::নিজস্ব প্রতিবেদক::
জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার ছেলে আনন্দ জামান জানান, ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ৪টা ৫৫ মিনিটে তার বাবার মৃত্যু হয়। বাংলা একাডেমির সভাপতি আনিসুজ্জামানের বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। হৃদরোগ, কিডনি ও ফুসফুসে জটিলতা, পারকিনসন্স ডিজিজ এবং প্রোস্টেটের সমস্যার পাশাপাশি শেষ দিকে তার রক্তেও ইনফেকশন দেখা দিয়েছিল।
অসুস্থতা বাড়তে থাকায় গত ২৭ এপ্রিল এই অধ্যাপককে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৯ মে তাকে নেওয়া হয়েছিল ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদও জাতীয় শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।
বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের জন্ম ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। ভারত ভাগের পর তারা এপারে চলে আসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন আনিসুজ্জামান। এই ভূখণ্ডে ধর্মান্ধতা ও মৌলবাদবিরোধী নানা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল তার।
না ফেরার দেশে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান
ইউরোপ ও আমেরিকার সঙ্গে তুলনা করে স্বস্তি পেতে চাইলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
:: নিজস্ব প্রতিবেদক ::
ইউরোপ ও আমেরিকায় নতুন করোনাভাইরাসে লাখো মানুষের মৃত্যুর সঙ্গে দেশের মৃত্যুহার তুলনা করে স্বস্তি পেতে চাইছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ‘আপনারা জানেন অনেক রোগ আছে, যে রোগে অনেক লোক মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু পারতপক্ষে এই রোগটি, এই ভাইরাসটি …. আমি মনে করি না এইভাবে কোনো ভয়ানক রোগ। করোনাভাইরাস বাংলাদেশে তেমনভাবে মৃত্যু ঘটাচ্ছে না।’
বাংলাদেশে নতুন করোনাভাইরাসে সর্বাধিক রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর দিন বুধবার ঢাকার মহাখালীর বিসিপিএস মিলনায়তনে নতুন চিকিৎসক ও নার্সদের যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। বৈশ্বিক মহামারী আকার ধারণ করা কোভিড-১৯ এ বাংলাদেশে এই পর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার রোগী শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে মারা গেছে ২৬৯ জন। বাংলাদেশে মোট আক্রান্তের মধ্যে ১ দশমিক ৫ শতাংশ মারা গেছে। অন্য অনেক দেশের তুলনায় এই হার বেশ কম। আক্রান্তদের মধ্যে ফ্রান্সে ১৫ শতাংশ, যুক্তরাজ্য ও ইতালিতে ১৪ শতাংশ, স্পেনে ১১ শতাংশ, বেলজিয়ামে ১৭ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৬ শতাংশ, ভারতে ৩.৩ শতাংশ, পাকিস্তানে ২.১ শতাংশের মৃত্যু ঘটেছে। তবে বাংলাদেশে রোগী শনাক্ত এবং মৃত্যুর তথ্য নিয়ে অনেকের সংশয় রয়েছে। আর কোভিড-১৯ মোকাবেলায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও তার মন্ত্রণালয়ের কাজ নিয়েও রয়েছে বিস্তর সমালোচনা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি, করোনায় প্রায় ৮০ শতাংশ রোগী এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। অনেকের মধ্যে কোনো লক্ষণও দেখা যায় না। এই রোগে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। স্বাভাবিক চিকিৎসাতেই তারা ভালো হয়ে যায়।’
কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় সরকার জরুরি ভিত্তিতে যে দুই হাজার চিকিৎসক ও ৬ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছে, তাদের যোগদান অনুষ্ঠানই হয় বুধবার।
মন্ত্রী জাহিদ মালেক সদ্য যোগদানকৃত চিকিৎসকদের উদ্দেশে বলেন, ‘কোভিডের কারণেই আপনাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেই অর্থে এই কোভিড আপনাদের ভাগ্যই খুলে দিয়েছে। কাজেই চিকিৎসা ক্ষেত্রে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির স্বাস্থ্যসেবায় পিছপা হবেন না। আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিজ পরিবারের একজন সদস্য ভেবে সেবা দেবেন।’
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এদিন নতুন ২ হাজার চিকিৎসকের পদায়ন শেষে ওরিয়েন্টেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। তবে করোনাভাইরাস সঙ্কটের কারণে কর্মশালায় ৪০ জন চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।
মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বিষয়টি তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন,‘এটা একটি বিরল ঘটনা। খুব শিগিহিরই আমাদের আরও বেশকিছু টেকনোলজিস্ট নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। এসব নিয়োগ হলে দেশের স্বাস্থ্যসেবার মান নিঃসন্দেহে আরও বৃদ্ধি পাবে।’
নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সদের উদ্দেশে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আপনারা কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা করবেন। নন কোভিড রোগীর চিকিৎসাও আপনাদের করতে হবে। চিকিৎসার মধ্যে কোনো তফাৎ করা যাবে না, সবাই রোগী।’
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আলী নূর, নিউরো সার্জন ও বিসিপিএসের সভাপতি কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, স্বাস্থ্যসেবা শাখার অতিরিক্ত সচিব সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা। নবাগত চিকিৎসকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ডা. আর রাফি তামজীদ ও ডা. নাজিয়া হাসান জিনা।
ভার্চুয়াল আদালতের মাধ্যমে ১০১৩ জনের জামিন
আদালত প্রতিবেদক
ভার্চুয়াল কোর্ট পদ্ধতিতে দেশের অধস্তন আদালতসমূহে এক হাজার ১৮৩টি আবেদনের শুনানি নিয়ে এক হাজার ১৩ জনকে জামিন দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৩ মে) সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার সাইফুর রহমানের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। গত ১০ মে নিম্ন আদালতের ভার্চুয়াল কোর্টে শুধু জামিন শুনানি করতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। নির্দেশ অনুসারে গত ১২ মে দেশের বিচারিক আদালতে ৩৫০টি আবেদনের শুনানি নিয়ে ১৪৪ জনকে জামিন দেন আদালত।
স্থগিত হলো ‘মিশন এক্সট্রিম’
বিনোদন প্রতিবেদক
দুদিন আগেও প্রযোজক-পরিচালক-কাহিনিকার সানী সানোয়ার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন রোজার ঈদেই মুক্তি পাচ্ছে তার আলোচিত সিনেমা ‘মিশন এক্সট্রিম’। কিন্তু দেশের চলমান পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাওয়ায় সিদ্ধান্তে আর অটল থাকা হলো না সংশ্লিষ্টদের। সানী সানোয়ার জানালেন, সিনেমাটি মুক্তির বিষয় স্থগিত করা হলো।
তিনি বললেন, ‘এন্টারটেইনমেন্ট দুনিয়ার জন্য উদ্ভূত পরিস্থিতি একটি বড় ধাক্কা। আর, আমাদের এই ছোট মার্কেটের জন্য তো সুনামি। তারপরও আমাদের ধৈর্য ধরে এগিয়ে যেতে হবে। সোশ্যাল কাজের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত এই সিনেমার মূল উদ্দেশ্যই ছিল বহু সংখ্যক দর্শকের কাছে নিয়ে যাওয়া। ছবির বার্তাটি সারা দেশে পৌঁছে দেওয়া। সেটা ঈদ হলে ভালো হতো। এখন ঈদে যেহেতু হচ্ছে না, তাই পরে কোনও একটি সুবিধাজনক সময়ে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে খুব জলদি যে সে সময়টা আসছে না, সেটি অনুমান করতে পারছি।’
পুলিশ অ্যাকশন থ্রিলার সিনেমাটি সানী সানোয়ারের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন ফয়সাল আহমদ। কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন আরেফিন শুভ, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী, সাদিয়া নাবিলা ও তাসকিন রহমান। চলতি বছরের শুরুতে ‘মিশন এক্সট্রিম’-এর দুই পর্বের শুটিং শেষ হয়।
কপ ক্রিয়েশনের ব্যানারে সিনেমাটির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন সুমিত সেনগুপ্ত, শতাব্দী ওয়াদুদ, মাজনুন মিজান, ইরেশ যাকের, মনোজ প্রামাণিক, আরেফ সৈয়দ, সুদীপ্ত দীপ, রাশেদ মামুন অপু, এহসানুল রহমান, দীপু ইমামসহ অনেকে।
‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমাটি পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তথা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ‘সিটিটিসি’র কিছু শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন সানী সানোয়ার নিজেই। সিনেমাটির সহযোগী প্রযোজক হিসেবে রয়েছে মাইম মাল্টিমিডিয়া ও ঢাকা ডিটেকটিভ ক্লাব।
প্রতিদিন আরও ছয় হাজার শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা ইউনিসেফের
ডেস্ক প্রতিদিন
করোনা মহামারিতে নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় আগামী ছয় মাসে বিশ্ব জুড়ে প্রতিদিন অতিরিক্ত প্রায় ছয় হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের শিশু উন্নয়ন বিষয় তহবিল ইউনিসেফ। বুধবার (১৩ মে) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এই তথ্য জানিয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের মার্চে পাঁচ বছরের শিশুদের জরুরি স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ ২৫ শতাংশ কমেছে।
ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথ জার্নালে প্রকাশিত জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণার বরাত দিয়ে ইউনিসেফের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছালে ১১৮টি নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আগামী ছয় মাসের মধ্যে নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা বিঘ্নিত হয়ে ও শিশু অপুষ্টি বেড়ে পাঁচ বছরের কম বয়সী অতিরিক্ত ১২ লাখ শিশুর মৃত্যু ঘটতে পারে। বিবৃতিতে বাংলাদেশে ইউনিসেফ প্রতিনিধি তোমো হোযুমি বলেন, ‘মহামারির কারণে স্বাস্থ্য সেবা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেলে প্রতিরোধযোগ্য ও আরোগ্য লাভ করা সম্ভব এমন অবস্থা থেকে হাজার হাজার শিশু মারা যেতে পারে।’ তিনি জানান, বাংলাদেশের নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে ইউনিসেফ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, আগের তিন মাসের তুলনায় এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত গর্ভকালীন ও গভ পরবর্তী সেবা গ্রহণ ব্যাপক মাত্রায় কমেছে। এছাড়া একই সময়ে স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে সন্তান জন্ম দানের পরিমাণ কমেছে ২১ দশমিক ২ শতাংশ। করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশে হাম ও রুবেলের টিকাদান ক্যাম্পেইন স্থগিত করা হয়েছে। তবে শিশুদের নিয়মিত টিকাদান চালু থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ে টিকা দেওয়া হচ্ছে না এবং লকডাউনের কারণে স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোতে টিকা পরিবহনও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন গবেষণার বরাতে ইউনিসেফের বিবৃতিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ আরও কমে গেলে আগামী ছয় মাসে পাঁচ বছরের কম বয়সের অতিরিক্ত ২৮ হাজার শিশুর মৃত্যু হতে পারে। এসব শিশুর মৃত্যুর ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা রাখবে অপুষ্টি।
বর্তমানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মহামারি মোকাবিলায় মনোযোগী হওয়ায় মা, নবজাতক ও শিশুদের নিয়মিত স্বাস্থ্য সেবা অব্যাহত রাখতে সরকারের সঙ্গে কাজ করছে ইউনিসেফ। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার ইতোমধ্যে নতুন করে দুই হাজার ডাক্তার ও পাঁচ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সুদৃঢ় করতে এই খাতে আরও বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
ফের বাড়তে পারে বিমান চলাচল নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ
:: নিজস্ব প্রতিবেদক ::
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় বিমান চলাচলের নিষেধাজ্ঞার সময়সূচি আরও একধাপ বাড়তে পারে। বেসামরিক বিমান চলচাল কর্তৃপক্ষ বেবিচক) বুধবার এতথ্য জানিয়েছে। বেবিচকের কর্মকর্তারা জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে আগামী শনিবার পর্যন্ত প্রায় দেড়মাসের বেশি সময় ১৭টি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সব রুটে বন্ধ আছে যাত্রীবাহী ফ্লাইট। বুধবার সরকার সাধারণ ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি করে। এ কারণে বৃহস্পতিবার ফের বাড়তে পারে বিমান চলাচল নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ। এ ব্যপারে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান বলেন, দিনদিন বাড়ছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে আগামী শনিবার পর্যন্ত কয়েক দফা বৃদ্ধি করা হয় বিমান চলচল নিষেধাজ্ঞার সময়সূচি। প্রায় ড়েমাসের বেশি সময় ১৭টি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সব রুটে বন্ধ আছে যাত্রীবাহী ফ্লাইট।
তিনি বলেন, বুধবার সরকার কর্তৃক ঘোষণা দেওয়া হয় আগামী ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটির মেয়াদ। ফলে বিমান চলাচল এ নিষেধাজ্ঞার সময়সূচি আরও একধাপ বাড়তে পারে। তবে বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে পুরোপুরি জানা যাবে।
করোনার অলৌকিক ওষুধ বিক্রির দায়ে অস্ট্রেলিয়ায় চার্চকে জরিমানা
ডেস্ক প্রতিদিন
অবৈধভাবে করোনামুক্তির ‘অলৌকিক ওষুধ’ বিক্রির নামে প্রতারণার দায়ে অস্ট্রেলিয়ার একটি চার্চকে জরিমানা করেছেন দেশটির থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (টিজিএ)। চার্চটি অবৈধভাবে করোনা থেকে মুক্তির ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে বিজ্ঞাপন দিয়ে অলৌকিক ওষুধ বিক্রি শুরু করে। টিজিএ বুধবার বলেছে যে, অস্ট্রেলিয়ায় একটি গির্জায় অবৈধভাবে একটি ব্লিচ পণ্য বিক্রি করছে, যেটাতে অলৌকিক করোনা মুক্তির ক্ষমতা রয়েছে বলে বিজ্ঞাপনও প্রচার করে। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে জনগণকে ঠকানোর দায়ে গির্জাটিকে জরিমানা করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়াও এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
মেডিক্যাল রেগুলেটরি অথরিটি জানিয়েছে যে, গির্জাটিকে তার ‘মিরাকল মিনারেল সলিউশন’ (এমএমএস) বিক্রি ও প্রচারের জন্য মোট ৯৮ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করা হয়েছে। টিজিএ বলেছে যে, মিরাকল মিনারেল সলিউশন নামে যে পানীয় বিক্রি করা হচ্ছে সেটাতে উচ্চ ঘনত্বের সোডিয়াম ক্লোরাইট রয়েছে, মূলত টেক্সটাইল ব্লিচিং এজেন্ট হিসাবে এই রাসায়নিকটি ব্যবহৃত হয়। মানবদেহের জন্য এটা অত্যন্ত ক্ষতিকর।
মিরাকল মিনারেল বিক্রিতে জড়িত চার্চটি মূলত মার্কিন বেজড জেনেসিস ২ চার্চ অফ হেলথ অ্যান্ড হিলিংয়ের একটি শাখা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিচার বিভাগের আদেশের অধীনে এটি ব্লিচ প্রোডাক্ট ক্লোরিন ডাই অক্সাইডযুক্ত মিনারেল বিক্রি করতে পারে না।
জেনেসিস চার্চটির সঙ্গে সংযুক্ত একটি ওয়েবসাইটে মিরাকল মিনারেলের প্রশংসা করে একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে যেখানে কোন প্রমাণ ছাড়াই দাবি করা হয়েছে – এমএমএস আলঝাইমার থেকে ম্যালেরিয়া পর্যন্ত সমস্ত কিছু নিরাময় করতে পারে।
টিজিএ বলেছে যে, ‘তারা চার্চকে জরিমানা করেছে কারণ এটি মিরাকল মিনারেল নামে যে রাসায়নিক বিক্রি করছে সেটা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। কোনো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত প্রমাণ নেই যে এমএমএস কোনো রোগ নিরাময় বা উপশম করতে পারে।’ এই রাসায়নিক পানে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির সৃষ্টি হতে পারে। বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া এবং মারাত্মক ডিহাইড্রেশন হতে পারে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালেও ভর্তি হওয়া লাগতে পারে।
করোনাকালে যুদ্ধ নয়: প্রস্তাব পাস নিয়ে সন্দেহের তীর যুক্তরাষ্ট্রের দিকে
ডেস্ক প্রতিদিন
বিশ্বজুড়ে চলছে করোনার তাণ্ডব। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে চলা যুদ্ধের অবসানে একটি খসড়া প্রস্তাব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে জমা দেওয়া হয়েছে। জার্মানি ও এস্তোনিয়া এই প্রস্তাব দিয়েছে। এর আগে ফ্রান্স ও তিউনিশিয়া যুদ্ধবিরতির জন্য একটি খসড়া প্রস্তাব আনলে তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাধা দেয়। এর ফলে সেই খসড়া প্রস্তাব আর বেশি দূর এগোতে পারেনি। আগের প্রস্তাবটিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডাব্লিউএইচও’র নাম থাকায় আমেরিকা এর সমালোচনা করে এবং কার্যত প্রস্তাবটির মৃত্যুর ঘটায়। এ কারণে নতুন প্রস্তাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কথা উল্লেখ করা হয়নি।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আগের খসড়া প্রস্তাবে থাকা ৯টি বিষয়বস্তুর জায়গায় নতুন প্রস্তাবে ৫টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বিদ্যমান সংকট বা যুদ্ধে লিপ্ত ২০টি দেশকে সহায়তা করার উদ্দেশে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আগের প্রস্তাবটির মতোই এতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়গুলোকে সহায়তা দিতে কমপক্ষে টানা ৯০ দিনের জন্য মানবিক যুদ্ধবিরতির আহবান জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবটির বিষয়ে কবে ভোট হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। এবারের প্রস্তাবেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাধা দেবে কিনা সেটাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ব্রিটেনে বৃদ্ধাশ্রমে ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু
::ডেস্ক প্রতিদিন::
করোনাভাইরাসের তাণ্ডব চলছে ইউরোপের যেসব দেশে তার মধ্যে ব্রিটেন অন্যতম। ব্রিটেনের ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে (কেয়ার হোম) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সে এর এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ব্রিটিশ সরকারের তথ্যের উপর ভিত্তি করে এ হিসাব করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আট সপ্তাহে (১ মে পর্যন্ত) ব্রিটেনে মারা গেছে ৩৭ হাজার ৬২৭ জন। এর মধ্যে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে ২০ হাজার জন মারা গেছে। তবে এই সংখ্যার মধ্যে স্কটল্যান্ডের মৃত্যুর হিসাব নেই। করোনা আক্রান্ত বহু রোগী যারা কেয়ার হোম থেকে পরবর্তীতে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং মারা গেছে তাদেরকেও এই হিসাবের মধ্যে আনা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের মহামারিতে মৃত্যুর সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে যা ইউরোপে যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। এতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের করোনাভাইরাস মোকাবেলার কৌশল এবং যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
করোনার ওষুধ রেমডেসিভির তৈরিতে মার্কিন কোম্পানির চুক্তিতে ভারত-পাকিস্তান
::ডেস্ক প্রতিদিন ::
করোনা মোকাবেলায় এখন পর্যন্ত একমাত্র আশার আলো দেখানো মার্কিন ওষুধ রেমডেসিভির তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে ভারত-পাকিস্তান। দেশ দুটিকে এরই মধ্যে রেমডেসিভির তৈরিতে অনুমতি দিয়েছে মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট গিলেড সায়েন্স। এই ওষুধ তৈরিতে বিশ্বের ১২৭টি দেশের ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে গিলেড সায়েন্সেস। যার মধ্যে রয়েছে ভারতের তিন সংস্থা সিপলা, হেটেরো ল্যাব ও জুবিল্যান্ট লাইফসায়েন্সেস।
মার্কিন ফার্মা জায়ান্ট জানিয়েছে, বিশ্বের ১২৭টি দেশের ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। ভারতের তিন সংস্থা ছাড়াও রয়েছে পাকিস্তানের ওষুধ নির্মাতা সংস্থা ফিরোজসন্স ল্যাবোরেটরিস ও পেনসিলভানিয়ার ফার্মা কোম্পানি মাইল্যান। আরো পাঁচটি সংস্থাকে নিজেদের চাহিদা ও সুবিধা মতো ওষুধের দাম নির্ধারণ করার অনুমতি দিয়েছে মার্কিন কম্পানিটি। তবে এই পাঁচটি সংস্থার প্রস্তুত করা ওষুধ বিশ্বের ১২৭টি দেশে পৌছে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ভারতে এরই মধ্যে রেমডেসিভির ওষুধের উপকরণ বানানো শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (আইসিআইআর)-এর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল টেকনোলজি ল্যাবে রেমডেসিভির ওষুধ তৈরির মূল উপকরণগুলো বানানো শুরু হয়েছে। এবার গিলেড সায়েন্সের সঙ্গে জরুরিকালীন চুক্তির ভিত্তিতে ভারতের তিন ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানি সিপলা, হেটেরো ল্যাব ও জুবিল্যান্ট লাইফসায়েন্সেস-এ বাণিজ্যিক ভাবে রেমডেসিভির ওষুধ তৈরি শুরু হবে।
২০১০ সালেই রেমডেসিভির ওষুধ তৈরি করে গিলেড সায়েন্সে। ২০১৪ সালে আফ্রিকাতে হয়েছিল ইবোলা মহামারি। অনেকে দাবি করেছিলেন ইবোলার সংক্রমণ রুখতে কাজে এসেছিল এই ড্রাগ, আবার অনেক গবেষকের দাবি ছিল ইবোলার সংক্রমণ সেভাবে আটকাতে পারেনি রেমডেসিভির। কিন্তু রেমডেসিভির নিউক্লিওটাইড অ্যানালগ। আরএনএ ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরির ক্ষমতাকে নষ্ট করে দিতে পারে এই অ্যান্টি-ভাইরাল ড্রাগ। গবেষকরা বলছেন, ভাইরাস যতবেশি প্রতিলিপি বানিয়ে তার সংখ্যা বাড়াবে, ততটাই বেশিবার যে তার জিনের গঠনের বদল ঘটাবে। তাই প্রতিলিপি গঠন করা আটকাতে হবে।
স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে রেমডেসিভির নিয়ে গবেষণা চলছে। এই প্রজেক্টের অন্যতম গবেষক ভারতীয় বংশোদ্ভূত অরুণা সুব্রহ্মণ্যম। তিনি জানান এখনো স্ট্যানফোর্ড আক্রান্তদের ওপর রেমডেসিভিরের ট্রায়াল পরীক্ষা করা হচ্ছে। ট্রায়ালের পর আক্রান্তরা সেরে উঠলে তবেই বাকিদের উপরে এর পরীক্ষা করা শুরু হবে।