পুলিশের স্বেচ্ছাচারিতায় ধর্ষিতার মামলা রেকর্ড হচ্ছে না

0
52
ক্লিপটন, গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশে বহুবার বিপ্লব ও প্রতি বিপ্লব ঘটেছে , প্রতিটা বিপ্লব ও প্রতি বিপ্লবের উদ্দেশ্যই ছিল সুন্দর একটি দেশ সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা নাগরিক নিরাপত্তা, সর্বোপরি জনগণের ন্যায্য অধিকার কে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করা।
বাংলাদেশের যতবারই বিপ্লব বা প্রতি বিপ্লব ঘটেছে , প্রতিবারই কোন না কোন বিশ্বাসঘাতক, জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে,  দরুন আমরা এখনো পরিপূর্ণভাবে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত, সর্বোপরি রাজনীতিতে স্বার্থপর নেতা ও পুলিশের দুর্নীতির কারণে আমরা সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, সন্ত্রাসী বিশ্বাসঘাতক দুর্নীতি পরায়ণ স্বার্থপর নেতাদেরকে নিয়ে আজকে না হয় কথা নাই বলি, কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের কে নিয়ে কথা বলা যেতেই পারে, যেসব অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার কারণে সাধারণ জনগণের ভোগান্তির শেষ নেই, ঐরকম পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন দারুস সালাম থানার ওসি মনিরুল ইসলাম, স্থানীয়ভাবে এই মনিরুলের বিরুদ্ধে অজস্র অভিযোগ রয়েছে, বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবে ছাত্র হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতার না করা আওয়ামি লীগকে আশ্রয় দেয়া সহো এ রকম অনেক অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
আমরা আজকে সেই অভিযোগের ব্যাপার নিয়েও কোন কথা বলবো না, আমাদের কথা হচ্ছে একজন ধর্ষিতা বিচার চাইতে গিয়েছিল ওসি মনিরুলের কাছে কিন্তু তার গাফিলতির কারণে এখন পর্যন্ত জিডি বা অভিযোগ কোনটাই গ্রহণ হয়নি, মামলা তো দূরের কথা, আজ তিন দিন পার হয়ে যাচ্ছে ধর্ষণের আলামতের প্রতিটা চিহ্নই বিলীন হয়ে যাচ্ছে শুধু একমাত্র ওসি মনিরুলের কারণে ।
উত্তরা থানা যোগাযোগ করলে ওসি সাহেব পরিপূর্ণ ঘটনায় বিবরণ লিখে রাখেন এবং তিনি পরামর্শ দেন দক্ষিণ খান থানায় যোগাযোগ করতে, যেহেতু ঘটনার সাথে জড়িত এলাকা দক্ষিণখান থানার আওতাভুক্ত, ভুক্তভোগী দক্ষিণখান থানায় যান, সেখানে পরিপূর্ণ ঘটনা সেকেন্ড অফিসার লিখে রাখেন এবং উনাকে পরামর্শ দেন ঘটনার সূত্রপাত যেহেতু দারুস সালাম থানা থেকে তাই মামলাটা দারুস সালাম থানাতেই করতে হবে, উনি পুরো ঘটনা লিখে রাখেন এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য প্রতিশ্রুতি দেন।
ভুক্তভোগী চলে আসে দারুস সালাম থানায়, দারুস সালাম থানার ওসি সাহেব, ভুক্তভোগীদেরকে দেখামাত্রই ক্ষিপ্ত হয়ে যান তিনি, কি কারনে ক্ষিপ্ত হন তা জানা যায় না, তাৎক্ষণিকভাবে জিডি অভিযোগ কোনটাই গ্রহণ করেননি সে, মামলা তো দূরের কথা, উল্টা ক্ষিপ্ত হন ভুক্তভোগীর উপর, শুধু তাই নয় ভুক্তভোগী কে ধমকা ধমকি করে তার অভিযোগকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন, দারুস সালাম থানার ওসি মনিরুল তার মনগড়া কথা লিখে দিতে বলেন মুনশি কে, মুন্সী অভিযোগ লিখে দেন এবং বলেন যে এই অভিযোগ দক্ষিণখান হবে, আপনারা সেখানে চলে যান এভাবেই একজন প্রতারণা শিকার ধর্ষিতা নারী থানার বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছে কিন্তু কোন বিচার তিনি পাচ্ছে না ।
কতদিন পর্যন্ত এই ধর্ষণের আলামত শরীরে উপস্থিত থাকে? একজন মেয়ে মানুষ কত দিন গোসল না করে থাকতে পারে? বর্তমান এই গরমেও মেয়েটি গোসল না করে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তিনি। কারণ গোসল করলে যদি আলামত নষ্ট হয়ে যায় এই ভয়ে, আর কতদিন সে গোসল না করে থাকবে, আর এই ধর্ষণের আলামত যদি নষ্ট হয়ে যায় এজন্য দায়ী কে?
ঘটনার শুত্রপাত যেখান থেকে, পরকীয়া প্রেম মোবাইল ফেসবুকের মাধ্যমে, ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে, প্রতারকের বিভিন্ন কথার ছলে সে বিবাহিত মহিলাটি তার স্বামী সন্তান রেখে ঘর থেকে নগদ তিন লক্ষ টাকা, সাড়ে চার ভরি স্বর্ণ ও দামি কাপড়-চোপড় সহ ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন, পরে প্রতারক প্রেমিকের হাত ধরে চলে যান দক্ষিণ খান, সেখানে যাবার পরই ভুক্তভোগী এই নারী বুঝতে পারেন সে প্রতারণার শিকার হচ্ছে, তাকে ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল করা হয় এবং যৌন ব্যবসা করার জন্য বারবার চাপ প্রয়োগ করতে থাকে প্রতারক, ভুক্তভোগী রাজি না হলে তাকে বেল্ট দিয়ে পিটায়, তার নিয়ে আসা সকল টাকা-পয়সা স্বর্ণ অলংকার ছিনিয়ে নেয় প্রতারক প্রেমিক, প্রতিনিয়ত নির্যাতনের মাত্রা বাড়তেই থাকে, এর মধ্যে পার হয়ে যায় বিগত দুই মাস।

একদিন সুযোগ পেয়ে ভুক্তভোগী সেই নারী প্রতারকের আস্তানা থেকে পালাইতে সক্ষম হয়, ঘর থেকে বেরিয়ে আজমপুর চলে আসে এবং তার স্বামীকে ফোন দেয়, কান্নাকাটি করে তাকে উদ্ধার করার জন্য বলে, ভুক্তভোগির স্বামী তাৎক্ষণিক একজন সাংবাদিককে সাথে নিয়ে চলে যায় উত্তরা আজমপুর, উত্তরা আজমপুর গিয়ে তার স্ত্রীকে বীভৎস অবস্থায় পায়, সাংবাদিক পাওয়া মাত্র মুহূর্তের মধ্যে মোবাইলে তার ঘটনাটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ভিডিও করে রাখেন, এরপর সাথে সাথে ঢুকে আজমপুর বাস স্ট্যান্ডের সাথেই উত্তরা থানায় যায়, সেখানে ওসি সাহেবকে সবকিছু জানায় তিনি, ওসি সাহেব পরিপূর্ণ ঘটনা শুনেন লিখে রাখেন, যেহেতু ঘটনাস্থল দক্ষিণখান থানায় , তাই উত্তরা থানার ওসি সাহেব দক্ষিণ খান থানায় যোগাযোগ করতে বলেন, এবং উনি এও বলে দেন, সম্ভবত মামলাটি দারুস সালাম থানাতে হবে, যেহেতু দারুস সালাম থানা থেকেই ভুক্তভোগী প্রতারণা শিকার, ভুক্তভোগী ওই অবস্থাতেই চলে যান দক্ষিণখান থানায়, দক্ষিনখান থানার ওসি সাহেব দেখা মাত্র ভুক্তভোগির সকল অভিযোগ লিখে রাখেন , এবং বলেন আপনারা আপনাদের দারুস সালাম থানায় যান সেখানে গিয়ে মামলা দায়ের করেন এবং হাসপাতালে রিপোর্ট সংগ্রহ করেন অতি দ্রুত, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব আপনাদেরকে, ভুক্তভোগীকে আশ্বস্ত করে দারুস সালাম থানায় পাঠিয়ে দেন, সাথে সাথে রওনা হয়ে যায় ভুক্তভোগী দারুস সালাম থানায়, যেটা তার নিজ এলাকা, এই থানায় প্রবেশ করে ডিউটি অফিসারের নিকট ঘটনার বর্ণনা দেন ভুক্তভোগী, ঘটনা শুনে উনি বলেন, এটাতো মামলা অবশ্যই হবে, তবে ওসি স্যার এখন নেই, স্যার আসুক, কিছুক্ষণ পর ওসি সাহেব থানায় প্রবেশ করে ভুক্তভোগীকে দেখা মাত্রই চটে যান, এবং বিভিন্ন তালবাহানা করতে থাকেন, ভুক্তভুগিকে ধমকিয়ে অভিযোগ পাল্টাতে বলেন, সেকেন্ড অফিসারকে ডেকে বলেন, অভিযোগ লিখে দক্ষিণ খান থানায় পাঠিয়ে দিন সেখানেই মামলা হবে, আর ভুক্তভোগী এভাবেই ঘুরতে থাকে থানার বারান্দায় বারান্দায়, আজও কি ধর্ষণের স্বীকার  এই নারী সুষ্ঠ বিচার পাবে।

আলোকিত প্রতিদিন/এপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here