আজ শুক্রবার, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।   ২০ জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 2168

করোনায় মৃত্যুর কারণ শুধু ‘শ্বাসকষ্ট’ নয়

ডা. আমিনুল ইসলাম: 

একটা ব্যাপার লক্ষণীয়। করোনা রোগীদের অনেকেই রোগ ডায়াগনোসিস হবার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে মারা যাচ্ছে। রোগী আপনার কাছে এসেছে পেট ব্যথা নিয়ে, আপনি তাকে পেটের এক্স-রে করতে দিলেন। এক্স-রে তে বুকের যতটুকু দেখা যায় সেখানে দেখা গেল নিউমোনিয়ার মতো স্পট। আপনি দ্রুততম সময়ে তাকে করোনা টেস্ট করতে দিলেন- সেটা আসলো পজেটিভ। বিকালে বা পরদিন সকালে খবর নিয়ে জানলেন রোগী মারা গেছে।

দু’দিন আগে সার্জারি ওয়ার্ডে একজন রোগী ভর্তি হয়েছিল। সিস্টার তাকে ক্যানুলা করার সময় রোগী দিল কাশি। তার আগ পর্যন্ত কেউ জানতো না তার কোন কাশির সমস্যা আছে। সন্দেহবশত করোনা পরীক্ষা করানো হলো। সেটাও আসলো পজেটিভ। রোগীকে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত হাসপাতালে পাঠানো হল। কিন্তু সেখানে যাবার আগেই তার মৃত্যু ঘটে।

এত দ্রুত কেন ঘটছে মৃত্যুগুলি? যেটা আবার এক্স-রে বা সিটি-স্ক্যানের নিউমোনিয়া দ্বারা পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না। কারও কারও অক্সিজেন কমতে কমতে খুব দ্রুত মারাত্মক শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যাচ্ছে যেটা আবার বুকের এক্সরে বা সিটি-স্ক্যান এর সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। তাহলে কি ঘটছে করোনা রোগীদের দেহে?
এখন দেখা যাচ্ছে শুধু নিউমোনিয়া বা এআরডিএস (একিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রম) এ শুধু রেসপিরেটরি ফেইলিওর দিয়েই এই হঠাৎ মৃত্যুগুলি ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না, তার হঠাৎ মৃত্যু (Sudden death) এর আছে আরও বিবিধ কারণ।

লক্ষ্য করা যাচ্ছে করোনা নিজে একটা hypercoagulable state অর্থাৎ এটি রক্তনালিতে জায়গায় জায়গায় রক্ত জমাট বাঁধিয়ে ফেলে। সেদিন এই ঢাকা শহরেই এক করোনার রোগী একদিকে নিউমোনিয়া আরেকদিকে ব্রেইন স্ট্রোক একই সময়ে। নিউমোনিয়া খুব একটা মারাত্মক ছিল না কিন্তু হঠাৎ করেই তার মৃত্যু ঘটে। তার বুকের সিটি-স্ক্যান ও শ্বাসকষ্টের মাত্রা অনুযায়ী এত দ্রুত মৃত্যু প্রত্যাশিত ছিল না।

ঘটনা হয়েছে কি, তার ব্রেনের রক্তনালী জমাট বেধে স্ট্রোক করেছে আর ফুসফুসের রক্তনালী জমাট বেঁধে ব্লক হয়ে গিয়ে হঠাৎ মৃত্যু হয়েছে। ফুসফুসের রক্তনালী ব্লক হওয়াকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে Pulmonary embolism (PE)। হঠাৎ রহস্যজনক মৃত্যু ঘটাতে এই Pulmonary embolism এর মত অদৃষ্ট আততায়ী আর দ্বিতীয়টি নেই।

শুধু ফুসফুস বা ব্রেইন নয়, এটি হাত-পাসহ শরীরের যে কোনো রক্তনালী ব্লক করে দিতে পারে। তবে তাতে হঠাৎ মৃত্যু না হলেও জমাটবদ্ধ এরিয়াটা কালচে বা গ্যাংগ্রিন হয়ে যায়। তাই স্ট্যান্ডার্ড চিকিৎসায় সিলেক্টেড কেইস এ হেপারিন দেয়াটা রুটিন প্রেক্টিস এর মধ্যে চলে এসেছে চিকিৎসা পদ্ধতিতে।

হঠাৎ মৃত্যুর আরেকটা যে কারণ এখনো দৃষ্টির আড়ালে তা হলো এই করোনা কিন্তু হৃদযন্ত্রকেও মারাত্মকভাবে আক্রান্ত করতে পারে। দেখা যাচ্ছে ফুসফুসে তেমন একটা সমস্যা নাই কিন্তু রোগীর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, হঠাৎ প্রেসার কমে যাচ্ছে। BNP (Brain Natriuretic Peptide) লেভেল দেখা গেল অনেক বেশি।

সরাসরি প্রমাণ যেটা হল ইকো পরীক্ষা, তাতে দেখা গেল তার হার্টের সক্ষমতা যেখানে থাকার কথা ৬৫% সেটা ২০, ২৫, ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে। করোনার মাধ্যমে ঘটা হৃদযন্ত্রের প্রদাহ (myocarditis) জনিত হার্ট ফেইলিউরে রোগী হঠাৎ মারা যেতে পারে। অথবা সেই অসুস্থ হৃদপিন্ডের হঠাৎ ছন্দপতন (arrythmia) রোগীর হঠাৎ মৃত্যু ঘটাতে পারে।

আপাত দৃষ্টিতে তেমন সিরিয়াস না এমন রোগীও এসব কারণে হঠাৎ নাই হয়ে যাচ্ছে। তুখোড় চিকিৎসা পদ্ধতির কারণে যদি কেউ বেঁচে যায় তখন দেখা যায় হৃদযন্ত্রের সক্ষমতা আবার সেই আগের অবস্থানে চলে গেছে। ভাইরাস সরাসরি হৃদযন্ত্রকে আক্রান্ত করছে নাকি সাইটোকাইন নামের কোন রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে হার্টকে দুর্বল করে দিচ্ছে সময়ের সাথে সেটা প্রতিভাত হবে। যাদের আগে থেকে হৃদযন্ত্রের সমস্যা তারা থাকেন এ হৃদযন্ত্রের প্রদাহ হবার অধিক ঝুঁকিতে।

দ্রুত মৃত্যু না ঘটালেও করোনা লিভার, কিডনিকে সমভাবে আক্রান্ত করতে পারে। আমেরিকার হাসপাতালগুলিতে ভর্তি অর্ধেক করোনা রোগীর ইউরিনে, ব্লাড কিংবা প্রোটিন পাওয়া যাচ্ছে, যা কিডনি আক্রান্ত হবার চাক্ষুষ প্রমাণ। এক-চতুর্থাংশ হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর কিডনি ফেইল করছে, ডায়ালাইসিস লাগছে। নিউইয়র্কের মতো স্থানে ডায়ালাইসিস টেকনিশিয়ান এর সল্পতা চলছে।

চীনের একটা কেইস- রোগী এসেছে হলুদ প্রস্রাব ও জন্ডিস নিয়ে। সব হেপাটাইটিস ভাইরাস টেস্ট নেগেটিভ। দু’দিন পর আসে জ্বর। করোনা টেস্ট করে দেখা গেল সেটা পজেটিভ।

অর্থাৎ করোনা কোনও সর্দি-কাশি নয়, কোনো বিশেষ অঙ্গের রোগ নয়। ফুসফুস, হার্ট, ব্রেইন, কিডনি, লিভার, পরিপাকতন্ত্র কোনোটাকেই ছাড় দিচ্ছে না এ সব্যসাচী ভাইরাস। এ যেন বহিরাঙ্গের পৃথিবীটার মতো শরীরের অভ্যন্তরে প্রতিটা অঙ্গে দিকেদিকে তার বিজয় পতাকা উড়ানো চাই।

লেখক: মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

প্রাণঘাতি নতুন যত ভাইরাসের আবির্ভাব

চীনে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস নামে নতুন একটি ভাইরাস। নতুন এই ভাইরাসটি চীনের উহান প্রদেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। ওই এলাকায় এ পর্যন্ত দুই শতাধিক মানুষ এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন; মারা গেছেন তিনজন। চীন ছাড়াও থাইল্যান্ড, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশও সতর্ক রয়েছে। ‘করোনা ভাইরাস’ এর বিস্তার রোধে দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানিং শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। এ বিষয়ে বিমানবন্দরের কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণও দিয়েছে আইইডিসিআর। অন্যান্য দেশের বিমানবন্দরগুলোতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে। শুধু সাম্প্রতিক করোনা ভাইরাস নয়, গত দুই দশকে এমন অনেক নতুন ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটেছে পৃথিবীতে। এসব ভাইরাসের আক্রমনে প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্যা মানুষ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেশি জনসংখ্যার দেশগুলো থেকেই নতুন ভাইরাসের উদ্ভব ঘটেছে। পরবর্তীতে কোনো ওষুধ কোম্পানি প্রতিষেধক তৈরি করলে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ততদিনে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। তাই নতুন নতুন ভাইরাসের আবির্ভাবের পেছনে আছে কি কোনো ব্যবসায়িক যোগসাজোস, নাকি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব- তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। আসুন পেছন ফিরে দেখে নিই সারা বিশ্বে আলোড়ন তোলা এমন কিছু ভাইরাসের আবির্ভাব।

করোনা ভাইরাস
চীনের উহান প্রদেশে গত ডিসেম্বর থেকে করোনা ভাইরাস নামে নতুন এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। সরকারি হিসাব মতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত দুই শতাধিক, মারা গেছেন তিন জন। যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, চীন সরকারের হিসাবের চাইতে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা আরো অনেক বেশি, প্রায় ১৭শ জন। এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট এবং মারাত্মক নিউমোনিয়া দেখা দেয়য়। এমন এক সময়ে করোনা ভাইসারের প্রাদুর্ভাব হয়েছে যখন চীনে নববর্ষ উদযাপন চলছে। এ সময় সারা বিশ্ব থেকে চীনা নাগরিকরা দেশে ফেরেন এবং অনেক পর্যটক নববর্ষ উদযাপন দেখতে চীনে ভ্রমণ করেন। ফলে এই ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে।

বার্ড ফ্লু (এইচ৫এন১)
১৯৯৭ সালে হংকংয়ে এইচ৫এন১ ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর ২০০৩, ২০০৬, ২০০৭ ও ২০০৮ সালে এশিয়ার আরো কয়েকটি দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। ২০০৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৬৩০ জন বার্ড ফ্লুতে সংক্রমিত হয়েছেন এবং ৩৭৫ জন মারা গেছেন।

নিপাহ ভাইরাস
১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ার পাংকর দ্বীপের ছোট্ট শহর কামপুং তেলুক নিপাহতে নতুন একটি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়। পরের বছর ওই শহরের নামে ভাইরাসটির নামকরণ হয় নিপাহ। এই ভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যুর আশঙ্কা ৫৪ শতাংশ। ২০১৮ সালে ভারতের কেরালায় এই ভাইরাস সংক্রমণে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৩ সালে বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাসে অন্তত ১০ জন মারা যান।  বাংলাদেশে সাধারণত বাদুড় থেকে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায়। এ ভাইরাস মানুষের মস্তিষ্কের প্রদাহ বা এনকেফেলাইটিস এবং শ্বাসতন্ত্রের রোগ সৃষ্টি করে। সাধারণত সংক্রমণের ৪ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে লক্ষণ প্রকাশ পেতে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

সার্স
সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) ভাইরাসের প্রথম প্রাদুর্ভাব হয় চীনে। ২০০২ ও ২০০৪ সালে এশিয়ার কয়েকটি দেশে সার্স ভাইরাস মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। আট হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হন, মারা যান প্রায় ৭৭৪ জন। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলে ভয়াবহ শ্বাসকষ্ট হয়। তবে ২০০৪ সালের পর এই ভাইরাসে প্রাদুর্ভাবের খবর আর পাওয়া যায়নি।

সোয়াইন ফ্লু
২০০৯ সালে প্রথম বিশ্বজুড়ে এইচ১এন১ ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। শূকরের ফ্লুর সঙ্গে লক্ষণ মিল থাকায় একে সোয়াইন ফ্লু নাম দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১১ থেকে ২১ শতাংশ মানুষ এ ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছেন। দেড় লাখ থেকে প্রায় ছয়লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অনেকের মৃত্যুর হিসাব প্রকাশ্যে আসেনি। ঢাকায় নতুন বছরে সোয়াইন ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার খবর শোনা গেলেও আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

মার্স (মিডলইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম)
এটি সার্স ভাইরাস গোত্রেরই একটি ভাইরাস। ২০১২ সালে প্রথম সৌদি আরবে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। দেশটিতে মার্সে আক্রান্ত প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষ মারা যান। উট থেকে এই ভাইরাস মানবদেহে ছড়ায় বলে ধারণা করা হয়। হাঁচি, কাশি ও সংস্পর্শের মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষেও ছড়ায়।

এবার রমজান ভিন্ন পরিস্থিতিতে পালিত হবে : বেনজীর আহমেদ

বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) বলেছেন, এবার আসন্ন পবিত্র রমজান একটি ভিন্ন পরিস্থিতিতে পালিত হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রার্থনা সীমিত রয়েছে। রমজানে ধর্মাচার বিষ‌য়ে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করতে হবে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে রমজানে কঠোরভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, যেন কোন কারণে পণ্যের মূল্য না বাড়ে। পণ্যের কালোবাজারি রোধ এবং খাদ্যে ভেজাল দেওয়া বন্ধ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট বসানোর উ‌দ্যোগ নি‌তে নির্দেশ দেন আইজিপি।

আইজিপি আজ বুধবার বিকেলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স হতে ভিডিও কনফারেন্সে সকল রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন, বিশেষায়িত ইউনিট ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তাদেরকে আসন্ন পবিত্র রমজানে স্বাভাবিক আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখা সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রদান করেন।

আইজিপি বলেন, পণ্যের পরিবহন স্বাভাবিক রাখতে হবে। এক্ষেত্রে তিনি বলেন, বর্তমানে অনেক জেলায় ত্রাণ নিয়ে ট্রাক যাচ্ছে। আসার সময় ওই ট্রাকগুলো খালি ফিরে আসছে। ওই খালি ট্রাকগুলোতে নিত্য প্র‌য়োজনীয় পণ্য পরিবহণের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, ত্রাণ বিতরণে কোন ধরনের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। রি‌লিফ ও টি‌সি‌বি পণ্য এবং ভি‌জিএফ ও ওএমএস সু‌বিধা যে‌নো জনগ‌ণের কা‌ছে যথাযথভা‌বে পৌঁঁছায় সে জন্য সং‌শ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের সাথে প্র‌য়োজনীয় সমন্বয় করতে হবে।

হাওরে ধান কাটার শ্রমিক পাঠানোর জন্য বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে আইজিপি বলেন, হাওরে হয়তো আরো শ্রমিক পাঠানোর প্রয়োজন হতে পারে। তিনি শ্রমিকদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার জন্য শ্রমিকবাহী গাড়ির সামনে ব্যানার এবং গাড়িতে শ্রমিকদের তালিকা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিটের কর্মকর্তাদের নাম ও মোবাইল নম্বার রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন।

কোন ব্যক্তি বা সংগঠন অসহায় মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অথবা ইফতার বিতরণের না‌মে জনসমাগম না ক‌রেন সে‌টি নি‌শ্চিত কর‌তে হ‌বে। ত‌বে ত্রাণ বিতর‌ণে তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে হবে। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। রমজানে যেন কোনোভাবেই ফুটপাতে ইফতার তৈরি ও বিক্রি না হয় সে ব্যাপারে তৎপর থাকতে হবে।

পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পু‌লি‌শের অন্যান্য হাসপাতালগু‌লো‌তেও পর্যাপ্ত চি‌কিৎসা‌  ব্যবস্থা রাখা হ‌চ্ছে।

এছাড়া দেশের ৫টি বিভাগে চি‌কিৎসার আ‌য়োজন করা হ‌চ্ছে। আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের ঢাকায় যে চিকিৎসা দেয়া হবে, একই চিকিৎসা বিভাগীয় হাসপাতালেও দেয়া হবে। তাদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে। যে সকল পুলিশ সদস্য কোয়ারেন্টিনে, আইসোলেশনে এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তাদের নিয়মিত খোঁজখবর নেয়ার জন্য ইউনিট প্রধানদের নির্দেশ দেন তিনি। তাদের প্রার্থনা, বিনোদন ও বই পড়ার ব্যবস্থা করার জন্যও নির্দেশ দেন আইজিপি। তিনি বলেন, শুধু আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের নয়, তাদের পরিবারেরও খোঁজখবর নিতে হবে, যেন তারা নিজেদের একা মনে না করেন।

আইজিপি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক প্রান্তিক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়তে পারে। অনেকে অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই বাড়তে পারে। এ ধরনের অপরাধ দম‌নে প্র‌য়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ কর‌তে হবে।

বর্তমান পরিস্থিতিতেও যেসব গার্মেন্টস মালিক শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছেন তাদের প্রতি আইজিপি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। আর যারা এখনও বেতন দিতে পারেননি, তাদেরকে শ্রমিকদের বেতন দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কোন গার্মেন্টস চালু করলে যথাযথভাবে সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু করার পরামর্শ দেন আইজিপি।

 

শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ছে ২ মে পর্যন্ত

আবারো বাড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির মেয়াদ। করোনার সংক্রমণ এড়াতে চলমান সাধারণ ছুটি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২ মে পর্যন্ত এ ছুটি বাড়ানো হচ্ছে বলে জানা যায়। আজ বুধবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র থেকে জানা যায়, চলমান পরিস্থিতির মধ্যে দেশে সাধারণ ছুটি আরো বাড়ছে। বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে করোনার সংক্রমণ এড়াতে সাধারণ ছুটি বাড়ানোসহ নানা নির্দেশনা সম্বলিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। সে অনুযায়ী আরো সাত দিন অর্থাৎ আগামী ২ মে পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বৃদ্ধি করা হবে বলে জানা গেছে।

এর আগে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সাধারণ ছুটি আরো সাত দিন বাড়তে পারে বলে জানিয়েছিলেন জাতীয় কমিটির সদস্য এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল। মঙ্গলবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সময় শাহ কামাল জানান, বৈঠকের এ সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। ছুটি বাড়বে কি না সেটা জানি না। কারণ সাধারণ ছুটি বাড়ানোর এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রীর।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, এখনও অফিস খুলে দেওয়ার সময় আসেনি। এখন করোনার চূড়ান্ত সময় যাচ্ছে। এবার বর্ধিত ছুটি ঘোষণা হলে তাতে কিছু নতুন নির্দেশনা থাকতে পারে। তবে বিষয়টি চূড়ান্তভাবে বলা যাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার পর।

করোনা ভাইরাসে দেশে ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নতুন করে ৪৩৪ জন শনাক্ত হওয়ায় এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩৮২ জন।

করোনা নিয়ে প্রবাসীদের সেবা দিতে ওয়েবসাইট চালু

বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত তথ্য সহায়তা ও জরুরি সেবা দিতে চালু হয়েছে নতুন ওয়েবসাইট (www.probashihelpline.com)।

গত ২৯ মার্চ রোববার সাইটটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

নদীপথে কার্গো সার্ভিস ভাড়া নেওয়ার অ্যাপ জাহাজী, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি গো-জায়ান এবং ডেটা ও ইনফরমেটিক্স প্রতিষ্ঠান অ্যানালাইজেনের কিছু উদ্যোক্তা এক সঙ্গে এ ওয়েব সাইটটি চালু করেছে বলে জানিয়েছেন এর অন্যতম উদ্যোক্তা আব্দুল্লাহ আল মুঈদ।

তিনি জানান, বৈশ্বিক করোনার ভাইরাসের মহামারিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রয়োজনীয়দের তথ্য পেতে এ সাইটটি সাহায্য করবে। এখানে তারা চিকিৎসা সংক্রান্ত সেবা পাবেন। এক্ষেত্রে তাদের নাম ও ফোন নম্বর আমাদের দিতে হবে। আমরা স্ব-উদ্যোগ ফোন দিয়ে সেবা দেব।

আব্দুল্লাহ আল মুঈদ আরও জানান, এ সাইটটি শুরু হওয়ার পর থেকে আমরা অনেক সাড়া পাচ্ছি। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে দেশগুলোতে বেশি সাড়া পাচ্ছি। এছাড়াও আমেরিকা, ইতালি ও ফ্রান্স থেকে আমরা অনেক ক্লিক পেয়েছি।

জরুরি অবস্থায় প্রবাসীরা যাতে দেশে কল করে সাহায্য পেতে পারেন সেজন্যও এই সাইটে কিছু হটলাইন নম্বর দেওয়া আছে।

এছাড়া করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সর্বশেষ আপডেট, সংক্রমণ এড়াতে চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ এবং ডাব্লিউএইচও, সরকারের করোনাসংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ সেলের ওয়েবসাইট ও তথ্য সাইটটিতে গেলে পাওয়া যাবে।

করোনায় আদালত বসা নিয়ে বিচারপতিদের বৈঠক বৃহস্পতিবার

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

বুধবার (২২ এপ্রিল ) এ তথ্য জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।

করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি আদেশের সাথে মিল রেখে আদালত প্রাঙ্গণও বন্ধ রয়েছে। তবে কেবল জরুরি প্রয়োজনে প্রত্যেক জেলায় একটি করে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট খোলা রয়েছে।

এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল স্বল্প পরিসরে কোর্ট চালু করতে প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করেছেন।

এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতি তাদেরকে বলেছেন, তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের ১৪ জন আইনজীবী সীমিত পরিসরে এক-দুটি বেঞ্চ কিংবা অনলাইনে কোর্ট খোলার জন্য প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়েছেন। করোনাভাইরাস নিয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ চেয়ে একটি বেঞ্চ গঠনে অপর দুই আইনজীবীও চিঠি দিয়েছেন।

চাল চোরদের মহোৎসব শুরু হয়েছে : রিজভী

বিএনপি পকেটের টাকার ত্রাণ দিচ্ছে আর সরকারি দলের মেম্বার-চেয়ারম্যানরা ত্রাণের চাল ডাল তেল চুরি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এমন মহামারীতেও চাল চোরদের মহোৎসব চলছে।দুর্ভিক্ষের পদধ্বনির মধ্যে চাল চোররা থেমে নেই।

এ সময় ড্যাবের সহকারী মহাসচিব ডা. শাকিল, ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, কাফরুল থানা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর বিএনপি নেতাকর্মীরা দুস্থ গরিব মানুষের বাসায় বাসায় গিয়ে খাদ্য দ্রব্য পৌঁছে দেন।

রিজভী বলেন, দেশ একটা কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্ব মহামারীর মধ্যে পতিত হয়েছে। এর কারণে প্রত্যেকটি মানুষ আতঙ্কে ও সংখ্যার মধ্যে দিন যাপন করছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে সচেতন বা করোনা প্রতিহত করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ ৮ মার্চ ৩ জন রোগী শনাক্ত হয়। সরকার তখনো কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে অন্য কাজে ব্যস্ত ছিল।

তিনি বলেন, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামে আগাম প্রস্তুতির কারণে করোনায় তেমন আক্রান্ত হয়নি। তারা আগে থেকেই মানুষকে সচেতন করতে পেরেছে। কিন্তু আমাদের দেশে তা করা হয়নি। সরকার কোন প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বাংলাদেশে করোনা মহামারী আকার ধারণ করছে। কিন্তু আমরা কি দেখছি নিম্ন আয়ের মানুষ যারা দিন আনে দিন খায় তারা খাবার সংগ্রহ করতে পারছে না। তারা ক্ষুধার জ্বালায় হাহাকার করছে। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারি ত্রাণ জনগণের টাকায় কেনা। সেই ত্রাণ সাধারণ জনগণ পাচ্ছে না। ত্রাণের চাল তেল ডাল পাওয়া যাচ্ছে আওয়ামী লীগের মেম্বার চেয়ারম্যানের বাড়িতে। মহামারীর মধ্যে শুরু হয়েছে চাল ডাল চোরদের উৎসব।

তিনি আরও বলেন, মহামারীর মধ্যে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। কুষ্টিয়ায় একজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সরকার মনে করছে বিএনপি যেভাবে মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে ত্রাণ বিতরণ করছে তাতে তাদের মুখ আর থাকছে না। এদিকে সরকারি দলের লোকেরা ত্রাণ চুরি করছে। আর বিএনপির লোকেরা পকেটের টাকায় ত্রাণ দিচ্ছে। এজন্য সরকার জুলুমের পথ বেছে নিয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করছে। তারা যতই গ্রেফতার করুক আমরা এই মহামারীতে মানুষের পাশে আছি এবং থাকব।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্প-কারখানা চালুর প্রস্তুতি

করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিয়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে আমদানি-রপ্তানি। এ অবস্থায় দেশের অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। দুশ্চিন্তা বাড়ছে ব্যবসায়ীদের।

এ অবস্থায় শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্প কারখানা চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বেকারত্ব রোধ, দরিদ্রদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি ও অর্থনীতির ক্ষতি কমিয়ে আনতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

আজ বুধবার (২২ এপ্রিল) ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতারা বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

বৈশ্বিক মহামারির কারণে সারা বিশ্ব কার্যত লকডাউনে থাকায় আমদানি-রপ্তানিতে ধস নেমেছে। লকডাউনের কারণে রপ্তানি বন্ধ, ব্যাংক ঋণের ইন্টারেস্ট এবং ক্রয় আদেশ বাতিল হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বিশেষ করে তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পোশাক খাতের পণ্য, প্রসাধনী, মুদ্রণ শিল্প, চিকিৎসা সরঞ্জাম, কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিক পণ্য, প্লাস্টিক শিল্পসহ দেশের অভ্যন্তরীণ সব ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশের তৈরি পোশাকখাতের এক হাজার ১৪৪টি কারখানায় ৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রফতানি আদেশ বাতিল হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন কারখানার মালিক ও শ্রমিকরা। রফতানি আদেশ বাতিল হওয়া এসব কারখানায় ২২ লাখ ৭০ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করেন।

দেশের রপ্তানি খাতের সিংহভাগ তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরশীল। তাই এ খাতের নেতিবাচক প্রভাব পুরো রপ্তানি বাণিজ্যে আঘাত হানবে। তাই লকডাউনের মধ্যেও পোশাক কারখানা স্বল্প পরিসরে চালু রাখার দাবি উঠেছে। শারীরিক দূরত্ব, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পোশাক কারখানা চালুর প্রস্তুতিও নিচ্ছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সিনিয়র সহ সভাপতি ফয়সাল সামাদ বলেন, এই মুহূর্তে আমরা ফ্যাক্টরিগুলোর প্রটোকল ঠিক করছি। এরপর এক্সপোর্টও করতে হবে। বায়াররা যেগুলো অর্ডার করেছে সেগুলো চাচ্ছে। তবে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আমরা ফ্যাক্টরি চালু করতে চাই। এক্ষেত্রে আমাদের ফ্যাক্টরিগুলো সার্ভে হচ্ছে। আমরা তথ্য পাচ্ছি। তড়িঘড়ি করার কোনো সুযোগ নেই।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ইমরুলের বাবা চলেই গেলেন

চলেই গেলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার ইমরুল কায়েসের বাবা বানি আমিন বিশ্বাস (৬০)। রোববার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইমরুল কায়েসের মামাতো ভাই রনি।

সূত্র জানায়, গত ২৩ মার্চ দুপুরে মেহেরপুর সদর উপজেলার উজ্জলপুর গ্রামের বাড়ি থেকে মেহেরপুর শহরের যাওয়ার পথে শ্যালো ইঞ্জিন চালিত অবৈধ যান নছিমনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন বানি আমিন বিশ্বাস। তাকে প্রথমে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে, এরপর কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। একইদিনই হেলিকপ্টারযোগে তাকে ঢাকায় নিয়ে যান ইমরুল কায়েস।

দুর্ঘটনায় তার পা, হাত ও মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) গত প্রায় একমাস ধরে চিকিৎসা চলছিল তার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ডাক্তারদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

রনি আরো বলেন, ‘আমার ফুপার মরদেহ নিয়ে ইমরুল ভাই ঢাকা থেকে রওনা দিচ্ছেন বাড়ির উদ্দেশ্যে। গ্রামেই তার জানাযা শেষে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

বাবা হারালেন মিঠুন চক্রবর্তী

মিঠুন চক্রবর্তীর বাবা চলে গেলেন না ফেরার দেশে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুম্বাইতে মারা গেছেন মিঠুনের বাবা বসন্তকুমার চক্রবর্তী।

তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। মিঠুন চক্রবর্তী বসন্ত কুমারের চার চার সন্তানের সবার বড়।

ভারতীয় এক গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মিঠুনের ছেলে মিমো রয়েছেন মুম্বাইতে। একটি শুটিংয়ের কাজে বেঙ্গালুরুতে গিয়েছিলেন মিঠুন। এরপর লকডাউন শুরু হওয়ায় সেখানেই আটকে পড়েন তিনি। এখন শেষকৃত্যের জন্য মুম্বই পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন মিঠুন।

একসময় ক্যালকাটা টেলিফোনসে চাকরি করতেন মিঠুনের বাবা বসন্ত কুমার। মা শান্তিময়ী ছিলেন গৃহবধূ। চার সন্তানের মধ্যে মিঠুন ছাড়া রয়েছেন তার তিন মেয়ে।