ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের নোটিশ জারি করলো পাকিস্তান

0
58
ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের নোটিশ জারি করলো পাকিস্তান
ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের নোটিশ জারি করলো পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক একদম তলানিতে ঠেকেছে। উভয় দেশ পাল্টাপাল্টি কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তান করাচি উপকূল থেকে সারফেস-টু-সারফেস মিসাইল উৎক্ষেপণের নোটিশ জারি করেছে। সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদসংস্থা এএনআই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৪-২৫ এপ্রিল পাকিস্তান এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করবে। এএনআই বলছে, ভারতীয় সংস্থাগুলো এসব পদক্ষেপের ওপর কড়া নজর রাখছে। তবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি পাকিস্তান।

এদিকে কাশ্মীরে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামের একটি জঙ্গি সংগঠন। সংগঠনটি পাকিস্তান-ভিত্তিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা। ধারণা করা হয়, এদের পেছনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর সমর্থন আছে।

কাশ্মীরে হামলার ঘটনার পর গতকাল বুধবার ভারতের নিরাপত্তা বিষয়ক সর্বোচ্চ কমিটি- ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিওরিটি বা সিসিএস বৈঠকে বসে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে ওই বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের পর জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, বৈঠকে সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে সীমান্ত পারের যোগসাজস তুলে ধরা হয়। তিনি বলেন, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীরে সাফল্যের সঙ্গে নির্বাচন হওয়ার পরেই এই আক্রমণ হলো। এমন একটা সময়ে হামলা হলো যখন সেখানে ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।

বুধবার রাতে বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে মিশ্রি ঘোষণা করেন, সন্ত্রাসী হামলার গুরুত্ব অনুধাবন করে নিচের সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে:

১. ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি অবিলম্বে স্থগিত করা হচ্ছে যতক্ষণ না পাকিস্তান বিশ্বাসযোগ্যভাবে এবং পাকাপাকিভাবে সীমান্ত পারের সন্ত্রাসের প্রতি তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে।

২. (পাঞ্জাবে অবস্থিত) সমন্বিত আটারি চেকপোস্ট অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ওই পথ দিয়ে যারা বৈধভাবে পারাপার করেছেন তারা পয়লা মে-র আগেই ফিরতে পারবেন।

৩. সার্ক দেশগুলোর জন্য ‘বিনা ভিসা প্রকল্প’-এর অধীন বিশেষ ভিসা নিয়ে পাকিস্তানের নাগরিকরা ভারতে ভ্রমণ করতে পারবেন না। যে পাকিস্তানি নাগরিকদের আগেই ওই ভিসা দেওয়া হয়েছে, তা বাতিল করা হলো। ওই বিশেষ ভিসা নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতে রয়েছেন যে পাকিস্তানের নাগরিকরা, তাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে।

৪. দিল্লিতে পাকিস্তানি দূতাবাসে সেদেশের প্রতিরক্ষা, সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর যে ‘পরামর্শদাতারা’ রয়েছেন, তাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’, বলে ঘোষণা করছে ভারত। তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে।

ভারতও ইসলামাবাদে তাদের দূতাবাস থেকে সেনা, বিমান এবং নৌবাহিনীর পরামর্শদাতাদের ফিরিয়ে আনবে। দুই দেশের দূতাবাসগুলোতে এই পদগুলো বিলুপ্ত করা হলো। দুই দেশের দূতাবাসেরই সামরিক পরামর্শদাতাদের পাঁচজন করে কর্মীকেও নিজের দেশে চলে যেতে হবে।

৫. দুই দেশের রাজধানীতে অবস্থিত কর্মী সংখ্যা বর্তমানের ৫৫ থেকে কমিয়ে পয়লা মের মধ্যে ৩০ এ নিয়ে আসতে হবে।

এদিকে ভারতের এমন কড়া সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটির (এনএসসি) জরুরি বৈঠক ডেকেছে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ।

জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে ভারতের নেওয়া পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ইসলামাবাদ।

আলোকিত প্রতিদিন/২৪ এপ্রিল ২০২৫/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here