঃ রফিকুল আলম তার নেতৃত্বে নীলফামারী জেলা প্রাণিসম্পদের জেলা ট্রেইনিং অফিসার রাশেদুল হক ও রংপুর জেলা ট্রেইনিং অফিসার মোস্তাফিজার রহমান এ তদন্ত চলছে।
রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ডেপুটি চিপ ইপিডিমিওলজিস্ট ডাঃ রফিকুল আলম জানান, “সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে পিজি গ্রুপের সদস্য, ডেইরি এন্ড ফ্যাটেনিং অ্যাসোসিয়েশন ও স্থানীয় খামারিরা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই তারা এই কর্মকর্তার দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন। তাদের দাবি, দ্রুত তদন্ত শেষ করে অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। আর যদি তদন্তকারী কর্মকর্তাগণ পক্ষপাতিত্ব মূলক প্রতিবেদন দেয়। তাহলে আগামীতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি