দীর্ঘ ৩৭ বছরেও মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি, জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, দৌলতদিয়ায় প্রকাশ্যে মাদকের হাট!

0
48

সোহেল রানা চৌধুরী, মাদকের সর্গরাজ্য পরিচিত রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট। এখানে টাকা দিলেই মিলছে হিরোইন,ইয়াবা,বিদেশ মদ,ফেনসিডিল, গাঁজা’সহ সকল ধরনের মাদক। প্রতিদিন সকাল হলেই পুড়াভিটায় বসছে প্রকাশ্যে মাদকের হাট। ২০০-২৫০ জন মাদকসেবী হেরোইন কেনার জন্য সিরিয়াল দেয়। চলে সারদিন। শতাধিক কোটিপতি মাদক ব্যবসায়ীর বসবাস এখানেই। জানাযায়, ১৯৮৮ সালে দৌলতদিয়া যৌনপল্লিকে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার পর,এই স্থানের নামকরণ করা হয় পুড়াভিটা। শুরু হয় মাদক ব্যবসা। সেইথেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ৩৭ বছর যাবত এই স্থানে প্রকাশ্যে চলছে মাদক ব্যবসা। এই পুড়াভিটা এলাকা মাদকের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হওয়ার সুবাদে, এখন থেকে মাদারীপুর, ফরিদপুর,পাংশা,রাজবাড়ী,পাবনা,মানিকগঞ্জ ও ঢাকার সাভার’সহ অন্তত ২০টিরও অধিক জেলাতে হেরোইন পাইকারী বিক্রি হয়।

এনিয়ে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও পিন্ট মিডিয়া সংবাদ প্রকাশিত হলেও,বন্ধ হয়নি মাদক ব্যবসা। উল্টো দিনদিন বেড়েই চলেছে। এই মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বেড়েছে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। গত পাঁচ বছরে দৌলতদিয়াতে খুন হয়েছে অর্ধ শতাধিক। সর্বশেষ এই মাদক নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরধরে গত ২২শে জুন খুন হয় দৌলতদিয়ার যুবক নজরুল। দৌলতদিয়া তথা রাজবাড়ী জেলার মাদক ব্যবসা বন্ধের প্রতিবাদে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বুকে ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করেছে রাজবাড়ীর এক গুনি সাংবাদিক। কিন্তু তারপর থামছে না মাদক ব্যবসা। এতে অবশ্য কোন মাথা ব্যথা নেই, রাজবাড়ী জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের।

জেলার মাদক নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব এদের হাতে থাকলেও,এরা মাদক নিয়ন্ত্রণে সম্পুর্ন ব্যর্থ। লোকমুখে গুনজন রয়েছে, এই মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা বিশেষ সুবিধা নিয়ে, মাদক ব্যবসা রোধ না করে, উল্টো সহযোগীতা করেছেন। স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, পুড়াভিটা ও আশপাশের এলাকা দিয়ে সাধারন মানুষ চলাফেরা করতে ভয় পায়। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের ধরে না। অথচ সাধারণ মানুষ এখান দিয়ে হেঁটে গেলে তাদের দেহ তল্লাশির নামে হয়রানি করে। কখনও কখনও পকেটে মাদক দিয়ে জেল হাজতে পাঠায়।

গত ১৯শে জুন জবেদা বেগম নামে ৫০ ঊর্ধ্ব এক নারী তার আত্মীয়ের সন্ধানে পুড়াভিটা এলাকায় গেলে, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তাসহ কয়েক মিলে তাকে বিবস্ত্র করে দেহ তল্লাশিসহ মারপিট করে। এই ঘটনা ভুক্তভোগী ঐ নারী বাদী হয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এবিষয়ে রাজবাড়ী জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আবু আবদুল্লা জাহিদ এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে, তিনি মানবজমিনকে বলেন, আমরা নিয়মিত মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান করছি।

প্রশ্ন করা হয়েছিলো জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কেউকেউ বাড়তি সুবিধা নিয়ে মাদক বিক্রি করতে উৎসাহ দিচ্ছে। এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,আমার জানা নেই। এয়েন সরিষা মধ্যে ভুত। রাজবাড়ী জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাইলে ১ দিনের মধ্যে মাদক নিয়ন্ত্রণ ও বিক্রি বন্ধ করা সম্ভব। সেখানে দীর্ঘদিন ৩৭ বছরেও দৌলতদিয়া পুড়াভিটা এলাকা থেকে মাদক বিক্রি বন্ধ তো দুরের কথা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি। এতে আর বুঝতে বাকি থাকে না, আসলে কাদের ছত্রছায়ায় চলছে মাদক ব্যবসা।

আলোকিত প্রতিদিন/এপি 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here