নিজস্ব প্রতিবেদক, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার বিকেলে উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টর এলাকায় নিজ বাসা থেকে কে এম নুরুল হুদাকে আটক করে পরে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পুলিশ বলছে, কিছু লোক তাঁর বাসায় গিয়ে ‘মব’ সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ তাঁকে থানায় নিয়ে আসে।
অন্যদিকে গতকাল রাতে সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকেও গ্রেপ্তার করতে রাজধানীর বারিধারা এলাকাসহ কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে তাঁকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে রাত ১টার দিকে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মো. নাসিরুল ইসলাম। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা রাতে বারিধারা এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডি মনিরুল মওলাকে গ্রেপ্তার করেছি।’
এর আগে রাত ৮টার দিকে নাসিরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কে এম নুরুল হুদাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
সোমবার (আজ) সকালে তাঁকে শেরেবাংলানগর থানায় হস্তান্তর এবং সেখান থেকে আদালতে নেওয়া হতে পারে।
এর আগে গতকাল দুপুরে শেরেবাংলানগর থানায় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়িত্বে থাকা তিন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করে বিএনপি। এর কয়েক ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় উত্তরায় কে এম নুরুল হুদার বাসায় কিছু লোক উপস্থিত হয়ে তাঁকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাতে থাকে।তাতে দেখা যায়, একদল লোক ‘মব’ সৃষ্টি করে ডিম ছুড়ে মারা, গলায় জুতার মালা পরানোসহ তাঁকে নানাভাবে হেনস্তা ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
কে এম নুরুল হুদা প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকাকালে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সে সময় টিআইবির গবেষণায় ওই নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের তথ্য উঠে আসে।মব সৃষ্টি করে উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী সবাইকে চিহ্নিত করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে সরকার।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদাকে একটি সুনির্দিষ্ট মামলায় উত্তরা থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ সময় ‘মব’ কর্তৃক সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ও অভিযুক্তকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তির ওপর আক্রমণ ও তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা বেআইনি, আইনের শাসনের পরিপন্থী ও ফৌজদারি অপরাধ। ‘মব’ সৃষ্টি করে উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী সবাইকে চিহ্নিত করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি