নবীনগরের কচুর বাম্পার ফলনে কৃষক খুশি 

0
37
নবীনগরের কচুর বাম্পার ফলনে কৃষক খুশি 
নবীনগরের কচুর বাম্পার ফলনে কৃষক খুশি 
মোঃ আনোয়ার হোসেন:
মেঘনা-তিতাস-বুড়ি নদীর অববাহিকায় অবস্থিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সর্ববৃহৎ উপজেলা নবীনগরে ২০২১ সাল থেকে কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্প এবং ফ্ল্যাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিসট্যান্স প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ভাবে উন্নত জাতের কচু আবাদ করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। প্রদর্শনীভুক্ত কৃষকদের দেওয়া হয় উন্নত জাতের বারি পানি কচু-১ (লতিরাজ),  বারি পানি কচু-২ সহ স্থানীয় উন্নত জাতের চারা, সার, জৈবসার সহ অন্যান্য সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ। নবীনগর উপজেলায় চলতি মৌসুমে শতভাগ বাণিজ্যিক ভাবে কচু ও লতির  আবাদ হয়েছে ৪০ হেক্টর জমিতে। হেক্টরে প্রতি ১৫ থেকে ২৫ টন পর্যন্ত লতি উৎপাদিত হয়, সময় ভেদে প্রতিি টন লতি ৩০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। কাইতলা (দ.) ইউনিয়নের গোয়ালি গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান- এক বিঘা জমিতে লতিরাজ কচু আবাদ করছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার ও প্রশিক্ষণ পেয়েছি। আমি প্রতি সপ্তাহে লতি বিক্রি করছি দশ হাজার টাকার। লতি কচু লাভ জনক ফসল, অনেকেই কচুর চারা নিচ্ছে। ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের জাফরপুর গ্রামের কৃষক সেলিনা বেগম জানান- আমি আর আমার স্বামী মিলে এ বছর লতিরাজ কচু আবাদ করছি। আবাদের দুই মাস পর থেকে প্রতি সপ্তাহে লতি সংগ্রহ করছি। এখন পর্যন্ত ৩ মাসে প্রায় ত্রিশ হাজার টাকা লতি বিক্রি করেছি। আবহাওয়া অনূকূলে থাকলে আরো পঞ্চাশ হাজার টাকা বিক্রি করা যাবে।  পৌরসভার নারায়ণপুর গ্রামের কৃষক সোহাগ খান, খোরশেদ মিয়া এবং বিউটি আক্তার ফ্রিপ প্রকল্পের আওতায়  নারিকেলি কচু আবাদ করেছেন। তারা জানান- এটি স্থানীয় জাত। এরা কাঠ হিসেবে বিক্রি হয়। এক বিঘা জমিতে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কচু কাঠ হিসেবে বিক্রি করা যায়, যা গড়ে পাইকারি মূল্য হিসেবে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়- উপজেলার ইব্রাহিমপুর, বিটঘর, কাইতলা, পৌরসভাসহ অনেক গ্রামের মাঠেই  কচুর চাষ হয়েছে। ফসলটি বাণিজ্যিক ভাবে লাভজনক তাই কচু চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। কৃষকরা জানায়- প্রতি বিঘা জমিতে এ বছর ৮০-৮৫ মণ পর্যন্ত কচুর ফলন হয়েছে। এক বিঘা জমিতে আবাদে গড়ে খরচ হয় ৩০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা, খরচ বাদ দিয়ে লাভ হয় প্রায় লক্ষাধিক টাকা। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান- “নবীনগরে বর্ষার মৌসুমে স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় কচু আবাদ এখন বাণিজ্যিক ভাবে বাড়ছে। সরকারি ভাবে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় সহযোগিতা ও করা হচ্ছে। কচু একটি অর্থকরী সবজি। যেহেতু এটি উত্তোলন ক্রমান্বয়ে করা হয় ফলে বাজার দর নিয়ে কৃষক নিশ্চিন্ত থাকে”। কচু চাষ বর্তমানে নবীনগরের কৃষকদের জন্য একটি লাভজনক ও টেকসই কৃষি কার্যক্রম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উন্নত জাতের কচু চাষ, সঠিক পরিচর্যা ও বাজারজাত করণের মাধ্যমে নবীনগরের কৃষকরা তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি সাধন করতে পারছেন।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১০জুলাই ২০২৫/মওম 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here