:: ডেস্ক প্রতিদিন ::
করোনাভাইরাসের প্রভাবে দীর্ঘ ছুটির কারণে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই কার্যক্রমে বেশি যুক্ত হলেও সরকারি বা পাবলিক প্রতিষ্ঠানও অনলাইন ক্লাসে মনোযোগী হচ্ছে।
গত ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সন্ধান পাওয়ার পর গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সর্বশেষ ছুটি বাড়িয়ে আগামী ৫ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও থাকছে এই ছুটির আওতায়। এদিকে পরিস্থিতি খারাপ হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি থাকতে পারে এমনটাই জানান দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগ্রহী হয়ে ওঠে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণার পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দু-একটি ভার্চ্যুয়াল ক্লাস শুরু করে। একে একে বাড়তে থাকে এই সংখ্যা। আর যারা ভার্চ্যুয়াল ক্লাসে যেতে পারছে না তারাও অনলাইনে ভিডিও ক্লাস আপলোড করছে ছুটির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইন শিক্ষা তাদের কার্যক্রমে যুক্ত হয়। প্রাথমিকভাবে বিদ্যালয়গুলোকে অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে নির্দেশনা দেয় অধিদফতর। তবে তারা ভার্চ্যুয়াল ক্লাসে নয়, ক্লাস রেকর্ডিং করে তা প্রচারের ব্যবস্থা নিয়েছে। সংসদ টিভির মাধ্যমে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। রেকর্ড করা ভিডিও ক্লাস ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেখানে আপ করা হচ্ছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম বিষয়ে বলেন, ‘করোনার কারণে দীর্ঘ ছুটির কারণে আমাদের ভিন্ন মাত্রায় যেতে হয়েছে। সংসদ টিভির পাশাপাশি অনলাইনে ভিডিও ক্লাস আপলোড দিচ্ছি। ইউটিউবে যাচ্ছে এসব ক্লাস। করোনার এই পরিস্থিতির পরও অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত রাখা হবে শিক্ষার্থীদের।’
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ্ বলেন, ‘সংসদ টিভিতে প্রচারের জন্য যেসব ভিডিও ক্লাস করা হয়েছে সেগুলো “ঘরে বসে শিখি” ইউটিউব চ্যানেলে যাচ্ছে। এছাড়া আমরা “ঘরে বসে শিখি” আলাদা পোর্টাল করছি। সেখানে ক্লাসগুলো আপলোড করা হবে। যেকোনও সময় শিক্ষার্থীরা অনলাইনে এগুলো দেখতে পারবে।’
করোনা পরিস্থিতির কারণে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিডিও ক্লাস এবং ভার্চ্যুয়াল ক্লাসে মনোযোগী হয়। রাজধানীর নামকরা বিদ্যালয়গুলোতে শুরু হয় ভার্চ্যুয়াল ক্লাস নেওয়া। রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ চতুর্থ শ্রেণি থেকে একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল ক্লাস নিচ্ছে আগে থেকেই। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৮ এপ্রিল থেকে শুরু করেছি। তার এক সপ্তাহ পর থেকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি এবং ২০ এপ্রিল থেকে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ভার্চ্যুয়াল ক্লাস নিচ্ছি। করোনার কারণে ছুটি বেড়ে যাওয়ায় এই ব্যবস্থা নিয়েছি। ছুটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুরোপুরি সব ক্লাস চলবে।’ এক্ষেত্রে কলেজের ক্লাস সবচেয়ে ভালোভাবে হচ্ছে, অংশগ্রহণ খুবই ভালো বলে জানান অধ্যক্ষ।
সরকারি ছুটির পরপরই ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজে রাজধানীসহ দেশের ১৫টি ক্যাম্পাসে ভার্চ্যুয়াল ক্লাস পরিচালিত হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির আগেও জরুরি প্রয়োজনে এই প্রতিষ্ঠানটি ভার্চ্যুয়াল ক্লাস পরিচালনা করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসবি-ক্যামব্রিয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান লায়ন এমকে বাশার বলেন, ‘প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ক্যামব্রিয়ানের সব শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের কনটেন্ট প্রস্তুত করা আছে। আমরা সব সময়ই ভার্চ্যুয়াল ক্লাসের উপযুক্ত অবকাঠামো প্রস্তুত রেখেছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটির সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ভার্চ্যুয়াল ক্লাস পরিচালনা করছি। আমাদের কোনও সমস্যা নেই। প্রশিক্ষিত শিক্ষক যেমন রয়েছেন, তেমনি শিক্ষার্থীদেরও আমরা আগেই থেকেই প্রস্তুত রেখেছি।’
উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা এক সপ্তাহ থেকে ভার্চ্যুয়াল ক্লাস শুরু করেছি। ইংরেজি মাধ্যমেও ভার্চ্যুয়াল শুরু করা হয়েছে। করোনার সময় ছুটিতে যাতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি না হয় সে কারণেই ভার্চ্যুয়াল ক্লাস শুরু করেছি।’
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফওজিয়া রেজওয়ান বলেন, ‘আমরা ছুটি শুরু হওয়ার পর থেকে অনলাইনে ভিডিও ক্লাস দিচ্ছি। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমরা আগে থেকেই এই ব্যবস্থা নিয়েছি। খুব শিগগিরই ভার্চ্যুয়াল ক্লাসে যাবো।’
শুধু প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়েই অনলাইন ক্লাস শুরু করা হয়েছে তা নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আগে থেকেই অনলাইন ক্লাস এবং ই-ভ্যালুয়েশন চালিয়ে আসছিল। করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইন ক্লাস পুরোপুরি শুরু করে। গত গত ২৩ মার্চ অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে উৎসাহিত করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। গত ২১ এপ্রিল সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চিঠি দিয়ে তথ্য চায় সংস্থাটি। চিঠিতে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে কিনা, কতগুলো বিভাগে নেওয়া হচ্ছে এবং ক্লাসে শিক্ষার্থীর উপস্থিতির হার কত– এসব বিষয় জানতে চায় ইউজিসি। ইউজিসির প্রতি সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার আহ্বান জানান। ইউজিসির বৈঠকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এক সপ্তাহের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার নতুন একটি গাইড লাইন তৈরি করবে।
ইতোমধ্যে ৬৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অনলাইনে ক্লাস চালাচ্ছে সাতটি।
ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখতে আমরা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে একটি গাইডলাইন তৈরি করবো। বর্তমান পরিস্থিতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কীভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে সে বিষয়েই এই গাইডলাইন তৈরি করা হবে।’
শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন দেশের ৫ কোটি ৯০ লাখ শিক্ষার্থীকে ভার্চ্যুয়াল ক্লাসে যুক্ত করা সম্ভব নয়। এছাড়া সরকারি প্রাথমিকে এটি এখনই সম্ভব নয়। তবে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলবে। আর সরাসরি ভার্চ্যুয়াল ক্লাসেও মোট শিক্ষার্থীর বড় একটি অংশ যোগ করা সম্ভব হবে।
অনলাইন কার্যক্রমে ঝুঁকছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
১৫ টন চাল কেলেংকারি : পেকুয়ার ইউএনও সাঈকা সাহাদাত প্রত্যাহার
:: সংবাদদাতা, চকরিয়া (কক্সবাজার) ::
অবশেষে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার আলোচিত ইউএনও সাঈকা সাহাদাতকে। তার স্থলে নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা সিদ্দিকা বেগমকে।
বৃহস্পতিবার রাতে জারীকৃত এক প্রজ্ঞাপনে সাঈকা সাহাদাতকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা স্বাক্ষরিত উক্ত প্রজ্ঞাপনে নতুন নিয়োগকৃত ইউএনওকে আগামী ৩ মের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদানের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
পেকুয়ার প্রত্যাহারকৃত ইউএনও সাঈকা সাহাদাতের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ১৫ টন চাল কেলেংকারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে।
চাল কেলেংকারিসহ ইউএনও সাঈকা সাহাদাতের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে কালের কণ্ঠ অনলাইনে সংবাদ প্রকাশের পরপরই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে পেকুয়া থেকে প্রত্যাহার করে নতুন ইউএনও নিয়োগ দিল।
এদিকে সরকারের এই ত্বরিৎ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পেকুয়ার সর্বস্তরের মানুষ। তাদের আশা, প্রত্যাহার হওয়া ইউএনও’র বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগসমূহের নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থা বা দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম পেকুয়ার ইউএনও সাঈকা সাহাদাতকে প্রত্যাহার এবং নতুন ইউএনও হিসেবে নাজমা সিদ্দিকা বেগমকে নিয়োগ প্রদানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ভবঘুরেরাও বাদ পড়েনি হোটেল আল গণির সহযোগিতা থেকে, উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন কক্সবাজারবাসী
:: আবু সায়েম, কক্সবাজার ::
রাস্তায় পড়ে থাকা ভবঘুরে, অনেকের কাছে পাগল বলে পরিচিত, তারা স্বাভাবিক সময়ে পথচারীদের কাছ থেকে যা পায় তাই খায়। কিন্তু লকডাউনে অনেকটাই অসহায় এখন। পথে নেই পথচারী। তাই খাবারের যোগারও নেই। আবার রাস্তায় যাদের বসবাস, তারাও পড়েছেন বিপাকে। এই সব অসহায়,পথশিশু, ছিন্নমূল, ভবঘুরের জন্য ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ গ্রহণ করে দিনের পর দিন বাস্তবাসয়ন করে চলেছে কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী হোটেল আল গণি। লকডাউনের কারণে যখন কক্সবাজারের সকল হোটেল-মোটেল জোনসহ সব ধরণের খাবার রেস্তোরাঁ বন্ধ, ঠিক তখনই মানবিক দিক বিবেচনায় এসব পথশিশু ছিন্নমূল অসহায় মানুষের পাশে দাড়িঁয়েছেন এই হোটেলকর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়. গত ২৪ মার্চ থেকে সরকার ঘোষিত লকডাউনে আল গণি কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন ৪০০ মানুষের জন্য শহরের বিভিন্ন অলিতে-গলিতে এসব অসহায় ছিন্নমূল, ভবঘুরে, পথশিশু সহ পাগলদের খাবার দিয়ে আসছেন। অনেকেই হোটেল আল গণি কর্তৃপক্ষের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। সচেতন মহল মনে করেন, নিঃসন্দেহে হোটেল আল গণির এমন কার্যক্রম প্রশংসার দাবিদার। তাদের ব্যতিক্রমধর্মী এই উদ্যোগ নজিরবিহীন।
হোটেল আল গণির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ রুবেল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি আলোকিত প্রতিদিনের এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।অসহায়ত্বের মধ্যে মানুষ দিনপাতিত করছেন। অসহায় দরিদ্র মানুষরা কিন্তু সরকারি ত্রাণসহ বিভিন্ন সহযোগিতা পাচ্ছেন। অথচ যারা রাস্তায় থাকেন, যাদের কোন ঘরবাড়ি নেই, যারা ভবঘুরে এবং পাগল তাদের পাশে কেউ নেই। এজন্য আমি এসব মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। প্রতিদিন ৪০০ পথশিশু, ছিন্নমূল এবং ভবঘুরেসহ পাগলদের দুই বেলা খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে শহরের বিভিন্ন অলিতে-গলিতে গিয়ে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের মাওলানা, আলেম, মৌলভিদের জন্যও আলগণি কর্তৃপক্ষ বিশেষ সম্মাননা প্রদান করছে। ইনশাআল্লাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কক্সবাজারের হোটেল আল গণির মানুষের পাশে থাকবে।’
করোনাভাইরাস দ্বিতীয়বার হতে পারে না, দাবি গবেষকদের
:: ডেস্ক প্রতিদিন ::
ফেব্রুয়ারি মাসে মূল চীনা ভূখণ্ডের বাইরে সবচেয়ে গুরুতরভাবে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ায়। এরপর থেকে দেশটি উঠেপড়ে লাগে এই ভাইরাস দমনে এবং সর্বশক্তি দিয়ে সফলভাবে লড়াই চালায় এর বিরুদ্ধে। একটা সময়ে গিয়ে করোনার বিরুদ্ধে জয় লাভও করে। কিন্তু হটাৎ করেই কয়েক জনের শরীরে দ্বিতীয়বার করোনার সংক্রমণ ধরা পরে দেশটিতে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার চিকিৎসাবিষয়ক গবেষকরা বলছেন, কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়া কয়েকজনের শরীরে ফের করোনা পাওয়া যায়। এটা হয়েছিল টেস্টিংয়ের ভুলে।
দক্ষিণ কোরিয়ার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধবিষয়ক কেন্দ্র সিডিসির গবেষকরা বলেছেন, করোনাভাইরাসের পক্ষে মানবদেহে দ্বিতীয়বার হানা দেওয়া অসম্ভব।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিডিসির গবেষকরা দেখেছেন, সন্দেহজনক পুনরায় সংক্রমিত করোনা রোগীদের টেস্টের ফলাফলগুলো ভুল ছিল। নিষ্ক্রিয় ভাইরাস ও জীবন্ত ভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারেনি ওই টেস্টগুলো। তাই এমনটা হয়েছে।
সিডিসি জানিয়েছে, এইচআইভি ও চিকেনপক্সের মতো অন্যান্য ভাইরাসগুলো মানব কোষের নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করতে পারে এবং পুনরায় সক্রিয় হওয়ার আগে বছরে পর বছর ধরে সুপ্ত থাকতে পারে। কিন্তু করোনাভাইরাস হোস্ট সেলের নিউক্লিয়াসের বাইরে থাকে। এর মানে এই ভাইরাসটি দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ বা পুনরাবৃত্তি ঘটায় না। দক্ষিণ কোরিয়ার সিডিসি কমিটির প্রধান ড. ওহ মায়ং ডন এমনটাই জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, একবার আক্রান্ত হলে পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
এদিকে আবার বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভাইরাস একবার যাদের আক্রমণ করে, তাদের কিছুটা সংক্রমণরোধী ক্ষমতা তৈরি হয়। এতে আবার তাদের সংক্রমণ ঘটনার ঘটনা বিরল।
যুক্তরাজ্যের ব্রাইটন ও সাসেক্স মেডিক্যাল স্কুলের সংক্রামক রোগের ইমেরিটাস অধ্যাপক জন কোহেন বলেন, অন্যান্য ভাইরাল সংক্রমণের ওপর ভিত্তি করে বলা যায়, একবার কেউ সংক্রমিত হলে তারা সাধারণত প্রতিরোধী হয়ে ওঠে এবং পরে আর তাদের সংক্রমণ ঘটে না। তবে সব সময় এর ব্যতিক্রম থাকবে। এটি অবশ্যই যুক্তিসংগত প্রত্যাশা।
সূত্র: স্কাই নিউজ।
নিউইয়র্কে করোনায় বিএনপি নেত্রীর মৃত্যু
::সংবাদদাতা, নিউইয়র্ক::
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বিএনপির এক নেত্রী মারা গেছেন। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মারা যাওয়া বাংলাদেশির সংখ্যা দাঁড়ালো ১৯৩। মারা যাওয়া বাংলাদেশির নাম রাশেদা আহমেদ মুন (৪৬)। দেশের বাড়ি পাবনা, তিনি নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে বসবাস করতেন।
প্রায় চার সপ্তাহ লং আইলান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি মারা যান বলে জানান ‘বাংলাদেশ সোসাইটির’ কর্মকর্তারা। অপরদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বুধবার এলমহার্স্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অপর এক বাংলাদেশি। তার নাম কবীন্দ্রনাথ সেন (৬৮)। তিনি ‘বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ’ যুক্তরাষ্ট্র শাখার অন্যতম সভাপতি। গত সপ্তাহে পরিষদের অপর অংশের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ দাস মারা যান।
গোলাপের পাপড়িও সাভারের দুর্বৃত্তদের কাছে অসহায়!
::আলী হোসেন, সাভার::
গোলাপের রঙে মেতে উঠত যে জমি, তা এখন গোলাপের কবরভূমি! দুর্বিত্তদের সেনদৃষ্টিতে মুছে গেছে ফুলচাষী নাজিম উদ্দিনের স্বপ্ন। সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের শ্যামপুরের দুই বিঘা সরকারি জমিতে ১৫ বছর ধরে গোলাপের চাষ করে আসছিলেন তিন। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে তার গোলাপ বাগান কেটে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুধু নাজিম উদ্দিন না, একই রাতে ওই এলাকার আরও কয়েকজন কৃষকের প্রায় আট বিঘা জমির গোলাপের বাগানে ছোবল বসিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
সব জমিই সরকারি। যা দখলে রেখে ফুল চাষ করে সংসার চালাতেন এসব কৃষক।
বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব দত্ত বলেন, একটি পক্ষ কৃষকদের দখলে থাকা জমি ইজারা নিয়ে তা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছিল। আরেকটি পক্ষ ওই জমিতে কবরস্থান ও ঈদগাহের মাঠ বানানোর চেষ্টা করছিল। সম্ভবত এই দুই পক্ষের কোনো এক পক্ষ গোলাপ বাগান কেটে ফেলেছে।’ সরকারি জমি হলেও অন্য কারো রাতের আঁধারে ফসল কাটার অধিকার কারও নেই উল্লেখ করে ওসি বলেন, ভূক্তভোগী কৃষকদের পক্ষ থেকে সাভার থানায় অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকে ফুল বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। এখান আর এলাকায় ফুলের হাট বসে না। এই অবস্থায় এলাকার কয়েক শ ফুল চাষি অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আশা ছিল, করোনা পরিস্থিতি কেটে গেলে ফুল বিক্রি করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো, কিন্তু দুর্বৃত্তরা সব স্বপ্ন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে গেছে। তারা আরও প্রশ্ন রাখেন, ফুলগুলোর কী দোষ ছিল? ক্ষতিগ্রস্থদের ভেজাচোখ আর দীর্ঘশ্বাস যেন বলতে থাকে- গোলাপের পাপড়িও সাভারের দুর্বৃত্তদের কাছে অসহায়!
স্থানীয় বিরুলিয়া ইউনিয়নের (ইউপি) চার নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল আলিম বলেন, ইউনিয়নের কুমারখুদা মৌজাসহ আশপাশের এলাকায় কয়েক হাজার একর সরকারি জমি রয়েছে। এসব জমি বন বিভাগের বলেই জানেন স্থানীয় লোকজন। এলাকার কৃষকেরা পতিত এসব জমি ৬০-৭০ বছর ধরে দখলে রেখে চাষাবাদ করে আসছেন। কয়েক বছর ধরে অন্য এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি একসনা ইজারা নিয়ে এসব জমি দখল শুরু করছেন। তাঁরা প্লট আকারে এসব জমির দখল টাকা বিনিময়ে বুঝিয়ে দিচ্ছেন অন্যদের। যারা টাকা দিয়ে প্লটের দখল নিচ্ছেন তাঁরা পাকা, আধাপাকা এবং বহুতল ভবন নির্মাণ করে বসবাস করছেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
ইউপি সদস্য আরও বলেন, জমি দখলে প্রভাবশালীদের সহায়তা করে থাকেন স্থানীয় কিছু ব্যক্তি। তাঁরা ঈদগাহ ও কবরস্থানের নামে কয়েক বিঘা জমি দখলের পাঁয়তারা করছিলেন। সম্ভবত তাঁরাই বৃহস্পতিবার রাতে গোলাপ বাগান কেটে ফেলেছেেন।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের একজন সত্তর বছর বয়সী আনসার আলী। এই বৃদ্ধ বলেন, তিনি ৫০ বছর ধরে দুই বিঘা জমিতে চাষাবাদ করছেন। এর আগে তাঁর বাবা ওই জমি চাষ করেছেন। কয়েক বছর আগে ছয় লাখ টাকা ব্যয় করে তিনি জমিতে গোলাপের বাগান করেন। মাসে তাঁর ৫০-৬০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হতো। খরচ বাদে যে টাকা থাকতো তাতে স্বচ্ছলভাবে চলত তাঁর সংসার। কিন্তু করোনা-পরিস্থিতির কারনে ফুল বিক্রি না করতে পেরে, এমনিতেই বিপাকে ছিলেন। এর ওপর বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর জমির গোলাপ গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। ফলে তিনি পরিবার নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
অপর কৃষক জালাল উদ্দিন বলেন, তাঁরা যুগের পর যুগ ধরে সরকারি জমি চাষ করে খেয়ে পরে বেঁচে রয়েছেন। সরকার ইজারা দিতে চাইলে, তাঁর মতো গরিব কৃষকদের দিতে পারত। আর সরকারের জমি প্রয়োজনে কৃষকেরা তা ছেড়ে দিতেন। কিন্তু জমি ইজারা দেওয়া হচ্ছে প্রভাশালীদের। এর ফলে কৃষকেরা দিন দিন নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন।
ভারতে লকডাউন বাড়ল দুই সপ্তাহ
:: ডেস্ক প্রতিদিন ::
তৃতীয় দফায় লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। করোনা সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন বলবৎ থাকা অবস্থায় সারা দেশে আরো দুই সপ্তাহ বাড়ানোর ঘোষণা দিল দেশটির সরকার।
আগামী ৪ মে থেকে আরও দু’সপ্তাহ লকডাউন চলবে বলে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘোষণা দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ১৭ মে পর্যন্ত দেশজুড়ে লকডাউন চলবে। ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইন অনুসারে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
এনডিটিভি অনলাইন জানিয়েছে, এই সময়ের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নতুন গাইডলাইন তৈরি করেছে। লাল, কমলা ও সবুজ অঞ্চল অনুসারে এই গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে। কমলা ও সবুজ এলাকার ক্ষেত্রে কিছু শিথিলতা আনা হবে। তবে সব এলাকায় কিছু বিধিনিষেধ বলবৎ থাকবে। বিমান, রেল, মেট্রো পরিষেবা ও আন্তঃরাজ্য ভ্রমণ নিষিদ্ধ থাকবে। এই সময়ে বন্ধ থাকবে স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেই সঙ্গে রেস্তোরাঁ, হোটেলও বন্ধ থাকবে। সিনেমা হল, মল ও জিমের মতো বড় জমায়েতের স্থান বন্ধ থাকবে।
দেশটিতে করোনায় সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে টেলিকনফারেন্সে পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন। এই বৈঠকেই লকডাউনের মেয়াদ ২ সপ্তাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ভারতে শুক্রবার পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ৩৬৫ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৯ হাজার ৬৫ জন, মৃত্যু হয়েছে ১১৫২ জনের।
প্রথম কোন সাংসদ করোনায় আক্রান্ত
::নিজস্ব প্রতিবেদক::
প্রথম কোন সংসদ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। বর্তমানে তিনি ন্যাম ভবনে হোম আইসোলেশনে আছেন। ভবনটি লকডাউন করা হয়েছে। সরকারদলীয় হুইপ আতিউর রহমান আতিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আক্রান্ত সাংসদ নিজেও বিষয়টি জানান।
এই প্রথম একজন সংসদ সদস্য কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত বলে শনাক্ত হলেন। ষাটোর্ধ্ব সংসদ সদস্য জানান, বৃহস্পতিবার তার নমুনা আইইডিসিআরে দেওয়া হয়েছিল। আজ শুক্রবার তার ফল জানানো হয়েছে। এতে তিনি পিজিটিভ এসেছেন।
তিনি বলেন, ‘এখনো রিপোর্ট হাতে পাইনি। তবে আইইডিসিআর থেকে আমাকে পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে।’ শারিরীকভাবে কোনো সমস্যা হচ্ছে না জানিয়ে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘খুব এক সমস্যা হচ্ছে না। এখন বাসাতেই আছি। বাইরে যাচ্ছি না।’::
করোনায় স্ত্রীর মৃত্যুতে অক্সিজেন মাস্ক পরলেন না স্বামী
:: ডেস্ক প্রতিদিন ::
৬৩ বছরের বিবাহিত জীবন। প্রথমে ৮১ বছর বয়সের স্ত্রী মেরির ধরা পড়ে করোনাভাইরাস। কয়েকদিন পর ৯০ বছরের স্বামী বিলকেও একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জানা যায়, তিনিও করোনা পজিটিভ। বিলকে বাঁচাতে চিকিৎসকরা যখন আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তখন জানতে পারেন তাকে ছেড়ে চলে মেরি। স্ত্রীর মৃত্যু সংবাদে বেঁচে থাকার আগ্রহ হারিয়ে ফেললেন বিল। অক্সিজেন মাস্ক পরতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অপেক্ষায় থাকেন মৃত্যুকে আলিঙ্গণের। কয়েক ঘণ্টা পর তিনিও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এভাবেই ছয় দশকের বেশি দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটিয়ে একই দিনে পৃথিবী ছেড়ে গেলেন বিল ও মেরি।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, তারা ছিলেন বিশেষ মানুষ। ইস্টার সানডেতে যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন জেনারেল হাসপাতালে একই দিনে মৃত্যু হয় বিল ডার্টনাল ও তার স্ত্রীর মেরির। উভয়েই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। এই দম্পতির মেয়ে রোজমেরি জানান, মায়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে বাবা অক্সিজেন গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। মাকে ছাড়া তিনি বাঁচতে চাননি।
বিল-মেরির বিবাহিত জীবন ৬৩ বছরের। হলিডে ইন হোটেলে একটি অস্থায়ী বয়স্ক নিবাসে বাস করছিলেন তারা। মার্চের শেষ দিকে মেরিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন পর স্ট্রোক করেন ডার্টনাল। তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ধরা পড়ে করোনাভাইরাস।
রোজমেরি জানান, মা-বাবা হাসপাতালের একই ওয়ার্ডে ছিলেন। ইস্টার সানডেতে মায়ের মৃত্যুর বাবা অক্সিজেন মাস্ক পরতে অস্বীকৃতি জানান। কয়েক ঘণ্টা পর তার শান্তিপূর্ণ মৃত্যু হয়। তিনি বলেন, তারা দারুণ জুটিতে পরিণত হন। আমার বাবা নিশ্চিতভাবেই মাকে ছাড়া বেঁচে থাকতে চাননি। জীবন সবসময় সহজ ছিল না। কিন্তু তারা কঠিন সময় একসঙ্গে অতিক্রম করেছেন এবং আমাদের ছেড়ে গেছেনও একসঙ্গে।
রোজমেরি আরও বলেন, বাবা-মাকে হারানো এমনিতেই কষ্টের। কিন্তু তাদের কাছ থেকে দূরে থাকা এবং শেষ মুহূর্তে তাদের পাশে থাকতে না পারা অনেক বেশি কষ্টের।
রোজমেরির বোন অ্যান জানান, লকডাউনের বিধিনিষেধ প্রত্যাহার হলে বাবা-মায়ের স্মরনসভা আয়োজন করা হবে।
নানা সংকটের মধ্যেই মানিকগঞ্জে করোনার চিকিৎসা কাল শুরু!
:: প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ ::
মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে কাল শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে কোভিড-১৯ চিকিৎসা কার্যক্রম । ১০০ শয্যার এই করোনা হাসপাতালে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে বসানো হয়েছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। প্রস্তত আইসিইউ এবং আইসোলেশন বিভাগ। প্রস্তত চিকিৎসক ও নার্সরাও। তবে সংকট রয়েছে আইসিইউ বিভাগের দক্ষ জনবল আর চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর।
জানা যায়, এই জেলায় প্রতিদিনই বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। এতদিন রোগীদের সেবার জন্য পাঠানো হত রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে। এমতাবস্থায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে শুরু হচ্ছে করোনা চিকিৎসা কার্যক্রম। হাসপাতালের পুরাতন ভবনটিকে ঘোষনা করা হয়েছে ১০০ শয্যার কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও ২ বেডের আইসিইউ বিভাগসহ যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ সারোয়ার জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীদের যাদের পজেটিভ হয়ে আসবে তাদের জন্য এই হাসপাতালে পুরুষ এবং মহিলা ওয়ার্ডে আলাদা ভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। তিনি বলেন এখানে সম্প্রতি ২ টি ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও সেন্ট্রাল অক্সিজেনের সাপ্লাইটা নেই বলে জানান তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দায়িত্ব পালনের জন্য ৭৬ জন চিকিৎসক এবং ৯০ জন নার্সের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শনিবার থেকে চিকিৎসা সেবা শুরু হলেও আইসিইউ বিভাগে ঘাটতি রয়েছে দক্ষ জনবলের। এছাড়া চিকিৎসক ও নার্সদের ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীর সংকট রয়েছে।
এব্যাপারে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আরশ্বাদউল্লাহ বলেন,‘ডাক্তারদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী আমাদের এখানে এখন খুব সামান্যই আছে। আমরা চাহিদাপত্র দিয়েছি। খুব শিঘ্রই সেগুলো পেয়ে যাবো বলে আশা করি।’ বর্তমানে যে সুরক্ষাসামগ্রী আছে তা দিয়ে আমাদের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করতে কোন সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘হাসপাতালের পুরাতন ভবনে করোনা চিকিৎসা সেবা দেয়া হলেও হাসপাতলের নতুন ভবনে সাধারন রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। এতে কোন অসুবিধা হবে না।’