আলোকিত ডেস্ক, জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় খাবারটুকুও পাচ্ছেন না ফিলিস্তিনের গাজাবাসী। না খেতে পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন তারা, অনেকের মৃত্যুও হচ্ছে। আজ শুক্রবার জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভ্যালের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় খুব কম পরিমাণে ত্রাণ ঢুকছে। যা লাখ লাখ মানুষের জন্য অপর্যাপ্ত। এ ছাড়া বোমারু বিমানের হামলা বন্ধ হয়নি। প্রতিদিন গাজাজুড়ে কোথাও না কোথাও হামলা চালাচ্ছে তারা। বহু মানুষ হতাহত হচ্ছেন সেখানে।
কিন্তু এর চেয়েও বড় সংকট এখন ক্ষুধা। রাইদ আল-আথামনা নামে গাজার এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘সারাদিন একটি কথা ভাবতে ভাবতেই কেটে যায়, আজ কী খাবো, কী খাওয়াবো পরিবারকে?’
এক সময় বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য গাজায় গাড়ি চালাতেন তিনি। ইসরায়েল বিদেশি সাংবাদিকদের আর গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে না, ফলে দীর্ঘদিন ধরে কোনো কাজ নেই আথামনার। ফোনে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমাদের এখানে কোনো খাবার নেই। রুটি নেই, সামান্য আটাটুকুও কিনতে পারছি না। যদি বা আটা পাওয়া যায়, তার ভয়ংকর দাম। আজ স্ত্রী এবং বাচ্চাদের জন্য একটু ডাল কিনতে পেরেছি। কিন্তু কাল ওরা কী খাবে, জানি না।’
আথামনার কথায়, ‘আমি নিজে দেখেছি, কীভাবে মানুষ রাস্তার ওপর অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছে।’
গত মে মাসে শেষবার আথামনার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল ডিডাব্লিউয়ের। সে সময় তিন মাসের ব্লকেড শেষ করে ইসরায়েল গাজায় ত্রাণের ট্রাক ঢুকতে দিয়েছিল। গাজার ২০ লাখ মানুষ এর ফলে বেঁচে যাবেন বলে সে সময় মনে হয়েছিল আথামনার। কিন্তু মাসদুয়েক পর সেই ধারণা বদলে গেছে তার। তিনি জানিয়েছেন, ‘পরিস্থিতি সত্যিই শোচনীয়। এক টুকরো রুটির জন্যও লড়াই করতে হচ্ছে। আমি আমার নাতি-নাতনিদের নিয়ে থাকছি। তারা সারাক্ষণ কাঁদছে খিদের জ্বালায়। কীভাবে ওদের মুখে একটু খাবার তুলে দেবো, সেই চিন্তাতেই প্রতিটি দিন কাটছে।’
আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য এবং ত্রাণবিষয়ক সংস্থাগুলো নিয়মিত গাজা নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করছে। তারা জানিয়েছে, গাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত চিন্তার। সেখানে খাবার, ওষুধ পৌছাচ্ছে না।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি