জাতিসংঘে ভারতকে তুলোধুনো করল পাকিস্তান

0
54
জাতিসংঘে ভারতকে তুলোধুনো করল পাকিস্তান
জাতিসংঘে ভারতকে তুলোধুনো করল পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

টানা বেশ কয়েকদিনের হামলা, পাল্টা হামলা এবং উত্তেজনার পর সম্প্রতি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান। উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা নিয়মিত একে-অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং যুদ্ধবিরতির মেয়াদও বাড়াচ্ছেন।

সামরিক উত্তেজনার পারদ আপাতত কমলেও ভারত সিন্ধু নদের পানি চুক্তি স্থগিত করায় উভয় দেশের সম্পর্কে এখনও উত্তাপ বজায় রয়েছে এবং উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে উত্তপ্ত মন্তব্য করছে। এমন অবস্থায় পানি চুক্তি স্থগিতে জাতিসংঘে ভারতকে তুলোধুনো করেছে পাকিস্তান।

দেশটি বলেছে, ভারতের পানিবিষয়ক পদক্ষেপে বিপদে পড়েছে কোটি কোটি মানুষ। এমনকি এটিকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের হিসেবেও উল্লেখ করে ইসলামাবাদ। ২৫ মে রবিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভারত একতরফাভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের পাশাপাশি ২৪ কোটি মানুষের অস্তিত্বের জন্য হুমকি তৈরি করেছে বলে জাতিসংঘকে সতর্ক করেছে পাকিস্তান।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘে ‘সশস্ত্র সংঘাতে পানিসম্পদ সুরক্ষা’ বিষয়ে আয়োজিত এক বৈঠকে পাকিস্তান এই উদ্বেগ জানায়। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানায়, যেন এমন মানবিক বিপর্যয় বা আঞ্চলিক অস্থিরতার দিকে না ঠেলে দেয়, সে বিষয়ে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

জাতিসংঘে পাকিস্তানের ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি উসমান জাদুন বলেন, “এটি আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার আইন, চুক্তির আইন এবং রীতিনীতিভিত্তিক আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।”

তিনি বলেন, “আমরা ভারতের এই বেআইনি ঘোষণা — সিন্ধু চুক্তিকে কার্যত স্থগিত করার — তীব্র নিন্দা করছি। আমরা ভারতের কাছে জোর দাবি জানাই, তারা যেন আইনি বাধ্যবাধকতা মেনে চলে এবং পাকিস্তানের জন্য জীবনরেখাসম এই নদীগুলোর পানির প্রবাহ থামানো, ঘুরিয়ে দেওয়া বা বাধা দেওয়ার মতো কোনও পদক্ষেপ না নেয়। পাকিস্তান এ ধরনের পদক্ষেপ কখনোই মেনে নেবে না।”

উল্লেখ্য, ভারতের শীর্ষ নেতৃত্বের কিছু মন্তব্য উদ্বেগজনক। উদাহরণস্বরূপ, ‘পাকিস্তানিদের না খাইয়ে মারার’ মতো মন্তব্য ‘বিকৃত ও বিপজ্জনক মানসিকতা’র পরিচায়ক।

এছাড়া জাতিসংঘের এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে পাকিস্তান বিশ্বজুড়ে একটি ঐকমত্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে কেউ পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে।

উসমান জাদুন নিরাপত্তা পরিষদকে এই ইস্যুতে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উচিত এমন পরিস্থিতিগুলোর ওপর নজর রাখা, যেখানে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে শান্তি ও নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে বা মানবিক বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।”

মূলত পাকিস্তানের এদিনের বক্তব্যে তিনটি বিষয় বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়। সেগুলো হচ্ছে— আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুসারে, পানি সম্পদ বা এর পরিকাঠামোতে আক্রমণ নিষিদ্ধ এবং পানি সরবরাহ বন্ধ করা আন্তর্জাতিক রীতিনীতির পরিপন্থি। সব পক্ষকে এমন সব পদক্ষেপ এড়িয়ে চলতে হবে, যা মানবিক বিপর্যয় ঘটাতে পারে। পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করাটা গ্রহণযোগ্য নয় এবং এর ফলে অঞ্চলজুড়ে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়।

উসমান জাদুন বলেন, “এটা দুঃখজনক যে— একটি দেশ পানিকে এখন কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।”

আলোকিত প্রতিদিন/২৫মে ২০২৫/মওম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here