এম জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম, ছাত্র জনতার রক্তে রঞ্জিত ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া এবং অন্তবর্তী সরকারের ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার গ্রাম-গঞ্জে ও নগরে এখনও দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও ফ্যাসিবাদের দোসররা। তাদের বিরুদ্ধে অনেকের নামে এবং অজ্ঞাত নামে আনোয়ারা থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হলেও মাত্র গুটিকয়েক ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও অর্থ পাচারকারী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ঘনিষ্ঠ অনেকেই এখনো গ্রামে ও নগরে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
এমনকি তারা পুনর্বাসিত হতে বিএনপির রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের সাথে গোপনে লিয়াজো করছেন। আবার অনেকে অন্তবর্তী সরকারের বর্তমান অবস্থার অবনতি ও দেশকে অস্থিতিশীল করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ এবং তাদের দোসরদের এসকল আলোচিত নেতা কর্মীদের মধ্যে রয়েছেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বরুমছড়া গ্রামের তৌহিদুল হক চৌধুরী, আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বটতলী গ্রামের আবদুল মান্নান চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বিলপুর গ্রামের আবুল কালাম প্রকাশ কালাম চেয়ারম্যান, আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বিলপুর গ্রামের জাফর উদ্দিন প্রকাশ জাফর কোম্পানী, আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি বারখাইন গ্রামের এস এম আলমগীর চৌধুরী, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির পাট ও বস্ত্র বিষয়ক সম্পাদক দক্ষিণ শোলকাটা গ্রামের আশীষ কুমার সিংহ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক বরুমছড়া গ্রামের আজিজুল হক নসু, আনোয়ারা উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক গুয়াপঞ্চক গ্রামের শওকত ওসমান, আনোয়ারা উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি রাসেল, আনোয়ারা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি বরুমছড়া গ্রামের আলী আকবর, আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি পশ্চিম বারখাইন গ্রামের আবু জাফর, আনোয়ারা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সমিতির (বিআরডিবি) সাবেক চেয়ারম্যান চাতরী গ্রামের ইয়াকুব আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যান বিষয়ক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন মুরাদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পরৈকোড়া ইউনিয়নের জাফর ইকবাল তালুকদার প্রকাশ ইন্সুরেন্স জাফর, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শিলাইগড়া গ্রামের রিদুয়ানুল হক রহিম। এছাড়াও উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
তাছাড়াও আত্মগোপনে রয়েছে আনোয়ারা উপজেলার ১১ ইউপি চেয়ারম্যান। উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরকারবিরোধী কর্মকান্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন, বিলপুর গ্রামের আবুল কালাম প্রকাশ কালাম চেয়ারম্যান, বিলপুর গ্রামের জাফর উদ্দিন প্রকাশ জাফর কোম্পানি, শিলাইগড়া গ্রামের বোরহান উদ্দিন মুরাদ, শিলাইগড়া গ্রামের রিদুয়ানুল হক রহিম, কৈখাইন গ্রামের নাজিম উদ্দীন সুজন।
এ বিষয়ে আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনির হোসেন বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে যেসকল নেতা-কর্মীরা ক্ষমতার অপব্যবহার ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করেছে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অধিকাংশ নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে যাওয়ার কারণে আসামীদের গ্রেফতার করতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। ওসি মনির হোসেন বলেন, ফ্যাসিবাদের দোসরদের গ্রেফতার করতে প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
এ ব্যাপারে আনোয়ারা- বাঁশখালি ও চন্দনাইশে দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সোহানুর রহমান সোহান বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলে দুর্নীতিবাজ- অত্যাচারী নেতা-কর্মীদের তালিকা আছে। তাদেরকে গ্রেফতার করতে প্রয়োজনে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি