নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শরীরে প্লাজমা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার শরীরে ও পজিটিভ রক্তের ২০০ মিলি প্লাজমা দেয়া হয়।
ডা. জাফরুল্লাহর চিকিৎসার খোঁজ নিলেন প্রধানমন্ত্রী
মমতা নূরের গল্প : মৌনতার স্বপ্নভঙ্গ
মৌনতার স্বপ্নভঙ্গ
মমতা নূর
—————————————————————————————————-
দুচোখের ভারি পাতা সরিয়ে চোখ খুললো রাতুল। ঘরের আশপাশ ভালো করে দেখলো। অল্পকিছু আসবাবের ছোট্ট পরিপাটি করে সাজানো। অচেনা। বিছানার পাশের জানালা দিয়ে আকাশ উঁকি দিচ্ছে- সুন্দর সফেদ আকাশ। কিন্তু সেদিকে তাকাতেই চোখের ওপর অত্যাচার করা হলো যেনো! চোখ বন্ধ করে নিলো রাতুল।
কারো পায়ের শব্দ শোনা যাচ্ছে। শব্দটি আস্তে আস্তে ঘরের দরজায় আসলো। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো। টেবিলের উপর কিছু রাখার স্পষ্ট শব্দ শুনতে পেলো রাতুল। কৌতুহল জাগছে, কিন্তু চোখ মেলতে ইচ্ছে হচ্ছে না। কৌতুহল জন্মালে অন্ধও চোখ মেলতে চায়। এটাই নিয়ম। অথচ রাতুলের ক্ষেত্রে ঘটছে অন্যরকম। মনে হচ্ছে বহুকাল আলোতে চোখ রাখেনি। খুললেই ঝলসে যাবে মগজ অবধি!
কপালে আলতো হাতের ছোঁয়ার অনুভব। চোখ দুটো ঈষৎ কেঁপে উঠলো। তবু পাতা দুটো বেহায়ার মতো বসেই রইলো, একটুও নড়লো না। কপালে হাতের ছোঁয়ার সাথে সাথে মেয়েলি কণ্ঠে তার নাম ধরে ডাকতেও শুনতে পেলো।
রাতুল নিরুত্তর। পায়ের শব্দটি চলে গেলো। চোখ বন্ধ করেই রাতুল অন্ধের অনুভূতি নিতে চেষ্টা করলো। টেবিলে যে খাবার রাখা হয়েছে তা সে বুঝতে পারছে। ঘ্রাণ শুঁকে কী খাবার তা বোঝার চেষ্টা করলো; পারলো না। এখন কয়টা বাজে এটা বুঝতে পারলে অন্তত কোন বেলার খাবার তা আন্দাজ করা যেত। এ ঘরের কোথাও একটা ঘড়ি দেখেছে বলে মনে পড়ছে। ঘড়িটির সেকেন্ডের কাঁটার গতির টিক টিক শব্দে জানানও দিচ্ছে। ঘড়ি দেখার জন্য চোখ মেলা দরকার। কিন্তু ওই যে, মন চাইছে না। মনে হচ্ছে- মগজ অবধি ঝলসে যাবে!
রাতুল ভাবনার চাকা অন্য দিকে ঘোরালো। যে মেয়েলি কণ্ঠে একটু আগে তার নাম ডাকতে শুনেছে, তিনি মধ্যবয়সী কেউ হবেন। ভদ্রমহিলা মনে হয় কম কথা বলেন। রাতুলকে দ্বিতীয়বার ডাকেননি।
আবার পায়ের শব্দ। শব্দটি সোজা তার কাছে এগিয়ে এলো। অন্য একটি পায়ের শব্দ টেবিলের কাছে গিয়ে থামলো। এরা ঠিক কারা রাতুল বুঝতে পারছে না। কিভাবে এখানে এলো তাও মেলাতে পারছে না। একটু ভাবার চেষ্টা করলো।
নতুন বাজার থেকে একটি শাড়ি কিনে রুনির সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলো রাতুল। বাবা-মা-হীন রাতুলের জীবনে রুনি ছিলো সাধনার মতোন। ভালোবেসেছিলো খুব যতন করে। সব সম্পর্কেই ছোটখাটো মান অভিমান থাকে। তাদেরও ছিলো। অভিমান করে রুনি টানা একদিন কথা বলেনি। থাকতে পারছিলো না রাতুল। তাই মান ভাঙ্গাতে একটি শাড়ি কিনে এলাকার এক ছোট ভাইকে দিয়ে পাঠিয়ে রুনিকে ডেকে আনবে ভেবেছিলো। শাড়িটি প্যাকেট করে উপরে রুনির বাড়ির ঠিকানা লিখেছিলো। ঝাপসা যা কিছু মনে করতে পারলো তার সারমর্ম এমনি দাঁড়ায়। কিন্তু তারপর…
চোখ মেললো রাতুল। খাটের পাশের চেয়ারে বসা স্নিগ্ধ একজোড়া চোখ তার দিকে তাকিয়ে আছে। চোখে চোখ পড়তেই মেয়েটির চোখ জোড়া হেসে উঠলো। টেবিলের পাশে একজন মধ্যবয়সী ভদ্রমহিলা।
‘এখন কেমন লাগছে?’ পাশে বসে থাকা তরুণীর প্রশ্ন।
উত্তর দিতে ইচ্ছে করলো না রাতুলের। তাকিয়ে থাকলো তরুণীর চোখের দিকে।
‘অবশেষে আপনি কিছুটা হলেও সুস্থতায় ফিরছেন বলে মনে হচ্ছে। গত একমাস আপনার যে অবস্থা ছিলো! আমি তো ভেবেছিলাম…। তবে বলতেই হয়, আপনার মনের জোর ভীষণ। মনের জোর আর ভাগ্য ভালো বলেই এমন একটা এক্সিডেন্টের পরও আপনি চোখ মেলে আছেন। হসপিটালেই রাখতে পারতাম, কিন্তু দুইদিন অবস্থা বেশ ভালো ছিলো। তাই বাড়িতে নিয়ে এলাম। পাশেই হসপিটাল। আমি ওই হসপিটালের নার্স।’
রাতুল এবারো চুপ। ঘাড় ঘুরিয়ে আর একবার দাঁড়িয়ে থাকা মহিলার দিকে তাকালো।
‘আমার সাথে থাকেন উনি। আমার কেউ নেই। বলতে পারেন উনিই এখন আমার সব। আপনাকে তো এক্সিডেন্ট স্পট থেকে উনিই নিয়ে এসেছিলেন। তারপর একটা মাস আপনার কাছ থেকে একটুও নড়েননি। হসপিটালের রাতগুলো নির্ঘুম কাটিয়েছেন।’ আগ্রহের সাথে বলে চললো মেয়েটি। রাতুল চোখ ফেরালো মেয়েটির দিকে। শাড়িটি খুব চেনা চেনা লাগছে।
‘আপনার অনুমতি ছাড়াই শাড়িটা পরেছি বলে রাগ করতে পারেন। আপনার কোন পরিচিত জনের খোঁজ না পেয়ে প্যাকেটের গাঁয়ে লেখা ঠিকানাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওইদিন ওবাড়ির মেয়েটির বিয়ে হচ্ছিলো। সবাই বেশ ব্যস্ত ছিলো তাই কারো সাথে কথা বলতে পারিনি। পরে আবার গিয়েছিলাম, কিন্তু কাউকে পাইনি।’
বুকের মধ্যে একটা গোপনে লালন করা ব্যথা চিনচিন করে ওঠে রাতুলের। ‘আপনি কি কিছু মনে করতে পারছেন?’, উৎসাহী প্রশ্ন ছেদ করলো রাতুলের শরীর, মন, মস্তিষ্ক।
চোখ জোড়া তরুণীর মায়ামাখা চোখে স্থির হয়ে রইলো। সেই চোখ বলছে, কিছু না মনে পড়লেই ভালো ছিলো। কখনো কখনো বলছে- এই আলো আলো নয়, অন্য কিছু!
ঈদসংখ্যায় নবীনের পঙক্তিমালা
[‘নবীনদের জন্য জায়গা দেওয়া হয় না। তাদেরকে উৎসাহিত করেন না কেউ।’- এমনই সব অভিযোগ শুনে আমি অভ্যস্ত। আমাদের সময়েও এমনই কথা আমরাও বলেছি। কথা সত্য। এই সত্যকে ভাঙতে যেখানেই দায়িত্ব পেয়েছি, সেখানেই নবীনদের জন্য স্থান তৈরি করে নিয়েছি। কবি সুকান্ত সুকান্ত ভট্টাচার্যের কথা মনে রেখে তাদের জন্য স্থান ছেড়ে দিয়েছি; দৈনিক আলোকিত প্রতিদিনেও।
যদিও কোথাও কোথাও এ নিয়ে বিপত্তি পোহাতে হয়নি তা নয়, কিন্তু আমি জানি- এই নবীনরাই একদিন বাংলাসাহিত্যে বরেণ্য হয়ে ওঠার শক্তি রাখে। যদি তারা সাহিত্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে, যদি তারা শব্দের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রাখে- সঠিকভাবে পরিচর্যা ও সহচর্য পেলে এরা নিশ্চয় একদিন বাংলাকাব্যকে আরও হৃদ্ধ, আরও প্রসিদ্ধ করে তুলতে পারবে।
অনেকেই বলেন, নবীনরা পড়ে না। আমি তো দেখি এরা পড়ে। বই পড়ে। নেট ঘেটে লাইব্রেরির বুহ্য ভেদ করে পড়ে নেয় বইপত্তর। পড়ে বলেই এদেরকে আমার ভালো লাগে। তবে অনেকেই আবার পড়ার সঠিক উপকরণ পায় না। তারা বিপৎগামী হয়ে বিপদের হৃদে পড়ে তলিয়ে যায়। কিছু সময় সাহিত্যাঙ্গনে অবস্থান নিয়ে এর উঠোনকে নষ্ট করেও যায়। তাদের কথা ভিন্ন। আমি লেখক হয়ে ওঠার বাসনায় যারা শব্দ তপস্যা করছে, তাদের কথাই শুধু বলবো।
এবারের ঈদসংখ্যায় এই সব নবীন শব্দতাপসদের মধ্য থেকে চার নবীন কবিকে আপনাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে আলোকিত প্রতিদিনে উদ্যোগ নিয়েছি। নিন্দা না করে সঠিক সমালোচনায় তাদেরকে এগিয়ে নেবেন বলে আমার বিশ্বাস। — সৈয়দ আহসান কবীর, সাহিত্যসম্পাদক ]
সি ফা ত শা হ রি য়া র প্রি য়া ন
অমানুষ
::::::::::::::::::::::
মানুষ যাদের মনে করি
যাদের নিয়ে বাঁচতে চাই
সে মানুষই অমানুষ হয়ে
মানুষ ঠকায়, বিষ খাওয়ায়
যে মানুষ মৃত্যু খোঁজে
লোভের বশে সাজে অ’তে
হত্যাতেও যার দ্বিধা নেই
কারবারি হয় মৃত্যু-খতে।
মনের ভেতর প্রশ্ন জাগে
মানুষ যদি খাওয়া যেত
তবে কি এরা মানুষ খেত?
সত্যিই এরা মানুষ খেত।
আ ক লি মা আ ক্তা র রা ই সা
ঘুমায় মনুষ্যত্ব
::::::::::::::::::::::
যন্ত্রণারা কাঁপিয়ে হৃদয়
যায় দিয়ে ভয়-
অন্তপুরে ভরদুপুরে,
নিত্যঘোরে কাটে সময়।
সময় ঘড়ি যমের কাটা
নিত্য অসুখ জোয়ার-ভাটা।
ভাটার বালি মৃত্যুকালি
নিত্য নতুন কৃষ্ণকলি,
যাচ্ছে নেচে খাচ্ছে বেঁচে
মনের যত অলিগলি।
অলিগলির চিপায়-চাপায়
মানবতার ছিন্ন মাথায়
নানারকম টাল-বাহানায়
মনুষ্যত্ব নিরব; ঘুমায়।
ঘুমায় মানুষ, ঘুমায় বিবেক।
জেগে থাকে জোচ্চোর-চোর
খুলে রাখা স্বপ্নের দোর
লুটপাট হয় ভোর ও আবেগ।
সৌ মে ন্দ্র গো স্বা মী
ইতি তোমার প্রিয়
::::::::::::::::::::::
যদি ভালোবেসে টোলপড়া গালে একটু হাসির ঢেউ তোলো
আভিজাত্যের অহঙ্কার দিতে না পারলেও
ছোট্ট ছোট্ট খুশিতে ভরিয়ে দিতে পারবো-
একসাথে থাকা জীবনের প্রতিটা দিন ।
এই যেমন ধরো-
অফিসের শেষে, অফিসের দেওয়া সাদা গাড়িটা
বাসার সামনে পৌঁছুতেই ফোনে বললাম-
আজ ফিরতে অনেক রাত হবে ।
অভিমানে চোখ দুটো তোমার ভিজ উঠতে শুরু করেছে
ঠিক তখনই বেজে উঠলো কলিংবেল !
দরজা খুলতেই দেখলে –
একগুচ্ছ গোলাপ হাতে দাঁড়িয়ে এই স্বার্থপর মানুষটা
বলো , তুমি কি ভালোবেসে জড়িয়ে ধরবে না ?
অ প রা জি তা
সুখের নীড়
::::::::::::::::::::::
পুষ্পপল্লবের ন্যায় সুসজ্জিত
একটি সংসার-
নব আলোর ক্ষীণতর রশ্মিতে রাঙানো
একটি হাসির মঞ্চ ;
সুখের সোপানে আলোকিত নয়নে প্রতীয়মান
তরতাজা প্রাণোচ্ছল ক’টি প্রাণ ।
সুর যেখানে ধীমি ধীমি বেজে চলেছে ,
হেয় ক্লেশকে বহুদূরে বিস্তৃত নিরাশ করে ।
সূর্যের উষ্ণ অর্ভ্যথনায় জাগ্ৰত সদা
কালো কালবৈশাখীর ঝড় সেখানে বেমানান।
জীবনের পথচলায় আনবিক বোমা নয়; স্বাস্থ্য, কৃষি, জীববৈচিত্র্যই সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ : মোজাফফর বাবু
আমাদের শহর নগর গ্রামে গঞ্জে বিয়েতে সানাইয়ের সুর বাজত । ‘হলুদ বাঁটো মেন্দী বাঁটো বাঁটো মেন্দীর ফুল’ গানের সুরে আর হাসি-আনন্দে ভরে উঠত এক এক অঞ্চল । অন্য শহর নগরে চলন আসত ,গল্প স্বল্পে মেতে উঠত এলাকা। গ্রামেগঞ্জে চৈত্র সংক্রান্তি মেলা বসতো, বসন্তকে বরণ করা হত লোকজ সঙ্গীত যেমন – ‘তাক ধুম তাক ধুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল , সব ভুলে যাই তাও ভুলি না বাংলা মায়ের কোল’ এর মাধ্যমে । রমজান শেষে খুশির ঈদে বুকে বুক মিলিয়ে কুশলাদি বিনিময় চলতো। এসব ছিল আমাদের স্বাতন্ত্র্য ঐতিহ্য । হঠাৎ বৈশ্বিক মহামারীরূপে ঘাতক নভেল করোনা ভাইরাসের আক্রমণে আমাদের জনপদে আপনজন বিয়োগে আমাদের কৃষ্টি কালচার, লোকজ সংস্কৃতি আবছায়ায় বন্দি হয়ে গেলো , ছন্দের পতন হলো !
এখন অনেকটাই বিনিদ্র রজনী পার করছি । প্রতি পদে পদে মৃত্যু তাড়া করছে ঘাতক ব্যাধি কোভিড-১৯ । ঘাতক করোনাভাইরাস হাসি আনন্দকে ম্রিয়মাণ করেছে । জাগতিক নিয়ম কানুন,সুস্থ পথ ও পরিবেশকে বিপর্যস্ত করে চোরাবালুর পথেই হাঁটছে ।
এই বৈশ্বিক মহামারীতে ইউরোপ ,আমেরিকা সহ গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা বিপর্যস্ত পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে । বিশ্বের মহা শক্তিধর ও তারুণ্যের স্বপ্নের দেশ আমেরিকা , এই নাকালে পরিস্হিতিতে প্রায় দুই কোটি লোক কর্মহীন হয়ে পড়েছে । অন্য দেশের কথা না হয় বাদই দিলাম।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল(IFM) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিষ্টালিনা জর্জিয়াভা পর্দা সরিয়ে ২৭ এ মার্চ বলে দিলেন ,” অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়ে গেছে ।মন্দার মধ্যেই জীবন কাটবে । আর একটু কষ্ট করে সংসার সামলাবেন । কিভাবে গাড়ীর যন্ত্র নিবেন এ সব না হয় যেনে রাখুন ”
করোনা ভাইরাসের ছোবল , হিংস্র হায়নার চেয়েও ভয়ংকর । ধনবান বিত্তবান , রাজা, মহারাজা, শিশু, আবাল- বৃদ্ধ -বনিতা এমনকি হাজার হাজার মাইল দূরে , ভূমদ্ধ্যসাগরের যুদ্ধ জাহাজে , ঘাতকের বিষাক্ত ছোবলে বিনা নোটিশে ওপারে পাঠাতে কোনো প্রকার সময় দিচ্ছে না ।
কেন এই মহামারী , কেন এই দুর্যোগ ? এই কাটা বিছানো বা মৃত্যুপুরীর পথ , হয়ত এর কিছুটা উত্তর মিলবে , বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ টমাস ম্যলথাস (Thomas Malthus) এর ১৭৯৮ খ্রিষ্টাব্দে রচিত An easy on the principles of population বইটিতে । সেখানে তিনি মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য যে ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন ,আজ তা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
তিনি জনসংখ্যা সম্পর্কে বলেছিলেন । তার মতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্য ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে ,জনসংখ্যার নিয়ন্ত্রন মান বাড়ে জ্যামিতিক হারে – ২,৪,৬,৮,১৬ আর খাদ্য উৎপাদন বাড়ে গাণিতিক হারে – ২,৩,৪,৫,৬ । দুটি তথ্য উপাত্তের মধ্যে ব্যাপক ফারাক , সংঘাত অনিবার্য । খাদ্য উৎপাদনের তুলনায় দিগুণ জনসংখ্যা বৃদ্ধি । ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদের মতে , জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনের স্বাভাবিক উপাদান হল যুদ্ধ বিগ্রহ মারামারি।
আমরা বিভিন্ন পর্যাচলনায় দেখতে পারি , প্রানী ও উদ্ভিদ জগত , তার সংগ্রামের মাধ্যমে তার সত্ত্বা বা অস্তিত্ব নির্ধারনের (মতপথের) নির্দেশন আছে। এতে প্রতিকুল পরিবেশ প্রজাতি ধ্বংস হয় ঠিকই ,আবার নতুন প্রজাতির সৃষ্টি হয় । আমরা এই(তার) বইতে বিবর্তনবাদের তত্ত্ব তথ্য পাই
আমরা মাঝে মাঝে ভূলে যাই প্রকৃতির কথা, প্রকৃতি র সংঙ্গে আমরা অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত বন্যেরা বনে সুন্দর , শিশুরা মাতৃক্রোড়ে এটা ভুলে গেলে চলবে না, স্ব স্ব অবস্থানে থাকতে হবে , আমাদের আরো মানবিক হতে হবে কিন্তু বাস্তবে আমরা কি করি?
আজ ইট বালুর কংক্রিটের শহরের ওপর আমাদের জীবন।এখানে অনুপস্থিত মানুষের ভালোবাসা আত্মার আত্মস্থ।ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করলে দেখতে পাই নিজের প্রয়োজন অপ্রয়োজনে বাবুগিরি দেখানোর জন্য আমরা প্রানী ও উদ্ভিদের চলমান স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার ওপর জবরদস্তি করি।
তথাকথিত সভ্যতার নামে উজাড় করছি তাদের অস্তিত্ব ও পরম্পরা ভাবে তাদের ঐতিঝ্য।আমাদের সমাজে প্রানী ও উদ্ভিদ আমাদেরই যে অংশীদার তারাও যে আমাদের সমাজের পথ ও পাথেয় তাকেই আমরা অস্বীকার করছি।
ব্রাজিলের কোটি কোটি একর সবুজ বনাঞ্চল আমাজন, যা আমাদের পৃথিবীর ২০ শতাংশ অক্সিজেন সরবরাহ করে।সামান্য মুনাফার লোভে সেই সবুজ অরণ্য ধ্বংস করে কারখানা গড়তেও আমার দ্বিধা করছি না। প্রকৃতি ও মানুষ একে অপরের পরিপূরক।
আমরা মানুষ প্রকৃতিরই সন্তান।আসমানের দিকে তাকালে আমরা অনেক কিছু দেখতে পাই।সুর্য আমাদের আলো দেয়।নিশিরাতে গ্রহ, নক্ষত্র জ্বলজ্বল করতে থাকে।আমরা পৃথিবী নামক গ্রহে বাস করি।জীববৈচি্ত্র্যময় প্রকৃতিকে আমরা গলাটিপে মারতেও দ্বিধা করছি না।সবকিছু উপেক্ষা করে আমরা মানবিকতার সীমানা উপেক্ষা করেছি।
বাবুই পাখির বাসা ও তার সুনিপুণ কারুকার্য। কাঠবিড়ালির এগাছ থেকে ওগাছে ওঠা,তালগাছের একপায়ের দাড়িয়ে থাকা, চিরপরিচিত শিয়ালের হুক্কা হুয়া ডাক, আমাদের স্বেচ্ছাচারিতা জন্য সবযেন আজকাল উধাও হয়ে গেছে।মানুষ তার বিলাসবহুল ফ্যাশান জন্য অরন্য উজার করে, জলাভূমি ভরাট করে যত্রতত্র শপিং কম্পলেক্স, কারখানা প্রাসাদ ও অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট গড়ে তুলছে।
তারই ফলশ্রুতিতে প্রানীরা ফলমূল শিকড় বাকড়,খাবার পাচ্ছে না।তারা জীবন বাঁচানোর জন্য লোকালয়ে চলে আসলে খাবারের জন্য মানুষরূপী পাষানেরা তাদের মেরে ফেলছে। পাশাপাশি সাপ,ব্যাঙ কাঁকড়া সমূলে নীরমূল করতে দ্বিধা করছে না।
তারই ফলশ্রুতিতে তপোবন,উপবনে বাঘ, সিংহ, হরিনের দেখা মেলা দায়।দ্রাবিড় ও আর্য সভ্যতাকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে মেতে উঠেছি ৮ হাজার বছর আগে আদিম সমাজে অবুঝ যাযাবর মানুষেরা যে কাজ করতো,সেই কাজ করছি এই বিংশ শতাব্দীতে। বানর হনুমান সমুদ্র সীমানায় হালদায় , ডলফিন কে মেরে পৈশাচিক উল্লাস প্রকাশ করছি।
আজ আমরা সারা বিশ্ব করোনা ভাইরাস রাজা মহারাজা, ধনী দরিদ্র ২১০ টি দেশে এ মহামারী জেঁকে বসেছে।বিজ্ঞান কে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে এ ঘাতক ব্যাধির জয় জয়াকার সারাবিশ্বে। ম্যালথাসের প্রকৃতি বানী ফিরে আসতে দেরী হয়নি।প্রকৃতি যেন প্রতিশোধ নিচ্ছে।একজন মানুষকে অপর মানুষের থেকে ৩ মিটার দুরে থাকতে হচ্ছে, ঘরের বাইরে যাওয়া যাচ্ছে না।প্রবল ক্ষমতাধর আমেরিকা, ইউরোপের মানবিক বিপর্যয় ঘটে গেছে।সারি সারি কফিনে আপনজন আপনজনের লাশ কে শেষ দেখাও দেখতে পারছে না।
স্বস্ব ধর্মের স্ব স্ব রীতিতে কাফন ছাড়া দাফন করতেও পারছে না।যে বাবা সন্তান লালন পালন করলো তার জানাযায় বা অন্ত্যোষ্টি ক্রিয়ায় অংশ গ্রহন করতে পারছে না।কারন ঘাতক ভাইরাস দ্রুততম সময়ে মানব সমাজে ছড়িয়ে পরছে।
করোনা ১৭ মে ২০২০ পর্যন্ত ১৮৮ টি দেশে মোট আক্রান্ত ৪৬,৮৩,৬৪৬ জন মোট মৃত্যু ৩,১০, ৮২৫ জন।যার ফলশ্রুতিতে অর্থনৈতিক অবস্থা নাকাল হয়ে গেছে,কোটি কোটি মানুষ বেকার হয়ে গেছে।
আমরা ভূপেন হাজারিকার সেই মর্মোস্পশীয় গান ভূলে গেছি ” মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য ” সাম্রাজবাদী দানব রাষ্ট্র সমূহ পরাশক্তির পাল্লা ভারি বা আমি হনুরে জাহির করার জন্য যুদ্ধো যুদ্ধ খেলা করে সবচেয়ে দীর্ঘ শতবছর ব্যাপী ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে যুদ্ধ মেয়াদ কাল ছিল ১৩৩৭– ১৪৫৩ সাল মানুষের লাশের উপর রক্তের হলি খেলা। যায় প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ সময় কাল ছিল ২৮ শে জুলাই ১৯১৪–১১ নভেম্বরের ১৯১৮,, আবার দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ ১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ –২ সেপ্টেম্বরে ১৯৪৫ যা ছিল এডলফ হিটলারের পৈশাচিক উল্লাস,ফ্যাকল্যান্ড যুদ্ধ ১৯৮২ সালে , আবার চলছে উপনিবেশক রাষ্ট্র সমূহের খনিজ সম্পদ , তেল , গ্যাস হীরক হরিলুট ও (প্রভাব বলায়ের) পুনর্বন্টন বানিজ্যিক নীতি পোক্ত করার জন্য । আগ্রাসী কালো পাহাড়ের কালো পাহাড়ের দ্বন্দ ও তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের ডঙ্কা।
চলমান বিশ্বের দিকে ফিরে চায় মানব হয়ে মানবের ওপরেই কি নির্মম অত্যাচার করেছে। মানবিক মূল্যবোধকে কবর দিয়েছে।সমষ্টি স্বার্থ মানবতা বা জাতীয়তাবাদকে ত্যাগ করে লাগামহীন ভাবে মুনাফার ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা লাগিয়েছে।
ব্যাক্তি পকেট ভারী করেছি।সবাই যেন বিলগেটস হতে চাই।সবার চ্যাটার্ড বিমান থাকতে হবে।আজকে আমাদের চলমান আকাঁ বাঁকা পথে মহীয়সী রুপি মানুষের কথা ভুলে যায় , সৎ ন্যায় নিষ্ঠাবান মানুষ তথা কাল মার্ক্স নেলসন ম্যান্ডেলা, ইয়াসির আরাফাত ও শরৎচন্দ্রের কোন মূল্যায়ন হয় না।এ রক্ত পিপাসু ধনবাদীরা ডলারের পাহাড় গড়ে তুলে।
সেই ডলার বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রকোপ থেকে তাদের জীবনকে বাঁচাতে পারে না।তারই ফলশ্রুতিতে তারা জানালা দিয়ে ডলার ছুড়ে ফেলছে।মুনাফা খোর ধনীরা মানবের রক্তের নিশানার ওপর নৃত্য করেছে। প্রকৃতির কথায় না হয় বিশ্লেষণ বাদই দিলাম মানব হয়ে মধ্য প্রাচ্য সহ সারাবিশ্বে মানুষের ওপর যে অত্যাচার করেছি সেই ইতিহাসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছ।
দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে শেষ হতেই বিশ্বের মোড়ল রাষ্ট্র সমূহ নিজেদের মধ্যে পরাশক্তির প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়, মানবতা কে বৃদ্ধাআঙ্গুলা দেখিয়ে পরমাণু বোমার চেয়ে আরো উন্নত ফর্মের কেমিক্যাল ওয়েপন । ব্যাকটরিয়া ওয়েপন এই দানবীয় অস্ত্র মধ্যেপ্রাচ্য সহ অন্য জনবসতির উপর ফেলতে এদের বুক কাপে না , রক্তের স্রোতের উপরে নিজেদের ক্ষমতা জাহির করে,
আমাদের চোখের সামনেই সেই নারকীয় হত্যাকান্ড ভেসে ওঠে হিরোশিমা নাগাসাকির উপরে এটম বোম মারে প্রায় লক্ষাধিক লোক মারা যায়, আরো বহু লোক পঙ্গু ল্যাঙড়া হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে, আর মধ্যপ্রাচ্যে তেল, গ্যাস প্রাকৃতিক সম্পদ উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে পরাশক্তির।
তারা ভুমধ্যসাগরীয় তলা দেশ দিয়ে পাইপ লাইন এ-র ম্যাধমে ৬ বিলিয়ন ডলারে গ্যাস নিয়ে যায়, বড়ই পরিতাপের বিষয় তার নাম দেয় ( pipeline of peace ) ” শান্তির পাইপ লাইন ” আগ্রাসীদের চলমান প্রক্রিয়ার আন্তঃসাম্ররাজবাদীর দ্বন্দ্ব সংকটকে ঘনীভূত করে নিজেদের সামরিক সরঞ্জাম অস্ত্রবিক্রি করে , মুনাফা অর্জন করে । আর অন্য দিকে মধ্যেপ্রাচ্যে লাশের কফিনের মিছিল দীর্ঘ হয়।
যুদ্ধ বিগ্রহে লক্ষ লক্ষ লোক মারা যায় । সিরিয়ায় যুদ্ধে আসাদ সরকারের পক্ষ নেয় ইরান, চীন,রাশিয়া আর বিপক্ষে যুক্তরাজ্য , যুক্তরাষ্ট্র , ইউরোপ ইউনিয়ন । লক্ষ লক্ষ লোক মারা যায় । অন্যরা পঙ্গু , অন্ধত্ব ও গৃহহীন হয়ে মানবতার জীবন যাপন করে । এ সম্পর্কে লন্ডন ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন বলে ,সিরিয়ায় চলমান যুদ্ধে ২৯ হাজার শিশু মারা যায়২০১৭ -২০ মে নভেম্বর পর্যন্ত ।
সিরিয়ান নেটওয়ার্ক যার হিউম্যান রাইটস সিরিয়ায় ও ” সিরিয়ান অবজার্ভেটরি যার হিউম্যান রাইটস তথ্য ২০১৭ – ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ লক্ষ মারা যায় , আর কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় ।
সাম্রাজ্যবাদের চলমান এই আগ্রাসী যুদ্ধে শেষ প্রান্তে এসে প্রায় ৯ লক্ষ লোক মারা যায় । কোটি কোটি লোক বাস্তুচ্যুত ও মানবেতর জীবন যাপন করে । কাজের অভাবে পেটের দায়ে অনেক রমনী নিজের সম্ভ্রম বিক্রি করে ।
অনেকে আবার ক্ষুধার যন্ত্রনায় ও বোমারুপ বিমান ও যুদ্ধের ঝঞ্জার হাত হতে রক্ষার জন্য উত্তাল ভূমধ্য সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে । পথে পথে ভূমধ্য সাগরের খরাস্রোত ও জলদস্যুদের অত্যাচারে সাগরে সলিল সমাধি হয় । এর হিসেব কে রাখে । বর্বর আঘাতে কত মাসুম শিশুর মা বাপ ডাকা বন্ধ হয়ে যায় । কাফন ছাড়া দাফন হয় । সুবিধাবঞ্চিত ও সাধারণ মানুষর রক্তের স্রোতে লালে লাল হয়ে যায়। আবার আমরা ভিয়েতনামে দেখি প্রভুরা আন্তর্জাতিক চরিতার্থ স্বার্থে প্রতি ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বোমা বর্ষন করে তারা রক্তের উপর উল্লাস প্রকাশ করে । এই বর্বর ঘাতকরা মানুষ হত্যার পাশাপাশি গাছপালা,পাখপাখালি, পাহাড়পর্বত , নদী ,সমুদ্র , জীবজন্তুর উপর অসুভ প্রভাব খাটায় বা তাদের অবস্থানকে সুসংগঠিত করে । অবাধে মৎস শিকার, তিমি মাছ নিধন , বোমা , ক্ষেপণাস্ত্র , বিষাক্ত গ্যাস এ মানুষ যেমন নিঃশ্বাস নিতে পারে না ঠিক তেমনই মারাত্মক মরণ অস্ত্র বিস্ফোরণে তেজস্ক্রিয় কোন কিছুর স্বাভাবিক গতি থাকছে না ।
মুক্ত ভাবে চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আবার জলবায়ু ও পরিবর্তন হচ্ছে । ফলে স্বাভাবিক ঋতুর পরিবর্তন হচ্ছে। শীতের সময় শীত নাই , বর্ষার সময় বৃষ্টি নাই । বিশাল অ্যান্টার্টিকা মহাদেশ , হিমালয় , আলাস্কা, গ্রিনল্যান্ড থেকে বরফ গলে যাচ্ছে ।
মানব যেন প্রকৃতির উপর রূঢ় আচরন করছে । তাই প্রকৃতি কি বসে থেকেছে ? না প্রকৃতি বসে থাকেনি , এই রক্তের হলি খেলা দানবের বিরুদ্ধে , ম্যালথাস এর সুরে সুর মিলিয়ে বলতে হয় , প্রকৃতিও যেন তার অবস্থানকে সুসংহত করার জন্য যুগে যুগে বিভিন্ন ভাইরাস যেমন ইবোলা,সোয়াইন ফ্লু, ঘাতক করোনা ভাইরাস দিয়ে সে যেন সারাসি অভিজান শুরু করেছে তারই প্রাক্ষাপটে মানুষ আজ অন্ধ কূলে বন্দি । আর অপর দিকে কুমির ,বাদুর, সাপ, ব্যাঙ ,মুরগী ,কচ্ছপ ,ইদুর , বাঘ , সিংহ , পাহাড়, পর্বত, মাছ অবাধে চলাচল করছে ।
আর সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ ঘাতক কোভিড -১৯ ভাইরাসের কাছে নিস্বার্থ ভাবে আত্মসমার্পন করেছে । আজ সমুদ্রে ডলফিন খেলা করে, তিমি মাছ সাঁতার কাটে , কুমির ঘুরে বেড়ায় , সবুজ চত্বরে কাঠবিড়ালী খেলা করে আর আমাদের পাশে ঘুঘু কোকিল শ্যামা ডাকে । আর পৃথিবীময় চার দেওয়ালের জেলখানায় মানবজাতি ভীত সন্ত্রস্ত জীবন যাপন করে
প্রচণ্ড প্রতাপশীল দানব করোনা ভাইরাস পৃথিবীর সমস্ত মানবকে ডুবন্ত জাহাজে উঠিয়ে নিয়ে ভেসে ভেসে চলেছে । সে জাহাজ ভাইরাস ক্রুর হাসি হেসে খেয়াল খুশিমত অজানা দিকে চলছে । কে বাহাদুর, কে প্রতাপশীল, কে সুবিধাবঞ্চিত তার কাছে কোনো বিচার নাই। নির্লজ্জ বেহায়াপনা ভাইরাস বিনা নোটিশে উপরে পাঠাচ্ছে ।
এখন আর আনবিক বোমা,নাপাম বোমা , পারমানবিক বোমা ,পেট্রিক ক্ষেপণাস্ত্র রাডার চলিত বিমান , কেমিক্যাল বিষযুক্ত বোমা যার কোনোটাই এখন কাজে লাগে না । যার পিছনে বড় বড় পরাক্রমশীল আমেরিকা , চীন ,ফ্রান্স বাজেটের সিংহাংস ব্যয় করে , তারা কি এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পেরেছে ?
আজ মানবকুলের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে । মানুষ নির্বাক হয়ে ডুবন্ত নৌকার ভিতর তীর্থ কাকের মত বসে আছে । যার যার ধর্মের দোয়া দরুদ পড়ছে একটু বাঁচার আশায় , আর মৃত্যুর পর দাফন কাফনের যেন যথাযথ মর্যাদায় হয় ।
বড়ই পরিতাপের বিষয় যে খাত মানবকুলে ফুলে ফলে ঘেরা পৃথিবীর রুপ রসের সুগন্ধ ছড়াবে সে খাতকে আমরা বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখাচ্ছি । স্বাস্থ্যখাত ,কৃষি ও জীববৈচিত্র্য এসব খাতকে অগ্রাধিকার দিতে হবে ।
হায়না পারমানবিক বোমা প্রতিযোগিতায় , লাশের মিছিল ভারী করে , কিন্তু ভ্যাকসিন আবিষ্কার হবে না । মানুষের খাদ্য যোগান, কক্সবাজারে তিমি মাছ ও বসন্ত কোকিলের কুহু কুহু ডাক শোনা যায় না । সেই অর্থনীতিবীদ ম্যালথাসের বানী সত্য হয়ে গেলো । প্রকৃতি যেন প্রতিশোধ নিল। করোনা ভাইরাস থেকে মানব কূল শিক্ষা পেল বোমা বারুদ দ্বারা করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যায় না ।
করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে দরকার ঔষুধ ভ্যাকসিন টিকা সামাজিক দূরাতো আর সুষম খাবার । তায় সকল বোমা বারুদ কে সাগরের অতল গর্ভে ফেলে বোমা মুক্ত পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে । স্বাস্থ্য , কৃষি ও জলবায়ু জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত । এ সব খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঢেলে সাজাতে হবে । কার্বণডাই অক্সাইডের অন্ধকার নিখিল না বানিয়ে জীবন্ত অক্সিজেনের সবুজ নিখিল গড়তে হবে । যতক্ষন না পর্যন্ত টিকা ভ্যাকসিন আবিস্কার না হবে ততক্ষন স্বাস্থ বিধি মেনে চলতে হবে ,এর কোন বিকল্প নায়।
আমরা আশাবাদী মানুষ আশায় বাঁধি ঘর ,মানুষ মানুষের জন্য করোনা যুদ্ধে জয়ী হয়ে সমস্ত দুশ্চিন্তা অশান্তি দূর ভাবনা উড়ে যাক ফুড়ে যাক।
ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত পৃথিবী গড়ে উঠুক । সবার ঘরে ঘরে ফুলে ফলে ফাগুনে আগুনে ভরে উঠুক , বিশ্বের প্রতিটি পরিবার, জয় হোক মানবতার ।
আরও ৯০০ পরিবারকে মেয়র তাপসের ঈদ উপহার পৌঁছে দিলেন যুবলীগনেতা মধু
::জোছনা মেহেদী::
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের পক্ষে আরও ৯০০ পরিবারকে ত্রাণ ও ঈদ উপহার দেওয়া হয়েছে। গতকাল দক্ষিণ যুবলীগ সহ-সভাপতি আগম্মদ উল্লাহ মধু এই সব সামগ্রী বিতরণের নেতৃত্ব দেন। এ সময় তিনি বলেন, এক দিন বাদেই ঈদ। ঈদে সবাই ঘরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। ঘরের আনাচে কানাচে, ছাদে- যেসব জায়গায় পানি জমে থাকতে পারে, সেই সব জায়গা পরিচ্ছন্ন রাখুন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কোনভাবেই যেন এডিস মশার বিস্তার না ঘটে সেদিকে আমাদেরকেই নজর রাখতে হবে।’
মধু বলেন, ‘আমাদের মেয়র আপনাদের পাশে আছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যাবতীয় নির্দেনা বাস্তবায়ন করতে প্রথম দিন থেকেই কাজ শুরু করেছেন। আমাদের দক্ষিণ সিটি হবে সব সিটির জন্য রোল মডেল। সেজন্য প্রয়োজন আমাদের সচেতনতা।’
বংশাল থানা ও শাহাবাগ থানার ৩৪ ও১৩ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে ত্রাণসামগ্রী ও খাবার বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন বংশাল থানা ৩৪ নং ওয়ার্ড সভাপতি নাসিরুল্লা ওয়ালিদ, স্থানীয় কাউন্সলর মোসা. শাহিনুর, ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সলর আলহাজ্ব এনামুল হক আবুল, যুবলীগ দক্ষিণ মহানগর সহ-সভাপতি আবু সাঈদ মোল্লা, ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইসমাইল হোসেন তপু, আওয়ামী লীগের ধর্মবিষায়ক উপ-কমিটির সদস্য এ কে আজাদ সরকার, দক্ষিণ মহানগর যুবলীগের সহসম্পাদক মো. ইমরান খান, যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম বাবু, মাহফুজুর রহমান, মো. রবিউল ইসলাম, মো. হাফিজ প্রমুখ।
ব্যবস্থাপনায় যুবলীগ নেতা এহসানুল আলম প্রিন্স ও পল্টন থানা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোরশেদ আলম।
ঈদসংখ্যায় কবিদের পঙক্তিমালা
ঘৃত মধু দুগ্ধ নিয়ে এই আছি বেশ জান্নাতে
খুশবু দারুণ মন ভরে দ্যায় প্রিয়ার হাতের রান্নাতে
পানশালাতে কেমনে যাব বেহেস্ত যে লকডাউন
জান্নাতি সুখ ভেস্তে গেল রুদ্ধ পথের কান্নাতে।
বৃষ্টির সাথে আমার কখনোই ভাব ছিলো না
তবুও আমাকে বারবার ভিজিয়েছে রুদ্র জলোচ্ছ্বাসে
সময়ের পিঠে হাত রেখে একবার
তাকে বলেছিলাম-
ফসলের মাঠে নৃত্য করো;
অথচ সেদিন আমাকে ভ্রুক্ষেপ না করে
নাচতে থাকলো নটবর তান্ডবে।
কথা দিয়ে মালা গাঁথার নেশা
নীলাকাশের সাথে মিশে মেঘ হয় না কখনো
তবে কি স্রষ্টার অশ্রু ঝরে পড়লো
ক’ফোঁটা
না বৈশাখি তান্ডব মেইল পাঠালো
ভেঙে গড়ার অপূর্ব নিশানা ধরে
তা হলে এসো আমরা আবারো শুরু করি
শুদ্ধ হবার প্রথম পাঠ।
আমি চোখের ভেতর কবর দেখি।
আমাদের কাঁধে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে
মৃত শরীর-বনের পাশে, মাটি খুঁড়ে-
এই সব শরীর চলে যাওয়া পথ
চালকুমড়োর শাদা কুড়োর মতো
ডুবে যায়-রাখাল সন্ধ্যার দিকে-
খলবলে ব্রাহ্মান্ড, আরও ভাগ হয়
সুগন্ধি আতরে মখমলি স্লেটদাগ-
আমাদের দেখা হয়- শুষ্কজলা ঠোঁটে
ভাঙা কোলাহলের পাশে-রেলস্টেশন,
ধু ধু মাঠ-পিঁপড়ের ঢিবি, আঁশশাদা
চারাগাছের বীজ, দেখা হয়- ফের
পিঠ ছোঁয়া রাজবায়ুর উঁচু ক্ষেতখামার
চিলেকোঠায় ঠাঁই নেই চড়ুইদের,
চিমনি থেকে বের হওয়া সাদা-কালো ধোঁয়া
কেড়ে নিয়েছে প্রাণের স্পন্দন!
নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে এয়ারকন্ডিশনের কৃত্রিমতা।
আকাশে বাতাসে শুধু কালো বিষ-
এই নিয়েই দমবন্ধ বেঁচে থাকা।
এভাবে আর কত দিন?
তবে বোধোদয় হয়েছে বুঝি
করোনায় মৃত্যুভয়ে বাঁচার আকাঙ্খায়।
তুমি এখন লকডাউনে-
তাই চিরচেনা সেই রমনার উদ্যানে, সমুদ্র সৈকতে
নেই এখন প্রাণের কোলাহল।
সমুদ্র বিলাসে সমুদ্র স্নান নেই; বালুচরে নেই দৌড়ঝাঁপ
নেই ঝাঁলমুড়ি নেই আড্ডা!
নেই বিয়ার খেয়ে ছুঁড়ে ফেলা ক্যান;
অতপর-
বিষমুক্ত ধরিত্রি!
চড়ুইদের আজ স্বস্তিতে ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ
ডলফিনের জলকেলি!
মৃত্যু নয়, আজ করোনাকেই মানুষের
যতো বেশি ভয়!
যদিও মৃত্যু চিরন্তন, তবুও কে বা কারা
রাখে তার খবর?
সৃষ্টিকর্তা, ধর্ম ও কর্ম ভুলে আজ সবাই
মিথ্যে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে করি বড়াই!
অতঃপর,
যদি কোনোদিন ঘুচে যায় এ মহামারি
ফিরে আসে শিশুর প্রাণবন্ত হাসি, তবে-
মানুষের নামে মানুষ না ক’রে; পৃথিবীকে
তুমি নামানুষের বদলে সাজিয়ো বৃক্ষরাজি
আর যদি মানুষ ক’রেই সাজাও পৃথিবী, তবে
মনুষ্যত্ব দিয়ো একটুখানি।
দেশ পুড়ে যাচ্ছে জ্বরে;
তার কপালে হাত রাখবে কেউ নেই।
দেশ টলে পড়ছে মৃত্যুর কোলে;
তাকে বাঁচাবার কেউ নেই!
তাকে জীয়নকাঠি ছোঁয়াও
তাকে মৃত্যুর কোল থেকে তুলে নিয়ে আসো
জীবনের প্রারম্ভে।
চাঁদ দেখা যায়নি, ঈদ সোমবার
::নিজস্ব প্রতিবেদক::
রোববার দেশের কোথাও শাওয়ালের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামী সোমবার ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে। আজ শনিবার চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। কমিটির বৈঠতে সভাপতিত্বকারী ধর্ম সচিব মো. নূরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো জেলা থেকে চাঁদ দেখার খবর আসেনি। সে হিসেবে এ বছর ৩০ রোজা পুরো করে সোমবার ঈদ হবে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এবার রোজার ঈদ হবে রোববার। বিশ্বের অন্য স্থানের মতো এবার করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এক মাস রোজার পর ঈদ উদযাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশের মুসলমানরা।
করোনাভাইরাস অতিমাত্রায় সংক্রামক বলে সব ধরনের অফিস-আদালত ও গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে গত ২৬ মার্চ থেকে। এই সময় সবাইকে বাসায় থাকার, জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মসজিদে জামাতে নামাজ পড়ার উপর দেওয়া কড়াকড়ি সম্প্রতি তুলে নেওয়া হলেও এবার রোজার ঈদের দিন ঈদগাহ বা খোলা জায়গার বদলে বাড়ির কাছে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে বলেছে সরকার।
সেইসঙ্গে মসজিদে ঈদ জামাত আয়োজনের ক্ষেত্রে সুরক্ষার ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বেশ কিছু শর্ত দিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় বলেছে, এসব নির্দেশনা না মানলে ‘আইনগত ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে।
গাইবান্ধায় কেনাকাটায় তোয়াক্কাই নেই স্বাস্থ্যবিধির
::সংবাদদাতা, গাইবান্ধা::
গাইবান্ধায় ঈদউল ফিতরের উৎসবের আমেজে বদলে গেছে গাইবান্ধার চিত্র। তিনদিন বন্ধ রাখার পর খুলে দেওয়া মার্কেটগুলো। এখন সব স্থান কোলাহলমুখর। গাদাগাদি ভীড়ে কেনাকাটা চলছে। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।
জেলা শহরের কাচারী বাজার, পিকে বিশ্বাস রোড, স্টেশন রোড, ডিবি রোডসহ মার্কেটগুলোতে ঠাসাঠাসি করে ২৩ মে শনিবার সকাল থেকেই অস্বাভাবিক ভীড় দেখা যায়। প্রতিটি দোকান ও মার্কেটগুলোতেই একই চিত্র। ক্রেতারা দোকানে জায়গা না পেয়ে রাস্তায় ভীড় করে দাঁড়িয়ে কেনাকাটার জন্য যেন মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এই পরিস্থিতিতে এ জেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশংকা করছেন চিকিৎসক ও সচেতনমহল।
১৯ মে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সাথে পুলিশ সুপার, গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র, গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্টিজ, জেলা দোকান মালিক সমিতি, জেলা দোকান কর্মচারি সমিতিসহ অন্যান্যদের সাথে এক জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বেচাকেনা করা হবে বলে অঙ্গিকার করেন ব্যবসায়ি নেতৃবৃন্দ। এমতাবস্থায় তাদের অনুরোধ এবং আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার থেকে আবারও দোকানপাট ও মার্কেট খুলে দেয়া হয়।
স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দোকান পরিচালনা প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে বারবার চেষ্টার পরও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
দেশ গঠনে একযোগে কাজ করাই হোক ঈদের অঙ্গীকার : মির্জা ফখরুল
::নিজস্ব প্রতিবেদক::
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বের মুসলমানদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের শিক্ষা থেকে আমাদের অঙ্গীকার হোক সব হিংসা, বিদ্বেষ ও হানাহানি থেকে মুক্ত হয়ে ন্যায়, সাম্য, ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব, মানবতা ও মহামিলনের এক ঐক্যবদ্ধ ও ভালোবাসাপূর্ণ সমাজ এবং দেশ গঠনের জন্য একযোগে কাজ করা।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। শনিবার (২৩ মে) বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলা ট্রিবিউনকে বিবৃতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও বিবৃতি দিয়েছেন।’
ফখরুল তার বাণীতে বলেন, ‘মাসব্যাপী কঠোর সিয়াম সাধনার পর মুসলমানদের জীবনে এক স্বর্গীয় শান্তি ও আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতরের উৎসব মুসলমানদের নিবিড় ভ্রাতৃত্ববোধে উদ্বুদ্ধ করে। মাসব্যাপী রমজানের আত্মশুদ্ধির মহান দীক্ষার মধ্য দিয়ে আসে ঈদুল ফিতরের আনন্দঘন মুহূর্ত। দেশের বিদ্যমান ক্রান্তিলগ্নে সকল ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ঈদের আনন্দ নিজেদের ভাগ করে নিতে হবে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের আঘাতে এবারে হয়তো পূর্বের ন্যায় সবাইকে নিয়ে ঈদের আনন্দ উদযাপন করা সম্ভব হবে না। তবু আমরা যে যেখানেই থাকি না কেন ঘনিষ্ঠজন, নিকটজনসহ সকলেই ঈদের আনন্দ ভাগ করে নেবো। কোনও অসহায় ও দুস্থ মানুষ যেন অভুক্ত না থাকে সেজন্য যারা সচ্ছল ব্যক্তি তারা যেন দরিদ্রদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।’ তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারিতে এখন বিশ্ব সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরাজ করছে নিরানন্দ, ভয় ও আতঙ্ক। এই অদৃশ্য আততায়ীর কবল থেকে মানুষকে রক্ষা করতে আমি কায়মনোবাক্যে মহান রাব্বুল আল আমিনের নিকট দোয়া করি।’
অতিরিক্ত ডিআইজিসহ করোনায় আক্রান্ত ৩৫৭৪ পুলিশ, মৃত্যু ১২
::নিজস্ব প্রতিবেদক::
দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে শনিবার (২৩ মে) পর্যন্ত একজন অতিরিক্ত ডিআইজিসহ সারাদেশে তিন হাজার ৫৭৪ জন পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১২ জন। জনগণের সেবা ও সুরক্ষা দিতে গিয়ে পুলিশের এসব সদস্য আক্রান্ত ও মারা গেছেন বলে জানায় পুলিশ সদর দফতর।
করোনায় আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে অতিরিক্ত ডিআইজি পদ মর্যাদার একজন, পুলিশ সুপার পদ মর্যাদার ৮ জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদ মর্যাদার ১৯ জন, সহকারী পুলিশ সুপার পদ মর্যাদার ২০ জন, ইন্সপেক্টর পদ মর্যাদার ৯৭ জন, উপ-পরিদর্শক পদ মর্যাদার ৩৮৬ জন, সহকারী উপ-পরিদর্শক পদ মর্যাদার ৪৮১ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। আর দুই হাজার ৫৬২ জন হচ্ছেন কনস্টেবল।
পুলিশ সদর দফতরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পুলিশ সদস্যদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি কমাতে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের নির্দেশে বিভিন্ন ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য সর্বোচ্চ সেবা ও শুশ্রূষা নিশ্চিত করতে বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করাসহ সব পুলিশ হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদি সংযোজন করা হয়েছে। এ কারণে একদিকে পুলিশ আক্রান্তের হার যেমন ক্রমান্বয়ে কমছে, তেমনি দ্রুততার সঙ্গে বাড়ছে সুস্থতার হারও।
পুলিশের অপর সূত্রটি জানায়, শনিবার পর্যন্ত ঢাকা মহানগর পুলিশে আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ২৯১ জন। কোয়ারেন্টিনে আছেন চার হাজার ৮১ জন। আইসোলোশনে আছেন এক হাজার ৮৫৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৭১৬ জন।