আজ সোমবার, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ২৩ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 46

আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ গ্রেপ্তার

আলোকিত প্রতিবেদক:

আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ১২মে সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির স্টার কাবাবের পেছনে একটি বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি জানান, মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তারের পর ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং মানিকগঞ্জের বিভিন্ন থানায় হত্যা ও হত্যাচেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাঁকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন মমতাজ বেগম। তিনি ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে সদস্য মনোনীত হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন মমতাজ। ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের হয়ে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদের কাছে পরাজিত হন। আর পরাজিত হওয়ার পর তাঁকে উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় দেখা যায়নি।

আলোকিত প্রতিদিন/১৩মে ২০২৫/মওম

 

আপনারা অনেক দূর তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নিন, না হলে বিপদ হতে পারে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আপনারা অনেক দূর তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নিন, না হলে কিন্তু বিপদ হতে পারে। কোনও ঘটনায় আবেগবশত সিদ্ধান্ত নিয়েন না। শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাত  এবং ওয়েলফেয়ার খাতে উদ্যোগ নিন।

১২ মে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে সেটি রাজনৈতিক কারণে, সেখানে নার্সিংয়ের যে রূপ তা মনোমুগ্ধকর। তাদের সেবার ভাষা আমি প্রকাশ করতে পারবো না। পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ সেবা, মায়ের সেবা। একজন নার্স মায়ের সেবা হিসেবেই দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু আমাদের দেশে নার্সকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয়। তাদের প্রতি বৈষম্য দেখানো হয়। শুধু আমাদের দেশেই নয়, দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে এ অবস্থা। এমনকি নার্সদের আবাসন সুবিধা নেই। তাদের কাজের কারণে তিন শিফটেও কাজ করতে হয়, কিন্তু ক্যাম্পাসে তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। নিজের বেতন থেকে বাসা ভাড়া দিতে হয়। আমাদের যেমন ভালো ডাক্তার দরকার, তেমনই নার্সদের যে লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার সেটি দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘জানি না এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাত কীভাবে দেখবে, অথচ অত্যন্ত জরুরি এই সার্ভিসটা। কেন আমি ডলার খরচ করে ইন্ডিয়াতে যাবো? কেন তাদের টাকা দিয়ে আসবো? তারা প্রতি মুহূর্তে আমাদের নিয়ে নেগেটিভ বয়ান তৈরি করে অপপ্রচার করছে। তাদের পেছনে ডলার খরচ না করে, এই টাকাগুলো যদি আমাদের নার্স-ডাক্তারদের পেছনে খরচ করি, তাহলে ইন্ডিয়ায় যাওয়ার কোনও কারণই থাকতে পারে না। ডাক্তারদের লজিস্টিক সাপোর্ট ঠিক করতে পারলেই কেউ ওই (ইন্ডিয়া) দিকে যেতো না।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন– বিএনপি নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।

আলোকিত প্রতিদিন/১২মে ২০২৫/মওম

অপারেশন সিঁদুর সমর্থন করে ১ লাখ অনুসারী হারিয়েছেন আলিয়া

বিনোদন ডেস্ক:

সোশ্য়াল মিডিয়ায় কার কত ফলোয়ার, সেটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তারকাদের জন্য। সেটা বলিউড হোক আর টলিউড। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আবহাওয়াতে, অপারেশন সিঁদুর সমর্থন করে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা কথা লিখেছেন তারকারা।

আর তাতেই ফলোয়ার্স কমতে শুরু করল তাদের। মে মাসের সাত-আট তারিখ থেকে আলিয়া ভাট, অজয় দেবগণ, কার্তিক আরিয়ান, সারা আলি খান বা জাহ্নবী কাপুরের মতো তারকাদের ফলোয়ার্স কমেছে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে কথা বলায় দক্ষিণ এশিয়ার বহু মানুষ এই তারকাদের আনফলো করতে শুরু করে দিয়েছেন। আলিয়া ভাট একদিনে ১ লাখ অনুসারী হারিয়েছেন। কার্তিক আরিয়ানের ফলোয়ার কমেছে ৬০ হাজার। অজয় দেবগণকে একদিনে ২০,০০০ ফলোয়ার আনফলো করে দিয়েছেন।

গত সপ্তাহে পাকিস্তানের কিছু শিল্পীর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়। তার প্রতিবাদে বিভিন্ন দেশে বলিউড তারকাদের ফলোয়ারের সংখ্যা কমে গেছে।

টলিপাড়ার শিল্পীদের অনেক ফলোয়ার রয়েছে বাংলাদেশে। ভারত-বাংলাদেশ রাজনৈতিক সমীকরণের প্রভাব টলিপাড়ার শিল্পীদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের উপর কতটা পড়তে পারে তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়ে গেছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে কার কত ফলোয়ার, তার ওপর ব্র্যান্ড এনডর্সমেন্টের কাজ নির্ভর করে। ভারত-পাকিস্তান ইস্যুর পর থেকে বলিউড তারকাদের অনুসারীর সংখ্যা হুড়মুড়িয়ে কমছে। যেটা হয়তো পরবর্তীতে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলবে।

আলোকিত প্রতিদিন/১২মে ২০২৫/মওম

আশুগঞ্জে রিভলবার ও ২ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার-১

মোঃ নিশাদুল ইসলাম: 
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ তারুয়া এলাকা থেকে একটি বিদেশী রিভলবার ও ২ রাউন্ড গুলিসহ  মোঃ ইমান উদ্দিন (৫৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯। গ্রেফতারকৃত আসামি আশুগঞ্জের শরীফপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ তারুয়ার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।
র‌্যাব-৯, সিপিসি-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৯, সিপিসি-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি আভিযানিক দল শনিবার (১০ মে) আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ তারুয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে একটি বিদেশী রিভলবার ও ২ রাউন্ড গুলিসহ ১ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়,গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষ্যে দ্য আর্মস অ্যাক্ট ১৮৭৮ জিআই ১৯/এ ধারায় মামলা দায়ের করে আসামি ও জব্দকৃত আলামত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আলোকিত প্রতিদিন/১২মে ২০২৫/মওম

বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে: নজরুল ইসলাম

আলোকিত ডেস্ক:
বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সাহায্য ও সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

১১ মে রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমানের স্মরণসভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকার যদি আগে সিদ্ধান্ত নিতো তবে গতকালের মতো এমন অনভিপ্রেত অবস্থার সৃষ্টি হতো না। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে যেভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে সরকার, একইভাবে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণায় দেরি হলে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে। তবে বিলম্বে হলেও অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের বিচারের উদ্যোগ নেওয়ায় বিএনপি খুশি জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আগে থেকেই দেশের রাজনীতির জঞ্জালমুক্ত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি করে আসছিল বিএনপি।

সরকারের কাজে অনেক ঘাটতি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ, কিন্তু সেখানে আগ্রহের ঘাটতি রয়েছে। নির্দলীয় এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি করা উচিত।

এদিকে হোটেল সোনারগাঁওয়ে চীনা দূতাবাসের একটি অনুষ্ঠানের পর আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ প্রশ্নে মীমাংসা হয়েছে। জনগণ যা চেয়েছে তাই হয়েছে।

আলোকিত প্রতিদিন/১২মে ২০২৫/মওম

অফিসিয়াল ডকুমেন্টস হাতে পাওয়ার পর আ.লীগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব: সিইসি

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকারি গেজেট বা অফিসিয়াল ডকুমেন্টস হাতে আসার পর নির্বাচন কমিশন (ইসি) সিদ্ধান্ত নেব বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।

১২ মে সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা কার্টার সেন্টারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

নাসির উদ্দীন বলেন, প্রজ্ঞাপনটা আসতে দেন। আমরা গ্যাজেটের জন্য অপেক্ষা করছি। ডেফেনেটলি ইলেকশন কমিশন দেশের জন্য কাজ করে। এ বিষয়ে আমরা ইকুয়েলি কনসার্ন। যখন আকাশে সূর্য উঠে যাবে পরিষ্কার দেখতে পারবেন।যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কার্টার সেন্টার সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত তিন নির্বাচনে কার্টার গ্রুপ পর্যবেক্ষক হিসেবে আসেননি। এবার আসার জন্য উনারা আগ্রহী। আমরা স্বাগত জানিয়েছি, বলেছি অভিজ্ঞতা যাদের আছে সবাইকে আমরা আমন্ত্রণ জানাব। সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যারাই কাজ করে তাদের আমরা এনকারেজ করি।

সিইসি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সঙ্গে কার্টার সেন্টার কথা বলেছে। তারা জানালেন, সবাই এই ইসির প্রতি নিজেদের আস্থার কথা জানিয়েছে। আগামী নির্বাচনে আমাদের প্রস্তুতি কেমন তারা জানতে চেয়েছেন। আমরা সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে আমাদের যে ওয়াদা করেছি, তা পালনে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পর্কে অবগত করেছি।

বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কার্টার সেন্টারের প্রতিনিধি দলের প্রধান জোনাথন স্টোনস্ট্রিট বলেন, আমাদের দল নির্বাচন পূর্ববর্তী মূল্যায়নের জন্য অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল। তার অংশ হিসেবে আজ সিইসির সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধি দল বৈঠক করেছে। এর আগেও ১৯৬৮ এবং ২০০১ সালে কার্টার সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা  বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। আমরা বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়কে গুরুত্বের সঙ্গে পালন করে থাকি।

আলোকিত প্রতিদিন/১২মে ২০২৫/মওম

ভারত শক্তি দেখাতে চেয়েছিল, প্রকাশ পেল দুর্বলতা

টানা কয়েকদিনের সংঘাতের পর গত ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন— ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে একটি “পূর্ণাঙ্গ এবং তাৎক্ষণিক” যুদ্ধবিরতি হয়েছে, আর সেটি সম্ভব হয়েছে তার প্রশাসনের মধ্যস্থতায়। মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, আরও বড় সংঘাতের আশঙ্কায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ স্যুজি ওয়াইলস জরুরি ভিত্তিতে এই সংঘাতের মধ্যস্থতা করেন।

এসময় জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সম্ভাব্য বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করে দেন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার পরামর্শ দেন।

বিশ্বজুড়ে এই যুদ্ধবিরতির খবরে স্বস্তি দেখা দেয়। কারণ পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা — যা এক গবেষণা অনুযায়ী এক সপ্তাহে প্রায় ১২.৫ কোটি মানুষের প্রাণ নিতে পারে — অঞ্চলজুড়ে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছিল এবং এটিই যুক্তরাষ্ট্রকে সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে বাধ্য করে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেওয়া এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে ভারতে অনেকে ভালোভাবে নেয়নি। ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান ভেদ প্রকাশ মালিক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার) লেখেন, “১০ মে’র এই যুদ্ধবিরতির পরে ভারতের ভবিষ্যৎ ইতিহাস হয়তো জানতে চাইবে, রাজনৈতিক বা কৌশলগতভাবে আসলে আমরা কী পেলাম।” এছাড়া ভারতের সংসদ সদস্য আসাদুদ্দিন ওয়াইসি লেখেন, “আমি চাইতাম আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজেই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিতেন, কোনও বিদেশি নেতা নয়। ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তির পর থেকেই আমরা তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে বিরোধী ছিলাম। তাহলে এবার কেন গ্রহণ করলাম? আমি আশা করি কাশ্মির ইস্যু আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরা হবে না, কারণ এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।”

ওয়াইসির বক্তব্যে মূলত ট্রাম্পের মন্তব্যের দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে, যেখানে ট্রাম্প বলেন, “ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করতে চাই যাতে হাজার বছরের (সংঘাতের) পরও কাশ্মির নিয়ে কোনও সমাধানে পৌঁছানো যায়।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা অনেক ভারতীয়র চোখে এসেছে মার্কিন চাপে মোদি সরকারের পিছু হটার নিদর্শন হিসেবে। আর ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাব ভারতের বহুদিনের নীতির—“তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ নয়”—তার অবক্ষয় বলেই ধরা হচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে অনেক সময় ‘ধারণা’ বাস্তবতাকে ছাড়িয়ে যায়—যতক্ষণ না বাস্তবতা মুখের ওপর এসে পড়ে। ভারত অনেকদিন ধরে নিজেকে এই অঞ্চলের নেতৃত্বশীল শক্তি হিসেবে তুলে ধরেছে, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং পারমাণবিক শক্তির ওপর ভর করে।

কিন্তু ২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর ভারতের প্রতিক্রিয়া দুর্বলতার দিকটাই বেশি স্পষ্ট করেছে। মূলত ভারতের উদ্দেশ্য ছিল শক্তি দেখানো, কিন্তু তার বদলে পাকিস্তানের অবস্থান আরও মজবুত হয়েছে, আর কূটনৈতিকভাবে মোদি সরকার পিছিয়ে পড়েছে।

গত ৭ মে ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে, যার লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের ভেতরে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ঘাঁটি ধ্বংস করা। ফরাসি ‘রাফাল’ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে অভিযান মোদি সরকারের ‘দৃঢ় নেতা’ ভাবমূর্তি রক্ষার প্রচেষ্টা ছিল। কিন্তু সফলতা বিতর্কিত।

পাকিস্তান জানায়, এই হামলায় সাধারণ মানুষ, এমনকি শিশু পর্যন্ত নিহত হয়েছে; যদিও ভারত দাবি করে, কেবল সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে আঘাত হানা হয়েছিল।অন্যদিকে পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় নিজস্ব যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে ভারতের হামলা প্রতিহত করার দাবি করে। দেশটি বলেছে, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি ছিল রাফাল ফাইটার জেট।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দুজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, চীনের তৈরি একটি জে-১০ যুদ্ধবিমান অন্তত দুইটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করেছে, যেখানে চীনের গোয়েন্দা, নজরদারি এবং টার্গেটিং সহায়তা ছিল। তবে ভারত কোনও বিমান হারানোর কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি।

ভারতের সংবাদমাধ্যম শুরুতে দাবি করেছিল, করাচির বন্দরসহ পাকিস্তানের বড় বড় শহরে ধ্বংসাত্মক হামলা হয়েছে, কিন্তু দেখা যায়, সেগুলো ছিল প্রচারণার অংশ—বাস্তবতা নয়।

গত ৯ মে ভারত দাবি করে, তারা ইসলামাবাদ সংলগ্ন একটি ঘাঁটিসহ পাকিস্তানের কয়েকটি জায়গায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তান পাল্টা জবাবে স্বল্প-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ব্যবহার করে ভারতের উধামপুর, পাঠানকোট, আদমপুর ও ভুজ বিমানঘাঁটিতে হামলা করে।

ভারতীয় বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা ভিওমিকা সিং জানান, পাকিস্তানের এসব হামলায় সামরিক এবং বেসামরিক দুই ধরনের লক্ষ্যবস্তুতেই আঘাত হানা হয়।

পাকিস্তানের হামলায় রাফাল ভূপাতিত, নির্মাতা সংস্থা দাসোর শেয়ারে ধস

এই ঘটনাগুলো ভারতের আঞ্চলিক নেতৃত্বের ভাবমূর্তিকে আঘাত করেছে। ভারতের ‘রাফাল’ সক্ষমতা যতটা মূল্যায়ন করা হয়েছিল, বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। পাকিস্তানের চীনের সহায়তায় গঠিত উন্নত নজরদারি এবং তথ্য ব্যবস্থার কাছে তা পিছিয়ে পড়েছে।

চীনের সামরিক সহায়তা পাকিস্তানের প্রতি গত কয়েক বছরে ব্যাপক বেড়েছে।  পাকিস্তানের ৮১ শতাংশ অস্ত্র চীন থেকেই এসেছে।

গত কয়েক বছর ধরেই কিছু ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক সতর্ক করে আসছিলেন— চীনের সহযোগিতায় পরিচালিত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত ভালোভাবে প্রস্তুত নয়—বিশেষত যখন যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের বাস্তব সহায়তা বেশ সীমিত।

আবার কেউ কেউ অভিযোগ করেন, ভারতের পররাষ্ট্রনীতির ভুলে চীন এবং পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। কিন্তু দিল্লিতে এসব সতর্কতা উপেক্ষিতই ছিল। তবে সাম্প্রতিক এই ঘটনা ভারতের কৌশলগত সীমাবদ্ধতা উন্মোচন করে দিয়েছে। এখন বিশ্বব্যাপী নজরদারির আওতায় এসেছে।

দিল্লি এখন হয়তো এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়াতে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কাশ্মিরে আরও সামরিকীকরণ ঘটাতে পারে। কিন্তু ভবিষ্যৎ গড়ার পথ নির্ভর করছে দিল্লি ও ইসলামাবাদের বিচক্ষণতার ওপর। উত্তেজনার পরিবর্তে সংযমই হতে হবে নীতিনির্ধারণের মূলভিত্তি। অন্যথায় রাজনৈতিক বিপর্যয়, অর্থনৈতিক মন্দা এবং কোটি মানুষের দুর্ভোগ অনিবার্য হয়ে উঠবে।

বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের এক-চতুর্থাংশ এবং ৩৫ কোটির বেশি নিরক্ষর প্রাপ্তবয়স্ক যেখানে বাস করে, সেই ভারত এবং পাকিস্তানের পক্ষে দীর্ঘমেয়াদী সংঘাত চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। চলমান উত্তেজনা ভারতের অগ্রগতিকে থামিয়ে দিতে পারে, আবার পাকিস্তানের দুর্বল অর্থনীতিকে সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলতে পারে—যার প্রভাব হবে প্রতিটি ছোট সফলতার চেয়ে বহুগুণ বেশি ক্ষতিকর।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরায় এই মতামত প্রবন্ধটি লিখেছেন ইউসুফ নজর। তিনি একজন বিশ্লেষক এবং লেখক।

আলোকিত প্রতিদিন/১২মে ২০২৫/মওম

তারাগঞ্জে গুম ও হত্যা মামলা তুলে নিতে বাদিনীর বাড়িতে ভাংচুর ও প্রাননাশের হুমকি

শফিউল মন্ডল, তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি,  রংপুরের তারাগন্জ উপজেলার হাড়িয়ার কুঠি ইউনিয়নের  খাঁরুভাজ নামক এলাকায় গুম ও হত্যা মামলার আসামিদের দ্বারা বাদিনীর বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও প্রাননাশের হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিগত ২০২৪ ইং সালের ৯ মার্চ জোবেদার ছেলে লোকমান হেকিম(১৯)গুমের  শিকার হন। ঘটনার পরের দিন পার্শ্ববর্তী খাঁরুভাজ নদী থেকে লোকমানের মৃতদেহ উদ্ধার করেন তাঁর চাচা মতিয়ার রহমানের পরিবার ও এলাকাবাসী। উল্লেখ্য মতিয়ার রহমানের পরিবারের সাথে বাদিনীপক্ষ জোবেদার জমি-জমা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব ছিল দীর্ঘদিনের। স্বাভাবিক ভাবে এই গুম ও হত্যাকান্ডের দায়ভার প্রতিবেশী মতিয়ার রহমানের পরিবারেরই নাটকীয়তা কোন সন্দেহ নেই।
পরে মৃত লোকমানের মা জোবেদা বেগম বাদী হয়ে রংপুরের তারাগন্জ থানায় ফরিদুল, তফসিরুল, ফেরদৌস, ফজলু মিয়া,মতিয়ার রহমান,নছিম,আয়েশা ও ফরিদাসহ মোট আট জনকে আসামি করে একটি গুম ও হত্যা মামলা  দায়ের করেন। যার মামলা  নং-জিআর ২৭/২৪। প্রাথমিক তদন্ত সাপেক্ষে তৎসময়ের তারাগঞ্জ  থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ  কর্মকর্তা মামলা রুজু করে কোর্টে প্রতিবেদনে দাখিল করেন। বর্তমানে মামলাটি পিবিআই তদন্তাধীন।কিছুদিন পর মামলার ১ জন আসামি পলাতক থাকলেও  অন্যান্য আসামিগন  জামিনে বেরিয়ে এসে বাদিনীর পরিবারের উপর  হামলা করেন।পরে বাদিনী আবারও একই আসামিগনকে আসামি করে তারাগঞ্জ থানার আরো একটি মামলা করেন।যাহার মামলা নং জি আর ৭০/২৪।বিচারক কার্যক্রম বিলম্বিত হওয়ার সুযোগে দুষ্কৃতিকারীরা  বাদীপক্ষের পরিবারের উপরে বারবার বিভিন্নভাবে অত্যাচার,নিপীড়ন ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত মামলা তুলে নিতে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
এরই ঘটনার জের ধরে গত ৯ই মে ২০২৫ইং তারিখে মতিয়ারের  পরিবারের লোকজন  ফরিদুল,তফসিরুল ও নসিব, ফেরদৌসীসহ অজ্ঞাত নামা আরো কিছু মিলে বাদীনি জোবেদা বেগমের বাড়িতে অনাধিকার  প্রবেশ করে ভাংচুর,  লুটপাট ও তার ১ম সন্তান ওবায়দুল কে আক্রমণ করে গায়ের বিভিন্ন স্হানে জখম করে।তিনটি তামাকের বেল সহ তারা বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। তবে এ বিষয়ে থানা কর্তৃপক্ষ অবগত হলেও কোন মামলা হয়নি।
পিবিআই এর মামলা তদন্তধীন কর্মকর্তা বলেন,এটি একটি গুম ও হত্যাজনিত ঘটনা।আমরা দীর্ঘদিন থেকে এ মামলা বিভিন্ন ক্লু খুঁজে তদন্ত করে যাচ্ছি।আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট কোর্টে দাখিল করবো।
আলোকিত প্রতিদিন/এপি  

সিংগাইরে আজগর হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন 

মো: মহিদ:
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে আজগর আলী (৫০) হত্যার ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও মামলার মূল আসামি ও এজাহার ভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। এসময় সড়কে বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে দ্রুত আসামিদের গ্রেফতারে থানা পুলিশের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা সরে দাঁড়ালে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ১১ মে রবিবার সকাল ১১ টার দিকে হেমায়েতপুর-সিংগাইর- মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের জয়মন্টপ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘন্টাব্যাপি এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। জানা গেছে, সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের রায়দক্ষিন পূর্ব পাড়ার ৩য় শ্রেনী পড়ুয়া নাতনীকে ( মেয়ে পক্ষের) স্কুলে যাওয়া আসার পথে উত্যক্ত করতো প্রতিবেশী চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আল আমিন (৪২)ও তার বখাটে বাহিনী।এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয় নানা আজগর আলী। এতে আল আমিন ক্ষিপ্ত হয়ে তার কয়েক সহযোগীসহ ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় কুপিয়ে হত্যা করে আজগর আলীকে।
নিহত আজগর আলী রায়দক্ষিণ গ্রামের প্রয়াত আবদুর রশিদ খানের ছেলে। তিনি এলাকায় একটি চায়ের দোকান করতেন। অভিযুক্ত আল-আমিন একই এলাকার প্রয়াত কালু প্রামাণিকের ছেলে। এঘটনায় নিহতের ছেলে আয়ূব খান বাদী হয়ে আল আমিনকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এপর্যন্ত মীর হোসেন,মানিক, রাকিবুল হাসান পিন্টু ও আসলাম হোসেন নামের ৪ জনকে গ্রেফতার করেন। সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন পালনকারীদের দাবি আজগর হত্যার মূল আসামির কাউকে এখনোও গ্রেফতার করা হয়নি ।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম বলেন,ইতিমধ্যে আজগর আলী হত্যা মামলায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপরদিকে এজাহার ভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে প্রযুক্তি ব্যবহারসহ বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি দ্রুতই তাদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে সক্ষম হবো।
আলোকিত প্রতিদিন/১১মে ২০২৫/মওম

টাঙ্গাইলে মামলা হতেই এলজিইডির দুটি রাস্তার কাজ সম্পন্ন

সাইফুল ইসলাম সবুজ:
টাঙ্গাইলে এলজিইডির দুটি রাস্তার কাজ সম্পন্ন না করে ৫৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা দায়ের হতেই রাস্তা দুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। দুদকের চাপ এবং এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরের চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে।
জানাগেছে, ২০১৯ সালের আগস্টে নাগরপুর উপজেলার দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তেবাড়িয়া রাস্তায় দপ্তিয়র বাজার থেকে কদিম কাকনা পর্যন্ত ১৬০০ মিটার পিচ ঢালাই ও তিনটি বক্স কালভার্ট নির্মাণের জন্য মেসার্স ফেন্ডস কনস্ট্রাকশন নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুই কোটি ২০ লাখ টাকায় কাজের চুক্তি করে। অন্যদিকে, একই উপজেলার গয়হাটা থেকে ভাড়রা রাস্তায় সিংজোড়া থেকে নাটোরভাঙা পর্যন্ত পিচ ঢালাই কাজের জন্য ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চার কোটি ৪০ লাখ টাকায় মেসার্স সৈয়দ মজিবর রহমান অ্যান্ড অবনী এন্টারপ্রাইজের(জেভি) চুক্তি হয়।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর একাধিকবার তাগিদ দিলেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। ফলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সীমাহীন কালক্ষেপণে স্থানীয় জনসাধারণ ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হয়। সর্বশেষ টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান চলতি বছরের ৬ মার্চ ৪৬.০২.৯৩০০.০০০.১৪.৩৩২.২০-১৩২৬ নম্বর স্মারকে মেসার্স ফেন্ডস কনস্ট্রাকশনকে এবং ১২ মার্চ ৪৬.০২.৯৩০০.০০০.১৪.৩৩২.২০-১৩৯৯ নম্বর স্মারকে মেসার্স মজিবর রহমান অ্যান্ড অবনী এন্টারপ্রাইজকে(জেভি) চূড়ান্ত নোটিশ দেন।
এদিকে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয় প্রাথমিক তদন্ত শেষে ২৭ এপ্রিল(রোববার) উপ-সহকারী পরিচালক বাসেদ আলী বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেন। দুদকের মামলায় টাঙ্গাইল এলজিইডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী এবং বর্তমানে প্রধান কার্যালয়ের মনিটরিং ও মূল্যায়ন শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম, নাগরপুরের সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম, সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাইনুল হক, মেসার্স ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী শহীদুর রহমান খান এবং মেসার্স সৈয়দ মজিবর রহমানের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ মজিবর রহমানকে অভিযুক্ত করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, দপ্তিয়র ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তেবাড়িয়া রাস্তায় দপ্তিয়র বাজার থেকে কদিম কাকনা পর্যন্ত ১৬০০ মিটার পিচ ঢালাই ও তিনটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। কদিম কাকনা গ্রামের এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. ফিরোজ শেখ, ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. আশিক হোসেন, একই ক্লাসের মো. কলিম উদ্দিন, কৃষিজীবী হায়দার শেখ, গৃহবধূ মোছা. পারভীন আক্তার, আম্বিয়া খাতুন, স্থানীয় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক দিনু শেখ, বাচ্চু শেখ, কফিল শেখ, নুরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জানায়, দীর্ঘদিন তারা চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছে। ঠিকাদার কাজ শুরু করে বার বার বন্ধ রেখেছে- এতে দুর্ভোগ আরও বেছে। রাস্তাটি প্রায় এক মাস আগে সমাপ্ত হওয়ায় তারা সহ এলাকাবাসী খুবই খুশি। এখন তারা পাকা সড়কে যাতায়াতের সুফল ভোগ করছে।
অন্যদিকে, একই গয়হাটা থেকে ভাড়রা রাস্তায় সিংজোড়া থেকে নাটোরভাঙা পর্যন্ত রাস্তাটি গত ৬ মে সমাপ্ত করা হয়েছে। সিংজোড়া-নাটোরভাঙা গ্রামের কৃষিজীবী মো. সাদিকুর রহমান, বাবলু মিয়া, স্কুল ছাত্র নইম উদ্দিন, আবুল শেখ, নাজমুল ইসলাম, মো. সাইফুল ইসলাম, গৃহবধূ আঞ্জুমান আরা, সাহেরা বানু, রোজিনা আক্তার, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক বাবলু মিয়া, কাশেম শেখ, হযরত আলী শেখ, আবুল খায়ের, ব্যবসায়ী রকিব হোসেন, ডা. ওসমান গনি সহ অনেকেই জানান, রাস্তাটির জন্য তারা মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।
ঠিকাদার কাজ শুরু করে হাওয়া হয়ে গিয়েছিলেন, তার সহযোগীরা একবার কাজ ধরেছেন আবার বন্ধ করে রেখেছেন। সর্বশেষ গত ৬ মে(মঙ্গলবার) কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। এখন তারা সিংজোড়া বাজার থেকে নাটোরভাঙা পর্যংন্ত পাকা সড়কে যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছেন। কিন্তু পাশেই একটি ডোবায় কাঠের সাঁকো দিয়ে বছরের পর বছর চলাচল করতে হচ্ছে। ওই স্থানে একটি সেতু বা মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করলে সহবতপুর ও নাগরপুর সদরের সঙ্গে যাতায়াত সহজতর হবে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফ্রেন্ডস কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী শহীদুর রহমান খান জানান, তিনি হার্টের রোগী। চিকিৎসার জন্য ইনডিয়ায় গিয়ে টাকার অভাবে পুরো চিকিৎসা না করে ফিরে আসেন। পরে উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানের কাছে অনুনয়-বিনয় করে কাজের পুরো টাকা উত্তোলন করে চিকিৎসার জন্য ইনডিয়ায় যান। এজন্য কাজটি যথাসময়ে শেষ করতে পারেন নাই। এখন মোটামুটি সুস্থ এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর চিঠি ও দুদকে মামলা হওয়ায় দ্রুত কাজটি সমাপ্ত করেছেন।
মেসার্স সৈয়দ মজিবর রহমানের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ মজিবর রহমান গোপালপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের একজন নেতা। আওয়ামীলীগের শাসনামলেই তিনি পাওনাদারদের চাপে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াতেন। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি পুরোপুরি আত্মগোপনে চলে গেছেন। কোনোভাবেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার প্রতিনিধি হিসেবে জনৈক আইয়ুব আলী গয়হাটা থেকে ভাড়রা রাস্তায় সিংজোড়া থেকে নাটোরভাঙা পর্যন্ত রাস্তার কাজটি সম্পন্ন করেছেন।
টাঙ্গাইল এলজিইডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী এবং বর্তমানে প্রধান কার্যালয়ের মনিটরিং ও মূল্যায়ন শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি যথাযথ নিয়ম মেনে কাজ দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো পেয়েছিল। কাজ শুরু করে তারা নানা কারণ দেখিয়ে সময় বাড়িয়ে নেয়। তারপরও অজ্ঞাত কারণে কাজ দুটি তারা শেষ করেনি। এজন্য একাধিকবার তাদেরকে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তৎসময়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তারা কাজ দুটি সমাপ্ত করেন নাই বলে তিনি মনে করেন।
টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সড়ক দুটি নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়। সর্বশেষ চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়ার পর তারা নির্মাণ কাজ শুরু করে এবং দুদকে মামলা হওয়ার পর কাজ সমাপ্ত করেছে।
আলোকিত প্রতিদিন/১১মে ২০২৫/মওম