আজ মঙ্গলবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ২৪ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 537

বাংলাদেশের ৮ গোলে বিধ্বস্ত সিঙ্গাপুর

আলোকিত ডেস্ক:

প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে তিন গোলে হারের পর আজ প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছিল সিঙ্গাপুর। ফিফা প্রীতি ম্যাচে অতিথিরা একাদশে চারটি পরিবর্তন এনে দলে রাখে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে খেলা স্ট্রাইকার ডেনেল্লে তান লিকে। এরপরও বাংলাদেশের সামনে বাধা হতে পারেনি অতিথিরা। বরং আগের চেয়ে হতশ্রী পারফরম্যান্স দেখা গেছে। স্বাগতিকরা একচেটিয়া দাপট দেখিয়ে আগের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি ব্যবধানে ম্যাচ জিতেছে। লাল-সবুজ দল ৮-০ গোলে সিঙ্গাপুরকে বিধ্বস্ত করেছে।ঋতুপর্ণা চাকমা ও তহুরা খাতুন জোড়া গোল করেছেন। এছাড়া সাবিনা খাতুন, সানজিদা আক্তার, সুমাইয়া মাৎসুশিমা ও শামসুন্নাহার জুনিয়র একটি করে গোল করে দলকে বড় ব্যবধানে জিততে সহায়তা করেছেন।সিঙ্গাপুর একাদশে পরিবর্তন আনলেও বাংলাদেশ দল অপরিবর্তিত রেখে খেলছে। কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকে বাংলাদেশের মেয়েরা আধিপত্য দেখাতে থাকে। স্বাগতিকদের আক্রমণের তোড়ে খেই হারাতে থাকে সিঙ্গাপুরের রক্ষণ। প্রথমার্ধে বিজয়ী দল তিন গোলে এগিয়ে ছিল।ম্যাচঘড়ির ৩ মিনিটে বাংলাদেশ গোল পেতে পারতো। মনিকা দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে দারুণভাবে বল বের করে নিয়ে লং পাস দিয়েছিলেন। ফাঁকায় থাকা সাবিনা বক্সে ঢুকে সময় নিয়ে সোজা গোলকিপার বরাবর শট মেরে সুযোগ নষ্ট করেন। ১১ মিনিটেও মধ্যমাঠ থেকে লং পাস পেয়ে সাবিনা বক্সে ঢুকে গোলকিপারকে ফাঁকায় পেয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে মেরে দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন। ৩ মিনিট পর সিঙ্গাপুর একবারই প্রতি আক্রমণ থেকে গোল করার চেষ্টা করেছিল। তবে সফল হতে পারেনি। নূর সায়েজআনি বক্সে ঢুকে জোরালো শট নিলেও গোলকিপার রুপনা চাকমা প্রতিহত করেন। ১৬ মিনিটে বাংলাদেশ প্রথম গোলে এগিয়ে যায়। সাবিনার ফ্রিকিকে বক্সের ভেতরে আফঈদার ভলিতে মাশুরার হেড ৬ গজের মধ্যে তহুরা লক্ষ্যভেদ করেন। দুই মিনিট পর বাংলাদেশ ব্যবধান দ্বিগুণও করে। সাবিনার কর্নার এক ডিফেন্ডার ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি, পোস্টের সামনে থেকে ঋতুপর্ণা আলতো টোকায় জাল কাঁপিয়ে দেন। ২৪ মিনিটে বাংলাদেশ স্কোরলাইন ৩-০ করে। বক্সের ভেতরে ঋতুপর্ণার জোরালো স্লাইডিং শট গোলকিপার ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি। সামনে থাকা তহুরা বল পেয়ে চকিতে জালে জড়াতে ভুল করেননি। বাকি সময় বাংলাদেশ আক্রমণ অব্যাহত রাখলেও ব্যবধান আর বাড়েনি। ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকে ড্রেসিংরুমে যায় সাইফুল বারী টিটুর দল। সেখান থেকে ফিরে বাংলাদেশ দলের খেলায় তেজ যেন আরও বাড়ে। আক্রমণ অব্যাহত রেখে একের পর এক গোলে জাল কাঁপিয়েছে। ৫৭ মিনিটে ঋতুপর্ণার বাঁ প্রান্ত থেকে ছোট ক্রসে তহুরার প্লেসিং গোলকিপারের শরীরে লেগে প্রতিহত হয়। ফিরতি বলে অন্য প্রান্তে থাকা সানজিদা দৌড়ে এসে নিচু জোরালো শটে জাল কাঁপিয়েছেন। ৬১ মিনিটে এক ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে বক্সে ঢুকে ঋতুপর্ণা বাঁ পায়ের জোরালো শটে দলকে পঞ্চম গোল এনে দেন। ৭৫ মিনিটে শামসুন্নাহার ‍জুনিয়রের পাসে সাবিনা দারুণ প্লেসিং করে ষষ্ঠ গোল পাইয়ে দেন। শেষ দুটি গোল এসেছে দুই বদলি খেলোয়াড়ের কাছ থেকে। ৮৭ মিনিটে বদলি সুমাইয়া মাৎসুশিমা দারুণ এক সাইড ভলিতে গোল করে দর্শকদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দেন। যোগ করা সময়ে শামসুন্নাহার জুনিয়র প্লেসিং করে দলকে অষ্টম গোল পাইয়ে সিঙ্গাপুরের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন। সিঙ্গাপুর এই অর্ধে কোনও সুযোগই পায়নি। দীর্ঘদেহী বরুশিয়ার স্ট্রাইকার একাধিকবার বল পেলেও কিছুই করতে পারেনি। দেখাতে পারেনি পায়ের ঝলক। দুই ম্যাচে টানা জিতে বাংলাদেশের মেয়েরা বছরটি শেষ করলো দারুণভাবে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৪ নভেম্বর ২৩/ এসবি

গোপালগঞ্জে গরিবের বন্ধু হিসেবে পরিচিত আজিম শেখ 

মোঃ শিহাব উদ্দিন:
অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টান্তর মূলক কর্মকাণ্ড প্রতিস্থাপন করেছেন মোঃ আজিম শেখ নামে এক যুবক। আজিম শেখ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোষেরচর এলাকার বাসিন্দা এবং সদর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। প্রতি বছরের মতো তিনি এবারেও উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ডের অসহায় ছিন্নমূল গরীব সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের নগদ অর্থ সহায়তা উপহার দিয়ে শীতের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই আজিম সমাজ এবং মানুষের কল্যাণে জড়িত। প্রায় ৭-৮ বছর ধরে পুরোপুরিভাবে মানুষের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। গোপালগঞ্জে সমাজসেবা মূলক এমন কোনো কাজ নেই যেখানে আজিমের অংশগ্রহণ নেই। অসহায় মানুষের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া, রোগীকে রক্ত দেওয়া, অসহায় মানুষের মাঝে ঈদ উপহার, মসজিদ নির্মাণে সহযোগিতা, বিভিন্ন স্থানে-প্রতিষ্ঠানে গাছ লাগানো, গরিবের মাঝে কম্বল ও মাংস বিতরণ, দুস্থ মানুষদের সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসা করানো, ঘর নির্মাণ, যুবকদের ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ, প্রতিবন্ধী-মানসিক রোগীদের সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই প্রদান, পাখিদের নীড়ের ব্যবস্থা, পশু-পাখিদের খাবার দেওয়া। হারানো শিশুদের উদ্ধারে সহায়তা, পঙ্গুদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণসহ বিভিন্ন ধরনের কাজে তার অংশগ্রহণের দৃষ্টান্ত রয়েছে। আর এ সবকিছুই তার নিজ অর্থায়নে ও নিজ উদ্যোগে করা।গোপালগঞ্জ , বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনে রয়েছে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। মোঃ আজিম শেখ বলেন, গোপালগঞ্জ সহ ও আশপাশের এলাকায় অসহায় অবহেলিত মানুষের অনেক কিছুই যেন নির্ভর করে আমার ওপর। যেমন ওষুধ, চাল, শিক্ষা খরচ, কাপড় অর্থাৎ মৌলিক চাহিদাগুলো। যা প্রতিদিন সাধ্যমতো সাহায্য সহযোগিতা করে থাকি। তিনি আরও বলেন, আমার লক্ষ্য মানবতার কল্যাণে কাজ করা। কোনো দলমত, পদ-পদবীতে আমার লোভ নেই। রাজনীতি কিংবা জনপ্রতিনিধি হওয়ারও কোনো ইচ্ছা নেই। আমি মানুষকে দেখানোর জন্যও এসব করি না। ইচ্ছা শক্তি থাকলে আর মন মানসিকতা ভালো থাকলে যার যার স্থান থেকেই সমাজ ও অসহায় মানুষের জন্য অনেক কিছুই করা সম্ভব। আমি যা করে থাকি তা আমার নিজের উদ্যোগে ও নিজের অর্থায়নে। তবে আমার পরিবার আমাকে এ কাজে সাহায্য ও প্রেরণা দিয়ে থাকে। তিনি বলেন, অনেক সময় এই কাজ করতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি এসেছে। তবু পিছু ফিরিনি। টাকা পয়সা বড় কথা নয়। শীতের  আনন্দকে সবার মাঝে ভাগ করে দিয়ে সমাজের অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি এটাই আমার কাছে বড় পাওয়া। অসহায়দের পাশে দাঁড়ালে মহান আল্লাহও খুশি হন।
আলোকিত প্রতিদিন/০৪ ডিসেম্বর ২৩/মওম

দুর্যোগ- দুর্ঘটনায় অগ্রগামী স্বেচ্ছাসেবীরা

আলোকিত ডেস্ক:

৫ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস। জাতিসংঘ প্রতিবছর ৫ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। স্বেচ্ছাসেবী ও স্বেচ্ছসেবী সংস্থাগুলোর পক্ষে বিশ্ব সম্প্রদায়, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), জাতিসংঘের সংস্থা, সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং বেসরকারি খাতের সঙ্গে তাদের প্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করা, তাদের কাজের প্রচার করা, তাদের মূল্যবোধ ভাগ করে নেওয়ার এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি হয় এর মাধ্যমে। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে সংহতি’। স্বেচ্ছাসেবীদের সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্যতম রয়েছে বিএনসিসি, রোভার স্কাউটস, নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরিচালিত রেঞ্জার ইউনিটসহ আরও বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এ ছাড়া দেশে-বিদেশে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রয়েছে। তবে এই সংগঠনগুলোর মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবার ধারণা প্রচার করা হয়। এই স্বেচ্ছাসেবকরা কোনও প্রাপ্তির আশা ছাড়াই যেকোনও দুর্যোগে সেবা নিতে প্রস্তুত থাকে। দেশে জাতীয় দৈনিকগুলোও পাঠক সংগঠন গড়ে তুলেছে বেশ কয়েকটি, যাদের কার্যক্রমের অন্যতম অনুষঙ্গ স্বেচ্ছাসেবা। বিশেষ কোনও দুর্যোগে ক্রান্তিতে এই সংগঠনগুলোর সদস্যরাও সক্রিয় হয়ে ওঠে। বিভিন্ন দুর্যোগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সমতালে কাজ করে রোভার স্কাউটস। বাংলাদেশে অনেকগুলো রোভার স্কাউট ইউনিটের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে দেশ-বিদেশে যদি কেউ আত্মমানবিকতার সেবা স্কাউটকে স্মরণ করে বা জানতে পারে, তাহলে সব স্বতপ্রণোদিত হয়ে সেখানে স্বেচ্ছাসেবা দিতে উপস্থিত হয় ঢাবি শাখা রোভার স্কাউট। নিমতলী অগ্নিকাণ্ড, সাভার অগ্নিকাণ্ডে সম্মুখ সারিতে ছিল তারা। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গের বন্যায় নিয়মিত সেবা স্বেচ্ছাসেবক মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়কে প্লাস্টিক-মুক্ত রাখা, নতুন বৃক্ষরোপণ ও পরিবেশ ধ্বংসকারী বৃক্ষ নিধন কার্যক্রম নিয়মিত পরিচালনা করে রোভার স্কাউট। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মিত কার্যক্রম মধ্যে রয়েছে শহীদ দিবস, মঙ্গল শোভাযাত্রা বিভিন্ন সমাবর্তন বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সিনেটের অনুষ্ঠানে শৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিরাপত্তা দেওয়া। নেপালের ভূমিকম্পের উদ্ধারকাজ পরিচালনা করতে বাংলাদেশ থেকে একটি রোভার স্কাউট টিম যায়, সেখানে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভার স্কাউটরাও। ঢাবি রোভার স্কাউটসের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমার স্কাউট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি নতুন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। সেটি হলো ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ। উদ্দেশ্য ক্যাম্পাসে অপ্রত্যাশিত গাড়িগুলো নিয়ন্ত্রণ করা, ক্যাম্পাসের শিক্ষা পরিবেশ বজায় রাখা, অযাচিত দুর্ঘটনার হাত থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করা। ‘সেবাই মূল লক্ষ্য’ চেতনায় শিক্ষার্থীদের তৈরি করা হয়। এখানে পাওয়ার কিছুই নেই। সেবা দিতেই তারা সব সময় প্রস্তুত থাকে। বিএনসিসি এবং রোভার স্কাউটে নারী-পুরুষ উভয় শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ থাকলেও শুধু নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরিচালিত হয় রেঞ্জার ইউনিট। অন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ধরনের অনুষ্ঠান হয়, সেটি জাতীয়, আন্তর্জাতিক কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের হোক, বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি এবং রোভার স্কাউটের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেঞ্জার ইউনিট নিয়মিতভাবে এসব প্রোগ্রামের শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে। বিদ্যালয়ের প্রোগ্রামের বাইরে বিভিন্ন টিকা দিবস সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য কাজ করে। এ ছাড়া হলে বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদনের ক্ষেত্রে ইউনিট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশ্ববিদ্যালয় রেঞ্জার ইউনিটের সভাপতি অধ্যাপক লাফিফা জামাল বলেন, এর মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। তবে এই স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের গড়ে তুলতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের পাশাপাশি সেবামূলক কার্যক্রম আমাদের মানবিক কোণগুলো বিকশিত হতে সহায়তা করে। বিশেষ শৃঙ্খলা কাজগুলো তাদের পরবর্তী ক্যারিয়ার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সর্বোপরি আমি মনে করি, এসব কার্যক্রম তাদের পরবর্তী জীবনে এক ধাপ এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি সমরবিজ্ঞানে পারদর্শী করে তোলে বিএনসিসি। এই সংগঠনে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়ে ক্যাডেট হয়। এরপর বছরে ৩০টির মতো ক্লাস হয় তাদের। এই ট্রেনিং ক্লাসগুলোয় তাদের প্রতিরক্ষা, অস্ত্র ব্যবহার, অস্ত্র খুলে জোড়া দেওয়া, অস্ত্র পরিচালনা, পিটি প্যারেড শেখানো হয়। শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে ভর্তির এক বছর পর সমরবিজ্ঞান-১, দুই বছর পর সমরবিজ্ঞান-২ নেওয়া হয় বলে জানান ঢাবি কন্টিনজেন্ট কমান্ডার অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন প্রোগ্রামে কাজ করার পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, বেশি ঠান্ডা, বেশি গরম, বন্যা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান বিভিন্ন শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে বিএনসিসি। উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন সর্বপ্রথম প্রতিবছর ৫ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস উদযাপন শুরু করে। অবিচ্ছিন্ন মানব বিকাশের জন্য এই স্বেচ্ছাসেবীরা অনলাইনে স্বেচ্ছাসেবক পরিষেবাগুলো ব্যবহার করে এবং একটি কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৪ ডিসেম্বর ২৩/ এসবি

বাসে আগুনের মামলায় রিজভীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

আলোকিত ডেস্ক:

প্রায় ৯ বছর আগের এক মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। একই সঙ্গে শুনানিতে অনুপস্থিত থাকায় এই ৪৫ জনের মধ্যে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীসহ ২২ জনের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) তোফাজ্জল হোসেন সোমবার এই আদেশ দেন। আমানউল্লাহ আমানের আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ২০১৫ সালে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় করা মামলায় বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ ২৩ নেতা-কর্মী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া রুহুল কবির রিজভী, বরকতউল্লা বুলুসহ ২২ জন আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। আদালত তাঁদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি মোহাম্মদপুরের জাকের ডেইরি ফার্মের সামনে বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে মিছিল বের হয়। মিছিলের পর একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আমানউল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হয়। মামলাটি তদন্ত করে পরের বছর ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট আদালতে ৪৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৪ ডিসেম্বর ২৩/ এসবি

দুর্বল হয়ে পড়ছে মাটির স্বাস্থ্য

আলোকিত ডেস্ক:

বাংলাদেশের মাটির স্বাস্থ্য দুর্বল হয়ে পড়ছে। মাটিতে রাসায়নিক উপাদানের পরিমাণ কমে আসছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাটির যত্ন না নেওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি দেখা দিচ্ছে। দীর্ঘ মেয়াদে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে খাদ্য উৎপাদনে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের (এসআরডিআই) কর্মকর্তারা বলছেন, সারা দেশের মাটিতেই প্রয়োজনের তুলনায় নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সালফার, দস্তা ও বোরনের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া অঞ্চলভেদে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজের ঘাটতি আছে। দেশের প্রায় সব উপজেলার মাটি পরীক্ষা করে এসআরডিআই এ তথ্য পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে  ৫ ডিসেম্বর বিশ্ব মাটি দিবস পালিত হচ্ছে। মৃত্তিকাবিজ্ঞানীরা মাটির তিন ধরনের চরিত্র বা বৈশিষ্ট্যের কথা বলেন। সেগুলো হলো ভৌত, রাসায়নিক ও জৈবিক। মাটির রং, মাটি নরম না শক্ত—এগুলো ভৌত চরিত্রের অংশ। বিভিন্ন ধরনের পদার্থ মাটির রাসায়নিক চরিত্র নির্ধারণ করে। অন্যদিকে মাটিতে থাকে অতি ক্ষুদ্র অণুজীব থেকে ছোট ছোট পোকা ও কেঁচোর মতো প্রাণী। এদের উপস্থিতি মাটির জৈব চরিত্র ঠিক করে দেয়। মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ ৫ শতাংশ হলে সে মাটিকে সবচেয়ে ভালো বলা হয়। ন্যূনতম ২ শতাংশ থাকলে সেটিকে ধরা হয় মোটামুটি মানের। কিন্তু দেশের মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ এখন গড়ে ২ শতাংশেরও নিচে নেমে এসেছে। এছাড়া জৈব পদার্থের ঘাটতি রয়েছে প্রায় ১ কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে, যা দেশের মোট জমির প্রায় ৭৯ শতাংশ। মাটির উর্বরতা শক্তি ও জৈব পদার্থের উপস্থিতি নিয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই)। ‘ল্যান্ড ডিগ্রেডেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ সমীক্ষায় মাটির উর্বরতা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে মাটিতে জৈব পদার্থের ঘাটতি ও নানা পুষ্টিকণা কমে যাওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। পাশাপাশি ভূমিক্ষয়, অম্লমাটির পরিমাণ, উপকূলের লবণাক্ত এলাকা ও খরাপ্রবণ এলাকায় কী পরিমাণ মাটি রয়েছে—তারও পূর্ণাঙ্গ তথ্য উঠে এসেছে প্রতিষ্ঠানটির সমীক্ষায়। এতে দেখা যায়, দেশে সব ধরনের বিশেষ করে আবাদি, বনভূমি, নদী, লেক, সংরক্ষিত বনাঞ্চল, সুন্দরবন ইত্যাদি এলাকা মিলিয়ে জমির পরিমাণ ১ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে ফসফরাস ঘাটতিযুক্ত এলাকার পরিমাণ ৬৬ লাখ হেক্টর, যা মোট জমির প্রায় ৪৫ শতাংশ। অন্যদিকে পটাশিয়ামের ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৫২ লাখ ৭০ হাজার বা ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশে। সালফারের ঘাটতি রয়েছে ৬৫ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর বা ৪৪ দশমিক ২ শতাংশ এলাকায়। এর বাইরে বোরনের ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৫১ লাখ ১০ হাজার হেক্টরে (মোট জমির ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ)। জৈব পদার্থের ঘাটতি রয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর বা মোট জমির প্রায় ৭৮ দশমিক ৯০ শতাংশে। এসআরডিআইয়ের তথ্যমতে, পদ্মা অববাহিকা ও হাওড়াঞ্চলের কৃষিজমিতে স্বাভাবিকের তুলনায় দস্তার পরিমাণ কম। এর মধ্যে পদ্মা নদীর অববাহিকার মাটিগুলোয় চুন ও ক্ষারের (পিএইচ) মাত্রা অনেক বেশি। অন্যদিকে হাওড়াঞ্চলের জেলাগুলোয় আবাদি এলাকা নিচু এলাকা হওয়ার কারণে কৃষিজমিগুলো অধিকাংশ সময় জলমগ্ন থাকে। এজন্য সেখানে দেখা দেয় দস্তার অভাব। সব মিলিয়ে দেশে এখন দস্তার ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৫৫ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে, যা মোট জমির প্রায় ৩৮ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্রমাগত ফসল ফলানোর কারণে দেশের মাটিতে প্রয়োজনীয় পরিমাণে জৈব পদার্থ নেই। মাটিকে যথাযথভাবে ব্যবহার না করায় উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে। অপরিকল্পিত চাষাবাদ, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সারের ব্যবহার, ক্রমবর্ধমান নগরায়ণ, শিল্পায়ন, দূষণ, ব্যাপক হারে বনভূমি ধ্বংস এবং অপরিকল্পিতভাবে সারের ব্যবহারের কারণে মাটির উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ইটভাটার জন্য মাটির উপরিভাগের অংশ তুলে নেয়া ছাড়াও মাটির টেকসই ব্যবস্থাপনার অভাবে পুষ্টি উপাদানের ঘাটতির ফলে মৃত্তিকা এখন হুমকির মুখে রয়েছে। এসব কারণে মাটির স্বাস্থ্যহীনতায় এখন প্রতি বছর ফসল উৎপাদনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও এগ্রেরিয়ান রিসার্চ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. আবদুল হামিদ বলেন, জমির উর্বরতা শক্তি সংরক্ষণে অবহেলা খাদ্যনিরাপত্তায় বড় হুমকি হতে পারে। টেকসই উন্নয়নের স্বার্থেই প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ জরুরি। মনে রাখতে হবে শুধু টেকসই কৃষি উৎপাদনই নয়, সমগ্র জীবমণ্ডলের অস্তিত্বও এখন মাটির স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভরশীল। এটা ঠিক, একই জমি বারবার ব্যবহারে মাটি উর্বরতা শক্তি হারাচ্ছে। এ ব্যাপারে পতিত রেখে জমির উর্বরতা শক্তি পুনরুদ্ধারে পরামর্শ দেয়া যেতে পারে ঠিকই। কিন্তু কোনো কৃষক জমি পতিত রাখার ঝুঁকি নিতে চাইবেন না। ক্ষুদ্র কৃষকের খাদ্য ও আর্থিক প্রয়োজনের কারণেই তাকে উপর্যুপরি ফসল ফলাতে হচ্ছে। সমভূমিতে হোক বা পার্বত্যাঞ্চল—একই জমি বারবার চাষ করে কৃষি ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার ঝুঁকি থেকে রক্ষার জন্য কৃষক ও সরকারি পর্যায়ে অনুকূল নীতিকৌশল গ্রহণ করা প্রয়োজন। কৃষকরা সংঘবদ্ধ না হলে কার্যকরভাবে নীতিকৌশল বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। এ বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন দরকার। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশের ১ কোটি ১৬ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে জৈব পদার্থের ঘাটতি রয়েছে। তার মধ্যে খুব খারাপ (ভেরি সিভিয়ার) অবস্থায় রয়েছে দেশের ১১ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর জমি। খারাপ (সিভিয়ার) অবস্থায় আছে ২৮ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর, মাঝারি (মডারেট) ধরনের খারাপ অবস্থায় আছে ৩৫ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর ও হালকা (লাইট) খারাপ অবস্থায় আছে ৩৩ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমি। অন্যদিকে দেশে অম্লযুক্ত মৃত্তিকার উপস্থিতি রয়েছে প্রায় ৮৩ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর বা মোট জমির প্রায় ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশে। পাহাড়ে ভূমিক্ষয় প্রাপ্ত এলাকা রয়েছে ১৭ লাখ হেক্টর। উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকার পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ ২০ হাজার হেক্টর। খরাপ্রবণ এলাকার পরিমাণ প্রায় ১৪ দশমিক ৩০ লাখ হেক্টর। এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, অধিকাংশ কৃষকই প্রধান প্রধান ফসলের জন্য নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম সার ব্যবহার করেন। প্রশিক্ষণ ও জানাশোনার অভাবে সুষম সার ব্যবহার করেন খুব কমসংখ্যক কৃষক। অপরিমিত ও মাত্রাতিরিক্ত সার ব্যবহারে ফলনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায় এবং জমিতে ব্যবহূত সারের কার্যকারিতা হ্রাস পায়। এ অবস্থা চলতে থাকলে একসময়ে জমিগুলো অনুৎপাদনশীল হয়ে পড়বে এবং কৃষিতে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসবে। এজন্য রাসায়নিক ও জৈব সারের মিশ্র প্রয়োগের মাধ্যমে জমি থেকে ফসলের আহরিত খনিজ ও জৈব পদার্থের মাত্রা যদি ঠিকঠাক ধরে রাখা যায়, তাহলে মাটির উর্বরতা শক্তি ধরে রাখা সম্ভব। ঘাটতি কমানোর পাশাপাশি উর্বরতা শক্তি ধরে রাখতে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি জমি চাষে রোটেশন পদ্ধতি অনুসরণ ও কৃষি উপকরণ ব্যবহারে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. কামারুজ্জামান বলেন, ‘সার্বিকভাবে দেশের মাটির স্বাস্থ্য ভালো নেই। মাটির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে। মাটির কোনো বিশ্রাম নেই। অতিব্যবহারে মাটির তিনটি চরিত্রই ক্ষতিগ্রস্ত। মাটি নিয়ে গবেষণার কমতি নেই। সে তুলনায় মাটি সংরক্ষণ বা মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উদ্যোগ চোখে পড়ে না।  সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ভৌত চরিত্র অনুযায়ী ৯ ধরনের মাটি (মৃত্তিকা দল) আছে। সব ধরনের মাটির রাসায়নিক গুণাবলি পরীক্ষা করেছে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট। তাতে দেখা গেছে, মাটিতে প্রয়োজনীয় রাসায়নিকের পরিমাণ কম। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মতো ৪৬০টি উপজেলার মাটির গুণাগুণ বা রাসায়নিকের তথ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে একই চিত্র পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট প্রতিটি উপজেলার ভূমি ও মাটি ব্যবহার নির্দেশিকা তৈরি করেছে। কোন জমিতে কোন ফসলের জন্য কোন সার কী পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে, তার পরামর্শ আছে নির্দেশিকায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন বলেন, মাটির স্বাস্থ্য দিনে দিনে নষ্ট হচ্ছে। মাটির সুষ্ঠু ব্যবহারের আপাতত কোনো বিকল্প দেখা যাচ্ছে না। তবে উপজেলাভিত্তিক এ নির্দেশিকা অনুসরণ করা যেতে পারে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৪ ডিসেম্বর ২৩/ এসবি

সারিয়াকান্দিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নারী সমর্থক অপহরণের গুজব 

মাইনুল হাসান মজনু:
বগুড়া সারিয়াকান্দিতে অপহরণের অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সেই নারী সমর্থক ফিরে এসেছে তার নিজ বাড়িতে। রবিবার  দুপুর ১২ টার দিকে অভিযুক্ত নাজমা খাতুন (৩৩) তার স্বামী ও শিশু সন্তানসহ বাড়িতে ফিরে এসেছে। এ বিষয়ে গত রবিবার বিভিন্ন পত্রিকায় ” বগুড়া-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে অপহরণের অভিযোগ” নামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে ওই এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি হয়। জানা গেছে, বগুড়া-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাজাদী আলম লিপির সমর্থক কামালপুর ইউনিয়নের সুতানারা গ্রামের নাজমা খাতুন (৩৩) এবং তার স্বামী বেলাল হোসেন (৩৭) ও তাদের ৩ বছরের শিশু কন্যাকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠে। এ বিষয়ে একই ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ওরফে আয়নাল মেম্বার বাদী হয়ে ৪ জন আওয়ামী লীগ নেতাকে আসামি করে সারিয়াকান্দি থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পরদিন রবিবার দুপুর ১২ টার দিকে অপহরণের অভিযোগের ভিক্টিমরা তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছেন। তারা বাড়িতে ফিরে এসে গনমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন যে, তারা ডাক্তার দেখানোর জন্য বগুড়া শেরপুর গিয়েছিলেন এবং সেখানে তারা তাদের নিজ আত্মীয়ের বাড়িতে রাত্রি যাপন করেছেন। ডাক্তার দেখানো শেষ হওয়ায় তারা এখন তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছেন। এ বিষয়ে নাজমা খাতুন বলেন, আমরা স্ব ইচ্ছায় ডাক্তার দেখানোর জন্য আমাদের আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। ডাক্তার দেখিয়ে আমরা আবার নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছি। এদিকে অপহরণের এ ঘটনায় অভিযুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল হাসান হেলালের স্ত্রী বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, তার স্বামী হেলাল ব্যবসার কাজে পঞ্চগড় অবস্থান করছেন। কিন্তু কতিপয় নামীয়  সন্ত্রাসী তার বগুড়া বাসায় এসে তার স্বামীকে খুঁজে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে চলে গেছে। এ বিষয়ে কামালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং অভিযুক্ত আসামি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগটি যে মিথ্যা বানোয়াট তা ভিক্টিম আমাদের জানিয়েছে। এ বিষয়ে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে আছে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজেশ কুমার চক্রবর্তী বলেন, অপহরণের অভিযোগের ভিকটিমদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তারা থানার হেফাজতে রয়েছে। তাদের কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নাই। তারা স্বেচ্ছায় ডাক্তার দেখানোর জন্য তাদের আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিল বলে আমাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
আলোকিত প্রতিদিন/০৪ ডিসেম্বর ২৩/মওম

গুলিস্তানে তানজিল পরিবহনের একটি বাসে আগুন

আলোকিত ডেস্ক:

রাজধানীর গুলিস্তানে তানজিল পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বিএনপির ডাকা অবরোধকে কেন্দ্র করে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা ২৩ মিনিটের দিকে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট এলাকায় তানজিল পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সিদ্দিক বাজার ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট পুলিশ প্রটোকলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নির্বাপন করে। এতে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, ২৮ অক্টোবর থেকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত এক মাসে রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় নানা ধরনের যানবাহনের মধ্যে ১৯১টি যানবাহনে ভাঙচুর এবং ২৯৯টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এছাড়া ১৮টি স্থাপনায় ভাঙচুর এবং ১১টি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সর্বমোট ৫১৯টি যানবাহন ও স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এদিকে রবিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে রবিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত তিন দিনে দুর্বৃত্তরা ১১টি যানবাহনে আগুন দেয়। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ৪টি, গাজীপুরে ৫টি, সিলেটে ১টি ও দিনাজপুর ১টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৪ ডিসেম্বর ২৩/এসবি

প্রোটিয়া নারীদের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় জয় বাংলাদেশের

ক্রীড়া ডেস্ক:

জয়ের জন্য ১৫০ রানের লক্ষ্যে বাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ৬৭ রান তুলে ফেলেছিলো স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকান মেয়েরা। এতটুকু দেখে যে কেউ ধারণা করে নিতে বাধ্য যে, প্রোটিয়া নারীরাই হয়তো এই ম্যাচে জিততে যাচ্ছে। কিন্তু বেনোনির উইলোমুর পার্কে পরের অংশটা লিখা ছিল বাংলাদেশের জন্যই।  বাংলাদেশের লেগ স্পিনার স্বর্ণা আক্তারের জন্য। এই লেগির মায়াবী ঘূর্ণিপাকে পড়ে খেই হারিয়েছে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ১৩৬ রানেই আটকে থাকতে হলো তাদের। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৩ রানের জয় পেলো । ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে একাই ৫ উইকেট নিলেন স্বর্ণা আক্তার। দক্ষিণ আফ্রিকা নারী দলের বিপক্ষে তাদের মাটিতে যে কোনো সংস্করণে এটাই বাংলাদেশের প্রথম জয়। তবে, টি-টোয়েন্টিতে ১১ বছর আগে একবার প্রোটিয়াদের হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। সেবার সেই জয়ের স্বাদ নিয়েছিলো মিরপুরে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথম দেখাতেই জয় পেয়েছিলো সেই ২০১২ সালে। এরপর গত ১১ বছরে ১০ বার মুখোমুখি হয়ে একবারও জেতেনি বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা। এবার ১২তম ম্যাচে এসে জয়ের দেখা পেলেন। এবার জিতলো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেই। প্রথম ব্যাট হাতে মুর্শিদা খাতুন এরপর বল হাতে স্বর্ণা আক্তার বিধ্বংসী বোলিং করে অসাধারণ জয়টি উপহার দিলেন। এ বছরই অভিষেক ঘটেছিলো স্বর্ণা আক্তারের। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথমে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন মুর্শিদা এবং অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। মুর্শিদা দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে সংগ্রহ করেন ৬২ রান। ঝোড়ো ব্যাটিং করে অধিনায়ক জ্যোতি সংগ্রহ করেন ২১ বলে ৩৪ রান। এ দু’জনের ব্যাটে ভর করে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেট হারিয়ে ১৪৯। ১৫০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই প্রোটিয়া ওপেনার আনিকা বোস এবং টাজমিন ব্রিটসের উদ্বোধনী জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলে ফেলে ৬৯ রান। অধিনায়ক টাজমিস ব্রিটস ২৬ বলে ৩০ রান করে আউট হন রাবেয়া খাতুনের বলে। এরপর অ্যানেরি ডার্কসেন ৫ বলে ১ রান করে আউট হয়ে যান ফাহিমা খাতুনের বলে বোল্ড হয়ে।

Shorna

আলোকিত প্রতিদিন/০৪ ডিসেম্বর ২৩/মওম

আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব, রবিশস্য উৎপাদনে শঙ্কা

আলোকিত ডেস্ক:

আবহাওয়ার বিরূপতায় আসন্ন শীতকালে স্বাভাবিকের চেয়ে কম শীত ও বাড়তি বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে বলে আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন। ফলে শীতকালে আবহাওয়ার অস্বাভাবিক আচরণ আসন্ন রবি মৌসুমে বিভিন্ন ফসলে রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাব বাড়ার পাশাপাশি সার্বিক উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দেশে ফসলের সবচেয়ে বড় মৌসুম রবি। এ মৌসুমে বোরো ধান, গম, ভুট্টা, আলু, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, শীতকালীন সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের ডাল ও তেলবীজ উৎপাদন হয়। শীতকালে কম বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা এসব ফসল উৎপাদনে বড় ভূমিকা রাখে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও এল নিনোর প্রভাবজনিত কারণে আসন্ন রবি মৌসুমে বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে ফসলের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উৎপাদন না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়াবিদ এবং কৃষি বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশে সাধারণত ডিসেম্বরে গড় বৃষ্টিপাত হয় ৯ দশমিক ৬ মিলিমিটার। আর জানুয়ারিতে ৯ ও ফেব্রুয়ারিতে ২৫ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়া স্বাভাবিকভাবে সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ডিসেম্বরে ২৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, জানুয়ারিতে ২৫ দশমিক ২ ও ফেব্রুয়ারিতে ২৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠে। আর স্বাভাবিকভাবে সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ডিসেম্বরে ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, জানুয়ারিতে ১২ দশমিক ৫ ও ফেব্রুয়ারিতে ১৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামে। তবে এবার এর ব্যতিক্রম দেখা যেতে পারে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এল নিনোর প্রভাবে ২০২৩ সালজুড়ে আবহাওয়া অস্বাভাবিক আচরণ করেছে। আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত এমন অস্বাভাবিক আচরণ অব্যাহত থাকতে পারে। এ বছর শীতের মৌসুমে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে। এছাড়া ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে গড় বৃষ্টিপাত হতে পারে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। সূত্র জানায়, এ বছর শীতের মৌসুমে গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে। এছাড়া বৃষ্টিপাত থাকবে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। আবহাওয়ার ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেয়া যায়। দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে বিচ্যুতির মাত্রা সম্পর্কে বলা যায় না। কিন্তু স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বা কম হবে কিনা তা প্রক্ষেপণ করা সম্ভব। হয়তো শীত কয়েক দিন কম বা বেশি থাকতে পারে, কিন্তু গড় তাপমাত্রা বা বৃষ্টিপাত থাকবে অস্বাভাবিক। জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে বৃষ্টিপাত বেশি বা টানা বর্ষণ হলে ধান ও গমে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণের শঙ্কা থাকে। আর এ সময়ে বৃষ্টিপাত হলে নেতিবাচক প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে আলু উৎপাদনে। কারণ ওই সময়ের মধ্যে আলুর পরিপক্ব অবস্থায় চলে আসার কথা। এছাড়া পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ উৎপাদনেও বড় ধরনের আশঙ্কার কারণ হয়ে উঠতে পারে বৃষ্টিপাত। মূলত শীতকালে ‌অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে সব ফসলই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যদি পানি জমে থাকে। আবার আলুর ক্ষেত্রে বৃষ্টি হলে রোগবালাই দেখা দিতে পারে। এছাড়া বৃষ্টিপাতের পর আলুর সংরক্ষণ সময় কমে যেতে পারে, যার ফলে উৎপাদন-পরবর্তী ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলে শাকসবজি ও পেঁয়াজের ক্ষতি হতে পারে। ধান ও গমের শীষ বের হওয়ার সময় বৃষ্টিপাত হলে ব্লাস্টের আক্রমণ দেখা দিতে পারে। বৃষ্টি হলে মরিচের গোড়া পচন রোগ দেখা দেয়। এ কারণে বৃষ্টি হলেও মরিচের দাম বাড়তে দেখা যায়। কিছুদিন পরপর হালকা বৃষ্টি হলে ফসলের জন্য ভালো। কিন্তু এদেশে বর্ষণের যে প্রকৃতি তাতে টানা বৃষ্টি চলতে থাকে। এটি ফসলের জন্য ক্ষতিকর। তাছাড়া রাতে ঠাণ্ডা আর দিনে গরম এমন আবহাওয়া ধানের ক্ষেত্রে ক্ষতিকর। এমনিতেই ফেব্রুয়ারির দিকে যখন তাপমাত্রা বাড়তে থাকে, তখন বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণ বেড়ে যায়। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রির বেশি হলে ব্লাস্ট প্রকট হতে পারে। যেহেতু বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা অস্বাভাবিক আচরণ করার শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তাই সার্বিকভাবে কৃষককে এখনই দিকনির্দেশনা দিতে হবে। পরিকল্পিতভাবে ফসল উৎপাদন করা গেলে ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। সূত্র আরো জানায় চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) রবি মৌসুমে ৫০ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেয়া হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ কোটি ২২ লাখ টন। এছাড়া ৩ লাখ ২৩ হেক্টর জমিতে গম, ৪ লাখ ৬২ হাজারে আলু, ৬ লাখ ২৯ হাজারে শাকসবজি, ৬ লাখ ২২ হাজারে ডালশস্য, ১৪ লাখ ২ হাজারে তেলবীজ, ২ লাখ ৬০ হাজারে পেঁয়াজ, ৭৭ হাজারে রসুন ও ১ লাখ ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেয়া হয়েছে। ডিসেম্বরে একটি ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া যেভাবে বিরূপ আচরণ করছে তাতে কৃষি খাতের ওপর প্রভাব পড়বে। দেশে আবহাওয়ার আগাম সতর্কতার ক্ষেত্রে সক্ষমতা আরো বাড়ানো প্রয়োজন। যেন অঞ্চলভিত্তিক আলাদা পূর্ভাবাস দেয়া সম্ভব হয়। এছাড়া বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে যেসব ফসলের ক্ষতি হচ্ছে সেসব কৃষককে সহায়তা দিতে হবে। সেটা ভর্তুকির মাধ্যমে হোক কিংবা বিমার মাধ্যমে। বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষকদের সহায়তা দিতে হবে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলিতে প্রায় চার লাখ হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে আমন ধান, বোরোর বীজতলা ও শীতকালীন শাকসবজির ক্ষতি হয় সবচেয়ে বেশি। এর ক্ষত না শুকাতেই ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ‘মিগজাউম’ নামে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের বরিশাল ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। এটি হবে এ বছর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া চতুর্থ ঘূর্ণিঝড়। আর শীত বিলম্বিত হওয়ার পেছনে বারবার ঘূর্ণিঝড় হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। এখন মৌসুমি বায়ু চলে গেছে। শীত আসবে হিমালয় থেকে আসা উত্তর-পূর্ব দিকের বাতাস থেকে। সে বাতাস আসতে পারছে না। কেননা এরই মধ্যে মিধিলি হয়েছে, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আরেকটা নিম্নচাপ এদিকে আসবে। ফলে উত্তর-পূর্ব দিকের হিমেল বাতাস বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কেননা দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের বায়ু গরম বাতাস। এ কারণেই শীত আসতে দেরি হচ্ছে। অন্যদিকে সার্বিক বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ‌জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সারা বিশ্বই ভুগছে। তবে ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে এর প্রভাব একটু বেশি। ডিসেম্বর ও জানুয়ারির শুরুর দিকে বৃষ্টিপাত হলে ফসলের ক্ষতি হতে পারে। আবার জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারিতে বৃষ্টিপাত হলে তা ফসলের জন্য আশীর্বাদ। তবে এক্ষেত্রে পানি জমে যাওয়ার মতো বৃষ্টি হলে সমস্যা দেখা দেবে। আবার তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে ফসলে পোকামাকড়ের আক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। তবে আমাদের বিভিন্ন উদ্যোগ আছে কীভাবে জলবায়ু সহনশীল ফসলের জাত উৎপাদন করা যায় এবং এর সম্প্রসারণে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৪ ডিসেম্বর ২৩/ এসবি

কোথাও টমটমের ভাড়া*বাড়েনি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ 

জেলা ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃক টমটমের ভাড়া রাতারাতি দ্বিগুনের বেশি বাড়ানো হয়েছে মর্মে একটি সংবাদে জেলাব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে টমটমযোগে চড়ে দেখা গেছে টমটমের ভাড়া কোথাও বাড়েনি। শুধুমাত্র কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে আসা টমটমের ভাড়া বেড়েছে । গতকাল লিংক রোড থেকে শহরের পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত আসা যাত্রীরা পূর্বের ভাড়াতেই যাতায়াত করেন। সমিতি পাড়া থেকে আসা টমটম পূর্বের মত জনপ্রতি ১৫ টাকায় পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত এসেছে। এব্যাপারে টমটম গেরেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইরফান জানান, কোথাও টমটমের ভাড়া বাড়েনি। পূর্বের ভাড়াতেই টমটম চলছে। ড্রাইভাররা বাড়তি কোন ভাড়া চায়নি। যাত্রীদেরও অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়নি। চলমান বির্তকের মধ্যে জেলা ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন চৌধুরী পিপিএম তার ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসটি হুবূহু তুলে ধরা হলো : মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন চৌধুরী পিপিএম এর ফেসবুক স্ট্যাটাসঃ ১ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজার থেকে ঢাকা বানিজ্যিক ভাবে বহুল প্রতীক্ষিত ট্রেন যোগাযোগ শুরু হয়েছে। ১হাজার বিশ জন যাত্রী নিয়ে “কক্সবাজার এক্সপ্রেস” আজ ভোর আনিমানিক ০৭:৪৫ এ কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে থামে। সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ট্রেনের প্রথম যাত্রীদের অভ্যর্থনা জানান। যেহেতু ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এর দায়িত্ব জেলা পুলিশের উপর বর্তায়, তাই ট্রাফিক বিভাগ, জেলা পুলিশ কক্সবাজার ট্রেন যাত্রীদের বিশেষ করে পর্যটকদের রেলওয়ে স্টেশন থেকে কক্সবাজার শহর কিংবা হোটেল-মোটেল জোন পর্যন্ত যাতায়াতকে নিরাপদ ও হয়রানিমুক্ত করার তাগিদ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারই অংশ হিসেবে পর্যটক হয়রানি রোধে  ইজিবাইক(টমটম) চালকদের ভাড়া নির্ধারণ করার উদ্যোগ করা হয়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায় পার্কিং এরিয়া সম্পূর্ণ তৈরী হয় নি, তাই স্টেশনে গাড়ি প্রবেশে নির্মাণকারী সংস্থা অপারগতা প্রকাশ করে। যাত্রী বা পর্যটকদের সম্ভাব্য দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে ট্রাফিক পুলিশ ১০০টমটম প্রবেশের অনুরোধ জানায়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও নির্মাণকারী সংস্থাও তাতে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। সেই অনুযায়ী কক্সবাজার শহরে যারা নিয়মিত টমটম চালক তাদেরকে যাচাই বাছাই করে ১৩০জন চালককে তালিকাভুক্ত করে তাদের গাড়িতে আলাদা স্টিকার দেয়া হয়(ট্রাফিক বিভাগের খরচে) এবং তাদেরকে প্রয়োজনীয় পর্যটন-বান্ধব নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। ভাড়া নির্ধারণে শ্রমিক-মালিক সংগঠনগুলোর সাথে আলোচনা করা হয়। এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারের মতামত নেয়া হয়েছে। যে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে যাত্রীর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে আপাতত বেশি মনে হতে পারে। আবার চালকের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে কমও মনে হতে পারে। কারণ চালকদের দাবি ভাড়া আরও  বেশি হওয়া উচিত। ভাড়ার  কয়েকটি যৌক্তিকতা তুলে ধরিঃ*রেলওয়ে স্টেশন থেকে শহরের যেকোন হোটেল রিজার্ভ ২০০টাকা। জনপ্রতি ৫০টাকা। এখানে পার্কিং চার্জ অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত ট্রেন থামবে ভোর ০৬ঃ৪০ ঘটিকায়। যারা ট্রেন যাত্রীর ভাড়া নিবেন তারা ভোরে ঘুম থেকে উঠে চার্জিং স্টেশন থেকে খালি গাড়ি নিয়ে রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে কমপক্ষে ২০-৩০মিনিট অপেক্ষা করে একটি ভাড়া নিয়ে হোটেল/শহরে আসবেন। ভাড়া ২০০টা। ট্রেন দেরী হলে অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হবে। আজকে চালকরা ১ঘন্টার বেশি অপেক্ষা করছে। আপনি কি জানেন একটি টমটম চালকের গাড়ির প্রতি দৈনিক খরচ কত? গাড়ি ভাড়া+পৌরসভার নিবন্ধন প্লেটের ভাড়া+চার্জিং খরচ মিলে প্রায় ৯০০টাকা। সকালে একজন চালক এই ৯০০টাকার বোঝা মাথায় নিয়ে রাস্তায় নামে। অবরোধের কারণে পর্যটকদের সংখ্যা কম। তাই তারা যেদিকে একটি ভাড়া পাবার সম্ভাবনা সেদিকে হন্য হয়ে ছুটে যায়। বাজারঘাটা এলাকায় হরতাল-অবরোধের মধ্যে যানজটের মূল কারণ এটি। *কক্সবাজার পৌরসভা এলাকা সর্বোচ্চ ১হাজার টমটম ধারণের সক্ষমতা রাখে। এখানে পৌরসভার নিবন্ধিত টমটমের সংখ্যা ৩ হাজার। পৃথিবীর সব শহরে মানুষ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে। আর কক্সবাজার শহরে গাড়ি মানুষের জন্য অপেক্ষা করে। শুধু সায়মন হোটেলের সামনে ৩০টা, ওশান প্যারাডাইসের সামনে ১৫টা, লং বীচ, সী গাল প্রায় সব হোটেলের সামনে টমটম চালকেরা অপেক্ষা করে একটি যাত্রীর প্রতীক্ষায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে সারাদিন গাড়ি চালিয়ে টমটম চালকরা গাড়ির খরচ মিটাতে পারছে না। বড়জোর ২০০-৩০০টাকা পকেটে নিয়ে বাড়ি যেতে পারছে না। অনেক চালকরা ভাড়া মিটাতে পারছে না বলেই লাইসেন্স মালিকরা লাইসেন্স নিয়ে নিচ্ছে। এমন অভিযোগ প্রতিনিয়ত শুনতে হচ্ছে। এই বার একটি বাস্তব উদাহরণ দিব: ডলফিন মোড় থেকে হোটেল-মোটেল জোন পর্যন্ত পৌরসভার কর্তৃক নির্ধারিত রিজার্ভ ভাড়া ৫০টাকা। সকালে বাস থেকে যে সকল পর্যটক ডলফিন মোড়ে নামেন, তাদের কাছ থেকে টমটম চালকরা ভাড়া নেয় ১৫০টাকা। এটি সিন্ডিকেট ভাড়া। এই ভাড়া নির্ধারণ ট্রাফিক পুলিশ করে নি। ভাড়া বাস্তবায়নের দায়িত্বও ট্রাফিক পুলিশের নয়। জ্বি। আমরা মাঝে মাঝে দায়িত্বের বাহিরে গিয়েও দায়িত্বশীলতা নিয়ে কাজ করি। তাই আমরা কক্সবাজার শহরে পর্যটন সংশ্লিষ্ট যানবাহন গুলোর স্মার্ট ডাটাবেজ করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তাই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রবর্তিত নতুন জাতীয় পুরস্কার “স্মার্ট বাংলাদেশ পুরস্কার-২০২৩” অর্জনের সৌভাগ্যও আমাদের হয়েছিল। এই কক্সবাজারে কাজ করে। পরিশেষে বলব, আপনাদের সমালোচনা আমাদেরকে পরিশীলিত করবে, পরিশুদ্ধ করবে, পরিমার্জিত করবে। তাই আমরা আমাদের কার্যক্রম নিয়ে যেকোন আলোচনা সমালোচনাকে ইতিবাচক ভাবে দেখি। আমি প্রজাতন্ত্রের নগণ্য একজন কর্মচারী। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের মোটেও কেউ নই। বহুল প্রতীক্ষিত রেল যোগাযোগের শুরুটা যেন নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্যময় ও হয়রানিমুক্ত হয় তাই একটি সিদ্ধান্ত দেয়া প্রয়োজন হয়েছিল বিধায় আমি দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সিদ্ধান্ত না দিলে যে হ-য-ব-র-ল হত এবং পর্যটক হয়রানি হত তা কারো জন্য শুভকর হতো না। তাই এই বিষয়ে জেলার নীতিনির্ধারণী মহল যে সিদ্ধান্ত নিবে তা আমরা আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের সাথে বাস্তবায়ন করব। ইনশাআল্লাহ ।

মোঃ জসিম উদ্দিন চৌধুরী, পিপিএম
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক)
কক্সবাজার জেলা

আলোকিত প্রতিদিন/এপি