তাড়াইলে বাতাসে দোলছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

0
68
মো. আনোয়ার হোসাইন জুয়েল, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে সোনালী ধানের সমারোহ। রোদ আর হিমেল বাতাসে ফসলের মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। এখন ফসলের মাঠ সবুজ বর্ণ থেকে হলুদ বর্ণ ধারন করার অপেক্ষা। আর মাত্র কদিনের মধ্যেই কৃষকেরা তাদের নতুন ফসল ঘরে তুলবে। এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলনের ধান কাটার আগমুহূর্তে ধানের শীষ পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অনেক স্থানে ধান কাটা শুরুও হয়ে গেছে।

 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ৩ শত ৩০ হেক্টর এবং অর্জন ১০ হাজার ৩ শত ৩৫ হেক্টর। এছাড়া কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন কৃষককে বিনামূল্যে উন্নত মানের বীজসারকীটনাশক সহায়তাসুবিধা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের ফসলের মাঠে বোরো ধানের শীষ দোল খাচ্ছে। এবছর নতুন জাতের ধান ব্রি-৮৯ব্রি-৯২উফসি-২৯ জাতের ধান রোপন করা হয়েছে। এছাড়াও ব্রি-২৮২৯ জাতের ধান মাঠে দেখা গেছে। অনেক জায়গায় ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। ধান কাটার জন্য শ্রমিকের পাশাপাশি রয়েছে প্রায় ২৪টি ধান কাটার মেশিন। মেশিনে খরচ অনেক কম হওয়ায় বেশিরভাগ কৃষক মেশিন দিয়েই ধান কাটাচ্ছে।

 বোরগাও গ্রামের হারু মিয়া জানানআমাদের মাঠে সব ধান ফুলে ঝারা দিয়েছেআর মাত্র কদিন পরেই মাঠের অধিকাংশ ধান পাকতে শুরু করবে। এই ধানের শীষ দেখে মনে হয় এবার ফসলের বাম্পার ফলন হবে। একই গ্রামের আরেক কৃষক আঃ কদ্দুস বলেনআমাদের মাঠে প্রচুর পরিমাণ ধান চাষ করা হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর বড় বড় ধানের শীষ দেখা যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো সমস্যা না হলে এবছর আশা করছি অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি ফলন হবে।

 বেলংকা গ্রামের জোবায়ের আহমাদ জানানআমি ১৫ কাটা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার প্রত্যেকটি খেতে আমার প্রচুর ধানের শীষ দেখা যাচ্ছে। এবছর বাম্পার ফলনের আশা করছি আমি। আশরাফুল ইসলাম জানানআমার ধান অনেক ভাল হয়েছে। যদি কোন ক্ষতি না হয় তাহলে আমি কাটায় প্রতি ৩৮ হতে ৪০ মন ধান পওয়ার আশা করছি।

তাড়াইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  বিকাশ রায় জানানআবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত ফসল উৎপাদন হবে। উপজেলার ১০ হাজর ১’শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। বড় ধরনের ঝড়বৃষ্টি অথবা শিলাবৃষ্টি না হলে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কাজেই কৃষক সঠিক সময় ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছি।

 তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যেই প্রায় ২৮% বোরো ধান কর্তন সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়াও এ উপজেলায় সরকারি ভর্তুকি ধান কাটার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে তাদের প্রায় ২৪টি মেশিন বর্তমানে ধান কাটায় নিয়জিত আছে। একেকটি মেশিন ১ ঘন্টায় প্রায় ২ একর ধান কাটতে পারে। সে হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ২০-২৪ একর ধান কাটতে পারছে। যেখানে শ্রমিক লাগবে ৮-১০ জন ও সময় লাগবে ৩-৪ দিন।  মেশিনে ধান কাটার ফলে কৃষকেরা এক দিনেই ধান কেটে মাড়াই করে পরিস্কার অবস্থায় ঘরে তুলতে পারছে। তাছাড়াও শ্রমিক দিয়ে ১ একর ধান কাটতে যেখানে ৯০০০ টাকা লাগে সেখানে মেশিনে কাটলে ৩-৪ হাজার টাকার মধ্যেই সম্পন্ন করতে পারছে। এতে কৃষকের খরচের হার অনেক কমে যাচ্ছে। ১৫-১৭ মে’র মধ্যেই উপজেলার সকল ধান কাটা শেষ হবে বলে আশা করেন তিনি।

আলোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here