ভারতের সঙ্গে যুদ্ধাবস্থা, ইমরান খানকে মুক্তি দিয়ে পাকিস্তানে ঐক্যের আহ্বান

0
61

আলোকিত ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আবারও তীব্র হয়ে উঠেছে এবং এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের জাতীয় ঐক্য নিশ্চিতে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবি জোরালো হচ্ছে। সমর্থকরা মনে করছেন ইমরান খানের এক ডাকেই সমগ্র দেশবাসীকে ভেদাভেদ ভুলে একত্র করতে পারে।

হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপানো এবং ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিতসহ ভারত কর্তৃক গৃহীত প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ ঘোষণার পর সোমবার জরুরি এক সিনেট অধিবেশন ডাকে পাকিস্তান সংসদ। সেখানে উভয় পক্ষের আইন প্রণেতারা ভারতের তীব্র সমালোচনা করেছেন। পাশাপাশি ইমরান খানের মুক্তির দাবিও ওঠে অধিবেশনে।

সোমবার সিনেট অধিবেশনে পিটিআইর পার্লামেন্টারি নেতা সিনেটর আলী জাফর বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিয়ে একসঙ্গে দাঁড়ানোই একমাত্র সঠিক সিদ্ধান্ত। এ মুহূর্তে ইমরান খানের অংশগ্রহণে একটি সর্বদলীয় সম্মেলন আহ্বান জরুরি।’

তিনি আরও বলেন, ইমরান খানের উপস্থিতি বিশ্বের কাছে একটি শক্ত বার্তা পৌঁছে দেবে যে, পাকিস্তান এ মুহূর্তে ঐক্যবদ্ধ। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে পাকিস্তানের বক্তব্যকে আরও গ্রহণযোগ্য করবে।

পিটিআই সিনেটর ও বিরোধীদলীয় নেতা শিবলি ফারাজ বলেন, ইমরান খানকে টিভিতে আসার সুযোগ দিন, যেন তিনি মিনার-ই-পাকিস্তানে বিশাল জনসভা এবং ভারত সীমান্তের দিকে (ওয়াগা সীমান্ত) পদযাত্রা করার ডাক দিতে পারেন। তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত, তার ডাকে মুহূর্তেই ১ কোটির বেশি মানুষ সাড়া দেবে।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা যদি চলতেই থাকে, তাহলে বিদেশি শত্রুরা তার সুযোগ নিতে পারে।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলো কাশ্মীরের সন্ত্রাসী হামলাকে ভারতের ‘পরিকল্পিত ও সাজানো ম্যাসাকার’ বা ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন বলে অভিযোগ করেছে। এ প্রসঙ্গে সিনেটর ইরফানুল হক সিদ্দিকী বলেন, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা অত্যন্ত ঘেরাটোপে থাকা কাশ্মীরের পেহেলগামে এমন হামলা কিভাবে সম্ভব? এটা পরিষ্কারভাবে সাজানো ঘটনা।’

তিনি বলেন, ভারত ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যে পাকিস্তানকে দোষারোপ করল, অথচ কোনো প্রমাণ নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও তাদের বক্তব্যকে বিশ্বাস করছে না। তিনি দাবি করেন, ভারত উল্টো পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসে জড়িত। বিএলএ ও তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) মতো নিষিদ্ধ গোষ্ঠীগুলোকে ভারত আর্থিক সহায়তা দিয়েছে- এ ব্যাপারে প্রমাণ রয়েছে।

সোমবার সিনেট অধিবেশনে যখন ভারতের পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা আলোচনায় আসে তখন আরও উত্তেজনা দেখা দেয়। সিনেটর সিদ্দিকী বলেন, এই চুক্তিতে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সম্পৃক্ততা রয়েছে। ভারত কোনোভাবেই একতরফাভাবে এটি বাতিল করতে পারে না।

পিটিআই নেতা ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ আলী জাফর বলেন, চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। তিনি বলেন, পানি মানুষের মৌলিক অধিকার। পাকিস্তানের পানি সরবরাহ বন্ধ করার যে কোনো চেষ্টা যুদ্ধের শামিল।

আলোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here