রানা ইস্কান্দার রহমান:
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ভাসুরের কুপ্রস্তাবে ছোট ভাইয়ের বউ রাজি না হয়ে প্রতিবাদ করায় ছোট ভাইয়ের বউয়ের পরিবারের লোকজনকে মারপিট করে আহত ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত প্রায় ০৩ বছর পূর্বে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মৃত আব্দুল আজিজের মেয়ে রাবেয়া বেগমের সংঙ্গে একই থানার রাখালবুরুজ ইউ.পি-র লোনতলা গ্রামের মৃত মোজাফ্ফর আলীর ছেলে নাজু মিয়ার বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে কর্মক্ষেত্রে সারাদিন ব্যাপী বাহিরে অবস্থান করে এবং রাতে বাড়ীতে ফেরে। সেই সুযোগে ছোট ভাইয়ের বউয়ের উপর বড় ভাসুর সাজু মিয়ার কুদৃষ্টি পড়ে।
গত প্রায় ০৬ মাস যাবৎ বড় ভাসুর সাজু বিভিন্ন সময় রাবেয়া’কে নানাভাবে ফুসলাইয়া, কুপ্রস্তাব দিয়া আসিতে থাকে। ইহাতে ছোট ভাই বউ রাজী না হইয়া বিষয়টি তাহার স্বামী নাজু মিয়াকে অবগত করলেও স্বামী বড় ভাইয়ের কুপ্রস্তাবের বিষয়টি এড়িয়ে চলে। পরবর্তীতে গত ১৫ই জুন ২০২৫ তারিখে বাড়িতে কেউ না থাকার সুবাদে বড় ভাসুর সাজু ছোট ভাইয়ের বউকে কুপ্রস্তাব দিয়া হাত ধরে টেনে নিয়ে ঘরে যেতে চাইলে ভাসুরের কু-প্রস্তাবে ছোট ভাইয়ের বউ রাজি না হয়ে তাৎক্ষনিক বোন রাজিয়া বেগম সহ দুলা ভাই সোনা মিয়াকে বিষয়টি জানালে বোন-দুলা ভাই বিষয়টি নিয়া কথা বলার জন্য বোন জামাই নাজু এবং সাজুর বাড়ীতে গেলে রাবেয়া, বোন রাজিয়া ও দুলা ভাইকে লাঠি-সোটা দ্বারা মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথারীভাবে মারপিট করিয়া ছেলা-ফোলা, বেদনাদায়ক জখম করে এবং তাহাদের বসত ঘরে আটক করিয়া রাখে। মোবাইল ফোনে ঘটনার সংবাদ পাইয়া ফুফাতো ভাই সোহেল রানা সহ তাহার পিতা কফিরুল, দাদী কবিলা, চাচাতো ভাই রবিউল, আপেল ও ফুফাতো ভাই আসাদুল বেলা অনুমান ১১.৪০ ঘটিকায় বোন জামাই নাজু এবং বোনের ভাসুর সাজুর বাড়ীর ভিতরে উঠানে যাওয়া মাত্রই রানু মিয়ার হুকুমে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে মৃত মোজাফ্ফর আলীর ছেলে সাজু মিয়া (৩৫), রিফাত ইসলাম (১৯), নাজু মিয়া (২৩), লাল মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (৩৫), রানু মিয়ার ছেলে এনামুল হক (৪০), স্বামী মৃত মোজাফ্ফর আলীর স্ত্রী আলতা বেওয়া (৪৫), রানু মিয়া (৬৫),সহ অজ্ঞাতনামা ৫-৭ জন পরস্পর যোগসাজসে হাতে লাঠি-সোটা, লোহার রড, ধারালো ছোরা, হাসুয়া, রাম দা ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়া সজ্জিত হয়ে অতর্কিতভাবে আক্রমণ করতঃ তাদেরকে এলোপাথারীভাবে মারপিট করিতে থাকে। রানু মিয়ার হুকুমে, সাজু মিয়া তাহার হাতে থাকা ধারালো রাম দা দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে কফিরুল ইসলাম মাথায় মধ্যভাগে স্বজোরে চোট মারিয়া হাড়কাটা রক্তাক্ত গুরুতর জখম করে ফলে ০৭টি সেলাই লাগিয়াছে এবং দুলাল মিয়া তাহার হাতে থাকা ধারালো ছোরা দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় স্বজোরে চোট মারিলে আত্মরক্ষার্থে বাম হাত দিয়া ঠেকাইলে উক্ত চোট বাম হাতের বৃদ্ধা ও তর্জনী আঙ্গুলের মধ্যভাগে লাগিয়া হাড়াকাটা রক্তাক্ত গুরুতর জখম হয় ০৩টি সেলাই লাগিয়াছে।
তখন দাদী কবিলা বেগম আগাইয়া গিয়া জখমীদের উদ্ধারের চেষ্টা করিলে এনামুল হক (৪০) দাদীর চুলের মুঠি ও পড়নের কাপড় ধরিয়া টানা হেচড়া করিয়া ছিড়িয়া বিবস্ত্র করতঃ শ্লীলতাহানী ঘটায় এবং স্বজোরে তলপেটে লাথি-গুড়ি মারপিট করিলে মাটিতে লুটাইয়া পড়িয়া অজ্ঞান হইয়া যায়।
তখন সোহেল সহ চাচাতো ভাই আপেল, রবিউল ও ফুফাতো ভাই আসাদুল আগাইয়া গিয়া জখমীদের উদ্ধারের চেষ্টা করিলে রিফাত ইসলাম (১৯), নাজু মিয়া (২৩), এনামুল হক (৪০) সহ অজ্ঞাতনামা ৫/৭ জস তাহাদের হাতে থাকা লাঠি-সোটা, লোহার রড দ্বারা পূর্বের জখমীদেরকে সহ অন্যান্যদেরকে মাথা, বুকে, পাজরে, পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথারীভাবে আঘাত করিয়া ছেলা-ফোলা, কালোশিরা, রক্তাক্ত বেদনাদায়ক জখম করে জখমীদেরকে তাহাদের বাড়ীতে আটক করিয়া রাখিলে স্থানীয় লোকজন জখমীদের পরিবারের বাড়িতে খবর দিলে বাছের আলী (৪৫), কবিরুল ইসলাম (৪৪), খায়রুল ইসলাম (৩৬), সহ স্থানীয় ইউ.পি সদস্য রশিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়া জখমীদেরকে উদ্দার করিয়া অচেনা অটো ভ্যান যোগে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়া চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। জখমীরা প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করে এবং জখমী কফিরুল ও দাদী কবিলা বেগম এর আবস্থা গুরুতর আশংকা জনক হওয়ায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলে জখমী কফিরুল ইসলামের ছেলে সোহেল রানা (২৩) বাদী হয়ে ১. সাজু মিয়া (৩৫), ২. মোঃ রিফাত ইসলাম (১৯), ৩. মোঃ নাজু মিয়া (২৩), সর্ব পিতা মৃত মোজাফ্ফর আলী, ৪. মোঃ দুলাল মিয়া (৩৫), পিতা মোঃ লাল মিয়া, ৫. মোঃ এনামুল হক (৪০), পিতা মোঃ রানু মিয়া, ৬. মোছাঃ আলতা বেওয়া (৪৫), স্বামী মৃত মোজাফ্ফর আলী, ৭. মোঃ রানু মিয়া (৬৫), পিতা মৃত অজ্ঞাত, সর্ব সাং-লোনতলা (উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পার্শ্বে), ইউ.পি- রাখালবুরুজ, থানাঃ গোবিন্দগঞ্জ, জেলাঃ গাইবান্ধা’গণ সহ অজ্ঞাতনামা ৫/৭ জনকে আসামী করে তাদের বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানায় এজাহার দায়ের করেন।
গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বুলবুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/১৮জুন ২০২৫/মওম