আজ রবিবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ২২ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 2171

কবিতার উপমা: সৈয়দ রনো

কবিতার উপমা
সৈয়দ রনো

হৃদয়ের গভীর অনুভূতি শব্দ-ছন্দ-অলঙ্কার এবং চিত্রকল্পের মাধ্যমে প্রকাশ করাই হলো কবিতা। মনের ভিতর থেকে যে চিন্তাচেতনা বেরিয়ে আসে তা সোজাসুজি লিখলেই কবিতা হয় না। একটি সার্থক কবিতা লেখার পিছনে লুকিয়ে থাকে একজন কবির অফুরন্ত শ্রমের গল্প। একজন বোদ্ধা পাঠকের সামনে কোনো বিখ্যাত কবির উৎকৃষ্ট কবিতা এলেই তিনি সে-কবিতা পাঠ করতে করতে তৃপ্তির সমুদ্রে ডুবে যান। অথচ কবিতা লেখার পিছনে কবির প্রচণ্ড শ্রমের কথা কখনো ভেবেও দেখেন না। একজন প্রকৃত কবি কবিতা লেখার জন্য অনেক পরিশ্রম করেন। তবে পরিশ্রমহীন কবির সংখ্যাই বেশি। যারা সারা জীবন লিখেও একটি উৎকৃষ্ট কবিতার জন্ম দিতে পারে না। কিন্তু কল্পনার জগতে তারা নিজেদের অনেক বড় কবি ভেবে থাকে। নিজেকে বড় কবি ভাবলেই তো বড় কবি হওয়া যায় না! বড় কবি হওয়ার জন্য অগাধ পরিশ্রম এবং সাধনার প্রয়োজন। সেই সঙ্গে কবিতার বিভিন্ন উপাদান সম্বন্ধেও থাকতে হয় ওয়াকিবহাল। অনেকেই কবিতা লিখলেও কবিতার উপাদান সম্পর্কে সম্পূর্ণ উদাসীন। বিশেষ করে অধিকাংশ তরুণ কবির ধারণা- লিখলেই কবিতা হয়। তারা কবিতার অনুষঙ্গ মানতে নারাজ। লিখলেই যদি কবিতা হতো, তবে সবাই কবিতার জন্ম দিতে পারত। সবাই কবি হতো। কিন্তু সবাই তো কবিতার জন্মদাতা হতে পারে না।
কবিতা এক অনন্য শিল্প। যিনি কবিতাকে ধারণ করেন তিনিই কেবল এই শিল্পের সুষমায় বিমূর্তকে মূর্তরূপে বিকশিত করেন। কবিতাকে যথার্থ অর্থেই শিল্প করে তোলে উপমা। জীবনানন্দের চিত্রকল্পগুলো শিল্প ও জীবনের সৌন্দর্যকে চিত্রিত করে তুলেছিল বলেই তা চিত্ররূপময়। উপমার সযতন বিন্যাসে নজরুলের কবিতার চরণগুলো হয়ে উঠেছে অপার্থিব। অন্যান্য লেখকও প্রচুর লিখেছেন উপমা নিয়ে। এখনো তাঁদের কলম ভীষণ রকম সচল। তাঁদের অনায়াস সৃজনশিল্পে বিশেষ একটি স্থান দখল করে আছে উপমা।
‘আয়ুর বয়স আলোর সমান’। আলো এখানে জীবনের প্রতীক হয়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে। আলো চমৎকারভাবে এখানে চিত্রিত করেছে জীবনের অনন্য ব্যাপ্তিকে। যত দিন আলো আছে জীবনে তত দিন আয়ুও আছে জীবনের দীপ হয়ে। তারই বিপরীতে তিনি রাতকে আবিষ্কার করেছেন অতৃপ্তির অপূর্ণতায়। আলোর আগমনে রাতের আয়ু ক্ষয় হয়। রাত তাই অতৃপ্ত থাকে ব্যাপ্তিতে, প্রাপ্তিতে। রাতের অতৃপ্তির সঙ্গে কবিও অতৃপ্ত।
মায়ের ক্রন্দন থেকে গর্জে ওঠে যে নদী
কোন তটরেখায় তা আছড়ে পড়ে মিছিল বিকেলে?
এখানে খুব সুন্দর করে নির্মাণ করা হয়েছে বিকেলের পরিচিতি। এই বিকেল গর্ভে ধারণ করে আছে মিছিলের সৃজনসত্তা। বিকেলের আগের মিছিল কথাটি পরিবেশনের মাধ্যমে অযুত-সহস্র মানুষের জমায়েতকে করে গর্জনময়।
‘একটি গোলকে পরম আটকে আছে কোট কোটি আলপিন’। বাস্তবিক পৃথিবীর বুকে মাধ্যাকর্ষণের কল্যাণে সবাই আটকে আছে আলপিনের মতো।
উপমায় কখনো কখনো কবিরা নিয়ে আসেন শ্লেষ, নিয়ে আসেন স্যাটায়ার। এই শ্লেষ ও স্যাটায়ার কবিতার দেহে জড়িয়ে হয়ে ওঠে শিল্প। ‘রক্তস্রোত বন্দনা শিল্পকাব্য’ ধরনের নতুন শব্দ প্রয়াসে শ্লেষ ও উপমা বাঙময় হয়ে ওঠে। মাঝে মাঝে জীবনানন্দের কৌশলও তার উপমার প্রকৌশলে ঝিলিক দিয়ে ওঠে। একই শব্দের একাধিকবার ব্যবহারে জীবনানন্দ যেমন কখনো কখনো আকাশ ও তার ব্যাপকতাকে তুলে ধরেছেন তেমনি বক্ষ্যমাণ কবিরাও আঁধারের একাধিক ব্যবহারে বলে ওঠেন ‘আঁধার ফেটে যায় আরো দূর আঁধারে’। আঁধার তখন আঁধার না থেকে হয়ে যায় দারুণ এক চিত্রকল্প। একই পঙক্তিতে আঁধারের একাধিক ব্যবহার আঁধারের ব্যাপ্তি বাড়িয়ে নির্মাণ করে উপমার নান্দনিকতা। পাখি হয়েও উড়তে পারে না উটপাখিরা। তাদের ডানা আছে, জানা নাই উড়াল। এই উড়ালের জন্য তাদের সভা আহ্বান কবির দৃষ্টিতে নেহাত জরুরি হয়ে পড়েছে। কবির চোখে উটপাখিদের উড়তে না পারার ঘটনা কোনো নেহাত সাদামাটা ঘটনা নয়। বরং তাদের উড্ডয়ন শিল্প সময়ের হাতে লুট হয়ে গেছে। এখানে ‘লুট’-এর ব্যবহার তৈরি করেছে বিবর্তনবাদের ধারাবাহিকতা। তাই কবিতারা হয়ে উঠেছে চিত্রকল্পময়। ‘ঊনত্রিশে মার্চ বৃত্তান্ত’ কবিতায় কবি দুপুরকে উবে যেতে দেখেন। কর্পূর এর মতোই দুপুর যেন উদ্বায়ী হয়ে যায় ঘটনার পরমার্থে। ‘উদ্বায়ী দুপুর’ বলার সঙ্গে সঙ্গেই নাকে আসে ন্যাপথালিনের সুঘ্রাণ আর জীবন্ত হয় সফেদ পুণ্যতা। ‘একান্ন দেহ’ কবিতাতে দেহকে একান্নতায় লালন-পালনের ধারণা দিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে প্রায় লুপ্ত হওয়া আগেকার একান্নবর্তী পরিবারকেও চোখের সামনে হাজির করে। সত্যিকার অর্থেই দেহ একটি একান্নবর্তী পরিবার। সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ-কোষ-কলা সবই এখানে একটি মাত্র পরিবার হয়ে মায়া-মমতায় সুশৃঙ্খল হয়ে আছে।
কবিদের উপমারা সবসময় যে গতিকেই ধারণ করে তা নয়। কখনো কখনো উপমারা নস্টালজিক হয়ে যায়। তাদের নস্টালজিয়া ছবির রিঙ্কলস-এ জমে থাকা ধুলো ঝেড়ে জীবন ফিরে পায়। চিত্রকল্প নির্মাণে প্রেমের ব্যবহার কবির হাতে ফুটেছে সাবলীলতায়। তরুণীর প্রেমে মজে ওঠা কবি পঙ্ক্তিতে ফুটিয়ে তোলেন ধাবমান রেল যার বাইরে চারআনা বা সিকিমূল্যের প্রেমিক পৌনে এক টাকার বিচ্ছিন্ন হওয়া প্রেমিকার বিচ্ছেদে আত্মসমবেদন খুঁজে পান। প্রাণহীন পাথরও প্রাণবন্ত হয়ে যায় উপমার গুণে। আর তাতে যদি নারীর স্পর্শ থাকে তবে পাথরেও ফোটে ফুল।
আড্ডা আর আলাপনের কথা উঠলে চায়ের কাপে ঝড়ের উপমা আসে। কিন্তু কবি ঝড় না, চায়ের কাপে বর্ষাকে খুঁজে পান উপমায়। সুদিনগুলোতে চায়ের পিপাসা মেটাতো অবিরল ধারার বর্ষার মতো চা আপ্যায়নে। কিন্তু এখন দিনগুলো ডানাগোটানো, প্রতিকূল। তাই চায়ের কাপে আজ আর বর্ষা আসে না। উপমার অনিন্দ্য প্রয়োগে চা নয়, বর্ষাই বেজে উঠেছে টিপ টিপ বৃষ্টির সুরে পাঠকের শ্রবণে।
উপমায় কবিরা প্রেমের কোমলতা ছেড়ে হয়ে ওঠেন ক্রমশ সাহসী। কবিদের সাহস অঙ্কুরিত হতে হতে এক সময় বলে ওঠে ‘মানুষের জিহ্বায় মেরুদণ্ড গজাতে শুরু করেছে।’ মানুষ আসলে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে সাহসী হয়। তখন মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ায়। নচেৎ বাঙালি সর্বদা তোয়াজ আর তেলে অভ্যস্ত। কিন্তু জিহ্বায় যদি মেরুদণ্ড গজায় অর্থাৎ মানুষ যদি কথায় তার দৃঢ়তা ও সাহস বজায় রাখে তবে তাতে সার্থক হয়ে ওঠে মনুষ্যত্ব। কবির উপমারা সাহসী হওয়ার পর খুঁজে পায় প্রজ্ঞায়। প্রজ্ঞা-দৃষ্টি পেয়ে উপমারা বলে, ‘সাঁওতাল শিশু রোদের সতীর্থ’। অর্থাৎ রোদ যেমন আঁধার তাড়ায়, হেসে লুটোপুটি খায় ঘাসে, সাঁওতাল শিশুটিও তেমনি রোদের মতোই নির্মল, প্রাণবন্ত। রোদের শিক্ষক প্রকৃতি আর সাঁওতাল শিশুটিকেও বড় করে তোলে নিসর্গবিদ্যালয়ে। কবিরা পাঠ নেন নিসর্গ থেকে। কবিরা দেখতে পান উড়ে যাওয়া যুগল শাবকের মধ্যে যুগল ব্যঞ্জনবর্ণ। সন্ধ্যা যখন কবির কল্পনায় জলজ হয়ে ওঠে তখন আর বুঝতে বাকি থাকে না এই সন্ধ্যা বিকেল গড়িয়ে আসে বলেই জলের মতো উপমায় মূর্ত হয়।
‘আমি বুড়ো ক্লাউনের মতো পরিত্যক্ত এবং তুষারে ঢাকা
নিষ্পত্র গাছের মতো শীতার্ত।’
(একটি প্রস্থান, তার অনুষঙ্গ, শামসুর রাহমান)।
এখানে একাধিক উপমান- ‘বুড়ো ক্লাউন’, ‘তুষারে ঢাকা নিষ্পত্র গাছ’, উপমেয়- ‘আমি’, সাধারণ ধর্ম- ‘পরিত্যক্ত’, ‘শীতার্ত’, তুলনাবাচক শব্দ- ‘মতো’।
‘গুচ্ছ গুচ্ছ রক্তকরবীর মতো কিংবা সূর্যাস্তের
জ্বলন্ত মেঘের মতো আসাদের শার্ট
উড়ছে হাওয়ায় নীলিমায়’
(আসাদের শার্ট, শামসুর রাহমান)।
এখানে একাধিক উপমান- ‘গুচ্ছ গুচ্ছ রক্তকরবী’, ‘সূর্যাস্তের জ্বলন্ত মেঘ’, উপমেয়- ‘আসাদের শার্ট’, সাধারণ ধর্ম- ‘উড়ছে’, সাদৃশ্যবাচক শব্দ- ‘মতো’।
উপমা প্রয়োগে একটি কবিতা সুন্দর ও সার্থক হয়ে ওঠে। উপমা অনেকটা নারীর প্রসাধনীর মতো। উপমা ব্যবহারের মাধ্যমে একজন কবি তার কবিতাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে সক্ষম হন। বয়সের ভারে একজন কবির কবিতা সেরা হয় না। বয়স বিবেচনা করলে সুকান্ত, কীটস, শেলী এবং আবুল হাসান কবি হতে পারতেন না। কবিতার উপাদান থাকলেই কেবল কবিতা ভারী এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এ ক্ষেত্রে উপমা কবিতার অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করে।
তাই কবিদের উপমারা কখনো গতিমান, কখনো নস্টালজিক আবার কখনো আধুনিক এবং উড়ালমুখী। কবির কবিতার নির্মাণে তার উপমা ও চিত্রকল্পসমূহ তৈরি করে নিপুণ গাঁথুনি এবং সবশেষে শব্দকে শব্দের অধিক শিল্প করে তোলে।

 

আলোকিত প্রতিদিন/ ১ জানুয়ারি ২০১৮/ দ ম দ

কবি ও সম্পাদক ড. সৈয়দ রনো’র জীবনি

সৈয়দ রনো (জন্ম: ১ জানুয়ারি, ১৯৭৮), পুরোনাম সৈয়দ নুরুল হুদা রনো। তিনি বাংলাদেশ এর একজন কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক। প্রকাশিত গ্রন্থ প্রায় অর্ধশতাধিক।
জন্ম ও শিক্ষাজীবন :
সৈয়দ রনো ১৯৭৮ সালের ১ জানুয়ারি মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার বড়টিয়া ইউনিয়নের হিজুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- আলহাজ সৈয়দ আব্দুল লতিফ, পেশায় তিনি স্কুল শিক্ষক এবং মুসলিম বিবাহ রেজিস্ট্রার ও কাজী এবং মাতা- আলেয়ার নাহার হাওয়া। পরিবারে তিন ভাই এবং পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা জীবন কেটেছে নিজ গ্রাম হিজুলিয়ায়। ঘিওর উপজেলার ফুলহারা আঞ্চলিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও দেবেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর উচ্চশিক্ষা প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম.এ. পাস করেন। এরপর তিনি আইনবিদ্যায় স্নাতক এল.এল.বি ও বি.এড পাশ করেন। ধর্মের প্রতি দুর্বল থাকায় তিনি আরবি শিক্ষায় আলিম পাশ করেন। ২০১৩ সালে লোকসংস্কৃতি -তে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মজীবন :
বাল্যকাল থেকেই তিনি সাহিত্য অনুরাগী। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় প্রথম কবিতা প্রকাশ হয় মানিকগঞ্জের স্থানীয় আলোর বাণী পত্রিকায়। এরপর থেকে নিয়মিত বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তার কবিতা, ছড়া, পদ্য, গল্প, প্রবন্ধ, ভ্রমন কাহিনী, নিবন্ধ, রম্যরচনা প্রকাশ হতে থাকে। মঞ্চ নাটক লিখে এবং অভিনয় করে নব্বই দশকে সুনাম এবং সুখ্যাতি কুড়াতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি অনুশীলন সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন বর্তমানে যার নাম পরিবর্তন হয়ে অন্যধারা সাহিত্য সংসদ হয়েছে, এই সংগঠনের তিনি প্রতিষ্ঠাতা। উনিশ বছর যাবত সাপ্তাহিক অন্যধারা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এছাড়া বর্তমানে জাতীয় দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক।
সৈয়দ রনো শুধু নাটক রচনা করেই ক্ষান্ত হননি মঞ্চায়নের ক্ষেত্রেও ত্রিশের অধিক নাটকে নির্দেশনার দায়িত্ব পালন করেছেন। কবিতা আবৃত্তিতে তার সুরেলা কণ্ঠকাব্যিক চেতনায় সমাদৃত হয়েছে। সলপ্ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। স্বত্বাধিকারী – ফ্রেন্ডস ইন্টারন্যাশনাল এবং অন্যধারা পাবলিকেশন্স। নিজ এলাকায় শিক্ষা প্রসারের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন হিজুলিয়া ভি আর এন হাইস্কুল যার প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি বর্তমানে বালিয়াটী কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলা একাডেমির সদস্য। বিভিন্ন ধরনের লেখায় শব্দের গাঁথুনি স্পষ্ট লক্ষণীয়। মিথকে লোকজ শব্দের মিশ্রণে চমৎকার ব্যবহার করে কবিতা এবং ছড়াকে করে তোলেন উপজীব্য এবং পাঠক নন্দিত। বাংলা অভিধানে সংরক্ষিত শব্দ ছাড়াও লোকজ শব্দের সফল প্রয়োগ তার কাব্যিক পংক্তিমালাকে ভিন্ন স্বাদে পাঠকপ্রিয় করে তুলে। তার কাব্য ভাবনার পরতে পরতে লুকিয়ে আছে ছন্দের বিভিন্ন মাত্রা তাই রনোক ছান্দিক কবি বলা হয়ে থাকলেও কবি আল মাহমুদ তাকে তারুণ্যের কবি বলে অভিহিত করেছেন। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে লুকিয়ে থাকা সকল অসঙ্গতির ক্ষুরধার প্রতিবাদ করায় অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ সৈয়দ রনোকে দুর্দান্ত দ্রোহের কবি বলেছেন। বাস্তবতা এবং কল্পনার সংমিশ্রণে তার কবিতা হয়ে ওঠে জীবন্ত। বর্তমানে তিনি কাব্য ভাবনায় নতুন মাত্রা যুক্ত করতে গান রচনায় ব্রতী হয়েছেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ :
• এক অঙ্গে শতরূপ
• হৃদয় মাঝে তুমি
• বিনে সুতার টানে
• অলৌকিক শক্তির সন্ধানে
• এক দিকের ভালোবাসা
• প্রথম দেখা
• চাঁদনি রাত
• পাঁজর

গবেষণামূলক গ্রন্থ :
• লোকসংস্কৃতিতে ধূয়াগান
• চেতনায় সৈয়দ রনো।

কাব্যগ্রন্থ :
• চেতনায় স্মৃতি স্তম্ভ
• পিরিতী পরম নিধি
• কষ্ট কাহন
• নির্বাচিত কবিতা
• পদ্য ছন্দ আধুনিক ডটকম
• আধুনিক ছড়া উপমায় গড়া
• ছবি কথা বলে
• কারফিউ ঘেরা পূর্ণিমা রাত
• ফেরারী সময়
• অলিক ভাবনার খুনসুটি দিন
• ঘাস ফড়িং
• শিশিরের সূর্যালাপ
• ছেঁড়া খোঁড়া মেঘ
• ভাবের পদাবলী
• বৃষ্টিমাখা রোদ

গল্পগ্রন্থ :
• কল্পলোকের গোলক ধাঁধা
• কল্পিত গহনে
• জীবনবোধের নামতা
• প্যান্ট ও পাজামার গল্প

রহস্য উপন্যাস :
• শখের গোয়েন্দা
• রহস্যের সন্ধানে
• মৃত্যুফাঁদ
• ভয়ংকর রাত্রি
• রাতের শশ্মান
• রাতের বেলা ভূতের খেলা
• কবর থেকে বলছি
রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী গ্রন্থ :
• এক এগারোর প্রেক্ষাপটে জাতীয়তাবাদী রাজনীতি এবং খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন
• ছবি কথা বলে (প্রথম খন্ড)
• ছবি কথা বলে (দ্বিতীয় খন্ড)
ছড়ার বই :
• মর্নিং বেল
সম্পাদিত গ্রন্থ :
• মানিকগঞ্জের কবি ও কবিতা
প্রেমাণুকাব্য :
• প্রেমাণুকাব্য-১
• প্রেমাণুকাব্য
নাটক :
• শকুনের থাবা
• ৭১-এরপর
• কাবা কাবা
• ময়লা কাগজ
পুরস্কার ও সম্মননা :
• ইছামতি সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার- ২০১০
• বাহন সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার- ২০১১
• গীতালী ললিতকলা একাডেমি সম্মাননা-২০১২
• বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল স্মৃতি ফাউন্ডেশন পুরস্কার- ২০১৩
• বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম সম্মাননা- ২০১৪
• আলপনা বৈঠক সম্মাননা ২০১৪
• সুফি মোতাহার হোসেন সম্মাননা -২০১৫
• কাব্যকথা সাহিত্য সম্মাননা-২০১৬
• মাসিক ভিন্নমাত্রা সম্মাননা- ২০১৭।