আজ শনিবার, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ২১ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 2135

সাভারে সরকারি রাস্তার জায়গার দখলমুক্ত করলেন চেয়ারম্যান সাইফুল

প্রতিনিধি,সাভার: সাভারে সরকারি রাস্তার জমিতে অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন বনগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম। রবিবার (৭ জুন) সকালে উপজেলার বনগাঁও ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বেড়াইদ এলাকায় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সরকারি রাস্তার জমিতে অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়। জানা যায়, বেড়াইদ এলাকার আবু বকর সিদ্দিক নামের এক ব্যক্তি সরকারি রাস্তার জমিতে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলে বেদখল দেওয়ার পায়তারা শুরু করেছিলেন।এ বিষয়ে কেউ কথা বলতে গেলে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার ও অভিযোগ পাওয়া গেছে এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে তিনি সরকারি রাস্তার জমিতে একটি অস্থায়ী বাড়ি নির্মাণ করে রেখেছেন।সেই সাথে তিনি আবারও তার পাশে আরো একটি স্থাপনা করার জন্য মাঁটি কাটার পায়তারা চালাচ্ছিলেন বলে সরেজমিনে দেখা যায়। ঘটনার দিন স্থানীয়রা মাঁটি কাটার কাজে বাদা দিলে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দেয়ারও হুমকি দিয়েছিলেন বলেও জানা যায়। পরে স্থানীয়রা ঘটনাটি চেয়ারম্যানকে অবগত করলে তিনি সাথে সাথে সাভার উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেন।পরে উপজেলা প্রশাসন সরকারি সার্ভেয়ার দিয়ে রাস্তার জমি সরেজমিনে মেপে সীমানা পিলার বসিয়ে অবৈধ দখলমুক্ত করেন। এসময় বনগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন,সরকারি রাস্তার জমি অবৈধভাবে দখল করার অধিকার কারো নেই।যারা সরকারি রাস্তার জমি অবৈধভাবে দখলের চেষ্টা করবে জনগনকে সাথে নিয়ে আমি তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করবো। তিনি আরো বলেন,আবু বকর সিদ্দিক কয়েক মাস ধরে সরকারি রাস্তার জমির উপর অবৈধভাবে একটি স্থাপনা করে রেখেছিলেন এবং তার পাশে আরো একটি স্থাপন করার জন্য মাটি কাটার কাজ শুরু করেন।স্থনীয়রা বিভিন্ন সময় বাধা দিলে তাদের বিরুদ্ধ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন।বিষয়টি আমি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করলে তারা আজ সরকারি সার্ভেয়ার নিয়োগ দিয়ে সরেজমিনে রাস্তার জমিতে সীমানা পিলার বসিয়ে বুঝিয়ে দিন।এলাকাবাসী জানান,অবৈধ দখলকারী আবু বকর সিদ্দিক দীর্ঘদিন ধরে সরকারি রাস্তার জমি দখল করে রেখেছিলেন।কেউ কথা বলতে আসলেই তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখান এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। এবিষয়ে অবৈধ দখলকারী আবু বকর সিদ্দিক এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি। এসময় উপস্থিত ছিলেন,বনগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার ও ওয়ার্ড আওয়ালীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান,সাধারণ সম্পাদক আরিফ আহম্মেদ,সরকারি সার্ভেয়ার সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

 

আলোকিত প্রতিদিন/৮ জুন ‘২০/এসএএইচ

মুক্তিযোদ্ধা ১১৮১টি সনদ বাতিল

::নিজস্ব প্রতিবেদক::

এক হাজার ১৮১ জনের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করেছে সরকার। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাদের নামে জারি হওয়া আগের গেজেট বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।  রবিবার (৭ জুন) এ বিষয়ে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব রথীন্দ্রনাথ দত্তের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন-২০০২’-এর ৭(ঝ) ধারা অনুযায়ী, সরকারের রুলস অব বিজনেস ১৯৯৬-এর শিডিউল (অ্যালোকেশন অব বিজনেস)-এর তালিকা ৪১-এর ৫ ক্রমিকে বর্ণিত ক্ষমতা বলে ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৬৬তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই সনদ বাতিল করা হয়েছে।’

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাতিল করা ১ হাজার ১৮১টি সনদের মধ্যে ১ হাজার ১৩৪ জন হলেন ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পরে তৎকালীন বিডিআর (বর্তমান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি)-এ যোগদানকারী। আর বাকি ৪৭ জন একই তারিখের পর বিমানবাহিনীতে যোগদান করেন।

বাজেট ২০০০-’২১ : গুরুত্ব পাচ্ছে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত

::নিজস্ব প্রতিবেদক::

অর্থনৈতিক ও সামাজিক ঝুঁকি মোকাবিলার পরিকল্পনা নিয়েই প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট। প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ, পরামর্শ, নির্দেশনা সংযোজন-বিয়োজন করে প্রায় ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার ব্যয় চূড়ান্ত করা হয়েছে এবারের বাজেটে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১১ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কাল সোমবার (৮ জুন) অনুষ্ঠিতব্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাজেটের বাকি খুঁটিনাটি দিক নিয়ে আলোচনা হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

করোনার কারণে এবারের বাজেটে গুরুত্ব পাচ্ছে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত। তবে স্বাস্থ্য খাত যোগাযোগ বা পরিবহন খাতের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে না। বিভিন্ন কারণে অতীতের ন্যায় এবারও সেতুসহ পরিবহন খাতকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে বরাদ্দ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ বছর এ খাতে বরাদ্দ মোট বাজেটের ২৫ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ করা হচ্ছে ৬.৩৫ শতাংশ।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নতুন এডিপিতে ১০টি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পরিবহন খাতে (সড়ক ও সেতু মিলিয়ে) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫২ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ২৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। অবকাঠামো, পানি সরবরাহ ও গণপূর্ত খাতকে দ্বিতীয় গুরুত্ব দিয়ে এই খাতে বরাদ্দ ২৫ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা, যা বাজেটের ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ খাত। ১২ দশমিক ০৯ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে। এতে খরচ হবে ২৪ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা। চতুর্থ স্থানে রয়েছে শিক্ষা ও ধর্ম। এ খাতে বরাদ্দ ২৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৪০ শতাংশ। বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে মোট বরাদ্দ ১৮ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে বরাদ্দ ১৫ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ। স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় খাতে বরাদ্দ ১৩ হাজার ৩৩ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের প্রায় ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। কৃষি খাতে বরাদ্দ ৮ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা, মোট বাজেটের ৪ দশমিক ০৯ শতাংশ। পানিসম্পদ খাতে বরাদ্দ ৫ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের প্রায় ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। জনপ্রশাসন খাতে বরাদ্দ ৪ হাজার ৪৮ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য তৈরি করা বাজেটে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, বরাদ্দ পেয়েছে ৩১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। এরপরেই রয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বরাদ্দ পেয়েছে ২৪ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ বিভাগ বরাদ্দ পেয়েছে ২৪ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বরাদ্দ পেয়েছে ১৭ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা। রেলপথ মন্ত্রণালয় বরাদ্দ পেয়েছে ১২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ বরাদ্দ পেয়েছে ১০ হাজার ৫৪ কোটি টাকা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বরাদ্দ পেয়েছে ৯ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাদ্দ পেয়েছে ৯ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা। সেতু বিভাগ বরাদ্দ পেয়েছে ৭ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় বরাদ্দ পেয়েছে ৬ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, বিভিন্ন কারণেই এবারও যোগাযোগ খাতকে গুরুত্ব দিয়ে বাজেট তৈরি করতে হয়েছে। যোগাযোগ খাতের ওপর নির্ভর করছে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ এবং বিনিয়োগের ওপর নির্ভর করছে দেশের অর্থনৈতিক সাফল্য। এছাড়া করোনার কারণে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা ও ভাতার পরিমাণ বেড়েছে। স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ও বেড়েছে অন্য বছরের তুলনায়।

করোনা মোকাবেলায় কঠোর সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই : যুবলীগ চেয়ারম্যানের পক্ষে ত্রাণ বিতরণকালে মধু

::জোছনা মেহেদী::

যুবলীগ চেয়ারম্যান অধ্যাপক শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মাঈনুল হোসেন খান নিখিলের পক্ষে ত্রাণ বিতরণের দ্বিতীয় দিনে দলের দক্ষিণ মহানগর সিনিয়র সহ-সভাপতি আহম্মদ উল্লাহ্ মধু বলেছেন, ‘করোনা মোকাবেলায় কঠোর সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রথম থেকেই সতর্কতার সঙ্গে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করে চলেছেন। দীর্ঘ সাধারণ ছুটির পর এখন রেড, ইয়োলো, গ্রিন জোনে বিভক্ত করা হচ্ছে। আমাদের যুবলীগ চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক সব সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। আর এই করোনাকালীন সময়ে সব সময় জনগণের পাশে থাকছেন।’

মধু বলেন, ‘আপনারা নিজেরা সতর্ক থাকুন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। কোন ভাবেই অবহেলা করবেন না। আমার কিছু হবে না- ভাবলেই ক্ষতির মধ্যে শুধু নিজে পড়বেন না। অন্যরাও আপনার কারণে ক্ষতির মধ্যে পড়তে পারে। তাই অন্যকে বাঁচাতে নিজে নিরাপদে থাকুন। অযথা ঘোরাঘুরি বন্ধ করুন। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘরেই থাকুন।’

রোবাবার যুবলীগের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষে শান্তিবাগ ১২ ওয়ার্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে হতদরিদ্র ও মধ্যেবৃত্ত ৫০০ পরিবারের মাঝে সহযোগিতা দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক কাউন্সিলর সিকদার আলী, মহিলা কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি, সদস্য ধর্মবিষায়ক উপ কমিটি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এ কে আজাদ সরকার, দক্ষিণ মহানগর যুবলীগ সহসম্পাদক মো. ইমরান খান, যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম বাবু, মাহফুজুর রহমান,আহসান উল্লাহ রাসেল, মো. রবিউল ইসলাম প্রমুখ। সার্বিক তত্বাবধানে ১২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক রমজান আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজ, মো. আল হাসান ও শেখ নাজমুল ইসলাম রনি প্রমুখ।

কুয়েতে বাংলাদেশি এমপিকে আটকের খবর, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নেওয়ার দাবি স্ত্রীর

 :: নিজস্ব প্রতিবেদক::

মানবপাচার ও ভিসা বাণিজ্যের অভিযোগে সংসদ সদস্য শহীদ ইসলাম পাপুলকে আটক করেছে কুয়েত সিআইডি। শনিবার রাতে তাকে কুয়েতের মুশরেফ এলাকার থেকে তাকে আটক করা হয় বলে স্থানীয় বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন। তবে পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম দাবি করেছেন, তার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের আগে বাংলাদেশের কুয়েত দূতাবাসের সঙ্গে বিষয়টি ‘স্পষ্ট’ হয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালা বলেন, ‘তাকে রাতে বাসা থেকে নিয়ে গেছে কুয়েত সিআইডি। তবে কী কারণে নিয়েছে আমাদের কিছু জানায়নি।’

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পাপুলের স্ত্রী সেলিনাও সংরক্ষিত আসনের এমপি। সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো বার্তায় সেলিনা বলেন, ‘গ্রেফতার সম্পর্কিত যে তথ্য গণমাধ্যমে এসেছে, তা ঠিক নয়। তিনি সেখানে কোনো মামলার আসামি নন। কুয়েত সরকারের তাদের নিয়ম অনুযায়ী তার ব্যবসায়িক বিষয়ে আলোচনার জন্য তাকে সেখানকার সরকারি দপ্তর বা সিআইডিতে ডেকে নিয়েছে।’

পাপুলের বিরুদ্ধে উঠা মানবপাচারের অভিযোগ তদন্ত হওয়ার বিষয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। সে সময় কুয়েত সিআইডির বরাত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মানব পাচার নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কুয়েতি পত্রিকা আল কাবাস ও আরব টাইমস। আল কাবাসের খবরে বলা হয়, কুয়েতে মানবপাচার ও ‘ভিসা বাণিজ্যে’ জড়িত থাকার অভিযোগে তিন বাংলাদেশির একটি চক্রের সন্ধান পাওয়ার পর একজনকে গ্রেফতার করেছে সেখানকার সিআইডি। বাকি দুজন বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন; তাদের মধ্যে একজন সংসদ সদস্য। ওই চক্রটি ২০ হাজার জনকে কুয়েতে পাচার করে ৫০ মিলিয়ন কুয়েতি দিনার (১৩শ কোটি টাকা) হাতিয়ে নিয়েছেন বলে ধারণা দেওয়া হয় ওই দুই সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে।

কুয়েতি গণমাধ্যম ওই সাংসদের নাম উল্লেখ না করলেও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে এমপি পাপুলের নাম উঠে আসে, যিনি কুয়েতে জনশক্তি রপ্তানি এবং দেশে আর্থিক খাতের ব্যবসায় যুক্ত। সে সময় ওই প্রতিবেদনগুলোকে ‘ভুয়া’ বলে উড়িয়ে দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, ‘যে সংসদ সদস্যের কথা বললেন, ‘আমরা শুনেছি যে এটা ফেইক নিউজ। সরকারের কাছে এই মুহূর্তে এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। আমাদের মিশন এখনো খবর দেয়নি, আমরা এখনো জানি না।’

ওই সময় আল কাবাস থেকে উদ্ধৃত করে আরব টাইমস পরে আরেক প্রতিবেদনে লিখেছে, কুয়েত সরকারের কাজ পেতে কর্মকর্তাদের পাঁচটি বিলাসবহুল গাড়ি ঘুষ হিসেবে দিয়েছেন এমপি পাপুল। তিনি তার সম্পদের একটি বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নিয়ে এক মার্কিন নাগরিকের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ব্যবসা শুরু করেছেন।

সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়েছেন ২০১৮ সালে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত এমপি পাপুল। তার মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করেন বলে কুয়েতে বাংলাদেশ কমিউনিটির ধারণা। কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, সেবা খাত, নিরাপত্তা, নির্মাণ, আবাসন, পরিবহন, তেল শোধন প্রভৃতি খাতে কার্যক্রম রয়েছে মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপের। কুয়েতের বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে ব্যবসায় রয়েছে তাদের।

বিশেষ পরিকল্পনায় আগামী বছর থেকে মশার উপদ্রব কমবে, আশা তাপসের

::জোছনা মেহেদী::
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন- ডিএসসিসি এলাকায় মশা নিধনে বছরব্যাপী কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আগামী বছর থেকে মশার প্রজনন ব্যাপক আকারে কমবে বলে আশা করছেন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। রোববার সকালে লালবাগের নবাবগঞ্জ পার্কে ‘বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম’ উদ্বোধন করতে এসে তিনি বলেন, মশা নিধনে গতানুগতিক কার্যক্রম থেকে বেরিয়ে এসেছে ডিএসসিসি। পুরো পরিকল্পনাটি উপর থেকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। নতুন এ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন আজ  থেকে শুরু হল। এটি কর্পোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে একযোগে চলবে।’

মেয়র জানান, প্রতি ওয়ার্ডে আটজন করে কর্মী সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পর্যন্ত লার্ভিসাইডিং করবেন। পাশাপাশি প্রতি ওয়ার্ডে ১০ জন কর্মী দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ফগিং করবেন। তিনি বলেন, এ পুরো কার্যক্রমের সঙ্গে ওয়ার্ড কাউন্সিলররা সম্পৃক্ত থাকবেন। এ কার্যক্রম যথাযথভাবে চললে আশা করছি আগামী বছর থেকে মশার প্রজনন ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে। নগরবাসী ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হোক তা আমরা চাইনা। এ কারণেই করোনার এ মহামারীর মধ্যেও মশক নিধন কার্যক্রম বেগবান করা হয়েছে।

আগামী ১৪ জুন থেকে ডিএসসিসি এলাকার জলাশয় এবং নর্দমা পরিষ্কার শুরু হবে। জলাশয়ে তেলাপিয়া মাছ চাষের পাশাপাশি হাঁস পালনের উদ্যোগের কথা জানান তাপস। ‘এতে জলাশয় সচল থাকবে ফলে মশার লার্ভা থাকতে পারবে না’, বলেন শেখ ফজলে নূর তাপস।

এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্‌ মো. ইমদাদুল হক, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মকবুল হোসেন এবং ডিএসসিসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

হেফাজত আমির আহমদ শফী আইসিইউতে

::সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম::

গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় আমির শাহ আহমদ শফী। রোববার রাত ৮টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

৯৫ বছর বয়সী আহমদ শফিকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে বলে তার ছেলে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আনাস মাদানী জানিয়েছেন। তিনি  বলেন, “পেটের পীড়াসহ বার্ধক্যজনিত রোগে তিনি ভুগছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।’ তবে ভর্তির পর তার বাবার শারীরিক অবস্থা ‘স্থিতিশীল’ বলে জানান আনাস মাদানী।

বয়ঃবৃদ্ধ আহমদ শফী এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাকে সর্বশেষ গত ১১ এপ্রিল হজম এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় চট্টগ্রাম নগরীর বেসরকারি সিএসসিআর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে এর তিন দিন পরেই তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে গেণ্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

হাটহাজারীর কওমি মাদ্রাসা দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামের মহাপরিচালক শফী তার ঘরানার মানুষের কাছে যেমন শ্রদ্ধেয়, তেমনি নারীবিরোধী নানা বক্তব্যের কারণে অন্য মহলে সমালোচিত।

করোনাকালীন সময়ে পাঁচ দলে বিভক্ত হয়ে কাজ করত জালিয়াত চক্র

  ::নিজস্ব প্রতিবেদক::

অন্তত ৩০ জনের সংঘবদ্ধ একটি দল পাঁচটি ভাগে বিভক্ত হয়ে মোবাইল ব্যাংকিং ও কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। আগের রাতে ঢাকা ও ফরিদপুর থেকে ১৩ জনকে গ্রেফতারের পর রোববার দুপুরে কারওয়ানবাজারে মিডিয়া সেন্টারে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক সারওয়ার বিন কাশেম এসব তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নাজমুল জমাদ্দার (১৯),  হাসান মীর (১৮), ইব্রাহিম মীর (১৮), তৌহিদ হাওলাদার (২৩), মোহন শিকদার (৩০),পারভেজ মীর (১৮), সোহেল মোল্যা (২৬),  মো. দেলোয়ার হোসেন (৩৫),সৈয়দ হাওলাদার (২০), বাকির হোসেন (২৪),মোহাম্মদ আলী মিয়া (২৬), পলাশ তালুকদার (৩৪), মো. ইমন (২৫)। এদের সবার বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গায়। তাদের কাছে ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৪৬২ টাকা, ৩১টি মোবাইল ফোন, দুটি ল্যাপটপ,দুটি ট্যাব, ১২০টি সীম, একটি রাউটার ও একটি টিভি কার্ড উদ্ধার করা হয়।

সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, ‘একজন মাস্টারমাইন্ড পুরো প্রতারক চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। এই চক্রের ৩০ থেকে ৩৫ জন সদস্য রয়েছে। চক্রটি হান্টার, স্পুফিং, কাস্টমার কেয়ার, টাকা উত্তোলন ও পর্যবেক্ষক দলে ভাগ হয়ে প্রতারণার কাজ করে থাকে। প্রতিটি গ্রুপ সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রতারণা করে থাকে। হান্টার গ্রুপ বিভিন্ন নম্বর ও ওই নম্বরের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। স্পুফিং গ্রুপের কাজ হলো নম্বর ক্লোন করা। ফেইক কাস্টমার সেন্টারের কাজ বিভিন্ন নম্বরে ফোন করে কৌশলে প্রতারণার মাধ্যমে পিন কোড নেওয়া। উত্তোলন দলের কাজ হলো বিভিন্ন জায়গায় তাদের লোক বসিয়ে টাকা তুলে নেওয়া। ওয়াচম্যানের কাজ হলো- বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট পানের, মুচিসহ বিভিন্ন দোকান নিয়ে বসিয়ে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর উপস্থিতি বা গতিবিধি দেখা।’ লটারি জেতা ও তার জন্য কুরিয়ারের চার্জের কথা বলেও টাকা হাতিয়ে নেয় বলে তিনি জানান।

এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং করতে গিয়ে প্রতারণা শিকার হচ্ছেন অনেক মানুষ। আর করোনাভাইরাসের সময় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেনে বেড়ে যাওয়ার সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে এই প্রতারক চক্র। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই ১৩ জন আগে কখনও গ্রেপ্তার হয়নি। এদের মধ্যে মোহন জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, গত দুই মাসে সে এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।’

বাংলার মানুষের মুক্তি উদ্ভাসিত হয়েছিল ৬ দফায় : প্রধানমন্ত্রী

 ::নিজস্ব প্রতিবেদক::

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাকিস্তান আমলে নিপীড়ন, নিষ্পেষণ, শোষণ, বঞ্চনা থেকে বাঁচতে বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬ দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবসে রোববার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি। করোনাভাইরাস সঙ্কটকালে অনলাইনে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘৬ দফা দাবিটা জনগণ এমনভাবে লুফে নিয়েছিল, আমি জানি না, পৃথিবীর কোনো দেশে এত দ্রুত কোনো দাবি এত বেশি জনপ্রিয়তা পেতে পারে।’ পাকিস্তান আমলে ভাষা অধিকার বঞ্চিত হওয়া থেকে শোষণ-নিপীড়নের প্রেক্ষাপটে ছয় দফা দাবিতে বাংলার মানুষের এক হওয়ার দিকটি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলার মানুষ এটা নিয়েছিল তাদের বাঁচার অধিকার হিসেবে। এই দেশের মানুষ এত দ্রুত ৬ দফাকে সমর্থনই শুধু করেনি, তারা স্বায়ত্তশাসনের এই দাবিকে নিজের দাবি হিসেবে গ্রহণ করল। বাংলার মানুষের মুক্তির দাবি হিসেবে এই ৬ দফা সকলের সামনে উদ্ভাসিত হল।’

স্বৈরাচার আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ডাকা এক জাতীয় সম্মেলনে পূর্ব বাংলার জনগণের পক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন। তিনি ১১ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে ৬ দফার পক্ষে দেশব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু করেন এবং বাংলার আনাচে-কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে জনগণের সামনে ৬ দফার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। বাংলার সর্বস্তরের জনগণ এই ৬ দফা সম্পর্কে সম্যক ধারণা অর্জন করে এবং ৬ দফার প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানায়। ১৯৬৬ সালের ৭ জুন ৬ দফা দাবি আদায়ে ঢাকাসহ সারা বাংলায় আওয়ামী লীগের ডাকে হরতাল পালিত হয়।

বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৯৬৬ সালের ৭ জুন কর্মসূচি সফল করতে গিয়ে পাকিস্তানি শাসকদের হাতে নিহত শ্রমিক নেতা মনু মিয়া, আবুল হোসেন, শফিক, শামসুলসহ যারা জীবন দিয়েছিলেন তাদের স্মরণ করেন। ৬ দফা দাবির পটভূমি তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, “এই দাবির মূল বক্তব্য ছিল যে প্রদেশ হিসেবে এই দেশের, আমাদের দেশের মানুষকে সুরক্ষিত করা, অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করা, বাংলাদেশের এই অঞ্চল অর্থাৎ এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নতি এবং প্রতিরক্ষার দিক থেকে এই অঞ্চলকে সুরক্ষিত করা। সেই সাথে সাথে বাঙালির যে অস্তিত্বের দাবি সে দাবিটা তুলে ধরা।”

এই দাবিটা তুলে ধরতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাধা পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দুঃখের বিষয় হল, আমাদের বাংলাদেশেরও দুই-একজন নেতা সেখানে বাধা দিয়েছিল।’ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ফিরে ৬ দফার সমর্থনে বঙ্গবন্ধুর দেশের আনাচে-কানাচে ছুটে বেড়ানোর তথ্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাত্র ৩৫ দিনের মধ্যে ৩২টা মিটিং তিনি করেছিলেন সারা বাংলাদেশে। এর মধ্যে যখন যেখানে যেতেন, তাকে গ্রেপ্তার করা হত। এভাবে ৮ বার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জের আদমজিনগরে যেই জনসভাটা করেন, তারপর তিনি ঢাকায় ফিরে আসলে তাকে ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আর জামিন দেওয়া হয়নি।’

ছয় দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন দমনে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের নির্যাতনের বিবরণ জানতে বঙ্গবন্ধুর ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইটি পড়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। ওই দমন-পীড়নে ৬ দফা দাবির আন্দোলন আরও জোরালো হওয়ার তা স্তব্ধ করতে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়েনর করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৬৮ সালে ১৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হল। তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দেওয়া হল, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে এই মামলা পরিচিতি পেয়েছিল। আসলে মামলাটা ছিল রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব। সেখানে বঙ্গবন্ধুকে এক নম্বর আসামি করা হল এবং সামরিক-অসামরিক ৩৪ জনকে মামলার আসামি করা হয়। সেই মামলার প্রধান অভিযোগটাই ছিল যে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পাকিস্তান থেকে এই পূর্ববঙ্গকে বিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছে।’

ওই মামলার পর মানুষ প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল, যা রূপ নিয়েছিল গণঅভ্যুত্থানে। যার ফলে মামলা তুলে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তানি জান্তা সরকার। ৬ দফা দাবি বাংলাদেশকে কীভাবে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে নিয়েছিল, তাও বলেন শেখ হাসিনা। ৬ দফার ভিত্তিতে ৭০ এর নির্বাচন। যে নির্বাচনে সমগ্র পাকিস্তানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায়। কাজেই ৬ দফা এবং ৭ জুন, এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

এই আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’র প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

ছয় দফা দাবি বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের এক দফা দাবিতে কীভাবে পরিণত হয়েছিল, মূল প্রবন্ধে তা তুলে ধরেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।

আলোচনা সভার পাশাপাশি ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলন ও তার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন বিষয়ে তরুণ প্রজন্মকে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে রোববার রাত ৯টা হতে রাত ১০টা পর্যন্ত এক ঘণ্টাব্যাপী ‘শতবর্ষে শত পুরস্কার’ শিরোনামে একটি অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রায় ২ লাখ প্রতিযোগী নিবন্ধন করে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। আয়োজকরা জানান, যত দ্রুত সম্ভব ফল ঘোষণা করে কুইজ প্রতিযোগিতায় ১০০ জন বিজয়ীকে পুরস্কার প্রদান করা হবে।

১ম পুরস্কার ৩ লাখ টাকা, ২য় পুরস্কার ২ লাখ টাকা, ৩য় পুরস্কার ১ লাখ টাকা, ৪র্থ পুরস্কার ৫০ হাজার টাকা, ৫ম পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা এবং বিশেষ পুরস্কার ৯৫টি প্রতিটি ৫ হাজার টাকা।

বগুড়ায় মীম হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

সংবাদদাতা,বগুড়া: বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার গন্ডগ্রামে ফাঁকা মাঠে গার্মেন্টসকর্মী মীম আক্তারকে ধর্ষণ, হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এবং সারাদেশে নারী শিশু ধর্ষণ-নির্যাতন, হত্যা বন্ধের দাবিতে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বগুড়া জেলা শহরে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। রবিবার (৭ জুন) দুপুর ১টায় শহরের সাতমাথায় সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বগুড়া জেলা শাখার আহবায়ক দিলরুবার সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়। উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ বগুড়া জেলার আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম পল্টু, সদস্য সচিব সাইফুজ্জামান টুটুল, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সদস্য রেনুবালা, আকলিমা খাতুন, রাধারানী বর্মন প্রমুখ।এসময় বক্তারা বলেন, সংবাদ মাধ্যমে জানা যায় মিম আক্তারকে তার স্বামী ৩ জুন ডিভোর্স দেয় এবং ৪ জুন মোবাইল কেড়ে নিয়ে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। সেদিনই সে ঢাকা থেকে সন্ধা ৬টার গাড়িতে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ৫ জুন সকালে মিমের লাশ শাজাহানপুর উপজেলার গন্ডগ্রামে ফাঁকা মাঠে পাওয়া যায়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনার রহস্য উদঘটন না হতেই দেখা গেল চাকরি দেয়ার নাম করে গাইবান্ধা থেকে ডেকে এনে শিবগঞ্জে ধর্ষণ করা হলো। সমাবেশ ও মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দরা অবিলম্বে মীম ধর্ষণ, হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এবং সারাদেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ নির্যাতন ও হত্যা বন্ধের দাবি জানান।

 

আলোকিত প্রতিদিন/৭ জুন ‘২০/এসএএইচ