বগুড়া ব্যুরো:
বগুড়ায় নানা আয়োজনে পালন করা হয়েছে বিশ্ব উদারতা দিবস (গিভিং টুইসডে)। মঙ্গলবার সকালে দিবসটিতে শহরের সূত্রাপুর বগুড়া অটিজম কেয়ার সেন্টারে (বাঁক) প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এক বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পভারটি ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্টের (পিডিপি) আয়োজনে দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সমাজসেবা অধিদপ্তর বগুড়া জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু সাঈদ মোহাম্মদ কাউসার রহমান। এসময় তিনি বলেন, সারাবিশ্বের অনেক দেশের ধারাবাহিকতায় এই প্রথম বগুড়ায় এই দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে যা একটি ইতিবাচক সূচনা। যে সমাজে আমরা বসবাস করি সেখানে মানুষ যদি একে অপরের প্রতি উদার না হয় তাহলে অনেক সহজ কাজও জটিল হয়ে যায়। তবে উদারতার এই চর্চা গড়ে উঠতে হবে প্রতিটি পরিবার থেকে। অভিভাবকরা যদি ছোট থেকেই তাদের সন্তানদের মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলেন এবং সুশিক্ষা দেন তাহলে সেই সন্তান একদিন সেই পরিবার তো বটেই দেশ ও জাতির সম্পদ হিসেবে গড়ে ওঠে। এছাড়াও নানা আয়োজনে দিবসটি উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়ায় ডিডি কাউসার আয়োজক সংস্থা পিডিপিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। পিডিপি বগুড়ার নির্বাহী পরিচালক বজলুর রহমান বাপ্পীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম, রোপ এর নির্বাহী পরিচালক নারী উদ্যোক্তা তাহমিনা পারভীন শ্যামলী এবং দেশ টিভি ও দৈনিক চাঁদনী বাজারের রিপোর্টার সঞ্জু রায়। বাঁক এর নির্বাহী পরিচালক কাওছার জাহান রত্নার ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানে সারা বিশ্বের মানুষের সংঘাত, বৈষম্য ও দুর্নীতি থেকে বেরিয়ে এসে সুন্দর পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে সকল শ্রেণি পেশার মানুষদের জীবনযাত্রা, সহানুভূতি, ভালবাসা, সহযোগিতা, অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করা এবং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণের মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া হতদরিদ্র ও অসহায় জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেওয়ার উদ্বার্ত আহ্বান জানানো হয়। সভা পরবর্তী অনুষ্ঠানে বাঁক এর ৩৫ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মাঝে পিডিপির পক্ষে শিক্ষা উপকরণস্বরুপ খাতা, কলম, পেন্সিল, রাবারসহ ভাল মানের খাবার বিতরণ করা হয়।
বগুড়ায় নানা আয়োজনে বিশ্ব উদারতা দিবস পালিত
আবারো সাজানো নির্বাচনে জনগণের উৎকন্ঠা
এম এইচ চৌধুরী:
দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে শান্তি ফিরিয়ে আনতে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেন “মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি” এতে উপস্থিত ছিলেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ফারুক ফয়সাল, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ও ব্রতীর চেয়ারম্যান শারমিন মুরশিদ, অধ্যাপক ড,আনু মোহাম্মদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সভাপতি ড,বদিউল আলম মজুমদার, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট আইনজীবী ড,শাহেদীন মালিক, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ও নারীপক্ষের নেত্রী শিরিন হক, বিশিষ্ট আলোকচিত্র শিল্পী ও মানবাধিকার কর্মী ড,শহিদুল আলম।

অনুষ্ঠানের শুরুতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের সরকার দলীয় নেতাকর্মী এবং পুলিশ, র্যাব, গোয়েন্দ প্রশাসন কর্তৃক গণহারে হামলা,মামলা ও গ্রেফতারের কারণে একপক্ষীয় নির্বাচনের পথে এগিয়ে নেওয়া চেষ্টা বলে মন্তব্য করেন তিনি বলেন, এটি কোন সভ্য দেশের সরকার করতে পারেনা।বিএনপির রাজনীতি করার কারণে ছেলে’কে না পেয়ে বাবা’কে হত্যা, জামায়াতের রাজনীতি করার কারণে ডাক্তার’কে চেম্বার থেকে তুলে নিয়ে দিন দুপুরে হত্যা। বিরোধী মত পোষণ করায় বাড়ি ছাড়া এটা কেমন রাজনীতি??। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এতো ভিতু হয়েছে তার দলের লোকজন লাঠিসোঁটা, অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্য রাস্তা বসে শান্তির কবিতা শুনায়। আসলেই কি শান্তি আসবে নাকি শান্তির নামে অশান্তি বাড়বে এটা অনুধাবন করার বিষয়। আসক চেয়ারম্যান ফারুক ফয়সাল বলেন, জনগণের অধিকার হনন করে দমন নিপীড়নের রাজত্ব কায়েম করে ক্ষমতায় থাকা যাবে,কিন্তু শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যাবেনা। নারীপক্ষের নেত্রী শিরিন হক বলেন, আমরা খুবই বিব্রতবোধ করছি এবং একটা অজানা উৎকন্ঠায় দিন পার করছি। স্বাধীনতার ৫২ বছরেও সবার জন্য সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি কোন সরকার। কোন না কোন পক্ষ অন্যায়ের কাছে হেরে যাচ্ছে দিনের পর দিন। অধ্যাপক ড, আনু মোহাম্মদ বলেন,সকল দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুন্দর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি চাইলে সবকিছু সম্ভব, কিন্তু তিনি করবেন কি না সেটা সন্দিহান। সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড,শাহেদীন মালিক বলেন, সরকার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের দমন করতে পুলিশ প্রশাসন’কে এক তরফা ব্যবহার করছে।আসামিদের মতো বিচার বিভাগে কর্মরত আইনজীবীদের ও হয়রানি করছে আদালতে। আইনজীবী হিসেবে পরিচয় পত্র থাকার পরও রেহাই পাচ্ছেনা সহকর্মীরা যা সংবিধান পরিপন্থী। বাংলাদেশ সরকারের নির্বাচনী আইন অনুসারে পূর্ণ তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে সকল দলের অংশগ্রহণের সুযোগ করে একটি নিরপেক্ষ সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভব তবে নির্বাচন কমিশনের সৎ সাহস থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেন। বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ও ব্রতীর চেয়ারম্যান শারমিন মুরশিদ বলেন,সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী এনে জনগণের কণ্ঠরোধ করে নির্বাচন করলে সেই নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে তা বিবেচ্য বিষয়। নতুন প্রজন্ম’কে আমরা যতটুকু নির্বাচন মূখি করতে সক্ষম হয়নি তার কয়েকগুন পিছিয়ে নিতে উৎসাহিত করেছি। এমন বর্বর পরিস্থিতিতে ভোট দিবে কে?? প্রশ্ন রেখে বলেন,আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সকল দলের অংশগ্রহণ আশা করি তবে পরিবেশ তৈরি করতে হবে নির্বাচন কমিশন’কে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বিশিষ্ট আলোকচিত্র শিল্পী ও মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলম অনুষ্ঠানে উপস্থিত শতাধিক সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, সামাজিক আন্দোলন কর্মী, চিকিৎসক, শিক্ষক, ছাত্র ছাত্রী সহ সকলের পরামর্শ ও করণীয় শীর্ষক আলোচনা করার সুযোগ করে দেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সুজন এর সভাপতি ড,বদিউল আলম মজুমদার, এসময় তিনি বলেন, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, আমরা সকলেই মিলে আগামীর বাংলাদেশ। সকল দলের অংশগ্রহণ মুলক জাতীয় নির্বাচন আমাদের প্রত্যাশা, এই নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে নির্বাচন কমিশন’কে। যদু মধু রাম সাম দিয়ে লোক দেখানো প্রহসন মুলক জাতীয় নির্বাচন আমাদের কাম্য নয়। প্রয়োজনে পুনরায় তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে সকল রাজনৈতিক দল’কে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আহবান জানান তিনি।
আলোকিত প্রত্রিদিন/ ২৮ নভেম্বর ২০২৩
মহাসড়ক দখল করে অবৈধ পার্কিং, জনদুর্ভোগ চরমে
আলোকিত ডেস্ক:
রাজধানীর যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং করে রাখার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। সড়কের উপর থেকে শুরু করে ফ্লাইওভারের নিচে সবখানেই অবৈধভাবে গাড়ি রাখা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, মহাসড়কেও রাখা হচ্ছে গাড়ি। তাতে পুলিশের কোনো খেয়াল নেই। এতে যানজটের সঙ্গে পার্কিং নৈরাজ্যও প্রকট হচ্ছে। নগরীর ব্যস্ত এলাকার প্রধান সড়ক, শপিং মল ও সুপার মার্কেটের সামনে গড়ে উঠেছে অবৈধ গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা। বাড়ছে যানজট ও জনদুর্ভোগ। চলাচলে সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা। অনুপযোগী হয়ে উঠছে শহরের অলিগলি। এতে নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নগরবাসীকে। ফলে একদিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে নগরবাসীর কর্মঘণ্টা, তেমনি পোহাতে হচ্ছে অসহনীয় ভোগান্তি। রাজধানীর পার্কিং নৈরাজ্য কমাতে ২০০৭ সালে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন মহাপরিকল্পনা হাতে নিলে ২০২০ সালের শেষেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। মধ্যবর্তী ১৩ বছরেও কার্যকর হয়নি কোনো পরিকল্পনা বিভিন্ন সময় পার্কিং নৈরাজ্য নিয়ে একাধিক সংস্থা কাজ করার কথা বললেও, সমস্যার জটিলতা কমেনি। নীতিমালা নিয়ে এক-একটি সংস্থা অন্যের ওপর নির্ভর করছে। এতে করে সমস্যার সমাধান মিলছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহাপরিকল্পনার বিকল্প কিছু নেই। পার্কিং ব্যবস্থা নিয়ে এখনই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা না হলে, রাজধানীর বাসযোগ্যতা বিনষ্ট হবে। ফুটপাথ থেকে শুরু করে সড়কের কোথাও চলাচলের পথ থাকবে না। ঢাকায় প্রতিটি ভবন নির্মাণকালে গাড়ি পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত জায়গা রাখা হচ্ছে কি-না সিটি করপোরেশন ও রাজউকসহ সংশ্লিষ্টদের নজরদারি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে গড়ে তুলতে হবে পরিকল্পিত পার্কিং ব্যবস্থা। পার্কিং নৈরাজ্যের সঙ্গে জড়িত সুবিধাভোগীদের লাগাম টানতে হবে। সড়কে কিংবা ফুটপাথে গাড়ি রাখলে তার মালিক ও চালকদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তাহলেই পার্কিং নৈরাজ্য কমে আসবে। জানা যায়, রাজধানীর অধিকাংশ ভবনের নেই পার্কিং-এর ব্যবস্থা। বড় বিপণিবিতানগুলোতে পার্কিং ব্যবস্থা থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এ ছাড়া সড়কের পাশেই গড়ে ওঠা মার্কেটগুলোতে রাখা হয় না পার্কিংয়ের সুবিধা। ফলে গাড়ির মালিকের ইচ্ছা ও চালকদের সুবিধার জন্য সড়কেই বেছে নেন। ব্যস্ত ঢাকার বাণিজ্যিক এলাকা, কিংবা মার্কেটের সামনের রাস্তায় চোখে পড়ে অবৈধ গাড়ি পার্কিংয়ের দৃশ্য। ফুটপাথ থেকে শুরু করে যেখানে সেখানে রাখা হচ্ছে এসব গাড়ি। সুবিধা মতো পার্কিংয়ের জায়গা না থাকায় যত্রতত্র গাড়ি রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকেন চালকরা। সড়ক দখল করে গড়ে তোলেন বাস কিংবা কার স্ট্যান্ড। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। বিশেষ করে অফিস সময়ে অসহনীয় যানজটের ভোগান্তির শিকার হতে হয় কর্মজীবীদের। ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ঢাকার রাস্তায় নতুন করে শতাধিক যানবাহন রাস্তায় নামে। যার ফলে সড়কে গাড়ি পার্কিং বেড়েই চলছে। এতে যানবাহন চলাচলের গতি কমে যাচ্ছে। নগরীর প্রধান সড়কগুলোতেও অবৈধভাবে পার্কিং হচ্ছে। রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলের দিলকুশা। ব্যাংক পাড়া হিসেবেও বেশি পরিচিত স্থানটি। সরজমিন গত মঙ্গলবার দুপুরে দেখা গেছে, এখানে প্রতিটি সড়কের অলিগলিতে রাখা হয়েছে ছোট বড় গাড়ি। গোটা বাণিজ্যিক এলাকায় যানজট লেগে থাকছে। পল্টন-মতিঝিল রুটে চলছে মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ। এতে দুইদিকে সরু হয়ে গেছে সড়ক। সরু সড়কের ওপর রাখা হয়েছে ব্যক্তিগত গাড়ি। এতে গণপরিবহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। তৈরি হচ্ছে যানজট। শাপলা চত্বর থেকে নটরডেম কলেজ পর্যন্ত সড়কেরও একই চিত্র। সড়কের কোথাও নেই তিল পরিমাণ খালি জায়গা। গাড়ি সড়কের ওপর রেখেই এসব স্থানে খোশগল্পে মেতে উঠেছেন চালকরা। সেগুনবাগিচা, কাকরাইল, নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, ফুলবাড়িয়া, গুলিস্তান, মগবাজার, ফার্মগেট, তেজগাঁও, সাতরাস্তা, মেয়র আনিসুল হক সড়ক, বনানী, গাবতলী, টেকনিক্যাল, মিরপুর ১ ও ১০ নম্বর, ধানমণ্ডি, গুলশান, বাড্ডা, নতুনবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার ওপর বাস রাখার কারণে নগরবাসীর অশান্তির যেন শেষ নেই। সূত্রে জানা যায়, পার্কিং নৈরাজ্য কমাতে ২০০৭ সালে মহাপরিকল্পনা হাতে নেয় সিটি করপোরেশন। সেটিকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ওই সময়ে ডিএসসিসির আরবান প্ল্যানিং বিভাগ একটি খসড়াও তৈরি করে। রাজধানীর পার্কিং স্পটগুলোতে কত সংখ্যক গাড়ি পার্কিং করা যায় তাও নির্ধারণ করা হয়। তখন সিদ্ধান্ত হয় নির্ধারিত স্থানে পার্কিং করবে গাড়ি। দিতে হবে টোল। টোল আদায় কর্মীদের অনুমতি ছাড়া রাস্তার পাশে কেউ গাড়ি পার্কিং করতে পারবে না। তখন আশা করা হয়, এতে গাড়ি পার্কিংয়ের ক্ষেত্রে ফিরে আসবে শৃঙ্খলা, কমে যাবে যানজট। তবে নানা জটিলতায় পার্কিং নিয়ে মহাপরিকল্পনা আটকে যায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সিটি করপোরেশন, রাজউক, ঢাকা ওয়াসা, সওজ, রেলওয়েসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো পার্কিং স্পেস বাড়াতে উচ্ছেদে নামে। সড়ক সংলগ্ন অবৈধ স্থাপনা এবং বহুতল ভবনের কার পার্কিং স্পেস অবমুক্ত করা হয়। তখন বিভিন্ন মার্কেট ও শপিং মলে পার্কিং স্পেস ছেড়ে দেন ভবন মালিকরা। অনেক মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডে বাণিজ্যিক কাজে ভাড়া দেয়া স্থাপনা ভেঙে ফেলেন। পরে সরকার পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যায় সব চিত্র। ফের পার্কিং স্পেস ও আন্ডারগ্রাউন্ড বাণিজ্যিকিকরণ করা হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ঢাকা সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। ট্রাক টার্মিনাল নেই, শহরের ভেতরে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল গড়ে তোলা হয়েছে। এসব চিত্র পৃথিবীর কোথাও নেই। নগরীর ভেতরে তো পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত স্থান নেই। এ ছাড়া বাসের রুট পারমিটেও চরম নৈরাজ্য চলছে। আমরা দুই মেয়র এ বিশৃঙ্খলা বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। অবৈধ পার্কিং ঠেকাতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাজধানীতে পার্কিংয়ের যথেষ্ট জায়গা নেই। অপর্যাপ্ত পার্কিং স্থানের চাইতে গাড়ির সংখ্যা দ্বিগুণ। সড়কে প্রতি বছর ৪ থেকে ৫ লাখ গাড়ি নামে। অথচ পার্কিংয়ের কোনো জায়গা নেই। পরিবহন মালিকদেরও বাস পার্কিং করার নির্দিষ্ট জায়গা নাই। রাজধানীতে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য জায়গা প্রয়োজন ২৫ ভাগ। আছে মাত্র ৮ ভাগ। তাহলে অতিরিক্ত গাড়িগুলো রাখা হবে কোথায়? আমরা নিয়মিত তদারকি করছি। অবৈধ স্থানে পার্কিং করলে জরিমানা করি। এটা সমাধান না। গাড়ি সড়কে নামানোর আগে পার্কিংয়ের জায়গা আছে কি না সেটা দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি পার্কিং ব্যবস্থাপনার নীতিমালা দেয়ার কথা। তারা যখন যে নির্দেশনা দিবে সিটি করপোরেশন তা বাস্তবায়ন করবে। পার্কিংয়ের বিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পায়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসসিসি’র আরবান প্ল্যানিং বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, অর্থ বরাদ্দ না থাকায় পার্কিং নীতিমালা নিয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আমরা একাধিকবার বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। সরকার পার্কিং নিয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে প্রতিবছর এখান থেকে শত শত কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হবে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বলছে, যারা সড়কে গাড়ি নামান, তারা অনুমোদন নেয়ার সময় নিজস্ব পার্কিং জোন দেখান। যদিও পরে সেসব স্থানে গাড়ি পার্কিং করা হয় না। ফলে সড়কের ওপর অবৈধভাবে পার্কিং করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেন। গাড়ি রেখে যারা সড়ক দখল করবে বিআরটিএ আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৮ নভেম্বর ২৩/ এসবি
চালকদের কর্মঘণ্টা নেই, বাড়ছে দুর্ঘটনা
আলোকিত ডেস্ক:
একজন গাড়িচালক দিনে কত ঘণ্টা কাজ করবেন? সড়ক পরিবহন বিধিমালায় এই সময় নির্ধারণ করে দেওয়া আছে দিনে আট ঘণ্টা, তবে একটানা পাঁচ ঘণ্টার বেশি নয়। কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যায় না। এরপর সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলে মূল দোষ যখন চালকের উপর আসে, তার প্রতিক্রিয়ায় বাসচালক মাহবুবুর রহমান জিয়া বলে ওঠেন- একজনকে দিয়া টানা ১৫-১৬ ঘণ্টা গাড়ি চালাইলে ড্রাইভারের তো করার কিছুই থাকে না। সেও তো মানুষ, ঘুম তো আসবেই। বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার জিয়া ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন ধরনের ভারী যানবাহন চালিয়ে আসছেন। এখন তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুর-আব্দুল্লাহপুর রুটের একটি গাড়ি চালান। সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে চালকের দায় কতটা- সকাল সন্ধ্যার প্রশ্নে পরিবহনকর্মীদের কর্মঘণ্টার প্রসঙ্গটি তোলেন তিনি। সাম্প্রতিক একটি দুর্ঘটনার নজির তুলে ধরেন জিয়া, বছিলা ব্রিজের ঢালে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ভোরের সেই দুর্ঘটনায় পাঁচজন মারা গিয়েছিলেন। একটা ড্রাম্প ট্রাক ও একটি সিএনজি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছিল সেখানে। জিয়া বলেন, পরে জানলাম ড্রাম্প ট্রাকের ড্রাইভার সারা রাত গাড়ি চালাইছে। আর সিএনজি ড্রাইভারও রাতে দেরি করে ঘুমিয়ে আবার ভোরে উঠেই গাড়ি নিয়ে বের হইছিল। দুজনের চোখেই ছিল ঘুম। সেই কারণেই নাকি অ্যাক্সিডেন্টটা হইছে। আমার মনে হয় সড়কে এই ঘুমটাই চালকের প্রধান শত্রু। এর কারণেই অনেক অ্যাক্সিডেন্ট হয়। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন হয়, নানা পদক্ষেপও নেওয়া হয়, তাতেও দেশে সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যে চোখ রাখলে দেখা যায়, গত চার বছরে সড়কে মৃত্যু ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।
২০১৯ সালে ৪৬৯৩টি দুর্ঘটনায় নিহত ৫২১১, আহত ৭১০৩ জন
২০২০ সালে ৪৭৩৫টি দুর্ঘটনায় নিহত ৫৪৩১, আহত ৭৩৭৯ জন
২০২১ সালে ৫৩৭১টি দুর্ঘটনায় নিহত ৬২৮৪, আহত ৭৪৬৮ জন
২০২২ সালে ৬৮২৯টি দুর্ঘটনায় নিহত ৭৭১৩, আহত ১২৬১৫ জন
২০২৩ সালে (সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) ৪২২৭টি দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৪৬, আহত ৭৭২৩ জন
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যের বরাতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, সড়কে গড়ে প্রতিদিন ৬৪ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। বছরে নিহতের সংখ্যা ২৩৩৬০ জন।
মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ আহত হচ্ছে। প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ১২ হাজারের বেশি ১৭ বছরের কম বয়সী শিশু। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ২২০ জন মানুষ প্রতিবন্ধী হচ্ছে কেবল সড়ক দুর্ঘটনায়। সড়কে দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ই বেপরোয়া গাড়িচালনাকে দায়ী করে আসছেন এই দপ্তরের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে চালকরা সড়কে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন কেন- সেই প্রশ্নের উত্তর মিলল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজের কাছে। তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত চালকদের বেতন কাঠামোর আওতায় না আনা হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনা বাড়বে ছাড়া কমবে না। কারণ চালকরা মালিকদের কাছ থেকে চুক্তিতে গাড়ি নিয়ে বের হন। ফলে বেশি ট্রিপ দেওয়ার মানসিকতায় তারা সড়কে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালান। দুর্ঘটনা ঘটার এটি একটি অন্যতম প্রধান কারণ বলে মনে করেন কাজী নেওয়াজ। এদিকে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান মনে করেন, সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে চালক চতুর্থ কারণ। তিনি বলেন, এক নম্বর কারণ অব্যবস্থাপনা, তারপরে আছে গাড়ির ফিটনেস। তিন নম্বর কারণ বেহাল সড়ক ব্যবস্থা। সাইদুর বলেন, ম্যানেজমেন্টের কাজ হচ্ছে চালকের কর্ম ঘণ্টা নির্ধারণ করে দেওয়া। কিন্তু আমাদের দেশে কোনো চালকই নির্দিষ্ট কর্ম ঘণ্টা অনুযায়ী কাজ করতে পারেন না। আমাদের দেশে চালকরা একটানা ১৬ ঘণ্টা, ১৮ ঘণ্টা কিংবা ২২ ঘণ্টাও গাড়ি চালাচ্ছেন। একটা সময় চালকের চোখে ঘুম তো আসবেই। ঘুমে তাদের চোখ বন্ধ হয়ে গেলে পলকের মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। কী কী কারণে দুর্ঘটনা: সড়ক দুর্ঘটনার জন্য চালকদের একটানা দীর্ঘ সময় গাড়ি চালানোর পাশাপাশি নানা কারণ বিভিন্ন সময় চিহ্নিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তার মধ্যে রয়েছে- সড়কে চালকদের প্রতিযোগিতা, যততত্র গাড়ি থামানো, যাত্রীদের যত্রতত্র পারাপার, আলাদা লেইন না থাকায় একাধিক ধরনের গাড়ি একসঙ্গে চলা, ফুটপাত বেদখল ইত্যাদি। এআরআইয়ের সহকারী অধ্যাপক কাজী নেওয়াজ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ গাড়িচালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বা গতির খেলা। এর সঙ্গে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, গাড়ি-সড়কের ফিটনেস ও চালকদের মানসিক অবস্থাও জড়িত। যা বলছেন চালকরা: বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ওই মাসে দুর্ঘটনায় যে যানটি সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনায় পড়েছে, তা হল মোটরসাইকেল। জুবায়েদ আল মাসুম নামে এক মোটরসাইকেল চালক বেহাল সড়ককে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে দেখালেন। ঢাকায় বসবাসরত এই চাকরিজীবী বলেন, আমদের দেশের সড়কগুলো মোটরসাইকেল চালকদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক সড়কই খানাখন্দে ভরা। এছাড়া সড়কের ধার দিয়ে জমে থাকে বালি ও ইট-পাথরের টুকরা। এতে চাকা পিছলে অনেক মোটরসাইকেল চালকই ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হন। ১৮ বছর ধরে ব্যক্তিগত গাড়ি চালিয়ে আসা মো. বিল্লাল হোসেন মহাসড়কে তিন চাকার ধীর গতির যানবাহনের বেপরোয়া চলাচলকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করছেন। পাশাপাশি বড় ট্রাক ও লরির হেডলাইটকে সমস্যা হিসেবে দেখালেন তিনি। বিল্লাল বলেন, রাতের মহাসড়কে যেসব বড় বড় ট্রাক ও লরি চলে, সেগুলোর বেশিরভাগই অতিরিক্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করে। কোনো লরি কিংবা ট্রাকে ৮টি পর্যন্ত হেডলাইট লাগানো থাকে। সেগুলোর আলোও অনেক বেশি উজ্জ্বল। একারণে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের মতো ছোট যানবাহনের চালকদের চোখ ধাঁধিয়ে যায় বলে মনে করেন তিনি, যার ফল হিসেবে দুর্ঘটনা ঘটে। সিরাজুল ইসলাম নামে এক ট্রাকচালক ঘুমের পাশাপাশি অসচেতনতা ও ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতাকেও কারণ হিসেবে দেখান। তিনি বলেন, বেশিরভাগ পথচারী খুব অসচেতন। তারা হুটহাট করে দৌড় দিয়ে রাস্তা পার হয়। ডানে-বামে কিছু দেখে না। এমন অবস্থায় দ্রুতগতির গাড়ির সামনে পড়লে চালকের কিছু করার থাকে না। আবার অনেক চালকও অসচেতন। তারা একটু তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে বেশি গতিতে গাড়ি চালায়। ঢাকার আদাবরের মনসুরাবাদ এলাকায় বসবাসকারী সিরাজুল প্রায় ১৬ বছর ধরে ট্রাক চালালেও এখন পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটাননি বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আমি গাড়িতে উঠে কখনও তাড়াহুড়ো করি না। সবসময় দেখেশুনে ধীরেসুস্থে গাড়ি চালাই। কারণ আমি দেখেছি, যারা বেশি তাড়াহুড়ো করেছে, তারাই অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। সেটা পথচারী হোক কিংবা চালকই হোক। দুই যুগ ধরে ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলের একটি রুটের বাস চালিয়ে আসা মো. মিজান সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে চালকদের চেয়ে বেশি দোষ দিতে চান পরিবহন মালিকদের। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেশিরভাগ গাড়িই ‘ফিটনেস সমস্যা’ নিয়ে চলে, কারণ মালিকরা গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের পেছনে অর্থ খরচ করতে চায় না। তার ভাষায়, দেখা যায় যে টায়ারের মেয়াদ শেষ হলেও সেগুলো পরিবর্তন করেন না মালিকরা। যানবাহনের যে কোনো সমস্যায় জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা করেন। সেই ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি নিয়ে চালক রাস্তায় বের হলে দুর্ঘটনা তো ঘটবেই। অথচ দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু চালকদের দোষ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ফিটনেসবিহীন লক্কর ঝক্কর যানবাহন ৮০ ভাগ দায়ী। মালিক পক্ষের ভিন্ন কথা: দীর্ঘ সময় ধরে চালকদের গাড়ি চালানোকে দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে মানতে নারাজ বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ। তিনি বলেন, একটি দুর্ঘটনায় ঢালাওভাবে শুধু চালকদের দোষারোপ করা যেমন ঠিক না, তেমনি চালকদের একটানা দীর্ঘ সময় গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা বেশি ঘটে, এই অভিযোগও ঠিক না। বিষয়টি এমন হলে কম দূরত্বের রুটে তো দুর্ঘটনা হওয়ার কথা নয়। আর অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি বা যানজট না হলে আমাদের দেশের বেশিরভাগ রুটেরই দুরত্ব ৪-৫ ঘণ্টার। একজন চালক একদিন গাড়ি চালালে পরেরদিন তার ডিউটি দেওয়া হয় না। আর এখন দূরপাল্লার বেশ কয়েকটি রুটে চালকদের জন্য বিশ্রামাগার করছে সরকার। সেসব স্থানে অতিরিক্ত চালক রাখা হবে। শ্যামলী পরিবহনের মালিক রমেশ ঘোষ দক্ষ চালকের সঙ্কটের বিষয়টি তুলে বলেন, ভবিষ্যতে এই সঙ্কট আরও প্রকট হবে, কারণ সর্বশেষ সড়ক আইনে একটি দুর্ঘটনার জন্য চালকদের যে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, তাতে এই পেশায় কেউ আর আসতে চাইবে না। মামলা বাড়ছে, দুর্ঘটনা কমছে না: সড়কে অনিয়ম দেখলেই মামলা করছেন দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে সারাদেশে মোটরযান আইনে মোট মামলা হয়েছিল ৬ লাখ ১৩ হাজার ১৯টি। এসব মামলায় জরিমানা আদায় হয়েছিল ৭৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা। পরের বর ২০২১ সালে মামলার সংখ্যা ৩ লাখ ৪২ হাজার ৮৯৩টি বেড়ে ৯ লাখ ছাড়িয়ে যায়। জরিমানা আদায়ও বেড়ে হয় ২২১ কোটি ৭ লাখ টাকা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন বলেন, মামলা দিয়ে কোনোদিন দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয়। তিন চাকার ধীর গতির গাড়ি মহাসড়কে দুর্ঘটনা বাড়াচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। নানা নির্দেশেও তা বন্ধ হচ্ছে না কেন- প্রশ্নে হানিফ বলেন, “হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের মাসোহারা দিয়ে নামমাত্র ভুয়া ফিটনেসের কাগজ বানিয়ে মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এরা। এআরআইয়ের সহকারী অধ্যাপক সাইফুন নেওয়াজ বলছেন, দুর্ঘটনা কমাতে দায়িত্বশীলরা নানা কথা বললেও কাজ সেভাবে হচ্ছে না। তার ভাষ্যে, সড়ক দুর্ঘটনার কারণ শনাক্ত করে প্রতিকারের অনেক সুপারিশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনা কমাতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। সবকিছু কাগজে-কলমেই থেকে যাচ্ছে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৮ নভেম্বর ২৩/ এসবি
নেত্রকোণার পূর্বধলায় ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২
নেত্রকোণার পুর্বধলা উপজেলার শ্যামগঞ্জ বিরিশিরি সড়কের বামনখালী নামক স্থানে সিএনজি ও বালুবাহি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজনের নিহতের ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা দুজনের মধ্যে একজন ঘটনাস্থলে ও আরেকজনকে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। আজ (২৮ নভেম্বর) মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার আতকাপাড়া নামক স্থানে বামনখালী ব্রীজের কাছে এ দূর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরো তিনজন গুরুতর আহত হয়েছে। আহতরা হলেন, শরাফত আলী, পারভেজ আলী ও হাসান মিয়া। এর মধ্যে দুজনের বাড়ি নারায়নগঞ্জ ও একজনের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার গুনেরগাতী এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ থেকে ৫ জন যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজি নেত্রকোণার দূর্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সিএনজি টি পূর্বধলা উপজেলা সদর ইউনিয়নের আতকাপাড়া নামক স্থানে আসলে দূর্গাপুর থেকে আসা একটি বালুবাহী ট্রাক বেপরোয়াভাবে সিএনজিটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ১ জন ও পরে হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ট্রাক ও সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়, ঘটনার পরপরই ট্রাকচালক পলাতক ও বালুবাহী ট্রাকটি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৮ নভেম্বর ২০২৩
রাজবাড়ী-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন নূরে আলম সিদ্দিকী হক
আলোকিত ডেস্ক:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী হক স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাজবাড়ীতে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তিনি।
এ বিষয়ে কৃষক লীগ নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী হক বলেন, যেহেতু দল থেকে মনোনয়ন বঞ্চিতদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো বাধা-নিষেধ নেই, সেহেতু আমার কর্মী-সমর্থকদের অনুরোধে রাজবাড়ী-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নের ঘোষণা দিয়েছি।
নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নৌকা বা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে আমি নির্বাচন করছি না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আওয়ামী লীগের বিকল্প প্রার্থী হতে যাচ্ছি। দল যেহেতু সুযোগ দিয়েছে তাই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। ’
আলোকিত প্রতিদিন / ২৮ নভেম্বর ২০২৩/ দ ম দ
দূষণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে ঢাকার চার নদী
আলোকিত ডেস্ক:
ঢাকার চারপাশে রয়েছে চারটি নদী- বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু। এক সময় ছিল আরও অর্ধশতাধিক খাল। এসব নদী ও খাল মিলে ঢাকা ছিল অপরূপা। অনেক খালই আজ নেই। যেগুলো আছে সেগুলোও ভাগাড়। নদীগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। দখলে-দূষণে অন্তিম দশা। দেশের অনেক নদনদীই আজ দূষণ-দখলসহ নানা কারণে মরতে বসেছে। রাজধানী ঢাকাকে ঘিরে থাকা চার নদীও দূষণ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। নানা ধরনের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে এসব নদীতে। বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ঢাকার চার নদী ও খাল-বিলে পাওয়া গেছে ৭২ হাজার টনেরও বেশি বর্জ্য। সম্প্রতি প্রকাশিত ‘টুওয়ার্ডস আ মাল্টিসেক্টরাল অ্যাকশন প্ল্যান ফর সাসটেইনেবল প্লাস্টিক ম্যানেজমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সমীক্ষায় উঠে এসেছে এ তথ্য। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে শুরু করে ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ওই সমীক্ষা চালানো হয়। ওই সমীক্ষা প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর ৪৩টি জায়গায় পাওয়া গেছে ১১ হাজার ৫৬৪ টন বর্জ্য। এ ছাড়া শীতলক্ষ্যায় ৪৩ জায়গায় ৪৩ হাজার ১৮৩ টন, বালু নদের সাত জায়গায় দুই হাজার ১২ টন এবং তুরাগের ৩৬ জায়গায় ১৫ হাজার ৭৭১ টন বর্জ্য পাওয়া গেছে। এসব নদীতে দৈনিক ১১২ টন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এসব বর্জ্যরে একটি বড় অংশ প্লাস্টিক ও পলিথিন। বিশেষজ্ঞের মতে, নদী ও খাল দখলের পরই তার দূষণ হয়। নদীদূষণের বড় কারণ নদীর পাড়ে স্থাপনা, কলকারখানার বর্জ্য এবং নদীতে চলাচলকারী যানবাহন। ঢাকার খাল বা নদী আগে দখল হয়। এরপর স্থাপনা, কলকারখানা গড়ে তোলা হয়। এরপর সব কিছুর বর্জ্য ফেলা হয় সেই নদী বা খাল-বিলে। বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষা প্রতিবেদন বিশেষজ্ঞের এই ধারণাকে সমর্থন করে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার আশপাশের এসব নদীনালা দূষণের জন্য প্রধানত দায়ী শিল্প-কারখানাগুলো। শিল্প-কারখানা আর শহরের পয়োনিষ্কাশনের সব বর্জ্য নিয়ে ফেলা হচ্ছে নদীতে। এ কারণেই এক সময়ের স্বচ্ছ টলটলে পানির নদীগুলো ভয়াবহ দূষণের শিকার। ওই প্রতিবেদনে রাজধানী ঢাকার বর্জ্য নিয়ে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরে প্রতিদিন ছয় হাজার ৪৬৪ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ৭৩ শতাংশ বর্জ্য সংগ্রহকারী সংস্থার মাধ্যমে নির্দিষ্ট ল্যান্ডফিলে যায়। ৮ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা হয়। ১৪ শতাংশ ফেলা হয় ড্রেন ও অরক্ষিত এলাকায়। আর ৫ শতাংশ বর্জ্য ফেলা হয় নদী ও খালগুলোতে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশে করোনা মহামারি প্লাস্টিক দূষণকে আরও বাজে অবস্থায় নিয়ে গেছে। মাস্ক, গ্লাভসসহ অন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীতে প্লাস্টিকের ব্যবহার হচ্ছে। এসব বর্জ্য আলাদা করা হচ্ছে না। চারটি নদীর মধ্যে তুরাগের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানা গড়ে তুলে এটি এমনভাবে দখল করা হয়েছে যে এটি সরু খালে পরিণত হয়েছে। ফলে স্যাটেলাইট ইমেজে তুরাগকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা চালু থাকলে এক সময় হারিয়ে যাবে তুরাগ। নোঙরের অনুসন্ধান প্রতিবেদন বলছে, নদীগুলো দখল করে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। কামরাঙ্গীরচর ও বসিলায় নদী দখল করে বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো সবচেয়ে বেশি। এলাকা দুটিতে এর হার যতাক্রমে ৫০ ও ৫৬ শতাংশ। এছাড়া আব্দুল্লাপুর, গাবতলী, ডেমরা, কাঁচপুর ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় নদী দখল করে ৩৮-৪৮ শতাংশ স্থানে বিভিন্ন অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। গাছপালা ও কৃষি জমি হিসেবে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে নন্দীপাড়ার ৭৩ শতাংশ জমি। আর পরিত্যক্ত জমি হিসাবে বেশি অংশ রয়েছে বসিলায় প্রায় ৩০ শতাংশ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের এক গবেষণা পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বুড়িগঙ্গা নদীর বসিলা থেকে ধলেশ্বরী নদী পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার নদীপথের দুই পাড়ই দখল করে ফেলেছে প্রভাবশালীরা। কামরাঙ্গীরচর থেকে বসিলা পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪১ মাইল এলাকায় নদীটি দখল হয়েছে ৯৭ দশমিক ১৭ একর। তুরাগ নদের আবদুল্লাহপুর থেকে গাবতলী পর্যন্ত ৫ দশমিক ৭৬ মাইল এলাকাজুড়ে দখল হয়েছে ১২০ দশমিক ৭৯ একর। বালু নদীর ডেমরা থেকে নন্দীপাড়া পর্যন্ত ৪ দশমিক ২ মাইলজুড়ে দখল হয়েছে। তুরাগের মোট এলাকার মধ্যে দখল হয়েছে ৮ দশমিক ৮৪ একর জায়গা। এছাড়া, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা’র তথ্যমতে, শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় দখল হয়েছে মারাত্মকভাবে। নারায়ণগঞ্জ ও রাজধানীর সঙ্গে লাগোয়া পুরো এলাকা জুড়েই শীতলক্ষ্যার পাড়ের প্রায় ১৫ কিলোমিটারের বেশি এলাকা দখল হয়ে গেছে বিভিন্ন গ্রুপের কল-কারখানা ও ইটভাটার মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। এর মধ্যে নদী দখল করে সবচেয়ে বেশি অবকাঠামো গড়া হয়েছে কামরাঙ্গীরচর ও বসিলায়। এই অংশে ৫০ থেকে ৫৬ শতাংশ এলাকা দখল করা হয়েছে। এছাড়া আবদুল্লাহপুর, গাবতলী, ডেমরা, কাঁচপুর ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় ৩৮-৪৮ শতাংশ স্থানে বিভিন্ন অবকাঠামো গড়ে দখল করা হয়েছে। যদিও বিআইডব্লিউটিএ-এর দাবি এই হিসাব পুরনো। এর মধ্যে দখলকৃত নদীর অনেক এলাকাই দখলমুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সূত্রে জানা গেছে, নদীর সীমানা নির্ধারণের জন্য প্রায় দুই হাজার পিলার বসানো হয়েছে তুরাগ নদীতে। এর মধ্যে আদালতের রায় মেনে বসানো হয়েছে মাত্র ২৯টি। ৯৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ পিলার বসানো হয়েছে নদীর ঢালে। সঠিকভাবে রায় না মানার ফলে আমিনবাজার সেতু থেকে উত্তরা টঙ্গী সেতু পর্যন্ত ২০ কি.মি. দীর্ঘ নদীর দুই পাড়ের মোট ৫ কোটি ২৩ লাখ বর্গফুট অতি মূল্যবান জমি নদীর হাতছাড়া হয়ে গেছে। এতে করে পুরাতন ও নতুন দখলদাররা আবার নদী দখলে মেতে উঠেছে। এছাড়া, বালু নদীর ৩৬ কিলোমিটারের মধ্যে ২২ কিলোমিটার এলাকাই দখলদারদের আওতায় চলে গেছে। শুকনো মৌসুমে নদীর পানিও আলকাতরার মতো কালো হয়ে যায়। বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত পাঁচ বছরে বুড়িগঙ্গার দ্বিতীয় চ্যানেল সম্পূর্ণভাবে দখলদারিত্বের মধ্যে চলে গেছে। বিআইডব্লিউটিএ’র সীমানা পিলার উপেক্ষা করে এবং বুড়িগঙ্গার বুক চিরে দখলের রাজত্ব কায়েম করেছে একটি মহল। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা (জিআইএস), স্যাটেলাইট ইমেজ ও বাস্তব পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিরূপণ করা হয় নদ-নদীগুলো দখলের চিত্র। তাতে দেখা যায়, এক যুগের কিছু বেশি সময়ে ঢাকার চারপাশে দখল হয়েছে নদ-নদীগুলোর ২৫০ একরের বেশি জায়গা। পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে ঢাকার চারপাশে নদীর পাড় ধরে ১৮ মাইল এলাকা। ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের (আইডব্লিউএম) সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ১৯৭৮ সালে ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় জলাভূমির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৯৫২ ও নিম্নভূমি ১৩ হাজার ৫২৮ হেক্টর। একই সময়ে খাল ছিল ২ হাজার ৯০০ হেক্টর। ২০১৪ সালে ঢাকা ও আশপাশে জলাভূমি কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৯৩৫, নিম্নভূমি ৬ হাজার ১৯৮ ও নদী ১ হাজার ২ হেক্টর। ২০০১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা দখলের চিত্র তুলে ধরতে নদ-নদীগুলোর পাড়ে জনবহুল আটটি এলাকার তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে এক গবেষণা প্রতিবেদনে। এতে দেখা গেছে, ঢাকার চারপাশে সবচেয়ে বেশি দখল হয়েছে তুরাগ খাল। আবদুল্লাহপুর থেকে গাবতলী পর্যন্ত ৫ দশমিক ৭৬ মাইল এলাকাজুড়ে এক যুগে খালটির দখল হয়েছে ১২০ দশমিক ৭৯ একর। এর পর সবচেয়ে বেশি দখল হয়েছে বুড়িগঙ্গা। কামরাঙ্গীরচর থেকে বসিলা পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪১ মাইল এলাকায় এক যুগে নদীটি দখল হয়েছে ৯৭ দশমিক ১৭ একর। কাঁচপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত ৩ দশমিক ৫৭ মাইলজুড়ে শীতলক্ষ্যা ও ডেমরা থেকে নন্দীপাড়া পর্যন্ত ৪ দশমিক ২ মাইলজুড়ে বালু নদ দখল হয়েছে। নদ-নদী দুটি যথাক্রমে ২৩ দশমিক ৮৩ ও ৮ দশমিক ৮৪ একর দখল করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ২৬০ দশমিক ৬৩ একর খাল ও নদী দখল করা হয়েছে।দূষণমুক্ত করার কাজে অগ্রগতি নেই: দখলের পাশাপাশি ঢাকার চারপাশের বুড়িগঙ্গা, বালু, শীতলক্ষ্যা ও তুরাগ এই চারটি নদী দূষণ কমছে না। নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় চারটি নদী বছরের পর বছর বিষাক্ত হয়ে উঠছে। নদীগুলো দূষণমুক্ত করতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে তিন স্তরের পরিকল্পনা ও কিছু সুপারিশসহ কর্মপরিকল্পনা প্রায় তিন বছর আগে জমা দিয়েছিল নৌবাহিনী। এতে তিন স্তরের মেয়াদভিত্তিক কর্মপরিকল্পনার রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়। রূপরেখা অনুযায়ী, এক বছরের জন্য স্বল্পমেয়াদি, এক থেকে তিন বছরের জন্য মধ্যমেয়াদি ও এক থেকে পাঁচ বছরের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই বাংলাদেশ নৌবাহিনী এ সংক্রান্ত একটি কৌশলগপত্র উপস্থাপন করে। কিন্তু এরপর এ প্রকল্পের কাজ সেভাবে এগোয়নি। শুরুতে এ কাজের প্রধান সমন্বয়ের দায়িত্ব নৌবাহিনীকে দেওয়া হলেও পরবর্তীতে তা দেওয়া হয় স্থানীয় সরকারমন্ত্রীকে। জানা গেছে, এর পরই একই বছরের ৫ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জারি করা এক আদেশে বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকাকে ঘিরে রাখা বালু, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও চট্টগ্রামের কর্নফুলী নদীকে মানুষের ব্যবহারের উপযোগী করতে একটি মহাপরিকল্পনা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় সরকারমন্ত্রীকে। তাকে চেয়ারম্যান করে গঠিত হয় ২১ সদস্যের একটি বিশেষ কমিটি। কমিটিতে নৌপরিবহন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুই মন্ত্রীকে কো-চেয়ারম্যান করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালককে কমিটিতে সাচিবিক দায়িত্ব পালনের আদেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে মহাপরিকল্পনা তৈরি সংক্রান্ত কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। ওই সভায় কমিটির কার্যপরিধি পর্যালোচনা, তথ্যচিত্র পর্যালোচনা, সমস্যা, সরকারের পরিকল্পনা ও সমাধানের সুপারিশ নিয়েও আলোচনা হয়। সভায় কয়েকটি সুপারিশও তুলে ধরা হয়েছিল। সেসব সুপারিশে সারা বছর নদীগুলোতে ড্রেজিং ব্যবস্থা চালু ও ঢাকা ওয়াসার আউটলেটগুলোর সঙ্গে শতাধিক ডাইয়িং কারখানার চোরালাইন শনাক্ত এবং সেগুলো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, নিয়মিত পানির মান যাচাই, নদীর সীমানা নির্ধারণে জিআইএস প্রযুক্তি ব্যবহার এবং নদীর অবৈধ দখলমুক্ত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথা বলা হয়েছে। নদী দূষণ সম্পর্কে সরকারি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার চারপাশের নদীগুলোতে প্রতিদিনই ফেলা হচ্ছে নানা ধরনের বর্জ্য। এর ৬০ শতাংশই বিভিন্ন ধরনের শিল্পবর্জ্য। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদী দূষণের জন্য দায়ী মূলত শিল্পবর্জ্য। নদী চারটিতে পড়া বর্জ্যরে ৪০ শতাংশ ট্যানারি শিল্পের, ২০ শতাংশ অন্য শিল্পের। মোট ৬০ শতাংশ বর্জ্যই শিল্প খাতের। এর বাইরে ১৫ শতাংশ কঠিন বর্জ্য, ১৫ শতাংশ অন্য ও ১০ শতাংশ নৌযান বর্জ্য। অন্য বর্জ্যরে মধ্যে রয়েছে হাসপাতাল, ইটভাটা, পলিথিন ও ডকইয়ার্ড ইত্যাদি। এরই মধ্যে ঢাকার ট্যানারি শিল্প সাভারে স্থানান্তর করা হয়েছে। এতে করে ট্যানারির বর্জ্য কমলেও অন্যান্য বর্জ্য বুড়ীগঙ্গায় এখনও পড়ছে। সরকারি প্রতিবেদনে দেখা যায়, বুড়িগঙ্গা নদীর খোলামুড়া থেকে মীরকাদিম পর্যন্ত নাব্য মাত্র ১২ ফুট। শীতলক্ষ্যার ডেমরা থেকে গোপচর পর্যন্ত ১২ ফুট আর ডেমরা থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ৫ থেকে ৬ ফুট। বালু নদীর উত্তরখান থেকে ডেমরা ও টঙ্গী খালের উত্তরখান থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত নাব্য ৫ থেকে ৬ ফুট। আর তুরাগের আশুলিয়া থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত ৫ থেকে ৬ ফুট আর আমিনবাজার থেকে খোলামুড়া পর্যন্ত নাব্য ১২ ফুট।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৮ নভেম্বর ২৩/ এসবি
এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে অর্ণব
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :
২৮ নভেম্বর ২০২৩
আলফাডাঙ্গায় কলম সন্ত্রাস তন্ময় উদ্দৌলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
মোঃ শাহারিয়ার হোসেন:
ডিজিটাল দূর্ধর্ষ কলম সন্ত্রাস তন্ময় উদ্দৌলা কর্তৃক ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার আলফাডাঙ্গা প্রতিনিধি সাংবাদিক আলমগীর কবীর এর বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক কাহিনী সাজিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যাচার করার প্রতিবাদে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা। ২৭ নভেম্বর সোমবার সকাল ১১ টায় আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের আয়োজনে আরজেএফ এর কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ও আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সেকেন্দার আলম এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির এর সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এনায়েত হোসেন, সহ-সভাপতি খান আসাদুজ্জামান টূনু,সহ সম্পাদক এসএম ইকবাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মিয়া রাকিবুল ইসলাম,সমাজ কল্যাণ সম্পাদক লায়েকুজ্জামান,যুব ও ক্রিড়া সম্পাদক এনামুল হক রুবেল,কার্যকরি সদস্য এস এম কোবাদ হোসেন, প্রচার সম্পাদক অতিরিক্ত দায়িত্ব মোঃ শাহারিয়ার হোসেন,কার্যকরি সদস্য মোঃ কবির হোসেন, সদস্য সৈয়দ আমিনুর রহমান আচচু,সদস্য গোলাম আজম মনির, সদস্য কামরুল হক ভূঁইয়া, সদস্য মোঃ কামরুল ইসলাম প্রমুখ। এ ছাড়া বোয়ালমারী থেকে সময়ের প্রত্যাশার প্রকাশক সম্পাদক এ এস এম মুরশীদ লিটু শিকদার ও বোয়ালমারীর সাংবাদিক জাকির হোসেন,দৈনিক যুগান্তর কাশিয়ানী প্রতিনিধি লিয়াকত হোসেন (লিংকন), দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ এম এ জামান প্রমুখ। উল্লেখ্য গত (২১ নভেম্বর) মঙ্গলবার আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রতিনিধি সাংবাদিক আলমগীর কবির আলফাডাঙ্গা পৌর সদর বাজারের মায়ের দোয়া গোশত ভাণ্ডারে অসুস্থ গরু জবাই করা হয়েছে বলে খবর পান,পরে তিনি বিষয়টি প্রশাসনকে জানান,পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.ভবেন বায়েন ল্যাব টেস্টের জন্য উক্ত ব্যবসায়ীর কাছ পুলিশের সহায়তায় মাংস সংগ্রহ করেন।
অথচ ওই কলম সন্ত্রাস তন্ময় উদ্দৌলা দৈনিক কালবেলার ভিডিও ক্লিপে প্রচার করেন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রতারণা, টাকা ছাড়াই নিয়ে গেল মাংস’ শুধু তাই নয় কাল বেলার ওই প্রতিবেদক তন্ময় উদ্দৌলা সাংবাদিক আলমগীর কবীর কে নামসর্বস্ব ও ভুয়া সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অনুমতি ছাড়া তার ছবি ব্যবহার করে সুস্থ সবল মস্তিষ্কে তার মানের হানি ঘটিয়েছেন বলে দাবি করেন সাংবাদিক আলমগীর কবীর। এর আগে একই ব্যক্তি তার নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন মরা গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একই পেজে আবার লিখেছেন অসুস্থ গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই ব্যক্তি আবার কাল বেলার মাল্টিমিডিয়ার ভিডিও ক্লিপে প্রচার করলেন আলমগীর কবীর ল্যাব টেস্টের নামে ১কেজি মাংস বাসায় নিয়ে গেছেন।
এর অর্থ দাঁড়ায় মাংস ওয়ালা কালবেলার ওই প্রতিবেদককে অনৈতিক উপায়ে ম্যানেজ করে নিজেকে বাঁচাতে চেষ্টা করেছেন বলে দাবি করেছেন সাংবাদিক আলমগীর কবীর। এ বিষয়ে গত ২৪ নভেম্বর আলফাডাঙ্গা থানার একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন সাংবাদিক আলমগীর কবীর যার নং -১০৬৪।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২৬ নভেম্বর ২০২৩
প্রতিবন্ধী নারীর প্রতি সংহিসতা বন্ধে বগুড়ায় সংলাপ
বগুড়া ব্যুরো :
‘একত্রিত হও প্রতিবন্ধী নারীদের প্রতি সংসিহতা রোধে বিনিয়োগ করি’ প্রতিপাদ্যতে বগুড়ায় ডাব্লিউডিডিএফ এর আয়োজনে সোমবার দিনব্যাপী শহরের পর্যটন মোটেলের সভাকক্ষে প্রতিবন্ধী নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউএন উইমেন এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সমাজসেবা অধিদপ্তর বগুড়া জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু সাঈদ মোহাম্মদ কাউসার রহমান।
এসময় তিনি জানান, আমাদের সমাজে নারীদের প্রতি সহিংসতা এখনো বন্ধ হয়নি যেখানে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর নারীরা। বর্তমানকালে বিভিন্ন স্থানে সহিংস আচরণের এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের বুলিং আরা যারা প্রতিবন্ধী মা-বোনের সাথে নেতিবাচকভাবে এই বুলিং করে তারা অবশ্যই বিকৃত মানসিকতার মানুষ। তবে সমাজসেবা অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর, পুলিশসহ সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ শাখার সাথে জড়িতদের প্রতিবন্ধী নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে আরো দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করতে হবে এবং সচেতন হতে হবে সাধারণ মানুষকেও তবেই আমূল ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। ডিডি কাউসার এসময় ছোট থেকেই নিজ নিজ সন্তানকে নেতিবাচক সত্ত্বাগুলো পরিহার করে তাদের মাঝে পারিবারিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রতকরণের লক্ষ্যে অভিভাবকদের সচেতন ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।
ডাব্লিউডিডিএফ এর নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টির সভাপতিত্বে সংলাপ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্থার কর্মসূচি সমন্বয়কারী হুমায়ুন কবীর ও কি-নোট পেপারের মাধ্যমে সংলাপের লক্ষ্য উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন সংস্থার প্রজেক্ট অফিসার প্রিয়তা ত্রিপুরা। সংলাপে সমাজসেবা অধিদপ্তর, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, থানার নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক হেল্প ডেস্ক কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি, প্রতিবন্ধী নারী শিক্ষার্থী, কমিউনিটি মোবিলাইজারগণসহ প্রায় ১’শ জন অংশ নেন এবং নিজেদের অবস্থান থেকে গুরুত্বপূণ মতামত ব্যক্ত করেন। সংলাপের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন সংস্থার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও উপজেলা সমন্বয়কারী গোলাম কিবরিয়া। সংলাপ পরবর্তী অনুষ্ঠানে ২০ জন প্রতিবন্ধী নারী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণের ভাউচার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি ও সংস্থার নির্বাহী পরিচালক।
২৭ নভেম্বর ২০২৩