আজ শনিবার, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ২১ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 2168

ভালো নেই আদিবাসী মুন্ডারা, তিন দিনের ত্রাণ দিয়েই উধাও কর্তারা

:: ইলিয়াস হোসেন, সাতক্ষীরা ::
১৮০০ শতকে ভারতের র‌্যাস্যি প্রদেশ থেকে এসে বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে উপকূলীয় বন জঙ্গল কেটে ভূমিতে রূপান্তরিত করে বসবাস শুরু করে আদিবাসী মুন্ডারা। বর্তমানে বসবাসের জন্য নিজস্ব কোন জমি জায়গা নেই তাদের। কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় তাদেরকে বসবাসের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। শ্যামনগর উপজেলার উপকূলীয় আটটি ইউনিয়নে ৪শ ৬০টি পরিবার তিন হাজারের অধিক জনসংখ্যা নিয়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস। এদের অধিকাংশই সুন্দরবনের কাঁকড়াজেলে ও দিন মজুর। অনেকে ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতো। কিন্তু নভেল করোনাভাইরাসে সতর্কতামূলক হোমকোয়ারেন্টিন তাদেরকে মহাসংকটে ফেলেছে। কারন, এতদিন দিনের কাজেই দিন কেটে যেত তাদের। সারাদিনের আয় দিয়ে কোন মতে চলত তারা।
জানা যায়, মুন্ডাদের মধ্যে যে দুই চারজন শিক্ষিত ও অন্যান্য পেশার সঙ্গে জড়িত, তারা মাস দেড়েকের খাবার মজুদ করে রেখেছিল। তাদেরও এখন বেহাল দশা। সব খাবারই প্রায় শেষের পথে।
মুণ্ডা সম্প্রদায়ের কয়েকজন জানান, সরকারি-বসরকারি বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় ত্রাণ পেয়েছে ২১৫ পরিবার। এটাই বেশি বেশি প্রচার হয়েছে এবং হচ্ছে। কিন্তু সেই ত্রাণে কতদিন চলবে, তা কেউ খবর নেয়নি। ওতে যা ছিল তা একটি পরিবারের জন্য দুই-তিন দিনের খাবার।
শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জে ইউনিয়নের জেলেখালি গ্রামের আদিবাসী মুন্ডা পল্লীর বাসিন্দা রুমা মুন্ডার বয়স প্রায় ৬৫ বছর। তিনি বলেন, আমার জীবনের এত বড় মহামারী দুর্যোগ কখনো দেখিনি। এর আগে ঘূর্ণিঝড় আইলা হয়েছে, বুলবুল হয়েছে। ঘর থেকে বের হতে পেরেছি। কাজ করে খেতে পেরেছি। ঈশ্বর কি দুর্যোগ দিয়েছে ঘরের মধ্যে থেকে বের হতে পারছি না। খুবই কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যে ঘরের খাদ্য পুরিয়ে আসবে। তখন না খেয়ে থাকতে হবে।
বুড়িগোয়ালিনী বসবাসরত আদিবাসী জগদিশ চন্দ্র মুন্ডার বয়স ৩৫ বছর। তিনি জানান, মহামারী করোনা দুর্যোগের কারণে সরকার ঘর থেকে বের হতে পারছি না। কাজ করতে পারছিনা। কী খাব ? ছেলেমেয়েকে কী খাওয়াবো ? সে চিন্তায় মথায় কাজ করে না। একটা ত্রাণের ব্যাগ পেয়েছি। তাতে তিন দিনের খাবার ছিলো। তা ও ফুরিয়ে গেছে। সামনের দিনগুলো কীভাবে পার করবো? ঈশ্বরই তা ভালো রকম জানেন।
দাতিনাখালী গ্রামের কনিকা মুন্ডা বলেন, কাঁকড়ার প্রজেক্টে চাকরি করতাম। প্রতিমাসে ৭ হাজার টাকা বেতন পেতাম। করোনা ভাইরাসের কারণে প্রজেক্ট বন্ধ হয়ে থাকায় ঘরে বসে এক প্রকার না খেয়ে দিন পার করতে হচ্ছে। এভাবে কতদিন চলবে তা কিছুই বুঝতে পারছি না।
আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায় নিয়ে কাজ করে সামস নামক একটি বেসরকারি সংস্থা। সংস্থাটির পরিচালক কৃষ্ণপদ মন্ডল জানান, আমরা আদিবাসী মুন্ডাদের নিয়ে কাজ করি। এখনো পর্যন্ত তাদেরকে সে ধরনের সহযোগিতা করতে পারেনি। ২১ তারিখ পর্যন্ত ২শ ১৫টি পরিবার সরকারি ও বেসরকারিভাবে কিছু ত্রাণ সামগ্রী পেয়েছে। আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের মানুষ গুলো অনেক দরিদ্র।
শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল হক বলেন, প্রতিনিয়ত আদিবাসীদের ত্রাণ দেয়া অব্যাহত রেখেছি। যতদিন করোনা প্রাদুর্ভাব থাকবে ততদিন আদিবাসীদের জন্য ত্রাণ দেওয়া অব্যাহত থাকবে। যদি কোন আদিবাসী ত্রাণ না পেয়ে থাকেন তাহলে আমাকে জানালে আমি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান এর মুঠোফোনে (০১৭……৯৫) বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।

করোনায় কৃষি উৎপাদন-বিপণন অব্যাহত রয়েছে: কৃষিমন্ত্রী

::নিজস্ব প্রতিবেদক ::
করোনার কারণে উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য গুণগত মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন, সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিপণন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে কৃষি উৎপাদনের বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখা এবং ভবিষ্যতে উৎপাদন বাড়াতে গুণগত মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, শাকসবজির বিপণন, সরবরাহ ঠিক রাখা ও কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সার্বক্ষণিক উদ্ভিদ সংগনিরোধ কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে করোনা পরিস্থিতিতে শাকসবজি, বীজ ও সতেজ কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ ও সরবরাহে করণীয় নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অনলাইন সভায় কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, করোনার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব মোকাবিলায় কৃষি মন্ত্রণালয় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
করোনা পরিস্থিতিতে শাকসবজির বাজারজাতকরণ ও কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, শাকসবজি ও পচনশীল কৃষিপণ্যের চলাচল নির্বিঘ্ন করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত ত্রাণসামগ্রীতে আলু, সবজি, পেঁয়াজ ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কৃষিপণ্যের ভ্রাম্যমাণ বাজার পরিচালনা শুরু করেছে।
পাশাপাশি লকডাউন এলাকার উদ্বৃত্ত কৃষিপণ্য ঘাটতি এলাকায় পাঠানোর ক্ষেত্রে ট্রাক চলাচলের জন্য জেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ফলে শাকসবজির বাজারজাতকরণ কিছুটা সহজতর হয়েছে।
তিনি জানান, সভায় পাওয়া সুপারিশ অনুযায়ী বিআরটিসির ট্রাক ব্যবহার, বিদেশে রপ্তানির জন্য কার্গো ভাড়া, দেশের সুপারশপ খোলা রাখার সময়সীমা বাড়ানো এবং সমন্বয়ের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, করোনার কারণে উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য গুণগত মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন, সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিপণন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে বিএডিসি ও অন্য বেসরকারি কোম্পানির উৎপাদিত আউশ, সবজি ও পাটবীজ সরবরাহ করা হয়েছে। যা বর্তমানে মাঠে কৃষক আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এছাড়া রবি মৌসুমে উৎপাদিত আলু বীজ সংগ্রহ করে হিমাগারে সংরক্ষণ করা হয়েছে। যারমধ্যে বিএডিসির আলু বীজ সংগ্রহের পরিমাণ ৩৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। বেসরকারি কোম্পানির প্রায় ৮৫ হাজার মেট্রিক টন। যা গত বছরের তুলনায় ৫ হাজার মেট্রিক টন বেশি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সাধারণ ছুটি চলাকালীন খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সার্বক্ষণিক উদ্ভিদ সংগনিরোধ কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
সভা শেষে কৃষিখাতে প্রণোদনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ইতোমধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকার ৪ শতাংশ সুদে ঋণ প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এর সঙ্গে বর্তমান বাজেটে কৃষকদের স্বার্থে সারসহ সেচকাজে বিদ্যুৎ বিলের রিবেট বাবদ কৃষিখাতে ৯ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সার্বিক কৃষিখাতের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ৯ শতাংশ সুদের স্থলে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে কৃষকদের ঋণ বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ১৪ হাজর ৫০০ কোটি টাকার বিশেষ ঋণ প্রণোদনা দেবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। এর মানে হলো কৃষিখাতে মোট ৪ শতাংশ সুদে প্রণোদনা দাঁড়ালো ১৯ হাজার ৫০০ (১৪ হাজার ৫০০ ও সম্প্রতি প্রাপ্ত ৫ হাজার) কোটি টাকা।
সভায় জানানো হয়, দেশের জেলাগুলোর মধ্যে মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, ঝিনাইদহ, যশোর, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, বগুড়া, পাবনা, রাজশাহী, গাইবান্ধা, রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, ভোলা জেলাসমূহকে সবজির জন্য উদ্বৃত্ত জেলা। এসব জেলা থেকে ট্রাকে করে শাকসবজি অন্য জেলায় পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া চলতি বোরো মৌসুমে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এক লাখ মেট্রিক টন বোরো বীজ ধান ও ১০ হাজার মেট্রিক টন হাইব্রিড ধান বীজ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
সভায় আরও জানানো হয়, গত ২৯ মার্চ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত জরুরি পরিস্থিতিতে রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ৯৩টি উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সনদপত্র এবং আমদানিকৃত টাটকা ফল ও মসলা জাতীয় পণ্যের ১ হাজার ৪০টি, কাঁচা তুলা ও ডাল জাতীয় পণ্যের ৪১৩টি এবং চাটার্ড ভেসেলে আমদানিকৃত পণ্যের ১৪৫টি ছাড়পত্র ইস্যু করা হয়েছে।
এসময়ে বিভিন্ন আমদানি পণ্যের অনুকূলে ৪৬৭টি আমদানি অনুমতিপত্র ইস্যু করা হয়েছে। এছাড়া এ কয়দিনে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, শ্রীলংকা, ব্রুনাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রভৃতি দেশে সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন আলু রপ্তানির ৯৩টি উদ্ভিদ স্বাস্থ্য সনদপত্র ইস্যু করা হয়েছে।
অনলাইন সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. আরিফুর রহমান অপু, অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাশ, অতিরিক্ত সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ) মো. মাহবুবুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, বিএডিসির চেয়ারম্যান মো. সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ এবং হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হান্নান সংযুক্ত ছিলেন।
এছাড়া অনলাইন সভায় ফল-সবজি, সতেজ কৃষিপণ্য রপ্তানিকারক, ফুড প্রসেসর, সুপারশপ ব্যবসায়ী, ব্যবস্থাপক ও বীজ ব্যবসায়ীদের মধ্যে বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবল এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাপা, স্কয়ার ফুড, প্রাণ গ্রুপ, তাইওয়ান ফুড প্রসেসিং, পটেটো এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, রহিমআফরোজ, মীনাবাজার, সুপ্রিম সীড, এসিআই, এমএম ইস্পাহানি, ব্র্যাক, ইউনাইটেড সীড, মল্লিকা সীড, আফতাব বহুমুখী ফার্মস, পারটেক্স অ্যাগ্রো, মেটাল সীড প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সংযুক্ত ছিলেন।

প্রতি জেলায় আইসিইউ, নিয়োগ হবে ৮ হাজার ডাক্তার-নার্স : প্রধানমন্ত্রী

:: নিজস্ব প্রতিবেদক ::
সারা দেশের প্রতিটি জেলায় আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ ও সংকট মোকাবিলার কার্যক্রম সমন্বয়ে সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকালে গণভবন থেকে রাজশাহী বিভাগের জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়কালে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক জেলার ভালো একটা হাসপাতালে আমরা আইসিইউ স্থাপন করবো। পর্যায়ক্রমে সব জেলায় এটি স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আইসিইউ পরিচালনার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।’ করোনা ভাইরাস সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসায় সরকার শিগগিরই ২ হাজার চিকিৎসক এবং ৬ হাজার নার্স নিয়োগ দেবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন ডাক্তার ও নার্সদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে তারা সেবা দেবে।’
ভিডিও কনফারেন্স সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।

‘গণস্বাস্থ্যের কিট পরীক্ষার সুযোগ আপাতত নেই’

:: নিজস্ব প্রতিবেদক ::

ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ও মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মো. হাবিবুর রহমান খান বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এখন পর্যন্ত বিশ্বের কোনো দেশকেই র‌্যাপিড কিট পরীক্ষার অনুমোদন দেয়নি। এক্ষেত্রে গণস্বাস্থ্যের র‌্যাপিড কিট পরীক্ষারও আপাতত কোনো সুযোগ নেই। তবে ভবিষ্যতে র‌্যাপিড কিট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত ও নির্দেশিত হলে গণস্বাস্থ্যের কিট গ্রহণে সরকারের কোনো আপত্তি থাকবে না।
আজ সোমবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেল আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিটস’ সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। এসময় রোববার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ কিটস পরীক্ষার বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ঔষধ প্রশাসনকে যেভাবে দোষারোপ করেছেন, তা মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রকৃতপক্ষে গণস্বাস্থ্য তাদের দাবির ক্ষেত্রে কোনো রকম প্রটোকল মেইনটেইন করেনি। গণস্বাস্থ্য তাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না রেখেই ঢালাওভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দোষারোপ করেছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে হাবিবুর রহমান খান বলেন, করোনা প্রতিরোধে খুব দ্রুতই আরও দুই হাজার চিকিৎসক ও ৬ হাজার নার্স নিয়োগ করা হবে। করোনা মোকাবিলায় সরকারের হাতে এক লাখের বেশি কিটস মজুদ আছে।
গণস্বাস্থ্যের কিটস গ্রহণ না করা ও ঔষধ প্রশাসনের অসহোযোগিতা প্রসঙ্গে ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহাবুবুর রহমান বলেন, ঔষধ প্রশাসন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সরকারিভাবে বারবার পরিদর্শনে গিয়েছে এবং সে জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা সরকারকে একাধিকবার ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতাপত্রও পাঠিয়েছে। যেগুলো তারিখসহ আমাদের কাছে রক্ষিত আছে। কিন্তু তারা যা মুখে বলেছেন, বাস্তবে সে কাজ করেননি। উল্টো সরকারকে জনসম্মুখে হেনস্তা করতে নানারকম বিভ্রান্তি ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, গণস্বাস্থ্যের পক্ষ থেকে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে গণস্বাস্থ্যকে সরকারিভাবে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। কিন্তু গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র সরকারের কোনো প্রটোকল আজ পর্যন্ত মেইনটেইন করেনি।
এ সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম প্রধান উপস্থিত ছিলেন।

ফেইসবুকে প্রচারিত সাংবাদিকদের জন্য চাল বরাদ্দের খবর গুজব

:: নিজস্ব প্রতিবেদক::

সাংবাদিকদের জন্য সরকার এককালীন ৩০ কেজি করে চাল বরাদ্দ করেছে বলে ফেইসবুকে যে ‘খবর’ ছাড়ানো হয়েছে তাকে গুজব হিসেবে চিহ্নিত করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। তথ্য মন্ত্রণালয়ের ‘গুজব প্রতিরোধ সেল’ সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলছে, ‘Mostafizur Rahman Sumon, Shahin Hasnat সহ আরও কয়েকটি ফেইসবুক আইডি থেকে ‘তাজা খবর’ শিরোনামে ওই গুজব রটানো হচ্ছে। তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া তালিকা হতে সীমিত সংখ্যক সাংবাদিক ৩০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা বলছে। এটি একটি জঘন্য গুজব। সরকার এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। এ ধরনের গুজব রটানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রয়োজনে এ ধরনের গুজবের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে হুঁশিয়ার করা হয়েছে।’

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সহায়তা চেয়ে গত ২১ এপ্রিল তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের কাছে সাংবাদিকদের তালিকা হস্তান্তর করে বিএফইউজে ও ডিইউজে। অন্যদিকে কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংবাদকর্মীদের প্রণোদনা দিতে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল; যদিও দুই দিনের মাথায় তা প্রত্যাহার করা হয়।

নজিমুদ্দিন সারা বিশ্বের জন্য মহৎ দৃষ্টান্ত বললেন প্রধানমন্ত্রী, নেতিবাচক মনোভাবের বিত্তবানদের সমালোচনা

::নিজস্ব প্রতিবেদক::

করোনাভাইরাস মহামারীতে কর্মহীন মানুষের সহায়তায় ভিক্ষার জমানো ১০ হাজার টাকা দান করে আলোচিত শেরপুরের সেই বৃদ্ধ নজিমুদ্দিনকে ‘বিশ্বের জন্য মহৎ দৃষ্টান্ত’ হিসেবে তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে মহামারী পরিস্থিতি নিয়ে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এই প্রসঙ্গ টানেন। এ সময় তিনি নেতিবাচক মনোভাবের বিত্তবানদের সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘অনেক সময় দেখি অনেক বিত্তশালীরা হা-হুতাশ করেই বেড়ায়। কিন্তু তাদের নাই নাই অভ্যাসটা যায় না। তাদের ওই চাই চাই ভাবটাই সব সময় থেকে যায়।

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের ইয়ার আলীর ছেলে নজিমুদ্দিন (৮০) ভিক্ষা করে সংসার চালান। বসতঘর মেরামত করার জন্য দুই বছর ধরে ভিক্ষা করে তিনি জমিয়েছিলেন ১০ হাজার টাকা। ওই টাকা তিনি মহামারীতে ঘরবন্দি কর্মহীন মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে দান করেন। ভিক্ষুক নজিমুদ্দিনের দানের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে তাকে ভিটেমাটি ও পাকা বাড়ি করে দেওয়ার নির্দেশ আসে। তাকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়।

নাজিমুদ্দিনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, আপনারা দেখেছেন। একজন ফকির, ভিক্ষা করে খায়, একটা সাধারণ মানুষ। এক সময় কৃষিকাজ করতো। এক্সিডেন্ট করে তার পা ভেঙে যায়। তারপরে আর কাজ করতে পারেনি, ভিক্ষা করে এবং এই ভিক্ষা করে করে মাত্র ১০ হাজার টাকা জমা করেছিল। তার থাকার ঘরটা ঠিক করবে বলে। তার মাত্র একটা ছেড়া কাপড় গায়ে। তার খাবারও ঘরে ঠিকমতো নেই। কিন্তু তারপরও সেই মানুষটা সেই জমানো ১০ হাজার টাকা সে তুলে দিয়েছে করোনা ভাইরাসে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের সাহায্যের জন্য। আমি মনে করি, সারাবিশ্বে একটা মহৎ দৃষ্টান্ত তিনি সৃষ্টি করেছেন। এতবড় মানবিক গুণ আমাদের অনেক বিত্তশালীর মাঝেও দেখা যায় না। কিন্তু একজন নিঃস্ব মানুষ যার কাছে এই টাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে ওই টাকা দিয়ে আরো দুইটা জামা কিনতে পারতো,ঘরে আরো খাবার নিতে পারতো বা এই করোনাভাইরাসের জন্য তার যে অসুবিধা তার জন্য অনেক কিছু করতে পারতো, সে চিন্তা করতে পারতো। কোনো চিন্তা সে করেনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, এই অবস্থায় ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করাও যেখানে মুশকিল সেখানে তিনি নিজের চিন্তা না করে শেষ সম্বলটুকু দান করে দিয়েছেন। এই যে একটা মহৎ উদারতা দেখালেন..বাংলাদেশের মানুষের মাঝে কিন্তু এখনো এই মানববিকবোধটা আছে। কিন্তু সেটা আমরা পাই কাদের কাছে? যারা নিঃস্ব তাদের কাছেই।’

উমর আকমল ৩ বছর নিষিদ্ধ

:: ক্রীড়া প্রতিবেদক ::
দুর্নীতি বিরোধী ধারা ভঙ্গের দায়ে পাকিস্তানের কিপার-ব্যাটসম্যান উমর আকমলকে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। আজ সোমবার (২৭ এপ্রিল) এক টুইট বার্তায় পিসিবি জানায়, শুনানি শেষে সংস্থাটির শৃঙ্খলা কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি (অব.) ফজল-ই-মিরান চৌহান এই নিষেধাজ্ঞাদেশ দেন।
বিতর্কে জর্জরিত ক্যারিয়ারে বারবার নিয়ম ভেঙেছেন আকমল। মূলত এ কারণে দারুণ প্রতিভাবান হওয়ার পরও দলে থিতু হতে পারেননি কখনও। তবে এবারের অভিযোগ ছিল বেশ গুরুতর। গত ২০ মার্চ আকমলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বিরোধী দুটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগ আনে পিসিবি। গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকেই সাময়িক নিষেধাজ্ঞায় ছিলেন দেশের হয়ে ১৬ টেস্ট খেলা এই ক্রিকেটার।
বোর্ডের আনা অভিযোগের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল আকমলের। কিন্তু তিনি তা না করার সিদ্ধান্ত নেন। ফলে নিশ্চিত হয়ে যায় যে শাস্তি পেতে যাচ্ছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। এই অপরাধে ৬ মাস থেকে আজীবন পর্যন্ত নিষিদ্ধ হতে পারেন বলে শুরুতে গণমাধ্যমে বলা হয়েছিল। তবে আপিল না করায় শাস্তি কম হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সম্ভবত সেটিই হলো।
আগামী ২৯ মে ৩০ বছর পূর্ণ করবেন আকমল। এই বয়সে লম্বা সময় ক্রিকেটের বাইরে থাকার পর আবারও ফেরাটা তার জন্য অনেক কঠিন হবে, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
১৬ টেস্টের পাশাপাশি ১২১ ওয়ানডে ও ৮৪টি টি-টোয়েন্টি খেলা আকমল দেশের হয়ে সবশেষ মাঠে নেমেছিলেন ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি রান আছে তার।

কিমকে নিয়ে নিশ্চুপ উত্তর কোরিয়া, বাড়ছে জল্পনা

:: প্রতিবেদন, রয়টার্স ::
জনসম্মুখে দু’সপ্তাহ ধরে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের অনুপস্থিতি এবং তার অসুস্থতা নিয়ে যে সব খবর পাওয়া যাচ্ছে সে ব্যাপারে দেশটির গণমাধ্যমগুলো নিশ্চুপ থাকায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র জল্পনা দেখা দিয়েছে।
উত্তর কোরিয়া থেকে সরাসরি কোনো খবর না মেলায় ভাসা ভাসা কিছু খবর এবং স্যোশাল মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর থেকে নানারকম জল্পনা ডালপালা মেলছে। শোনা যাচ্ছে নানা কথা।
পায়ের গোড়ালিতে সামান্য আঘাত পাওয়া থেকে ধীরে ধীরে কিম সুস্থ হয়ে উঠছেন এমন জল্পনা থেকে শুরু করে হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের পর তার ‘গুরুতর অসুস্থ’ হয়ে পড়া, চিকিৎসা করতে আসা কোনো চীনা ডাক্তারের কাছ থেকে কিমের কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়া এমনকী তিনি মানসিকভাবে অবসন্ন হয়ে পড়েছেন, অচেতন হয়ে আছেন, কোমায় চলে গেছেন এবং মারা গেছেন বলেও গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ম্যসেজিং অ্যাপ-এ এও বলা হচ্ছে যে, ফরাসি ডাক্তাররা কিমকে কোমা থেকে বের করে আনতে পারেননি। এ অবস্থায় দেশটির ক্ষমতা দখল করেছেন কিম জং উনের চাচা কিম পিয়ং ইল।
দক্ষিণ কোরিয়া সরকার অবশ্য এইসব অনিশ্চিত খবরের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যমগুলো বেশির ভাগ খবরকেই গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তবে খবরগুলো একেবারে ভুয়া বলে নাকচও করা যাচ্ছে না। কারণ, উত্তর কোরিয়া এত কঠোরভাবে গোপনীয়তা বজায় রাখে যে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও কিমের ঘনিষ্ঠমহলের ভেতরের খবর জানতে পারে না।
গত ১১ এপ্রিলে একটি পলিটব্যুরো বৈঠকে কিম জং-উনকে সর্বশেষ সভাপতিত্ব করতে দেখা গিয়েছিল। এরপর থেকে উত্তর কোরিয়ার কোনও রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমেই তার ছবি দেখা যায়নি বা ভাষণ প্রকাশিত হয়নি। তার শরীর-স্বাস্থ্য নিয়েও পিয়ংইয়ংয়ের কোনো সংবাদমাধ্যম মুখ খোলেনি। গত ১৪ এপ্রিল কিমকে তার দাদা কিম ইল-সাং এর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানেও দেখা যায়নি। তখন থেকেই কিমের স্বাস্থ্য নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে ‘কিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হতে পারে’ বলে গুঞ্জন উঠে। দক্ষিণ কোরিয়া ভিত্তিক ওয়েবসাইট এনকের খবরেও ১২ এপ্রিলে কিম জং-উনের হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়েছে বলা হয়। এ অস্ত্রোপচারের পর কিমের গুরুতর অসুস্থতার খবরে শোরগোল পড়ে যায়।
কিম সত্যিই গুরুতর অসুস্থ? নাকি রাজধানী পিয়ংইয়ং থেকে কিছুটা দূরের কোনও শহরে? এমন জল্পনা নতুন মাত্রা পায় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিমের বিশেষ ট্রেনকে রিসর্ট শহর উনসানের একটি স্টেশনে ২১ এবং ২৩ এপ্রিলে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে। স্যাটেলাইটের ছবিতে তা ধরা পড়েছে বলে দাবি করে ওয়াশিংটন-ভিত্তিক উত্তর কোরিয়া পর্যবেক্ষণ সংগঠন ‘থার্টিএইট নর্থ’।
কিম ও তার পরিবারের সদস্যরা যাওয়া-আসা করেন এই বিশেষ ট্রেনে। কিন্তু সেই ট্রেনে কিম ছিলেন কি না বা তিনি উনসানেই আছেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। এরপর শনিবারই সামনে আসে কিম জংয়ের ‘মৃত্যুসংবাদ’। যুক্তরাষ্ট্রের টিএমজেড ট্যাবলয়েড নিউজ ওয়েবসাইট জানায়, “উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের পর মারা গেছেন।” হংকংয়ের একটি টিভি চ্যানেলও কিমের মৃত্যুর খবর প্রচার করেছে বলে শোনা গেছে।
কিমের মৃত্যুর খবর নিয়ে কৌতূহল দেখা দিয়েছে নেট দুনিয়ায়। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দারা এমন খবরের সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা বলছে, উপগ্রহের ছবিতে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে যে, কিমের বিশেষ ট্রেন গত কয়েকদিনে রিসর্ট শহরে গেছে।
‘লিডারশিপ স্টেশন’ এ ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কিম তাতে আছেন বা তা থেকে ওঠা-নামা করেছেন সেটি নিশ্চিত না হওয়া গেলেও এমনকী তার শরীর-স্বাস্থ্যের কথা বলা না গেলেও কিম উনসানে থাকতে পারেন বলে যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, এ থেকে সে ধারণা অমূলক বলে উড়িয়েও দেওয়া যায় না।

করোনাভাইরাসে প্রথম ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু

:: নিজস্ব প্রতিবেদক ::
নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে এই প্রথম একজন ব্যাংক কর্মকর্তা মারা গেছেন। এই কর্মকর্তা বেসরকারি সিটি ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগে এফভিপি ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৪০ বছর। তিনি স্ত্রী ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। ওই কর্মকর্তার মরদেহ স্বজনদের কাছে দেওয়া হয়নি। ওই কর্মকর্তার মৃত্যুতে সিটি ব্যাংকের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ এবং পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানানো হয়েছে।
দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে লকডাউনের মধ্যেও ব্যাংক খোলা রয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন ব্যাংকার আক্রান্তও হয়েছেন। তবে মৃত্যুর ঘটনা এটাই প্রথম।
আজ রোববার (২৬ এপ্রিল) সকালে ঢাকার মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে বলে সিটি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তিনি করোনাভাইরাসের রোগী ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড-১৯ বিষয়ক টিমের ফোকাল পার্সন সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহবুবুর রহমান।
সিটি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন ওই কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর না করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি অনুযায়ী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাজধানীর তালতলা কবরস্থানে দাফন করে।
সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, কয়েকদিন ধরে ওই কর্মকর্তা সর্দি-কাশি এবং জ্বরে ভুগছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শে দুই বার তিনি নমুনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন। তবে দুবারই ‘নেগেটিভ’ আসে। চিকিৎসকের পরামর্শে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।
অসুস্থতা বাড়লে শনিবার সকালে আবারও মুগদা হাসপাতালে যান ওই ব্যাংক কর্মকর্তা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি করে নেন। নমুনা আবার পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ আসে।
ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘তিনি কোভিড-১৯ রোগী ছিলেন। আজ সকাল ১০টায় তার মৃত্যু ঘটে।’ সিটি ব্যাংকের ওই কর্মকর্তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরই মোবাইল ফোনে তার পরিবারকে কল করে তার সঙ্গে দেখা না করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। মৃত্যুর পর তার পরিবারের সদস্যদের বলা হয়েছে বাড়িতে থাকতে।

গাজীপুরে খুলেছে ৫ শতাধিক পোশাক কারখানা, হয়েছে বিক্ষোভ, সবখানে কি মানা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি!

:: প্রতিনিধি, গাজীপুর::
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে জেলাজুড়ে দেওয়া লকডাউনের মধ্যেই গাজীপুরে চালু হয়েছে পাঁচ শতাধিক পোশাক কারখানা। পোশাক কারখানার মালিকদের পক্ষ থেকে আজ রোববার (২৬ এপ্রিল) কারখানার আশেপাশে অবস্থান করা শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার প্রকাশ্যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, কাজে যোগ দিতে ছুটে এসেছেন সরকার ঘোষিত ছুটির কারণে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া শ্রমিকরাও। এদিন প্রতিটি কারখানায় সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও হাতধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বেশিরভাগ কারখানা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ভেতরে সামাজিক সুরক্ষা মেনে শ্রমিকদের প্রবেশ করিয়ে কাজ করানো হয়েছে। তবে গণমাধ্যমকর্মীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এদিকে কারখানা শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তারা বলছেন, টেবিলে লোক কমানো হলেও সামাজিক দলগত কাজে সামাজিত দূরত্ব বজায় রাখা অনেকটাই দুঃসাধ্য। অন্যদিকে শ্রমিক কমিয়ে আনার কারণে অনেকেই হয়েছেন চাকুরিচ্যুত বলেও রয়েছে অভিযোগ। এনিয়ে বিক্ষোভ করতেও দেখা গিয়েছে।
সরেজমিন বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে শ্রমিক পৌঁছানোর পরে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে ও প্রত্যেককে মাস্ক পরিয়ে কারখানার প্রবেশ গেটে আনা হচ্ছে। সেখানে অনেক প্রতিষ্ঠান আগেই পাত্রভর্তি জীবানুনাশক পানি রেখে দিয়েছে। শ্রমিকরা সে পানিতে নিজের পা ও জুতা চুবিয়ে পরিষ্কার করে যাচ্ছেন নিরাপত্তা কর্মীর কাছে। তিনি থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে পোশাক কর্মীদের তাপমাত্র মাপার পর তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন। এরপরেই ভেতরে কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান বেসিনে আবার কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান সাপ্লাই পানির লাইনে একাধিক ট্যাপ লাগিয়ে ও সাবার রেখে শ্রমিকদের হাত-মুখ ধোয়ার ব্যবস্থা করেছে। এরপরই তারা কাজের জন্য কারখানার ভেতরে প্রবেশ করছে। তবে কাজের জায়গাটিতে কতটা সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে সে তথ্য পোশাক কারাখানাগুলো গণমাধ্যমকর্মীদের ভেতরে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় দেখা যায়নি। তবে কারখানাগুলো দাবি করেছে সেখানে সামাজিক দূরত্ব মেনে ফঁকা ফাঁকা বসে কাজ করেছে শ্রমিকরা। যেহেতু সব শ্রমিক এখনও আসেনি তাই এটি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে বলেও দাবি অনেক কারখানা মালিকের। অনেক কারখানা প্রয়োজনে একাধিক শিফটের ব্যবস্থা করতে পারে এমন ইঙ্গিতও দিয়েছে।
গতকাল থেকেই গাজীপুরের কারখানাগুলোতে কাজ করা শ্রমিকদের বেশিরভাগ উপস্থিত হন বিভিন্ন উপায়ে। যদিও বিজিএমই-র নির্দেশনা ছিল, শুধু আশেপাশের শ্রমিকরাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানায় কাজে যোগ দেবে। দূরে গ্রামে থাকা শ্রমিকদের এই মুহূর্তে না এলেও চলবে। এজন্য তাদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না। তবে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, দূরে থাকলেও গত দুদিন ধরে তাদের ফোন করে আসতে বলা হয়েছে। এজন্য তারা চলে এসেছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা অতিরিক্ত ভাড়ায় রিকশা, ভ্যান, মাছের ট্রাক ও সবজির ট্রাকে করেও বিভিন্ন জেলা থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার পোশাক কারখানায় তারা কাজে যোগদান করেন। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শ্রমিকরা বলেন, না এসে উপায়ও নেই। হয় ছাঁটাইয়ের তালিকায় পড়তে হবে, না হলে বেতন-বোনাস আটকিয়ে রাখবে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তাই সব দিক বিবেচনা করেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজে যোগ দিতে হচ্ছে আমাদের। আবার দুই একজন কারখানায় এসে ছাঁটাই হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
গাজীপুর সদর উপজেলার তেলিপাড়া এলাকার এডিশন ফুট ওয়্যার লিমিটেড কারখানার শ্রমিক কামাল হোসেন বলেন, রবিবার থেকে কারখানা খোলা। সকালে কারখানায় এসে জানতে পারি আমার চাকরি নাই। আমি এখানে যোগদান করেছি দুই মাস হয়েছে। তাই চাকরি স্থায়ী না হওয়ায় কর্তৃপক্ষ আমাকে কারখানায় ঢুকতে দেয়নি। তাহলে কারখানা কর্তৃপক্ষ কেন আমাকে ফোন দিয়ে এত কষ্ট করে বাড়ি থেকে আসতে বললো? গার্মেন্টস শ্রমিক বলে আমাদের জীবনের কি কোনও মূল্য নেই?
গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার হান্নান গ্রুপের লিংকিং অপারেটর আলম মিয়া বলেন, গত শুক্রবার কারখানার সুপারভাইজারকে ফোন দিলে তিনি কারখানায় আসতে বলেন। পেটের তাগিদে করোনা ঝুঁকি নিয়েই আমরা কাজে যোগ দিয়েছি।
গাজীপুরের পিমকি অ্যাপারেলস কারখানার কাটিং অ্যাসিস্ট্যান্ট মোমিন মিয়া বলেন, একদিকে বাড়ি থেকে আসতে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। অপরদিকে, রবিবার সকালে কারখানায় কাজে যোগ না দিলে চাকরি যাওয়ার হুমকি ছিল। এ কারণে অসুবিধা হলেও আমাদের আসতে হয়েছে।
কারখানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই পোশাক কর্মী রুবিনা আক্তার ও তানজিলা আক্তার বলেন, আমাদের ফোন করে বলা হয়েছে রবিবার সকাল ৭টার মধ্যে গার্মেন্টস খুলবে। সকাল ৭টার আগেই কাজে যোগদান করতে হবে। আমরা যদি সঠিক সময়ে না যাই চাকরি চলে যাবে। তাই শত কষ্ট হলেও কাজে যোগ দিয়েছি।
কারখানায় করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনা মানা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, তাপমাত্রা মাপা ও হাতধোয়ার নির্দেশ মানা হয়েছে। তবে ভেতরের পরিবেশ কেমন সেটা কেবল আমরাই বলতে পারবো। মানছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বেও জীবন হাতে নিয়ে যথা সময়ে কারখানায় উপস্থিত হয়েছি। আমরা শ্রমিকরা কারখানা মালিকের নির্দেশ মেনেছি, এবার আমরা চাই কারখানা মালিকরা আমাদের বাঁচাতে সরকারের সব নির্দেশ মানুক। আমাদের পুরো নিরাপত্তা দিয়ে কাজ করতে বললে তো আামাদের আপত্তি নাই। আর যদি তারা নির্দেশ না মানেন, আর কোনও শ্রমিক যদি আক্রান্ত হই তাহলে পুরো কারখানাই আবার লকডাউন হয়ে যাবে। মালিকরাও নিশ্চয় এই রিস্ক বুঝবেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিশনাল এসপি) সুশান্ত সরকার জানান, আজ রোববার থেকে গাজীপুরে প্রায় সাড়ে চারশ’ পোশাক কারখানা স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে স্বল্প সংখ্যক শ্রমিক নিয়ে কাজ শুরু করেছে। আমরা এসব কারখানায় মনিটরিং করছি যেন কারখানাগুলো শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকদের কাজ করায়।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, জেলার বেশিরভাগ কারখানা’ই কমপ্লায়েন্স নিয়ম মেনে চলে। তাছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক মোবাইল টিম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের কর্মকর্তা ও শিল্প পুলিশ রয়েছে। তারা সবসময় কারখানাগুলোর দিকে নজর রাখছে যেন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনা মেনে ওইসব কারখানা শ্রমিকদের কাজ করায়।
তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা মানা হচ্ছে না,এরকম কোনও অভিযোগ আমরা পাইনি। শর্ত সাপেক্ষে শ্রমিক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এজন্য সরকারি নির্দেশ সবাইকে মেনে চলার ও সচেতন থাকার পরামর্শও দেন তিনি।

চাকরি ফিরে পেতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ::
গাজীপুরের মির্জাপুর (তালতলী) এলাকার এডিসন ফুটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকেরা চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। রবিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলতি বছরে নিয়োগ পাওয়া শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে।

শ্রমিকেরা জানান, গত ১১ এপ্রিল আন্দোলন বিক্ষোভে বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ ১৬ এপ্রিল কিছু শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করেন। কিন্তু যেসব শ্রমিক চলতি বছর নিয়োগ পান এরকম কমপক্ষে পাঁচশ’ শ্রমিকের কাছ থেকে কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ ছাড়াই জোর করে সাদা কাগজ, আবার কারও পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নিয়ে পরিচয়পত্র রেখে দেন। এরপর কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ২৬ এপ্রিল কারখানায় যোগদান করতে বলেন। কর্তৃপক্ষ শুক্র ও শনিবার ফোন করে অনেক শ্রমিককে রবিবার থেকে কারখানায় যোগদান করতে বলে। ওই কারখানায় দুই হাজারের অধিক শ্রমিক রয়েছে বলে জানান শ্রমিকরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রবিবার সকাল সাতটার দিকে পূর্ব ঘোষিত সময় অনুযায়ী শ্রমিকেরা কারখানায় যোগ দিতে যায়। যেসব শ্রমিক চলতি বছর নিয়োগ লাভ করেন তাদেরকে কর্তৃপক্ষ কারখানায় ঢুকতে দেয়নি। এ নিয়ে শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে শ্রমিকেরা ভেতের ঢুকতে কারখানার গেটে হামলা করে।

এ ব্যাপারে এডিসন ফুটওয়্যার লিমিটেডের সহকারি মহা-ব্যবস্থাপক (এজিএম) বিপুল বরণ ঘোষ বলেন, সকল শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। কারও বেতন বকেয়া রাখা হয়নি। শ্রমিকদেরকে রবিবার আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু গাজীপুর এলাকায় ২ মে কারখানা খোলার নির্দেশ পাওয়ার পর গাজীপুর সদর থানা পুলিশ বিষয়টি তাদের অবহিত করলে কারখানা ছুটি দেওয়া হয়।

গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম বলেন, যেসব শ্রমিকের পরিচয়পত্র রেখে দিয়েছিল তাদের পরিচয়পত্র ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেকের পরিচয়পত্র ফেরত দেওয়া হয়েছে। তাদের চাকরি থেকেও বাদ দেওয়া হবে না। কারখানা কর্তৃপক্ষ পুলিশকে এরকম নিশ্চয়তা দেওয়ার পর শ্রমিকেরা কারখানা এলাকা ত্যাগ করেন।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিশনাল এসপি) জালাল আহমেদ বলেন, পুলিশ লাঠিচার্জ করেনি। কারখানা চালু রাখার জন্য সরকারি নিয়ম মেনে চলার জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ শ্রমিকদের মানবিক বিষয় নিয়েই কথা বলেছে।