দুলাল হোসেন:
বগুড়ার শাজাহানপুরে গৃহবধু সুমাইয়ার রহস্যজনক ফাঁসির ঘটনা যেন ধুম্রজালের সৃস্টি হয়েছে। গত ২৫শে জুন উপজেলার আড়িয়া রহিমাবাদ এলাকার ওয়াহেদ আলীর একটি ভাড়া বাসা থেকে গৃহবধু সুমাইয়া খাতুন(৩২) নামের গলায় ওড়না পেঁচানো ফাঁসি দেওয়া অর্ধগলিত ২/৩ দিনের মরদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ। জানাগেছে, গত ৪ মাস পূর্বে রাজু মিয়া(৩৭) পিতা: হায়দার আলী এবং রাকিবুল ইসলাম পিতা: মতিউর রহমান উভায় উপজেলার খরনা ইউনিয়নের ধাওয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রাজু মিয়া নিজেকে স্বামীও রাকিবুলকে ভাতিজা পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেন ওয়াহেদ আলী কাছে। তারা সেখানেই বসবাস করছিল। অন্যদিকে ওয়াহেদ আলীর স্ত্রী জানান তারা বেশিভাগ সময় দিনের বেলা ১১টা থেকে ১২টায় ঘুম থেকে উঠত। তাদের সাথে আমাদের দেখা-সাক্ষাৎ কম হতো। এখানে তারা দুইজন ছাড়া অন্য কেউ যাতায়াত করতো না। রাকিবুল হাটবাজার করে দিত তাদের। এছাড়া ঘরের ভিতরে আওয়াজও রান্না বাড়া এবং পাতিলে শব্দ শোনা যেত। বেশিভাগ সময় তারা ঘরের ভিতরেই থাকতো। সে আরও জানান গত ২৩জুন তাদের সাড়া শব্দ না পেয়ে ডাকাডাকি করলে কোন ধরনের শব্দ না পেয়ে পরের দিন ২৪ জুন স্বামী ওয়াহেদ আলী কে জানালে সে রাত্রি ১০টায় বাড়িতে ফিরে আবারও তাদের ডাকা-ডাকি করে সাড়া না পেয়ে পরদিন সকালে ওই ওর্য়াডে মেম্বার তাজুল ইসলামকে জানালে সেখানে আরও প্রতিবেশিদের জমায়েত হতে থাকে। এক পর্যয়ে জানালার ফাঁক দিয়ে সুমাইয়ার গলায় ওড়না পেঁচানো ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। পরে থানা পুলিশকে জানানো হলে মরদেহ উদ্ধার করে হালসুরৎ এর জন্য মেডিকেলে না পাঠিয়ে থানা
এলাকা তার মরদেহ বেশকিছু সময় ভ্যানের উপর রাখাতে দেখা যায়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের হালসুৎে রির্পোট সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ প্রশাসন জানান তেমন কিছুই অনুমান যায়নি তবে ফাঁসির ঘটনায় আমরা অপমৃত্যু হিসেবে ইউডি মামলা নিয়েছি। হালসুরৎ রির্পোট আসলে বিস্তারিত জানা যাবে। এঘটনা নিয়ে এলাকায় যেন
ধুম্রজালের সৃস্টি হয়েছে।
আবার লাশটিকে গোসল এবং কাফনের কাপড় পরনো ব্যাক্তি জানায়, ভাই ওর শরিরের ওপরে চরম ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। সে আরও বলে আমার কাছে
মনে হয় এসিড মেরেছে। প্রচুর পরিমান ক্ষতচিহ্ন রয়েছে তাহাছাড়া বুকে এবং গোপন স্থনেও আঘাতের চিহ্ন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানাগেছে, এটি আত্মহত্যা নয় মহাপরিকল্পনা করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। লাশটি ময়না তদন্ত শেষে বাড়িতে নিয়ে আসলে বিভৎস চেহারা আর র্দূগন্ধে পাশে কেউ যেতে পারেনি। শরিরের ভিতরে বিভিন্ন অংশে ক্ষতের দাগ রয়েছে। জানাযা নামাজে মুখে মাক্স পরিয়ে দাফন করা হয়েছে। মরদেহের আকৃতিরও বিভৎস চেহারা দেখে দাফনের জন্য কবরে নামতেও নারাজ ছিল অনেকে। এখন ভয়ে এবং আতংঙ্ক নিয়ে দিন কাটাচ্ছে পুরো পরিবারের লোকজন।
এর আগে, ছোটভাই কাওছার হোসেন বোন সুমাইয়ার গতিবিধি লক্ষ্যকরে তাকে শাষনের চেষ্ঠা করলে অভিযুক্ত দুই ব্যাক্তি রাজুও রাকিবুলসহ ৪/৫ মিলেমিশে রাত্রি ১২টার পরে শয়ন ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় কাঠের বাটামও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ী মার শুরু করে। এতে করে ভাই কাওছার হোসেন এর ডান হাত ভেঙ্গে দিয়ে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসী গ্রুপ। পরের দিন ২৮/০২/২৫ইং তারিখে থানায় অভিযোগ দয়ের করে ভুক্তভোগি কাওছার।
উক্ত অভিযোগটি এসআই গোলাম মোস্তফার তদন্তের দায়িত্ব পেলে সে বাদির কাছে টালবাহানা করতে থাকে। ওই অভিযোগ যেভাবে দেওয়া ছিল সেভাবেই ফেলে রাখা হয়েছে বলে জানাযায়। সেখানে বাদিকে উল্টা বলা হয়েছে মটর সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে তার হাত ভেঙ্গেছে। ন্যায়ের জন্য তার শেষ আশ্রয়স্থল ছিল পুলিশ। কিন্তু না এখানেই শেষ নয় সুমাইয়ার লাশ উদ্ধারের ২দিন আগে বাদি কাওছারকে দিয়ে জোরপূর্বক অভিযোগটি প্রত্যাহার করিয়ে নেয়। ঠিক দুদিন পরে ওড়না পেঁচানো
গলায় ফাঁসি দেওয়া লাশ উদ্ধার হয়। পরিবার এবং এলাকাবাসি এর সঠিক
বিচার চায়।
আলোকিত প্রতিদিন/০৮ জুলাই ২০২৫/মওম