জনগণ দ্রুত সময়ে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়:আমিনুল হক
অতিরিক্ত বাসভাড়া আদায়ের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ঝালকাঠিতে
নবীনগরে ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
চীনের পাল্টা শুল্ক আরোপে খুশি নন ট্রাম্প
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে চীনের পাল্টা শুল্ক আরোপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বেইজিংকে সতর্ক করে ৪ এপ্রিল শুক্রবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লিখেছেন, চীন ভুল করছে। তারা আতঙ্কে এমন কাজ করছে, যার পরিণাম ভোগার মতো অবস্থায় তারা নেই। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খভর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ঘোষণার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে আরও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে চীন। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা নতুন করে ১৬টি মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য চীনের বাজার ও প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকারে বিধিনিষেধ আরও বাড়বে। এ ছাড়া ১১টি মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে ‘অবিশ্বস্ত সত্তা’ তালিকায় যুক্ত করেছে। এর আওতায় চীন এসব বিদেশি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে।
চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় মার্কিন পণ্যে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে জানায়, ১০ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৩৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাঁচামাল রপ্তানিও নিয়ন্ত্রণ করবে তারা।
বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত দুইটায় অনেক দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে তিনি চীনের ওপর নতুন করে ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের কথা জানান, যা আগে আরোপিত শুল্কসহ ৫৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই বাড়তি শুল্ক আরোপের কারণে চীন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি হয়ে উঠেছে।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র ও দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি চীনের পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপে ট্রাম্পের শুরু করা বাণিজ্যযুদ্ধ বিপজ্জনক মোড় নিচ্ছে। বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে শুরু হয়েছে বড় দরপতন। অর্থনীতিতেও দেখা দিয়েছে মন্দার শঙ্কা।
আলোকিত প্রতিদিন/৫ এপ্রিল ২০২৫/মওম
ড.ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ‘গুরুত্বপূর্ণ’: মির্জা আব্বাস
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে দেখছে বিএনপি। ৪ এপ্রিল শুক্রবার বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এরকম মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘এই বৈঠকটি নিশ্চয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটার (বৈঠক) প্রয়োজন আাছে এবং প্রয়োজন ছিল। এই বৈঠকের জন্যে আমাদের সরকার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে চেষ্টা করছিলেন… এই সময়ে একটা বৈঠক হওয়ার দরকার ছিল… তারা করেছেন। তবে আমি জানি না বৈঠকের অভ্যন্তরে কী আলোচনা হয়েছে… বিশদ না জানলে আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।’
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা, সীমান্ত হত্যা, তিস্তা বাঁধ প্রকল্প প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে বৈঠকের পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেছেন জানিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি না জেনে কিছু বলতে পারবো না। যে সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে আপনার মুখ থেকে শুনলাম, নেহাতই গুরুত্বপূর্ণ এগুলো।’
‘শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ এবং এই বিচার সময়ের দাবি, জনগনের দাবি, আমাদেরদাবি। যদি শুধু শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে কথাবার্তা হয়ে থাকে… তাহলে আমি একটু যোগ করতে চাইবো, ওনার (শেখ হাসিনা) যেসব সাঙ্গপাঙ্গ আছে সেখানে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে তাদেরও যেন সঙ্গে ফেরত পাঠানো হয়।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ভারতের উচিত শেখ হাসিনাকে অবিলম্বে পাঠিয়ে দেওয়া যাতে তার বিচারটা হয়। কারণ, একটা ফ্যাসিস্টের বিচার হওয়া খুব জরুরি। এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য না সারা বিশ্বের জন্য এটা খুব জরুরি। কোনও ফ্যাসিস্ট কখনো বিনা বিচারে যেতে পারে না।’
‘বৈঠকে যে সমস্ত বিষয়ের কথা হয়েছে বলে আপনারা বলছেন যদি এটা হয়ে থাকে… যেমন বলেছেন তিস্তা নিয়ে কথা হয়েছে… আমি মনে করি, তিস্তাবাঁধ নিয়ে কথা বলার প্রয়োজন নাই। তিস্তার পানির আমাদের দিতে হবে এবং তিস্তাবাঁধের প্রয়োজনীয় সংস্কার…বাঁধ আমাদের করতে হবে। তিস্তা এবং ফারাক্কার বিষয়ে নিয়ে বাংলাদেশ কোনও ছাড় দেবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন বাংলাদেশের মানুষ একটা শক্ত অবস্থানে আছে। ভারতের সঙ্গে যেসব অসম চুক্তি বিগত সরকারের আমলে হয়েছে এখন সেসব চুক্তি বাতিল করা দরকার। যেসব অসম চুক্তি কার্যকর হয় নাই সেগুলো বাতিল করতে হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধসহ আপনারা যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বললেন, এগুলো যদি হয়ে থাকে আমি মনে করি নিশ্চয়ই ভালো আলোচনা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে প্রফেসর ইউনুস সাহেব আরও কিছু আলোচনা করবেন, ভালো ফলাফল আমাদেরকে দেবেন।’
শাহজাহানপুরে নিজের বাসার চেম্বারে দেশের রাজনীতি, সংস্কার, নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে একদল সাংবাদিকের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মির্জা আব্বাস।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে আমরা অনেক কথা বলেছি। এক গ্রুপ আছে দেশে, আরেক গ্রুপ আছে বিদেশে যারা নাকি নির্বাচনকে বাদ দিয়ে সংস্কারের কথা বলছেন… আবার বলার চেষ্টা করছেন বিএনপি নাকি সংস্কারের কথা শুনলে বিএনপির মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। আমার এখানে তীব্র আপত্তি। বিএনপি কখনও সংস্কারের বিপক্ষে নয়, বিএনপি বরাবর সংস্কারের পক্ষে, একই সঙ্গে বিএনপি নির্বাচনেরও পক্ষে দুইটারই প্রয়োজন আছে। কিন্তু এমন সংস্কারের পক্ষে বিএনপি নয় যেটি দেশের জনগণের স্বার্থের অধিকারের বাইরে চলে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখবেন, যাদের কাছে সংস্কার কমিশনের স্প্রেডশিট গেছে… যারা পড়েছেন তারা দেখবেন, এমন কিছু প্রস্তাব আছে যে প্রস্তাবগুলো বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে মানানসই নয়, সেগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে যায় না। যেগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে যায় না সেগুলো আমরা কেন মানবো?’
‘এই মানা-না মানা নিয়ে আমি গতকাল দেখলাম এক ভদ্রলোক আমি নাম নিচ্ছি না তবে আপনারা (সাংবাদিকরা) বুঝে নিয়েন যিনি দরবেশ সালমান এফ রহমানের টাকা খেয়ে মোটা হয়েছেন… স্বাস্থ্য ভালো করেছেন, চেহারা সুন্দর করেছেন তিনি লম্বা লম্বা কথা বলেন দেশের বাইরে থেকে। খুব দুর্ভাগ্যজনক যে, উনি গতকাল আমার সম্পর্কে খুব বাজে কথা বলেছেন…তো বলতে থাকুক। আামি প্রথমে বলেছি যে, আমার বাগানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শূকর পড়েছে.. আমি শূকরের পর্যায়ে তাদের ধরে নেবো।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এখন তারা কী করতেছে? বিএনপিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ব্র্যাকেট করার চেষ্টা করতেছে। বিএনপিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ব্র্যাকেট করার সুযোগ নাই। বিএনপির জন্মই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এটা বুঝতে হবে। আপনারা দেখবেন, এই গোষ্ঠীরা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে সমর্থনকারী ব্যবসায়ীমহল, তৎকালীন আমলা, বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে প্রধানদের বিরুদ্ধে কিছু বলছে না। আমি ব্যবসায়ীদের নাম বলতে পারি, সেই নাম এ্খন বলতে চাই না। ওরা এখন সকলে মিলে বিএনপির বিরুদ্ধে লেগেছে… উদ্দেশ্য একটাই এ দেশে ফ্যাসিজম ও আধিপত্যবাদকে প্রতিষ্ঠা করা।’
এদিন হত্যা মামলায় জড়িত আওয়ামী লীগের নেতারা কীভাবে জামিন পাচ্ছেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মির্জা আব্বাস।
আলোকিত প্রতিদিন/৫ এপ্রিল ২০২৫/মওম
ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছেন মানুষ, চিরচেনা কর্মচাঞ্চল্যে ফিরবে ঢাকা
আলোকিত প্রতিবেদক:
ঈদের দীর্ঘ ছুটি শেষে রাজধানী ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ। প্রিয়জনদের সঙ্গে আনন্দঘন সময় কাটিয়ে কর্মস্থলে ফেরার এই যাত্রা ছিল অনেকটাই নির্বিঘ্ন। সরকারি কর্মজীবীরা এবারের ঈদে সাপ্তাহিক ছুটি এবং নির্বাহী আদেশে পাওয়া অতিরিক্ত ছুটি মিলিয়ে টানা ৯ দিনের অবকাশ উপভোগ করেছেন। ৫ এপ্রিল শনিবার সেই ছুটির আনুষ্ঠানিক ইতি ঘটেছে। আগামীকাল ৬ এপ্রিল রবিবার থেকে রাজধানী আবারও ফিরবে তার চিরচেনা কর্মচাঞ্চল্যে। তার জন্যই কর্মজীবী মানুষদের ঢাকা ফেরা।
আজ সকাল থেকে রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী এবং সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস এসে পৌঁছাচ্ছে একের পর এক। প্রতিটি বাসেই ছিল যাত্রীদের ভিড়, সবার চোখেমুখে ঈদের আনন্দের রেশ। যাত্রীরা বাস থেকে নেমে ব্যাগ-লাগেজ হাতে নিয়ে ছুটছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার খোঁজে। বেসরকারি চাকরিজীবীদের কেউ অফিসের উদ্দেশ্যে, কেউবা বাসায় ফিরছেন আগেভাগে প্রস্তুতি নিতে।
ফেরত আসা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের ঈদযাত্রা ছিল তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক। তবে ফিরতি যাত্রায় ভাড়া বেশি নেওয়ারও অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। গাবতলী বাস টার্মিনালে এক যাত্রী বলেন, ‘যাওয়ার সময় তেমন কোনও ভোগান্তি হয়নি, আর ফেরার সময়ে কোনও সমস্যা হয়নি। ছুটি লম্বা হওয়ায় বাড়ির সবাই যে যেদিন পারছে, আসছে। একসঙ্গে না আসাতে ঢাকায় ফেরার চাপও কম ছিল।’ আরেক যাত্রী বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদের সময় কাটানোটা ছিল খুবই আনন্দের। এখন আবার কাজের টানে ফিরতে হচ্ছে। তবে যাত্রাটা আরামদায়ক ছিল। অন্যদিকে বাস সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের ছুটির শেষ দিন হওয়ায় আজ রাজধানীমুখী যাত্রীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তারা জানান, গত দুই দিন ধরেই যাত্রীরা ফিরতে শুরু করলেও আজ ছিল যাত্রীর মূল চাপ। সকাল থেকে আসা প্রতিটি ট্রিপেই, যাত্রী ছিল ফুল।
আগামীকাল থেকেই শুরু হচ্ছে সরকারি অফিস-আদালতসহ সবধরনের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। ফলে বিকালের পর ঢাকায় ফিরতি মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
আলোকিত প্রতিদিন/৫ এপ্রিল ২০২৫/মওম
দৌলতদিয়া যৌনপল্লী থেকে দেশীয় মদ সহ ১জন আটক
নেত্রকোণায় চাঞ্চল্যকর মাজেদা হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ২ যুবক গ্রেফতার
সাভারের বিরুলিয়া ব্রীজ ফুড কোর্ট মার্কেটে চাঁদা দাবি,গ্রেফতার-১
গভীর রাতে ভারতের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতেও পাস হলো ওয়াকফ বিল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার পর এবার উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতেও পাস হয়ে গেল ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল। রাজ্যসভার সদস্যদের মধ্যে বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ১২৮ জন, আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৯৫ জন সদস্য।
গভীর রাতের এই ভোটাভুটির মধ্যদিয়ে উচ্চকক্ষে পাস হলো বিতর্কিত এই সংশোধনী বিলটি। এখন কেবল ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুর স্বাক্ষরের অপেক্ষা। তিনি সই করলেই ৭০ বছরের পুরোনো আইন বদলে কার্যকর হবে নতুন আইন।
৪ এপ্রিল শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি বলছে, লোকসভায় পাস হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সংসদের উচ্চকক্ষেও ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পাস হয়ে যাওয়ায় বিলটির আইনে পরিণত হওয়া শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা। প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু সই করলেই বদলে যাবে ৭০ বছরের পুরনো আইন।
১৯৫৪ সালের আইনকে সংশোধন করে ১৯৯৫ সালে ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়েছিল ভারত সরকার। কিন্তু ৩০ বছর পরে যে সংশোধনে অনুমোদন দিল ভারতীয় সংসদ, তাতে বোর্ডের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতার সবই বদলে যেতে চলেছে। সব বিরোধী দলেরই দাবি, ওয়াকফ আইনের এই সংশোধন ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতাকে নজিরবিহীনভাবে খর্ব করে দিচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, সমস্ত বিতর্ক এবং সংশোধনী নিয়ে ভোটাভুটি শেষে বৃহস্পতিবার গভীর রাত ২টা ১৯ মিনিটে “ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৫” পাস করানোর প্রস্তাব পেশ করেন সংসদীয় এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। ধ্বনিভোটের ফলাফলে বিরোধী শিবির সন্তুষ্ট হয়নি। তারা বিভাজন (ডিভিশন) চায়। ভোটাভুটি শেষে রাত ২টা ৩৪ মিনিটে ফল ঘোষিত হয়। তাতে দেখা যায় বিলের পক্ষে পড়েছে ১২৮টি ভোট। আর বিপক্ষে পড়েছে ৯৫টি ভোট। ৩৩ ভোটের ব্যবধানে ওয়াকফ বিল রাজ্যসভায় পাস হয়ে যায়। বিতর্ক চলে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে রাজ্যসভায় ওয়াকফ বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সংসদীয় বিষয়ক এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর ভাষণের মাধ্যমেই আলোচনা তথা বিতর্কের সূত্রপাত। রিজিজুর দাবি, ওয়াকফ সম্পত্তির অন্যতম লক্ষ্য হলো সেই সম্পত্তির মাধ্যমে মুসলিম সমাজের গরিব, নারী এবং এতিম শিশুদের উন্নয়ন। নতুন আইনে বিপুল রাজস্ব আদায় হবে বলেও রিজিজু সংসদে দাবি করেন। তবে অধিকাংশ বিরোধী দল এই বিলের বিপক্ষে কথা বলেছে। বলা হয়েছে, এই বিলের মাধ্যমে মেরুকরণের রাজনীতি করছে বিজেপি। শুধু তা-ই নয়, এই বিল যেভাবে পাস করানো হয়েছে সেই কার্যপ্রণালী নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই দেশের একাধিক মুসলিম সংগঠন এই বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে।
বিরোধীদের বক্তব্য, সংসদের বাইরে এই বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। বিরোধী ইন্ডিয়া জোট এককাট্টা হয়ে এই বিলের বিরোধিতা করেছে। তারা সংশোধিত বিলটিকে “অসাংবিধানিক” আখ্যা দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটি বা জেপিসি বিরোধীদের মতামতে কর্ণপাত করেনি।
কংগ্রেস জানিয়েছে, সরকার সংখ্যালঘুদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। এআইএমআইএম-এর আসাদউদ্দিন ওয়াইসি জানান, তিনি প্রতীকী পদক্ষেপে মহাত্মা গান্ধীর অনুসরণে এই আইন ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানালেন। তিনি বলেন, “২০১৩ সালে যখন লালকৃষ্ণ আদভানি, সুষমা স্বরাজের উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে বিলের সংশোধনী পাস হয় তখন কোনও বিতর্ক হয়নি”। তার প্রশ্ন, “তারা কি ভুল ছিলেন?”
অন্যদিকে, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার সংসদ সদস্য অরবিন্দ সাওয়ন্ত ওয়াকফ বোর্ডে অ-মুসলমান সদস্য এবং ওয়াকফ ট্রাইব্যুনালের সিইও পদে আমলা নিযুক্ত করার সমালোচনা করে বলেছেন, “সরকার কি মন্দির কমিটিতে অ-হিন্দুদের থাকার অনুমতি দেবে?”
আলোকিত প্রতিদিন/৪ এপ্রিল ২০২৫/মওম