Home আন্তর্জাতিক একই নারীকে বিয়ে করলেন দুই ভাই, তারা বলেন আমরা গর্বিত

একই নারীকে বিয়ে করলেন দুই ভাই, তারা বলেন আমরা গর্বিত

একই নারীকে বিয়ে করলেন দুই ভাই, তারা বলেন আমরা গর্বিত
একই নারীকে বিয়ে করলেন দুই ভাই, তারা বলেন আমরা গর্বিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতে শত শত মানুষের সামনে একই নারীকে বিয়ে করেছেন দুই ভাই। দেশটির হিমাচল প্রদেশের সিরমৌর জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। দুই ভাইকে বিয়ে করা কনে নিজের ইচ্ছাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।

ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে ২০ জুলাই রবিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিমাচল প্রদেশের সিরমৌর জেলার শিল্লাই গ্রামের এক ঐতিহ্যবাহী বিয়েতে একই নারীকে বিয়ে করেছেন দুই ভাই। তাদের নাম প্রদীপ এবং কপিল নেগি। পাত্রীর নাম সুনীতা চৌহান এবং শত শত মানুষের উপস্থিতিতে হট্টি উপজাতির বহু পুরোনো বহুগামিতা প্রথা মেনে এ বিয়ে হয়েছে।

মূলত তিন দিনব্যাপী এই বিয়ের উৎসব শুরু হয়েছিল গত ১২ জুলাই থেকে। কনে সুনীতা কুনহাট গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জানান, “আমি এই প্রথা সম্পর্কে জানতাম এবং নিজের ইচ্ছাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি আমাদের মধ্যে গড়ে ওঠা সম্পর্কের প্রতি আমার সম্মান।”

অন্যদিকে প্রদীপ বলেন, “এই বিয়ে নিয়ে আমরা গর্বিত। এটা গোপনে নয়, খোলামেলাভাবেই করেছি। সিদ্ধান্তটা ছিল পারিবারিক এবং সম্মতিপূর্ণ।” প্রদীপ বর্তমানে সরকারি চাকরি করছেন আর তার ছোট ভাই কপিল বিদেশে কর্মরত। কপিল জানান, “আমি বিদেশে থাকলেও এই বিয়ের মাধ্যমে আমাদের স্ত্রীকে ভালোবাসা, স্থিতি এবং সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আমরা সব সময় স্বচ্ছতার পক্ষে।”

এনডিটিভি বলছে, হট্টি সম্প্রদায় হিমাচল-উত্তরাখণ্ড সীমান্তবর্তী এলাকায় বাস করে। ২০২২ সালে তাদের তফসিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। হিমাচলের রাজস্ব আইন অনুযায়ী, এই বহুগামিতা প্রথাকে “জোড়িদারা” বলা হয় এবং এটি এখনো সেখানে আইনগত স্বীকৃতি পেয়ে থাকে।

শুধু ওই এলাকার বাদনা গ্রামেই গত ছয় বছরে এমন পাঁচটি বিয়ে হয়েছে। গ্রামের প্রবীণরা জানান, এক সময় হট্টি সম্প্রদায়ে এমন বহুগামী বিয়ে ছিল নিয়মিত ঘটনা। তবে নারীদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার, আর্থিক উন্নয়ন ও শহরমুখী প্রবণতার কারণে এসব বিয়ে এখন তুলনামূলকভাবে কম হচ্ছে। অনেক বিয়েই হচ্ছে গোপনে, তবে সামাজিকভাবে তা মেনে নেওয়া হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমির বিভাজন রোধ রাই এই ধরনের বহুগামী প্রথার মূল কারণ। হট্টি সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কুন্দন সিং শাস্ত্রী বলেন, “এই প্রথার উৎপত্তি হাজার হাজার বছর আগে। মূল উদ্দেশ্য ছিল, এক পরিবারের কৃষিজমি যাতে ছোট ছোট খণ্ডে ভাগ না হয়।”

তিনি আরও বলেন, “ভাইদের মধ্যে ঐক্য এবং সহযোগিতা বজায় রাখা, দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় কৃষিকাজ পরিচালনা করা এবং বড় পরিবারের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এই প্রথার মূল ভিত্তি। একই পাত্রীর সঙ্গে দুই বা ততোধিক ভাইয়ের বিয়ে এমনকি ভিন্ন মাতার ভাইদেরও এক পাত্রীর সঙ্গে বিয়ে— এটা স্বাভাবিক।”

আলোকিত প্রতিদিন/২০জুলাই ২০২৫/মওম 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here