দারিদ্র্যের কারণে দত্তক দেওয়া শিশু উদ্ধার, ওসির উদ্যোগে মিলল নতুন জীবন
ঝিনাইগাতীতে অবৈ*ধ বালুর গাড়ি আটক করায় ইউএনও অফিস ঘেরাও
শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অপহরণ চক্রের মুলহোতা তোহা গ্রেফতা*র
টাঙ্গাইলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ক্যাব’র মতবিনিময় সভা
রাশিয়ার তৈরি ক্যানসারের টিকা সেপ্টেম্বরে পাওয়া যাবে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছর সেপ্টেম্বরেই মিলবে রাশিয়ার গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তৈরি ক্যানসারের টিকা। সংস্থাটির পরিচালক আলেক্সান্দার গিন্টসবার্গ সোমবার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা রিয়া নভোস্তিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রিয়া নভোস্তিকে গিন্টজবার্গ বলেন, “চিকিৎসাক্ষেত্রে এ টিকার ব্যবহার সংক্রান্ত অনুমোদনের আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ইতোমধ্যে আবেদন করেছি। সম্ভবত আগস্ট শেষ হওয়ার আগেই অনুমোদন দিয়ে দেবে মন্ত্রণালয়-এমনটাই আভাস পেয়েছি আমরা। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে চিকিৎসাক্ষেত্রে এই টিকা ব্যবহার করা সম্ভব হবে।”
রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে গামালিয়ার এই টিকাটি হবে বিশ্বের প্রথম ক্যানসারের টিকা। নতুন এই টিকাটি প্রস্তুত করা হয়েছে এমআরএনএ প্রযুক্তিতে। এমআরএনএ মূলত একপ্রকার প্রোটিন, যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কোনো বিশেষ রোগ বা অসুস্থতার বিরুদ্ধে প্রশিক্ষিত করে তোলে।
গিন্টজবার্গ জানান, যাদের ইতোমধ্যে ক্যানসার ধরা পড়েছে— তাদেরকে এই টিকা দেওয়া যাবে। টিকার মূল ওষুধ মানবদেহে প্রবেশের পর সেটি অল্প সময়ের মধ্যেই মানুষের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত করে তোলে। এই প্রশিক্ষিত প্রতিরোধী শক্তিই ক্ষতিকর ক্যানসার কোষগুলোকে প্রথমে শনাক্ত ও পরে ধ্বংস করে।
ক্যানসারের সাধারণত ৩ টি স্তর থাকে— প্রাথমিক, মধ্যম ও চুড়ান্ত। প্রাথমিক স্তরে এই টিকা সবচেয়ে বেশি কার্যকর। তবে মধ্যস্তরের ক্যানসার রোগীরাও এই টিকার মাধ্যমে উপকৃত হবেন বলে রিয়া নভোস্তিকে জানিয়েছেন গিন্টজবার্গ।
রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটিতে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা ৪০ লাখ এবং প্রতি বছর দেশটিতে ক্যানসারে আক্রান্ত হন প্রায় ৬ লাখ ২৫ হাজার রোগী।
গিন্টজবার্গ জানিয়েছেন, চলতি বছর আরও কয়েকটি ক্যানসারের ওষুধ এবং টিকার বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ রাশিয়ার অনেক সরকারি-বেসরকারি কোম্পানি এখন এ সংক্রান্ত গবেষণার দিকে ঝুঁকছে।
গামালিয়া ইনস্টিটিউ বিশ্বের শীর্ষ অনুজীব ও চিকিৎসা গবেষণা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি। বিশ্বের প্রথম করোনা টিকা স্পুটনিক ৫ প্রস্তুত করেছে এই সংস্থাটি। রাশিয়ার পাশাপাশি বিশ্বের ৫৫টিরও বেশি দেশে করোনা মহামারি মোকাবিলায় ব্যাবহৃত হয়েছে গামালিয়ার তৈরি স্পুটনিক ৫।
সূত্র : আরটি
আলোকিত প্রতিদিন/২৮ জানুয়ারি-২৫/মওম
গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল নারী ফুটবল প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত
নবীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বৃদ্ধের মৃত্যু
বিমানবন্দর থেকে আটক হলেন সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন
নাজমুল হাসান:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দেবিদ্বার উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং একাধিক মামলার আসামি সাদ্দাম হোসেন (৩৭) গ্রেফতার করেছে বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ।
সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামছুদ্দিন ইলিয়াস।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সাদ্দাম হোসেন দেবিদ্বার উপজেলা সদরের উত্তর পাড়ার জামাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি দেবিদ্বার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক।
২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার ভোর ৩টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়। গত ৪ আগস্ট বিকেলে দেবিদ্বার উপজেলা নিউমার্কেট চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দেন দেবিদ্বার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রাজ্জাক রুবেল (৩৩)। আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপর গুলিবর্ষণ করে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় আবদুর রাজ্জাক রুবেল গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার পর রুবেল কে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্তাধীন এ মামলায় ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে রুবেলের ওপর আক্রমণের সাথে জড়িত আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চালানো হয়। আজ সেই মামলার আসামি সাদ্দাম হোসেনকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য-বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলকালে গত ৪ আগস্ট কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর সদরে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গুলি চালায় আন্দোলনকারী ছাত্র জনতার উপর। সে সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে পৌর সেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রাজ্জাক রুবেল গুরত্বর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। মা বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি রাজি মোহাম্মদ ফখরুল ও আবুল কালাম আজাদ এমপি সহ আরো ২৭০ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
দেবিদ্বার থানার ওসি সামছুদ্দিন ইলিয়াস বলেন, মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে ডিএমপির বিমানবন্দর থানা থেকে সাদ্দামের গ্রেপ্তারের বিষয়টি আমাদের জানানো হয়েছে। তিনি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরছিলেন। তাকে দেবিদ্বার থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিকালেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
আলোকিত প্রতিদিন/২৮ জানুয়ারি-২৫/মওম
পুলিশি বর্বরতায় সরাসরি রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ছিল: এইচআরডব্লিউ
২৭ জানুয়ারি সোমবার প্রকাশিত এক রিপোর্টে এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া গত বছরের ওই আন্দোলনের সময় পুলিশের ভূমিকা মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের চেয়ে রাজনৈতিক নেতারা বেশি নির্ধারণ করে দিতেন বলেও রিপোর্টে উঠে এসেছে।
এমনকি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দীর্ঘদিন ধরে দায়মুক্তির ব্যবস্থা থেকে উপকৃত হওয়া শক্তিশালী এবং রাজনৈতিক নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে অন্তর্বর্তী সরকার লড়াই করছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া ডিরেক্টর ইলেইন পিয়ারসন বলেছেন, “গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে গিয়ে প্রায় ১০০০ বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। এটি বাংলাদেশে অধিকার-সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী সুযোগের সূচনা করেছে। কঠিন এই লড়াইয়ে জয়ের মাধ্যমে অর্জন করা সব অগ্রগতি হারিয়ে যেতে পারে যদি অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত এবং কাঠামোগত সংস্কার না করে। কাঠামোগত এমন সংস্কার করতে হবে যা ভবিষ্যত সরকারের যেকোনও দমন-পীড়নকে প্রতিরোধ করতে পারে।”
“আফটার দ্য মনসুন রেভোলিউশন: এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ” শিরোনামের এই প্রতিবেদনে বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে যে— অতীতে কীভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং নিরাপত্তা বাহিনী সবসময় রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা এইচআরডব্লিউকে বলেছেন, তারা বিশ্বাস করেন— জুলাই-আগস্টের গণবিদ্রোহের সময় অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকেই এসেছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, “আমি বিশ্বাস করি, অস্থিরতার সময় পুলিশের ভূমিকা মাঠপর্যায়ের অফিসারদের চেয়ে রাজনৈতিক নেতারাই বেশি নির্ধারণ করে দিতেন।”
অন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তা এইচআরডব্লিউকে বলেছেন, তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সিনিয়র অফিসারদের লাইভ সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে দেখেছেন এবং প্রতিবাদকারীদের গুলি করার জন্য অফিসারদের সরাসরি এমনভাবে নির্দেশ দিতে দেখেছেন যেন “তারা কাউকে ভিডিও গেমে গুলি করার নির্দেশ দিচ্ছেন।”
অন্য একজন অফিসার বলেছেন, “ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাদেরকে কঠোর হতে এবং ‘নৈরাজ্য ছড়ানো কোনও অপরাধী’কে রেহাই না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারা স্পষ্টভাবে ‘গুলি করো’ শব্দটি ব্যবহার করেননি, তবে তাদের নির্দেশাবলী স্পষ্ট ছিল: সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করুন, আপনি যা প্রয়োজন মনে করেন তা করুন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নিন।”
তিনি এইচআরডব্লিউকে বলেন, আন্দোলনের সময়কার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানকে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন, যিনি জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে তিনি বুঝতে পেরেছেন।
অন্য একজন বলেছেন, “আমি অফিসারদের আন্দোলনকারীদের অত্যাবশ্যক ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে দেখেছি অনেক ক্ষেত্রে, অফিসারদের জীবন বিপদে না থাকলেও আমি তাদেরকে তাজা গোলাবারুদ ব্যবহার ও গুলিবর্ষণ করতে দেখেছি।”
এদিকে বলপূর্বক গুমের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা এইচআরডব্লিউকে আরও বলেছেন, শেখ হাসিনা বা তার সরকারের সিনিয়র সদস্যরা এই ধরনের অসংলগ্ন আটকের বিষয়ে অবগত ছিলেন এবং কিছু ক্ষেত্রে হাসিনা সরাসরি বলপূর্বক গুম বা হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
নিরাপত্তা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা এইচআরডব্লিউকে বলেছেন, আবদুল্লাহিল আমান আজমির আটক এবং গোপন আটককেন্দ্রে থাকা অবস্থায় তার স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার বিষয়ে হাসিনা সরাসরি অবগত ছিলেন। তিনি বলেন, আজমি সাবেক সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে তার সহকর্মী হওয়ায় তিনি শেখ হাসিনার কাছে তাকে (আজমিকে) মুক্তি দেওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন, কিন্তু প্রতিবার তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন হাসিনা।
তিনি এইচআরডব্লিউর কাছে দাবি করেছেন, হাসিনা এমনকি আজমিকে হত্যা করার পরামর্শও দিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, “আমি তা করিনি। কিন্তু আমি তার মুক্তির বিষয়ে (হাসিনার কাছে) আবেদন করা বন্ধ করে দিয়েছিলাম।”
অন্য একজন কর্মকর্তা বলেন, “আমার ১০-১১ বছরের চাকরি জীবনে, আমি র্যাবের হাতে গুম ও হত্যার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। এগুলো বাস্তব। র্যাব যে গুম ও ক্রসফায়ারে জড়িত তা পুলিশ সদর দপ্তরের বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বা বিশেষ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুমোদন ছাড়া অসম্ভব।”
এইচআরডব্লিউ মীর আহমেদ বিন কাসেমের (আরমান) সাক্ষাৎকার নিয়েছে যাকে ২০১৬ সাল থেকে জোরপূর্বক নিখোঁজ অবস্থায় রাখা হয়েছিল। তিনি বলেছেন, তিনি এমন একজন অফিসারের মুখোমুখি হয়েছিলেন যিনি তাকে বলেছিলেন— যখন তিনি তার ইউনিটে যোগদান করেন তখন তাকে জানানো হয়েছিল, আরমান, আজমি এবং হুমাম কাদের চৌধুরীকে জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে এবং বন্দি করে রাখা হয়েছে। এবং তাদের মুক্তির যে কোনও সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনাকেই নিতে হবে।
আজমি, হুম্মাম এবং আরমান সকলেই বিশিষ্ট বিরোধী রাজনীতিবিদদের সন্তান বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, “এছাড়াও নিরাপত্তা বাহিনী জোপূর্বক গুমের বিষয়ে নতুন গঠিত তদন্ত কমিশনের তদন্তে বাধা দিচ্ছে বলে উদ্বেগজনক ইঙ্গিত রয়েছে। কমিশনের সদস্যরা বলেছেন, তারা বেআইনিভাবে আটকের আটটি নতুন স্থান শনাক্ত করেছেন। গোপন এই আটকস্থানের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন প্রমাণাদি নিরাপত্তা বাহিনী ধ্বংস করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে বলেও উদ্বেগ রয়েছে।”
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলেছে। এইচআরডব্লিউ জুলাই এবং আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে দায়ের করা আটটি ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট (এফআইআর) পর্যালোচনা করেছে, যার মধ্যে হাসিনা ও আওয়ামী লীগের মন্ত্রীসহ ২৯৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত ব্যক্তি রয়েছেন ৬০০ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “জবাবদিহিমূলক শাসন ব্যবস্থায় পদ্ধতিগত বাধার কারণে নিরাপত্তা বাহিনীর অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক প্রতিশোধের বিরক্তিকর পরিচিত প্যাটার্ন পুনরায় আবির্ভূত হয়েছে, আর এবার সেটি আওয়ামী লীগ সমর্থকদের লক্ষ্য করে “
“উদাহরণস্বরূপ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে প্রথম দুই মাসে হত্যা, দুর্নীতি বা অন্যান্য অপরাধের অভিযোগে কয়েক হাজার লোকের বিরুদ্ধে, প্রধানত আওয়ামী লীগের সদস্যদের বিরুদ্ধে এক হাজারের বেশি পুলিশ মামলা দায়ের করা হয়েছে,” প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এদে আরও বলা হয়েছে, “আওয়ামী লীগের চার শতাধিক মন্ত্রী ও নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় অভিযোগকারীরা জানতেন না কাদের আসামি করা হচ্ছে।”
আটটি মামলার পাঁচজন বাদী এইচআরডব্লিউকে বলেছেন, তারা মামলা দায়ের করার সময় আসামি হিসাবে কাকে নাম দেওয়া হয়েছিল তা তারা জানেন না। তারা বলেন, পুলিশ বা স্থানীয় রাজনীতিবিদরা তাদের কাগজপত্রে সই করতে বলেছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিপুল সংখ্যক “অজ্ঞাত” লোকের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক অভিযোগ দায়ের করে চলেছে। এর মাধ্যমে কার্যত পুলিশকে প্রায় যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে এবং বারবার আটক ব্যক্তিদের পুনঃগ্রেপ্তার করার ক্ষমতা দেয় যদিও তারা কোনও মামলায় আসামি না হযেও থাকে।”
এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে, মনসুন বা বর্ষা বিপ্লবের সময় হাসিনা সরকারকে নিজেদের রিপোর্টিংয়ে মাধ্যমে সমর্থন করার জন্য পুলিশ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনছে। গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত, কর্তৃপক্ষ বর্ষা বিপ্লবের বিষয়ে প্রতিবেদন করার জন্য কমপক্ষে ১৪০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ দায়ের করেছে। এইচআরডব্লিউ আমজাদ হোসেন এবং নিজাম উদ্দিন নামে দু’জন স্বাস্থ্যসেবা কর্মীর সাথেও কথা বলেছে, যারা ছাত্র বিক্ষোভের সময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন এবং ছাত্র বিক্ষোভকারী ওয়াসিম আকরামকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন।
আমজাদ হোসেন এইচআরডব্লিউকে বলেছেন, “সেদিন (১৬ জুলাই) আমরা কর্তব্যরত চিকিৎসকদের ওয়াসিমের মরদেহসহ আরও তিনজনের লাশ নিয়ে সাহায্য করছিলাম যারা বিক্ষোভের সময় নিহত হয়েছিলেন। এমনকি আমরা জানাজার জন্য মৃতদেহ নিতেও পরিবারকে সাহায্য করেছি। যখন আমি ওয়াসিম হত্যা মামলার তালিকাভুক্তদের মধ্যে আমার নাম খুঁজে পাই, আমি হতবাক হয়ে যাই। সেদিন আমি হাসপাতালেই ছিলাম এবং এতো এতো হতাহত ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে আসায় বাড়তি সময়ও ডিউটি করেছিলাম। আমি কখনোই কোনও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। এখন আওয়ামী লীগের অনেক লোকের সঙ্গে আমার নাম খুঁজে পাচ্ছি আমি। পুলিশের সাথে যোগাযোগ করার সাহস পাইনি। আপনি পুলিশকে জানেন। আমি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে থানায় গেলে, আমার কথা শোনার আগেই তারা আমাকে গ্রেপ্তার করবে।”
এইচআরডব্লিউ এর এই প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে আইন প্রয়োগের তত্ত্বাবধানে থাকা কর্মীদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাঠামোগত সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
এছাড়া প্রসিকিউশন এবং বিচার বিভাগ যাতে নির্বাহী বিভাগ থেকে স্বাধীন এবং রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও হস্তক্ষেপ থেকে সুরক্ষিত থাকে তা নিশ্চিত করার জন্যও সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক এই মানবাধিকার সংস্থা।
আলোকিত প্রতিদিন/২৮ জানুয়ারি-২৫/মওম
যাত্রীদের জিম্মি করে স্টাফদের কর্মসূচি দুঃখজনক : রেলপথ উপদেষ্টা
আলোকিত প্রতিবেদক:
যাত্রীদের জিম্মি করে বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের কর্মসূচি দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, এতে সাধারণ মানুষই বেশি ভোগান্তিতে পড়ছে।
২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার ট্রেন চলাচল বন্ধের পর সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করতে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, স্টাফদের দাবির বিষয়ে আমাদের আলোচনার দরজা সব সময় খোলা রয়েছে। প্রয়োজন হলে আমরা তাদের সঙ্গে আবারও আলোচনা করব এবং অর্থ বিভাগেও তাদের এই দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনা করব।তিনি বলেন, যাত্রীদের ভোগান্তি যাতে কম হয় সেজন্য ইতোমধ্যে গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছি। এরপরও কোনো যাত্রী যদি স্টেশনে আসেন তাদের সুবিধা বিবেচনা করে আমরা বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
রেলপথ উপদেষ্টা বলেন, স্টাফদের যে দাবি মাইলেজ অ্যালাউন্সের দাবি, তা দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। তাদের এই দাবির অনেক অংশ আমরা ইতোমধ্যে পূরণ করেছি। বাকি দাবিগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করতে প্রস্তুত আছি। রেলতো কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি না, এখানে আলোচনার সুযোগ আছে। রেল বন্ধের ফলে কিন্তু সরকারের অসুবিধা হচ্ছে না, অসুবিধা সাধারণ যাত্রীদের হচ্ছে। আমরা চাই এর সমাধান দ্রুত হোক। কারণ সামনে ইজতেমা আছে।
এসময় বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, কমলাপুর ও এয়ারপোর্ট স্টেশনে যাত্রীদের জন্য দশটি করে মোট ২০টি গাড়ি প্রস্তুত আছে। প্রয়োজন হলে বাস আরও বাড়ানো হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন রেলপথ সচিব মো.ফাহিমুল ইসলাম, রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরিফ প্রমুখ।
আলোকিত প্রতিদিন/২৮ জানুয়ারি-২৫/মওম